নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৬ পিএম, ১৭ অগাস্ট, ২০১৯
নেটফ্লিক্সের ওয়েব কন্টেন্টকে যদি কৌরব ধরি আর পাণ্ডব ধরি হল বেইজড ফিল্ম কন্টেন্ট তাহলে নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ার অশ্বত্থামা অবশ্যই সেকরেড গেমস। ওয়েব কন্টেন্ট বনাম থিয়েটার কন্টেন্টের লড়াই ইন্ডিয়া পর্যন্ত এসেছে তাই নেটফ্লিক্সের স্বাভাবিকভাবেই শুরুটা হতে হতো দুর্দান্ত। সেই শুরুটা তাদের এনে দিয়েছিল সেকরেড গেমসই। এক ধাক্কায় নেটফ্লিক্স পৌঁছে গিয়েছিল সাউথ এশিয়ার অনলাইন বেইজড ইয়ং কম্যুনিটির ঘরে ঘরে। সেকরেড গেমস সিজন ওয়ান শুধু ইন্ডিয়ার পার্স্পেক্টিভ থেকে নয় বরং নেটফ্লিক্সের পার্স্পেক্টিভ থেকেও দারুণ সংযোজন ছিল।
অনুরাগ কশ্যপ ও বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের মতো দুজন ক্রিয়েটিভ জিনিয়াস একসাথে হাত লাগালে স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো গল্প, যেকোনো ক্রিয়েটিভ প্রসেস অসামান্য হতে বাধ্য। হলোও তাই, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি ও সাইফ আলি খানের হাত ধরে বিক্রম চন্দ্রের বইটি প্রাণ পেলো নেটফ্লিক্সের পর্দায়। ভারতীয় উপমহাদেশের মিথগুলোকে সঙ্গী করে গণেশ গায়তোন্ডে ও সরতাজ সিং এর দুটি চরিত্র দর্শককে ঘুরিয়ে নিয়ে আসলো মুম্বাইয়ের ৪০ বছরের রাজনীতি, আন্ডারওয়ার্ল্ড, ধর্মকেন্দ্রিক ব্যবসা-দাঙ্গা ও ২৫ বছর ধরে বুনে যাওয়া একটা প্ল্যান। ২৫ দিনে বলে যাওয়া এই গল্পকে দু-ভাগে ভাগ করে দুটো সিজনের ১৬টি এপিসোডে দেখানো হয়েছে। প্রতিটি এপিসোডের নাম মিথিক চরিত্র বা উপাদান থেকে নেয়া, যে নামের গভীর সংযোগও থাকে গল্পের সাথে। প্রথম সিজনে গণেশ আর সরতাজের হাত ধরে যে মাস্টারপ্ল্যানের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল সেটিই পূর্ণতা পায় এই সিজনে এসে। কিন্তু কতটা পূর্ণতা পেল?
দ্বিতীয় সিজনের শুরুতেই আমরা গণেশকে আবিষ্কার করি কেনিয়ার সমুদ্র উপকূলে। কিন্তু সে কীভাবে এলো, কেন এলো সেটি এখনো ধোঁয়াশার জালে। ভারতীয় অ্যাম্বাসির ঝানু কর্মকর্তা কুসুম দেবী যাদব আর গুরুজির স্নেহধন্য ত্রিবেদীর হাত ধরে কেনিয়ায় পা রাখে গণেশ গায়তোন্ডে। তার মাঝে এখনো ঈসাকে হত্যা করার ক্ষোভ, আর অ্যাম্বাসির কুসুম চায় গণেশকে ব্যবহার করে ঈসার মাধ্যমে শহীদ খানকে খুঁজে পেতে। কে এই শহীদ খান সেটির উত্তর আমরা শেষের দিকে পেয়ে যাই। সময়টা নব্বই এর দশকে, গণেশ কেনিয়ায় তার ব্যবসা শুরু করে, ওদিকে মুম্বাইতে গ্যাং-গ্রুপ এগুলোর পেছনে পুলিশ লেগেছে খুব ভালো করেই। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বাড়ছিল সে সময়ে। বর্তমান টাইমলাইনে সরতাজদের হাতে তখন মাত্র ১২ দিন সময়, এর মাঝে মুম্বাইকে রক্ষা করতে হবে পাশাপাশি অনেক প্রশ্নের উত্তরও খুঁজতে হবে। ‘সিদুরি’ পর্বে আমরা দেখা পাই গিলগামেশ মহাকাব্যের জ্ঞানী-বিজ্ঞ নারী সত্তা সিদুরিকেই, অর্থাৎ সরতাজের হাত ধরে দেখা পাই আশ্রমের প্রধান বাতিয়া এবেলমেনের। এই নারী গুরুজির কতোটা আপন সেটিও আমরা জানতে পারি পরে গিয়ে। ওদিকে গণেশ দেখা করতে যায় গুরুজির সাথে। ক্রোয়েশিয়ায় গুরুজির আশ্রমে আমরা দেখা পাই ম্যালকম, ভোসলেসহ তরুণ বাতিয়াকেও। তখনও গণেশ ভোসলে বাদে আর কাউকেই চেনে না। কিন্তু আমরা দর্শকরা জানি এদের প্রত্যেকের সাথে জড়িত গণেশ। ওদিকে সরতাজ আবিষ্কার করে তার পিতা দিলবাগ সিংও গুরুজির স্নেহধন্য ছিলেন। গণেশের সাথে দিলবাগের দেখাও হয়ে যায় আশ্রমে একদিন। গুরুজি সত্যযুগের স্বপ্ন দেখেন, কলিযুগ থেকে সত্যযুগে তিনি যেতে চান। কিন্তু সত্যযুগে যেতে হলে বলিদান দিতে হয় অনেককিছু। তাই তিনি তার স্নেহধন্যদের তৈরি করে নিতে চান সে কাজের জন্য। যে গণেশ মুম্বাই দাপিয়ে বেড়িয়েছে সে গুরুজির আশ্রমে এসে যেন বিশ্রাম খুঁজে পায়। তার তৃতীয় পিতা হিসেবে গুরুজিকে সম্মান করে এমনকি আশ্রমে দৈহিক সান্নিধ্যে সে গুরুজিকে কামনা করে। ওদিকে সরতাজ জানতে পারে মুম্বাইয়ে নিউক্লিয়ার এটাক হতে যাচ্ছে আর এই এটাক করতে যাচ্ছে শহীদ খান। সে আন্দাজ করে আশ্রমের সাথে, গায়তোন্ডের সাথে এই এটাকের কোন যোগসূত্র রয়েছে, যোগসূত্র রয়েছে তার পিতার সাথেও। সে আশ্রমে গিয়ে তথ্য আবিষ্কার করতে গিয়ে নিজেই আশ্রম থেকে দেয়া নেশাদ্রব্যে এডিক্ট হয়ে যায়। সে নেশাদ্রব্য তৈরির ইতিহাসও আমরা দেখতে পারে ফ্ল্যাশব্যাকে গণেশের টাইমলাইনে। গুরুজির সত্যযুগে নিয়ে যাবার জন্য গণেশকে সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন, দিলবাগ সিং-ম্যালকম-বাতিয়া-ভোসলে-ত্রিবেদী সকলেই এই মাস্টারপ্ল্যানে কোন না কোনভাবে যুক্ত হয়ে যায়। আর সরতাজ তখনও শহীদ খানের খোঁজে, এই শহীদ খানকে সাহায্য করেছে ম্যালকম। অর্থাৎ গুরুজির প্ল্যান বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে শহীদ খানের হাত ধরে। কিন্তু গায়তোন্ডে সেখানে বিপক্ষে চলে যায়। সে নিজেকে অশ্বত্থামা দাবী করে, কিন্তু আমরা দিলবাগ সিং এর নোটবুকে লেখা পাই দিলবাগ সিংকে গুরুজি অশ্বত্থামা বলেছিলেন। গণেশকে সবদিক থেকে ধোঁকা দেয়া হয়, একসময়ের মুম্বাইয়ের ত্রাস গণেশকে আমরা দেখি গুটিয়ে যেতে। কিন্তু গণেশ মৃত্যুর আগে ঠিকই সরতাজকে জানিয়ে যায় ব্লাস্টের কথা, গুরুজির প্ল্যান নাকি গণেশের চাওয়া কোনটা সফল হয় সেটিই দর্শক জানতে চাচ্ছিল কিন্তু শেষে গিয়েও সেটির উত্তর পাওয়া হল না।
সেকেন্ড সিজন অনেকদিক থেকেই প্রথম সিজনে বেঁধে দেয়া সুরের কাছাকাছি যেতে পারে নি। এর অনেকগুলো কারণই আছে। যার মাঝে প্রধান কারণ হল অতিরিক্ত সাবপ্লট এবং সেসব সাবপ্লটের ফিনিশিং না দেয়া।
এই সিজনে আসা সাবপ্লটগুলো-
- শহীদ খান সাবপ্লট
- ত্রিবেদী সাবপ্লট ( বাপ ত্রিবেদী)
- শহীদ খানের মা- সরতাজের মা এর সম্পর্কের কানেকশনের সাবপ্লট
- দিলবাগ সিং এর সাবপ্লট
- সরতাজ আর তার স্ত্রীর সাবপ্লট
- যাদব স্যারের সাবপ্লট
- মাজিদের সাবপ্লট
- পারুলকার আর ভোসলের সাবপ্লট
- জোজো আর জামিলার সাবপ্লট
- ম্যালকমের সাবপ্লট
- মুত্থুর সাবপ্লট
এসবের মাঝে একটা-দুটো বাদে সবগুলোই আনফিনিশড রেখে দেয়া হয়েছে সম্ভাব্য সিজনের জন্য অবশ্যই। যার কারণে প্রথম সিজনে স্ট্যাবলিশ করা অনেককিছুই হারিয়ে গিয়েছে। স্ট্যাবলিশড সাবপ্লট, ক্যারেক্টার অনেককিছুই এ সিজনে পাত্তাই পায় নি। বান্টি, কান্তা বাই, পারুলকার, ভোসলে, ত্রিবেদী এই ক্যারেক্টারগুলো একেবারেই স্ক্রিনটাইম পায় নি আর পেলেও কোন ভালো ফিনিশিং পায় নি। গুরুজি আর বাতিয়ার চরিত্রও একেবারেই একরৈখিক ছিল। এই দুটো চরিত্রই ওশো ও মা আনন্দ শীলার অনুকরণে করা। ওশোর রাজনীশ মুভমেন্ট, আশ্রম, নিজস্ব কাল্ট প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন টেরোরিস্ট এক্টিভিটিতে তাঁর অনুসারীদের আবিষ্কার করা সবকিছুই মিলে যায় গুরুজির ফিকশনাল চরিত্রের সাথে। সেদিক থেকে জোজো আর যাদব এই দুই চরিত্রে সুরভিন ও আম্রুতা এই দুই নারী চুটিয়ে অভিনয় করেছেন। অন্যদিকে শাহিদ খানের স্ক্রিনটাইমই ছিল না বলতে গেলে, আমি নিশ্চিত এই চরিত্র তৃতীয় সিজনের প্রধান চরিত্র হবে কেননা চিত্রায়নে রনভীর শোরের মতো অনবদ্য অভিনেতা আছেন, তাকে ওয়েস্ট করার কোন মানেই হয় না। মূল চরিত্রের কথা বললে প্রথম সিজনে গণেশ যতটা উজ্জ্বল ততটাই অনুজ্জ্বল ছিলেন মনে হল দ্বিতীয় সিজনে এসে, আর প্রথম সিজনে গণেশের আড়ালে পড়ে যাওয়া সরতাজ এবার যেন জ্বলে উঠেছেন স্বমহিমায়। নাওয়াজের অভিনয় নিয়ে কিছুই বলার নেই তবে ওর চরিত্রের গভীরতা কমে গেছে মনে হল। হয়তো সোর্স ম্যাটেরিয়াল প্রথম সিজনেই সব ফুরিয়ে ফেলেছেন অনুরাগ। তা নাহলে অনুরাগের কাজ ঠিক অনুরাগের মতো হল না বলতে হবে। গায়তোন্ডের টাইমলাইন থেকে গতি একেবারেই হারিয়ে গেছে বলে মনে হল, স্রেফ লাফিয়ে লাফিয়ে সময় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া বাড়তি কিছু ছিল না। অন্যদিকে বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের জায়গায় আসা নীরজা ঘেওয়ানের নির্দেশনা অপূর্ব লেগেছে। সরতাজের টাইমলাইন ও গল্প দুটোতেই দারুণ গতি ছিল। সবমিলিয়ে গতবার যেমন গায়তোন্ডের গল্প সরতাজের গল্পকে কমপ্লিমেন্ট করেছিল সেরকমটা এবার হয়নি বলেই হয়তো অগোছালো ঠেকছে সবকিছু। দুজন নিজেদের মতো করে নিজেদের গল্প বলে গেছেন বলেই কি এই অবস্থা নাকি এডিটিং এ গিয়ে সব গড়বড় হয়েছে বোঝা গেল না ঠিক। তৃতীয় সিজনের জন্য সাবপ্লট গোছানো আছে, সরতাজ-শহীদ খান-দিলবাগ-বাতিয়া কেন্দ্রিক গল্প হবার কথা। তবে গণেশকে যদি আবার গল্পে নিয়ে আসতে হয় সেক্ষেত্রে দারুণ কিছু করেই ফিরিয়ে আনতে হবে। গণেশকে গণেশের মতো ব্যবহার না করতে পারলে নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ার এই অশ্বত্থামা সামনেই হয়তো মুখ থুবড়ে পড়বে। দ্রোণাচার্য (অনুরাগ কশ্যপ) কী শুনছেন?
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বহুল আলোচিত সিনেমা 'অ্যানিমাল' দেখেনি এখন খুব কম মানুষ আছে। সেই
ছবিতে রণবীর কাপুরের অভিনয় মুগ্ধ করেছে সকলকেই। এই ছবির শেষেই পরিচালক দেখিয়েছিলেন
যে এই সিনেমার সিক্যুয়েল আসছে। অনেকেই মুখিয়ে আছেন এই সিক্যুয়েলের জন্য, যার নাম 'অ্যানিমাল
পার্ক'।
সম্প্রতি সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা জানিয়েছেন কবে আসছে সেই ছবি। সাম্প্রতিক
অ্যাওয়ার্ড শোতে সিনেমাটির পরিচালক শেয়ার করেছেন, ২০২৬ সালে রণবীর কাপুর-অভিনীত
'অ্যানিমাল'-এর সিক্যুয়েলের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি সন্দীপ রেড্ডি সিনেমাটিক ইউনিভার্সের
সম্ভাবনার কথাও বলেছেন।
পুরস্কার গ্রহণ করার সময় হোস্টরা তাকে রণবীর কাপুর-অভিনীত 'অ্যানিমাল'
সিক্যুয়েল 'অ্যানিমাল পার্ক' সম্পর্কে কিছু বিশদ প্রকাশ করতে বলায় তখনই তিনি জানান,
ছবিটি ২০২৬ সালে ফ্লোরে যাবে।
তিনি আরও যোগ করেছেন, 'অ্যানিমাল পার্ক' আসলে 'অ্যানিমাল'-এর চেয়ে
বড় এবং আরও বন্য একটি সিনেমা হবে। যদিও এমন দাবি তিনি আগেও করেছিলেন।
অ্যানিমাল রণবির কাপুর বলিউড সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা
মন্তব্য করুন
আবারও আদালত প্রাঙ্গণে সগর্বে উচ্চারিত
হলো অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের নাম। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র মা, যিনি সন্তানের
পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়েছেন। বাঁধনের আগে এবং পরে এখনো কোনো নারী সন্তানের অভিভাবকত্ব
পাননি।
গত সোমবারের (২২ এপ্রিল) নাবালক সন্তানের
অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন
করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এই কমিটিকে নীতিমালা
দাখিল করতে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ
সোমবারের (২২ এপ্রিল) রুলসহ এই আদেশ দেন।
অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর
১৯(খ) ধারা অনুসারে কোনো নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অন্য কারো পক্ষে
সেই নাবালকের অভিভাবক হওয়ার সুযোগ নেই।
আইনটির এই ধারা সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক
অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে
সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এক রুলে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এর পরই আদালত প্রাঙ্গণে
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আইনজীবী সারা হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এটা অনেক বড় একটা অর্জন।
বাংলাদেশে যদিও নারীরা সন্তানদের হেফাজত (কাস্টডি) পাচ্ছেন, একটি ঘটনা ছাড়া আর কাউকে
অভিভাবকত্ব দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তাঁর সন্তানের অভিভাবকত্ব
পেয়েছিলেন। এর বাইরে বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো উদাহরণ নেই যে নারীরা সন্তানের অভিভাবকত্ব
পাচ্ছেন।’
উচ্চ আদালতের এই রুল জারির পর ভীষণ
উচ্ছ্বসিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ অভিনেত্রী। আজ থেকে ছয় বছর আগে (২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল)
ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান একমাত্র কন্যাসন্তান
মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব দিয়েছিলেন বাঁধনকে।
বাঁধন বলেন, ‘আইনটা পরিবর্তনের একটা
প্রক্রিয়া শুরু হলো, এটা সবচেয়ে আনন্দের। যাঁরা আপিল করেছেন তাঁদের সাধুবাদ জানাই।
আমার অর্জনটা শুধু আমারই থাকুক তা চাই না, আমি চাই বাংলাদেশের সব মেয়ের অধিকার থাকুক
তাঁর সন্তানের ওপর।’
তবে, ছয় বছর আগে যখন কন্যা সায়রার অভিভাবকত্ব
পেয়েছিলেন, তখনো এই রায়ের মাহাত্ম্য পুরোপুরি বুঝতে পারেননি বাঁধন। সময়ের সঙ্গে এই
রায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন তিনি।
বাঁধন বলেন, ‘আমার পক্ষে যখন রায় এলো,
তখন এর গুরুত্ব এতটা বুঝতে পারিনি। বাচ্চাটাকে কাছে রাখতে চেয়েছি, যেহেতু ওর সম্পূর্ণ
ভরণ-পোষণ আমিই করতাম, আমি কেন ওর অভিভাবক হতে পারব না! বাচ্চার বাবা কোনো দায়িত্বই
কখনো পালন করেননি। আদালতে সেটা প্রমাণও করতে পারেননি, তার জন্য আমাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া
হয়েছিল।’
অভিভাবকত্ব আইন নিয়ে দীর্ঘ লড়াই করেছিলেন
তিনি। অধিকার আদায়ে লড়াই করে অর্জন করেছেন দীর্ঘ অভিজ্ঞতাও। এই আইন সম্পর্কে তিনি বলেন,
‘উনি (আইনজীবী সারা হোসেন) কিন্তু উল্লেখ করেছেন, সাধারণত মাকে কাস্টডি দেওয়া হয়, শারীরিক
জিম্মা যেটাকে বলে। বাবা বেঁচে থাকতে মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয় না। যদি বাবা না পান
সে ক্ষেত্রে দাদা-চাচা, এমনকি নানা-মামারা অভিভাবকত্ব পান। অনেক পরে আসে মায়ের নাম।
যে কারণে আমারটা ব্যতিক্রমী একটা রায় ছিল। আমাদের প্রচলিত আইনে একটা লুপ হোল কিন্তু
আছে, মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া যাবে, তবে যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে সেটা খুবই কঠিন। কাস্টডি
আর অভিভাবকত্ব এক নয়। অভিভাবকত্ব পুরো ডিফারেন্ট একটা বিষয়। আমাদের আইনে বাবা ন্যাচারাল
গার্ডিয়ান, অভিভাবকত্বের প্রশ্নে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত মায়ের অস্তিত্ব নেই আসলে। এসব
জায়গায় অনেক সংশোধনী আনা প্রয়োজন।’
ক্লাস ফাইভের ছাত্রী সায়রা সারাক্ষণ
মায়ের আশপাশেই থাকে। প্রায়ই মা-মেয়ে একসঙ্গে দেশ-বিদেশ ঘুরতে বেরিয়ে পড়ে। মেয়েকে ঘিরেই
কাজের শিডিউল করেন বাঁধন। মেয়ে এখন বড় হচ্ছে, মায়ের এই অর্জন সম্পর্কে তার কি কোনো
ধারণা আছে? বাঁধন বলেন, ‘ও বুঝতে পারে।
তবে এত কিছু ওর ধারণায় নেই। শুধু জানে, ওর মা ওকে কাছে রাখার জন্য লড়াই করেছে এবং জিতেছে। এটাও জানে, তাকে কাছে রাখার জন্য তার মা সমাজ ও আইনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে। তার মা একজন ফাইটার, এটা সে এখন ভালোই বোঝে। টিচাররা, আশপাশের সবাই যখন ওর সামনে এসব বলে, তখন ও বুঝতে পারে মা ওর জন্য কী করেছে। তবে বিষয়টার গুরুত্ব ওর বোঝার জন্য অনেক কঠিন। সেই ক্ষমতা এখনো তার হয়নি।’
মন্তব্য করুন
সদ্যই সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র
উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এই নির্বাচনে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল)
সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ও ইউটিউবারদের
ওপর হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিএফডিসিতে
শিল্পী সমিতির সদস্য শিবা শানুর সঙ্গে এক সাংবাদিকের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন আশপাশে থাকা উপস্থিত সাংবাদিকরা সেখানে এগিয়ে গেলে
বাগবিতণ্ডা হয়। এরপরই সাংবাদিক ও ইউটিউবারদের ওপর হামলা চালানো হয়।
এদিকে বিএফডিসির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা তাৎক্ষণিক ছড়িয়ে পড়লে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদের
ঝড় উঠে। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষরা ঘটনাটিকে চরম ন্যক্কারজনক বলে অভিহত করেন। একইসঙ্গে
প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
অন্যদিকে চিত্রনায়ক রিয়াজও এ ঘটনায়
তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের
ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক স্ট্যাটাস লিখেন এই তারকা। স্ট্যাটাসে বলেন, ‘প্রিয় সাংবাদিক
ভাইয়েরা, একজন চলচ্চিত্র শিল্পী হিসেবে আজকে আমি লজ্জিত ও আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি
আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
এ নায়ক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আজ বিএফডিসিতে
যে ঘটনা ঘটেছে সেটি কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। যদিও আমি ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলাম
না। সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি।
তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাদের
কাজের সঙ্গে দর্শকদের মেলবন্ধন তৈরি করেন। তাদের বিএফডিসির ভেতরে নির্মমভাবে পেটানো
হয়েছে, যা চরম ন্যক্কারজনক। এ ঘটনার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে খারাপ
লাগছে। চলচ্চিত্র শিল্পী ও সন্ত্রাসীর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। শিল্পীরা কখনো সন্ত্রাসীর
ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে না। আমি আহত সাংবাদিক ভাই-বোন ও তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা
প্রকাশ করছি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই’।
এছাড়া এ ঘটনায় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে
২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিকরা। এই সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধান না হলে শিল্পী
সমিতির সব ধরণের সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকবেন সাংবাদিকরা।
এ ব্যাপারে নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি
মিশা সওদাগর জানিয়েছেন, গণমাধ্যমকর্মীরা যে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন সেটি তারা
মেনে নিয়েছেন।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে আল্টিমেটামটি
কার্যকর হবে। একইসঙ্গে এদিন থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে শিল্পী সমিতি। হামলার শিকার
সাংবাদিকদের চিকিৎসাভার নিয়েছে সংগঠনটি।
আর এ ঘটনায় যেসব কর্মীদের যন্ত্রাংশের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণ দেবে সমিতি।
চিত্রনায়ক রিয়াজ বিএফডিসি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিকরা।
বিএফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় এই
আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। ২৪
ঘণ্টার মধ্যে সমাধান না হলে শিল্পী সমিতির সব ধরনের সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকবেন
বলে জানানো হয়।
জানা গেছে, সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধিদল চলচ্চিত্র সমিতির ভেতরে
গিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এসময় বর্তমান কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগর জানান, গণমাধ্যমকর্মীরা
যে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে, সেটা তারা মেনে নিয়েছেন। বুধবার সকাল থেকে আল্টিমেটামটি
কার্যকর হবে।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে শিল্পী সমিতি।
হামলার শিকার সাংবাদিকদের চিকিৎসাভার গ্রহণ করেছে চলচ্চিত্র সমিতি। এ ঘটনায় যেসব কর্মীদের
যন্ত্রাংশের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণ দেবে সমিতি।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথগ্রহণ
অনুষ্ঠান ছিল মঙ্গলবার। শপথগ্রহণ শেষে সমিতির অফিসে খবরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মিথুন
আল মামুন সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন অভিনেত্রী ময়ূরীর মেয়ের।
এ সময় অভিনেতা শিবা শানু ওই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনি
না যেতে চাইলে তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অফিস থেকে বের করে দেন শানু। এর মধ্যে সেটি থামাতে
এগিয়ে আসেন উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা। এ সময় সমিতির আরেক নেতা জয় চৌধুরী ‘মার মার’ বলে
তেড়ে যান সাংবাদিকদের দিকে। এতেই শুরু সাংবাদিকদের ওপর হামলা। চেয়ার থেকে শুরু করে
গাছের ডাল দিয়েও সাংবাদিকদের পেটানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অভিনেতা শিবা শানু, শিল্পী সমিতির
নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো
এই মারধরের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন
ডিপজল নির্বাচিত হন।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি আল্টিমেটাম
মন্তব্য করুন