প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২১
বাংলাদেশে এখন মিডিয়ার অনেক বিস্তৃতি হয়েছে। যদিও সম্প্রতিকালে লক্ষ্য করা গেছে যে, অনলাইন পত্র-পত্রিকা দিন দিন মোটামুটিভাবে একটি গতি পেয়েছে। যার ফলে প্রিন্টিং মিডিয়ার চেয়ে অনলাইন মিডিয়া গুলো বেশি জনপ্রিয়। তার কারণ হচ্ছে তারা যে কোন ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে সেটিকে পাঠকের কাছে হাজির করতে পারে। এসবের একটি নেগেটিভ সাইডও আছে। সেটি হলো মিডিয়ার এত বেশি হওয়ার ফলে মিডিয়া অনেক সময় সংবাদ খুঁজে পায় না। হয়তো একই সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়াতে অনেক সময় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লিখতে বাধ্য হয়। তবে মিডিয়াকে সংবাদের খোরাক যোগাতে সাহায্য করছে নতুন নতুন সৃষ্ট রাজনৈতিক দল। তারা প্রথমে একটি প্রেস কনফারেন্স করে। এরপর স্বাভাবিক নিয়মে একটি কমিটি করে। হয়তো সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, এই এক-দুইজনকে লোকে চিনে।তবে আর কাউকে চিনে না। আমরা একটি দল বলতে বুঝি, দলটিতে একজন নেতা থাকতে হবে আর তার সমর্থক থাকতে হবে। কিন্তু একের পর এক যেসব নতুন দলের কথা বর্তমানে মিডিয়ার মাধ্যমেও আমরা জানতে পারছি তাদের সমর্থক কিন্তু খুব একটা নাই দেশে। যার ফলে তারা কোন একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না। এটা-ওটা কথা বলে। এবং আমার ধারণা, অধিকাংশ নতুন নতুন যে রাজনৈতিক দলগুলো হয়েছে তারা যদি এদেশের পার্লামেন্টারি ইলেকশনে অংশ নেয় তবে ৩০০-৫০০ ভোটের বেশি পাবে না। আমি এখানকার নেতাদের বলতে চাই, ট্রেনে ইঞ্জিন থাকে এবং ইঞ্জিনের সাথে অনেক বগি থাকে। ইঞ্জিন সমস্ত বগিগুলোকে টেনে নেয়। বগিতে থাকে অনেক লোক জন অথবা মালামাল। অর্থাৎ, বগি টানার জন্য ইঞ্জিনের প্রয়োজন হয়। এখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে ইঞ্জিনই। ইঞ্জিন যেদিকে যাবে বগি সেদিকে যাবে। আমাদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ইঞ্জিন দেখতে পাচ্ছি প্রায়শই , কিন্তু বগি দেখতে পাচ্ছি না। অর্থাৎ তাদের সমর্থক নাই। এর ফলে যা হচ্ছে তা হলো তারা বিনা কারণে রাস্তা দখল করে রাখছে। আমি একটি উদাহরণ দেই- আজকাল যদি কেউ নতুন পত্রিকা বের করতে যায় তাহলে সে দেখবে যে সে যে নামে পত্রিকা খুলতে চায়, সে খুঁজে বের করে দেখবে কেউ না কেউ ওই পত্রিকাটির নামটি আগেই রেজিস্ট্রেশন করেছে। এবং সকলেই জানে, আমার আর নতুন করে বলার নেই। কোনো না কোনোভাবে মেকানিজম করে ওই নামটা রেখে দিয়েছে। তারপর তারা এটা বিক্রি করে। এখনকার কিছু জনপ্রিয় পত্রিকাও এইভাবে এই নাম কিনে নিয়ে তারা পত্রিকাকে জনপ্রিয় করেছে। তার আগে পত্রিকাগুলো নামও কেউ জানতো না।
আমাদের দেশে শেষ পর্যন্ত কি এই রাজনৈতিক ইঞ্জিন, অর্থাৎ যে নেতারা রাজনৈতিক দল করছে তারাও কি ওই সকল তথাকথিত পত্রিকার মতো নাম বিক্রি করেই চলবে কিনা, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। একসময়, দেখা যাবে এটিই বাস্তবভিত্তিক হবে। দেখা যাবে প্রথমে দুই-একজন নামকরা লোকরা দলে ঢুকবে। তারপর অরিজিনাল লোকদের বের করে দেবে তারা। তবে সেই লক্ষণও আপাতত নাই। কারণ হচ্ছে এই যে, যারা সত্যিকারভাবে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে, যারা মাঠে যেতে পারে সেরকম কোনো রাজনৈতিক দল হচ্ছে না। একটি উদাহরণ দেওয়া চলে যে, যতগুলি সম্প্রতিকালে গত কয়েক মাসে এমনকি এই করোনাটা যখন কমে যায়, তখনও কোনো রাজনৈতিক দল কিন্তু ঢাকার বাহিরে প্রেস কনফারেন্স ছাড়া কোন মাঠে ময়দানে যেয়ে এমনকি বিভাগীয় শহরেও এখন পর্যন্ত কোনো একটি সভা করে নাই। অর্থাৎ আমার মনে হচ্ছে এরা ঐ যে তথাকথিত পত্রিকায় নাম করে বিক্রি করবে। সেটাই তাদের উদ্দেশ্য কিনা এটাও একটি প্রশ্ন। কারণ এদের দ্বারা আর যাই হোক, এদেশের মানুষের কোন মঙ্গল হবে না। রাজনীতির কোনো মঙ্গল হবে না। কারণ যে রকম ট্রেন বগি ছাড়া শুধু ইঞ্জিন দিয়ে কোনদিন ট্রেন লাইনে যেমন চলতে পারে না, তাকে অবশ্যই বগি ব্যবহার করতে হবে। ঠিক তেমনিভাবে একের পর এক এই ইঞ্জিন সৃষ্টি করার যে প্রবণতা আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে এটি অর্থহীন। আমার মতে, বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক দল রেজিস্ট্রেশন করার যে সিস্টেম আছে তাদেরকে খুব শক্তভাবে এটা বলা উচিত যে কিভাবে তারা করবে এবং সেটাকে বাস্তবায়িত করবে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে এটাকে যাদের করার কথা তারা সেই ভাবে সিরিয়াসলি করে না। কারণ তাদের অনেকেই মনে করে যে বাংলাদেশে এখন বিনোদনের সুযোগ খুব কম। সুতরাং এই ধরনের ইঞ্জিন তৈরির ফলে তারা অনেক বিনোদনমূলক কথাবার্তা পায়। এটা একটা বিনোদনের মাধ্যম হয়ে গেছে। আগে ছিল সিনেমা-নাটক। এখন আমরা গ্রামের মানুষেরা, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমরা যাত্রা দেখতাম। যাত্রা তখন খুবই জনপ্রিয় ছিলো। এখন যাত্রাটা নাই। আমার মনে হচ্ছে যাত্রার আধুনিক ভার্সনই হচ্ছে এই তথাকথিত ইঞ্জিল ওয়ালা রাজনৈতিক দল। তারা যাত্রার পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক কথাবার্তাই বলবে। এতে আসলে দেশের কোন মঙ্গল হবে না। আমি মনে করি এতে ভবিষ্যতে দেশের বরং ক্ষতি হবে। অনেক ছেলে মেয়েদের উস্কে দিয়ে তারা দেশে একটি স্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করছে। যেখানে আমরা উন্নতির শিখরে যাচ্ছি সেটা বাধাগ্রস্ত করতে পারবে এবং এই বাধাগ্রস্ত করার জন্য যে নুতন নুতন বগি ছাড়া ইঞ্জিন তৈরি হচ্ছে সেটাকেও মনে করি।
রাজনীতি অবশ্যই একটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কারণ অসাংবিধানিক পথে যারাই ক্ষমতায় এসেছে বিশেষ করে আমাদের দেশের ১৯৭৫ সালে সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পরে। সেই সকল রাজনৈতিক দলগুলি সত্যিকারভাবে রাজনীতিকে প্রপারলি এগিয়ে নিতে পারেনি। তারা বরং পিছিয়ে দিয়েছে দেশকে। এরপরে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক একটি ধারা নিলেন। এখন রাজনৈতিক দল থাকবে। কিন্তু আমার মতে আইন করে করা কাজটা সঠিক হবেনা। কিন্তু যে ভাবে রাজনৈতিক দল করতে হবে সেই ব্যাপারে একটা অবশ্যই সঠিক আইন থাকবে এবং সেই আইন দ্বারা এই তথাকথিত সেই গ্রামের যাত্রা গান অথবা আগে ঢাকায় এখন কিছুটা কমেছে, কর্নারে কর্নারে পান-বিড়ির দোকান এভাবে রাজনৈতিক দল করে লাভ কোন দেশেই হয়নি, হবেও না এবং বিশ্বের কোথাও নাই। যদি রাজনৈতিক দলের সংখ্যার দিক দিয়ে কোনো নোবেল দেওয়া হয় তবে বাংলাদেশ অবশ্যই পেতো।
কারণ এত বেশি পরিমাণ রাজনৈতিক দল আছে, আর এসব রাজনৈতিক দলকে আমি আজকের লেখায় নাম দিয়েছি ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনে থামাতে হবে, থামিয়ে আমাদের সঠিক পথে, সঠিক রাজনীতিকে আনতে হবে। যখন ছাত্ররা তাদের যুক্তিপূর্ণ আন্দোলনে যায় তখন এই তথাকথিত রাজনৈতিক দলগুলোর এদের নিজস্ব সমর্থক না থাকায় তারা পিছন থেকে কিছু খরচ করে ওদের উসকে দেয়। একটি সুষ্ঠু রাজনীতি তার সুষ্ঠু পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি সঠিকভাবে রাখতে হয় তাহলে আমাদের সমাজের এবং রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় হাত দিতে হবে এবং সরকারি দল থেকে বিরোধী দল সকলে মিলেই এটায় যদি হাত দেয়া না হয় তাহলে আমাদের পরিশেষে মারাত্মক ক্ষতি হবে। আমরা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজাতি, এবার করোনাতে আমরা আমাদের অনেক গুণী জনকে হারিয়েছি। এমনকি দু-তিন দিন আগে রফিকুল ইসলাম সাহেবও চলে গেলেন। এখন যদি আমরা কোথাও একজন বিজ্ঞ লোককে এমনকি সিম্বোলিক অর্থেও তাকে প্রধান অতিথি করে বা বিশেষ বক্তা করে আনতে চাই সেরকম লোকের অভাব হয়েছে। এই অভাবের কারণ হচ্ছে যে লোকজন বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতি থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যাচ্ছে এবং রাজনীতিতে বুদ্ধিবৃত্তিক লোক আসা খুব বেশি প্রয়োজন। বুদ্ধিবৃত্তিক লোক তখনই আসবে যখন রাজনীতিকে একটি সুস্থ ধারার সুস্থ পথে নেওয়া যাবে। সেই কারণের জন্য আমাদের এই বিজয়ের মাস শুরু হয়েছে। আমরা বিজয়ের মাসে এই একের পর এক ইঞ্জিন তৈরি বন্ধ করে যেন সঠিক রাজনীতির পথে এগোতে পারি সে ব্যাপারে সকলের সজাগ হওয়া এবং একে একটি রূপ দান করা আমাদের অত্যন্ত জরুরী।
এবার আমদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালনের বছরে আমাদের সকলের বিবেককে জিজ্ঞাসা করে একটি প্রতিজ্ঞা করা উচিৎ যেনো আমরা দেশের গণতন্ত্রকে স্থায়ীরূপ দিব এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সত্যিকারে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে রূপ দিয়ে এবং সেটাকে সফল করে জাতির পিতার প্রতি সত্যিকারে সম্মান দেখাবো। সম্মান দেখাবো আমাদের স্বাধীনতাকে, যে স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, সংগ্রাম করে আমরা লাভ করেছি। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এবং যারা বয়সের কারণে তখন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেনি অনেকে তখন জন্ম গ্রহণ করেনি তাদের সকলকেই সঠিকভাবে আমরা শিক্ষিত করব। সেই শিক্ষিত দুইটি ভাবে করতে হবে, একটি হচ্ছে কনভেনশনাল, যা স্কুল-কলেজের মাধ্যমে করা হয়। আর অন্যটি হচ্ছে নন-কনভেনশনাল, যেটা আগে বিভিন্ন এরিয়া থেকে লাইব্রেরি পাওয়া যেতো। সেখান থেকে বই এনে মানুষ পড়তো, সেসব লাইব্রেরি একটি প্রতিষ্ঠান আর এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে এভাবে আবার প্রয়োজনে সরকারি অনুদান দিয়ে গড়ে তুলতে হবে। যেমন প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে অনেকে নিজে থেকেই বঙ্গবন্ধুকন্যা বা মুজিব কন্যার নাম দিয়ে তারা করা শুরু করেছে। একইসাথে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে একটি লাইব্রেরী থাকা উচিত এবং এই লাইব্রেরীতে যেরকম উদাহরণ হিসেবে বলি নিজের মেডিকেল কলেজেরই শুধু টেকনিক্যাল সাবজেক্ট নয়। পড়তে হবে কবিতা, ইতিহাস ও অন্যান্য বিষয়ে। তাহলে শুধু চিকিৎসক শুধু তার টেকনিক্যাল জ্ঞানই সম্ববৃদ্ধ হবে না সাথে একজন চিকিৎসক সত্যিকারে মানুষ হয়েও উঠতে পারবে।
জাতির
পিতার বদৌলতে যে স্বাধীন দেশ পেয়েছি এবং যেটি সঠিক পথে পরিচালনা করছেন তার কন্যা রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা। তাকে আরও সঠিক রূপ দেওয়ার জন্য আমাদের এখন শিক্ষাঙ্গন থেকে প্রতিটি জায়গায়
হাত দিতে হবে। যেমন লাইব্রেরী কথা বললাম তেমনি লাইব্রেরী থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনেক
ভালো ভালো জিনিস আমাদের ছিল। তখনকার দিনে মানুষ এত শিক্ষিত ছিল না অথচ পুঁথিপড়া হতো
তাতেও কিন্তু লোকজন শোনার জন্য আগ্রহ পোষণ করতো, কিছু শিখতো। যেটাই শিখুক মানুষ কিন্তু
পুঁথির দারাও কিন্তু শিখেছে। আমরা কেন তার
থেকে সরে যেয়ে খালি ইঞ্জিন তৈরির দিকেই হাত দিচ্ছি। সুতরাং আসুন আমরা সকলে মিলে বগি
ছাড়া আর ইঞ্জিন তৈরি না করে সত্যিকারে বাংলাদেশে গড়ে তুলি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ড. আব্দুর রাজ্জাক শাহজাহান খান
মন্তব্য করুন
ইরান-ইসরায়েল শেখ হাসিনা শান্তির দূত জো বাইডেন ইরান
মন্তব্য করুন
আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর কবির নানক ড. হাছান মাহমুদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে ধ্বংসের সহজ উপায় কি? এক কথায় এর উত্তর হলো রাজনীতি শূণ্য করা। গণতন্ত্রে রাজনীতি হলো রক্ত সঞ্চালনের মতো। একটি দেহে স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহ বন্ধ হলে, মৃত্যু অনিবার্য। তেমনি গণতন্ত্রের মৃত্যু হয় বিরাজনীতিকরণে। বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণে চেষ্টা চলছে বহুদিন থেকে। কিন্তু এখন সবাই মিলে আনুষ্ঠানিক ভাবে দেশকে রাজনীতিহীন করার উৎসবে মেতেছে। রাজনীতি হত্যার উৎসব চলছে দেশে। দেশে এখন কোন রাজনীতি নেই। রাজনৈতিক কর্মসূচী নিয়ে জনগণের হৃদয় জয়ের চেষ্টা নেই। আছে শুধু ‘ব্লেইম গেম’। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পাল্টাপাল্টি গালাগালি। কুৎসিত, কদর্য কথার খিস্তি।
দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে শেষ পর্যন্ত যদি স্বজনদেরকে প্রার্থী করেন তাহলে দলের পদ হারাতে পারেন আওয়ামী লীগের দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এ রকম বার্তা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে দলে বিশৃঙ্খলা এবং ভাই, ভাতিজা, শ্যালক, মামাদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করার তীব্র সমালোচনা করেন। এ ব্যাপারে তিনি কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেন।
ইরান-ইসরায়েল ইস্যু ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। তৈরি হয়েছে যুদ্ধ পরিস্থিতি। ইরান যে কোন সময় ইসরায়েল হামলা করতে পারে। এমন একটি পরিস্থিতিতে সারা বিশ্ব উৎকণ্ঠিত। এক অস্থির যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে। ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো জানিয়েছে, ইরানের আক্রমণের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের ভূখণ্ড তারা ব্যবহার করতে দেবে না। সব কিছু মিলিয়ে একটি বিভাজন এবং বৈরি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে অবাক করার ব্যাপার হলো এই বৈরি পরিবেশে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন উদার নৈতিক নেতা নেই যিনি এই পরিস্থিতিতে সকল পক্ষকে আস্থায় নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আর এরকম শূন্যতার মধ্যে শেখ হাসিনাই হতে পারেন আলোকবর্তিকা।
আওয়ামী লীগে নীরবে নিভৃতে পালাবদল ঘটছে। এক সময় আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা মানে ছিলেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, শেখ সেলিম, মতিয়া চৌধুরী। এখন তাদের অধ্যায় আস্তে আস্তে যবনিকা ঘটেছে। শারীরিক ভাবে তারা অনেকেই অসুস্থ। অনেকে এখন রাজনীতিতে অপাঙ্ক্তেয় হয়ে গেছেন। বরং একটি নতুন প্রজন্মকে আওয়ামী লীগ সভাপতি সামনে নিয়ে আসছেন। তাদেরকে নীতি নির্ধারক হিসেবে জায়গা করে দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের এই পালাবদলটি শেখ হাসিনার দূরদর্শী রাজনীতির একটি অংশ বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বাংলাদেশে এখন সংবাদপত্রের লোডশেডিং চলছে। গত বুধবার থেকে সংবাদপত্র বের হচ্ছে না। টানা ৬ দিন সংবাদপত্র বন্ধের বিশ্ব রেকর্ড করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। না কোন প্রতিবাদে নয়, দাবী আদায়ের জন্য নয়। ছুটির ফাঁদে সংবাদপত্র বন্ধ আছে। সংবাদপত্রকে বলা হয় জরুরী সেবা। চিকিৎসক, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা যেমন জরুরী সেবা দেন, তেমনি সংবাদকর্মীদের কাজও হলো দেশের মানুষকে সার্বক্ষণিকভাবে সঠিক, বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দেয়া। বিশেষ করে ছুটির সময় এটার প্রয়োজন আরো বেশী। এবার দেশে একটা দীর্ঘ ছুটি। এসময় সংবাদপত্র অনেক জরুরী। আচ্ছা ভাবুন তো, ছয়দিন যদি হাসপাতালে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হতো, কিংবা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি বলতো ছয়দিন তারা দায়িত্ব পালন করবে না। তাহলে কি হতো? আমিতো মনে করি, সংবাদপত্র বন্ধ রাখার বিষয়টিও তেমনি আঁতকে ওঠার মতো। কিন্তু সংবাদপত্রের মালিকদের এনিয়ে বিকার নেই।