নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২০ পিএম, ০৮ অক্টোবর, ২০১৭
বয়সটা ৭৭ এর কোঠায় পা ফেলল। চলাফেরাটা এখন করতে পারেন না বললেই চলে। জীবনের সুন্দর সময়গুলো মনে করে সময় কাটে। মাঝেমধ্যে চলে আসে বিষন্নতা। কাজের নেশা , কাজের ক্ষুধা বড্ড পীড়া দেয়। এখন তো অবসর। সে অবসর নিতে মন যে চায় না। সে মনের আরও খোঁজ নিয়ে প্রবীণ অভিনেতা প্রবীর মিত্র মুখোমুখি হলেন বাংলা ইনসাইডারের, শোনালেন বেলাশেষের গল্প।
বাংলা ইনসাইডার: শরীর কেমন আছে?
প্রবীর মিত্র: কিছুটা অসুস্থ বলা চলে। ঠিকমতো হাঁটতে পারি না। লাঠির সাহায্য নিয়ে হাঁটতে হচ্ছে। যে কারণে ঘর থেকে সাধারণত প্রয়োজনের বাইরে একেবারেই বের হই না।
কাজের প্রস্তাব কী আসে এখনো?
না। কেউ মনে রাখেনি। হাতে কাজ নেই অনেকদিন ধরে। আমার শেষ কোন ছবিটা যে মুক্তি পেয়েছিল নিজেরও খেয়াল নেই। হাতে কাজ থাকলে হয়তো সুস্থ হয়ে যেতাম। এই বয়সের কোনো মানুষ যদি ঘরে বসে থাকে, সে ক্রমশ অকেজো হয়ে পড়ে। আমিও অকেজো হয়ে পড়ছি।
কাজের প্রস্তাব আসে না কেন? আপনার কী মনে হয়?
আগের থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ অনেক কমে গেছে। বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক। সিনিয়রদের এখন আর কেউ কাজে নিতে চায় না। শুধু আমি কেন, সিনিয়র সবারই প্রায় এই অবস্থা। আমাদের নিয়ে কেউ ভাবে না। অথচ জীবনের সবচেয়ে বড় সময়টা এ অঙ্গনেই কেটেছে। একসময় স্ত্রী সন্তানদের সময় দিতে পারতাম না। প্রায় রোজই এ নিয়ে স্ত্রীর বকাঝকা শুনতে হত। মাঝে মধ্যে তো বলতো গিয়ে রিকশা চালাও। রিকশাচালকরা বরং নিয়ম করে ঘরে ফেরে। তোমার তো দিনরাত নেই। এখন আমি স্ত্রীর ব্যাথাটা, রাগটা বুঝতে পারি। আজ আমার স্ত্রী বেঁচে নেই। তার কষ্টটা বুঝতে পারি। একাকিত্ব অনুভব করতে পারি। এখন আমি বড় একা। কাজ নেই বলে কেউ পাশে নেই। খোঁজ খবর নেওয়ার প্রয়োজনও মনে করে না কেউ। এখন ভাবছি কার জন্য এত কাজ করেছি।
সিনিয়র শিল্পীদের পাশ কাটিয়ে কী ইন্ডাস্ট্রি চলতে পারে? আপনার অভিজ্ঞতা কী বলে?
দীর্ঘদিন ধরে কোনো একজন মানুষ যে কোনো সেক্টরে থাকলেই তার অভিজ্ঞতা হয়। অভিজ্ঞতা কিন্তু অমূল্য। তখন তিনি অনেককিছু দিতে পারেন। কিন্তু কৌশলে তাকে পাশ কাটানো হয়। কেন? শক্ত সামর্থ্যরা সিনিয়রদের সামনে তো অনৈতিক কিছু করতে পারে না। তখন আর তাঁকে ডাকা হয় না বিভিন্ন অজুহাতে। এটা আমাদের সিনিয়র শিল্পীদের ক্ষেত্রেও দেখেছি। এজন্য খুব কষ্ট পাই। মনে হয় অভিনয়ের জায়গা থেকে আমাকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অভিনয় তো ভালোবাসার জায়গা। এখানে সবাইকে সবার ভালবাসা দিয়ে বন্ধন তৈরী করতে হবে।
পুরনো কোনো স্মৃতি, যা খুব বেশি মনে পড়ে?
ফেলে আসা দিনগুলো তো সবই সুন্দর ছিল। এখন জীবনটা একঘেয়ে। দিন রাত ২৪ ঘন্টা অবসর। সকালে ওঠার তাড়া নেই। রাত জাগার কষ্ট নেই। বই,পত্রিকা পড়ে আর টিভি দেখতে কতক্ষণ ভালো লাগে। পুরোনো ঢাকার স্মৃতিচারণ করতে গেলে খুব কষ্ট হয়। যাদের সঙ্গে স্কুল-কলেজ জীবনের সময়টা কাটাতাম তাদের বেশিরভাগ হয় কলকাতা নয়তো বিভিন্ন পেশার জন্য পুরনো ঢাকা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গেছে। তাদের সঙ্গে খুব একটা দেখা বা যোগাযোগও হয় না। রাখতেও পারিনি। বিউটি বোডিং, ক্যাফে কর্নার, চৌরঙ্গীতে তখন জম্পেশ আড্ডা দিতাম। দীর্ঘদিন হয়ে গেছে সেখানে যাওয়া হয় না। আর আগের মতো আড্ডাও হয় না। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বলে আজ আমি একেবারেই বন্ধুহীন ও একা। এ স্মৃতিগুলো আজ আমাকে বেশি পীড়া দেয়। আর আমার সহধর্মিণীতো আজ থেকে ১৫ বছর আগে আমাকে একা রেখে চলে গেছে। এরপর থেকে আমার জীবনটা কেমন যেন হয়ে গেছে।
চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগ বলতে আপনার কাছে কোন সময়টাকে মনে হয়?
অনেকের মতো আমার কাছেও ৬০-৯০ এর দশক বাংলা ছবির স্বর্ণযুগ ছিল। মেধাসম্পন্ন লেখক, পরিচালক, অভিনেতারা চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজন ছিল। তখন চলচ্চিত্রের সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তারা সবাই সৃষ্টির আনন্দে মেতে থাকতেন। পয়সাটা তখন মুখ্য ছিল না। মুখ্য ছিল ‘কিছু একটা করার চেষ্টা’তাই অনেক ভালো ভালো চলচ্চিত্র হয়েছিল সেসময়। সেই সময়ের নির্মাতাদের কিন্তু খুব বেশি অর্থসম্পদ ছিল না। আমাদের সময় কেউই সিনেমায় আসেনি যে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে হবে। বরং অনেকে অর্থের লোভ ত্যাগ করেছে।
তৃপ্তি পেয়েছেন এমন কিছু চলচ্চিত্র?
বেলাল আহমেদ পরিচালিত ‘নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রটি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ‘রিমার্কেবল’ ছবি। চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে। শুরুতে বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামান অনেক সাহায্য করেছে। ‘জলছবি’র পর নায়ক হিসেবে ‘চাবুক’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ,জালিয়াত’, ‘তীর ভাঙা ঢেউ’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’, ‘রামের সুমতি’, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা’ সহ আরও বেশকিছু ছবিতে অভিনয় করেছি। এইচ আকবর পরিচালিত‘জীবন তৃষ্ণা’ ছবিতে শিল্পী আবদুল জব্বারের গাওয়া ‘এ আঁধার কখনো যাবে না মুছে আমার পৃথিবী থেকে’ গানটি আমাকে সবচেয়ে বোশি পরিচিতি এনে দেয়। মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও মিলেছিল। প্রায় তিনশতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছি।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ
সম্পাদক পদে লড়াই করছেন অভিনেত্রী নিপুন আক্তার। আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকেই
নিজ প্যানেল নিয়ে ভোট কেন্দ্রে আছেন তিনি।
এবার তার বিপরীতে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন শক্তিশালী
প্রার্থী মনোয়ার হোসেন ডিপজল। তবে নিজের জয়ে শতভাগ আশাবাদী এই অভিনেত্রী। যদিও গতবার
নির্বাচনে জায়েদ খানের বিপক্ষে ১৩ ভোটে হেরেছিলেন নিপুন।
নিপুন বলেন, ‘ডিপজলকে নিয়ে ভয় কাজ করছে না। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করতে আমার কোনো ভয় নেই। তিনি একজন ভালো মনের মানুষ। তাই তাকে নিয়ে আমার আলাদা কোনো
ভয় নেই।’
নির্বাচনের নিরাপত্তা ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিপুন বলেন, ‘এবার
ভোটার উপস্থিতি আগেরবারের তুলনায় অনেক কম। শিল্পীরা সবাই আসছে আস্তে আস্তে আসছেন। তবে
আলহামদুলিল্লাহ খুব সুন্দর পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলছে। আর নিরাপত্তার কথা যদি বলি, তাহলে
বলবো ঠিক আছে। কারণ এখানে সবাই শিল্পী, জাতীয় তারকা। তাদের নিরাপত্তায় এমনটা থাকবে
এটাই স্বাভাবিক। এ নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সকাল থেকেই ভোটার উপস্থিতি
কম। ভোট শুরুর আগে থেকে প্রার্থীরা উপস্থিত হলেও, ভোটারদের উপস্থিতি তেমন একটি দেখা
যায়নি।
নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে আছেন প্রযোজক নেতা
খোরশেদ আলম খসরু। তার সঙ্গে সদস্য হিসেবে আছেন এজে রানা ও বিএইচ নিশান। শুক্রবার সকাল
৯ টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। চলবে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত।
এবারের নির্বাচনে দুই প্যানেলের একটিতে আছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল আর অন্যটিতে একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক মাহমুদ কলি ও চিত্রনায়িকা নিপুন আক্তার।
এর আগে, গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১২টায় শেষ হয়েছে ভোটের প্রচার-প্রচারণা।
ভোট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার ভোটের আগের দিন প্রচারণা
নিষিদ্ধ থাকলেও সারা দিনই বিচ্ছিন্নভাবে প্রার্থী ও ভোটারদের আনাগোনা দেখা গেছে এফডিসিতে।
এদিকে নির্বাচন কমিশননের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে ৫৭১ জন ভোট দিতে পারবেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ডিপজল নিপুন নির্বাচন
মন্তব্য করুন
রাশ্মিকা
মন্দানা থেকে ক্যাটরিনা কাইফসহ
ডিপফেকের শিকার হয়েছেন বলিউডের একাধিক অভিনেত্রী। তাদের সাথে এবার যোগ হলেন
বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খান।
সম্প্রতি
আমির খানের একটি ‘ডিপফেক’ ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ওই
ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে,
আমির একটি বিশেষ রাজনৈতিক
দলের হয়ে নির্বাচনি প্রচারে
অংশ নিয়েছেন।
২৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে আমির
খানকে ‘জুমলা’র থেকে সতর্ক
থাকতে বলতে দেখা গেছে।
আমিরের অফিসের দাবি, অভিনেতার মুখ মর্ফ করে
ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি
এমন কোনও প্রচার ভিডিও
শুট করেননি।
আমির
খানের অফিসের পক্ষ থেকে বিবৃতি
দিয়ে জানানো হয়েছে, ৩৫ বছরের বলিউড
ক্যারিয়ারে আমির খান কখনও
কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রচার
করেননি। আমিরের অফিস থেকে অভিযোগ
পেতেই পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯ (অন্যকে নকল
করা), ৪২০ (প্রতারণা) সহ
একাধিক ধারায় এবং তথ্য প্রযুক্তি
আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ডিপফেক ভিডিও রাজনৈতিক প্রচার মামলা আমির খান
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪–২৬ মেয়াদি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ
শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ
শুরু হয়।
ভোটগ্রহণ চলাকালীন দুপুরে বিরতি দিয়ে ফের ভোট শুরু হয়ে বিকেল পাঁচটা
পর্যন্ত চলবে। পরে ভোট গণনা শেষে একইদিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
এবারের নির্বাচনে ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির ৬ জন স্বতন্ত্রসহ ২টি
প্যানেল থেকে মোট ৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১। মিশা সওদাগর ও মনোয়ার
হোসেন ডিপজল প্যানেল ও মাহমুদ কলি ও চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার প্যানেল
এরই মধ্যে নির্বাচনের সব আয়োজন শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীও প্রস্তুত। সুষ্ঠুভাবে ভোট পরিচালনা ও ফলাফল ঘোষণার স্বার্থে সকাল
থেকে ভোটের ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত মূল ফটক থেকে এফডিসির বিভিন্ন জায়গায় প্রায় আড়াইশ
পুলিশ সদস্যসহ সাদা পোশাকে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা উপস্থিতি রয়েছেন।
এ ছাড়াও ভোটকে আরও নিরবচ্ছিন্ন করতে এফডিসির বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তি
আরও ৩১টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
এর আগে, গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১২টায় শেষ হয়েছে ভোটের প্রচার-প্রচারণা।
ভোট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার ভোটের আগের দিন প্রচারণা
নিষিদ্ধ থাকলেও সারা দিনই বিচ্ছিন্নভাবে প্রার্থী ও ভোটারদের আনাগোনা দেখা গেছে এফডিসিতে।
এদিকে নির্বাচন কমিশননের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে
৫৭১ জন ভোট দিতে পারবেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন
মন্তব্য করুন
রাশ্মিকা মন্দানা থেকে ক্যাটরিনা কাইফসহ ডিপফেকের শিকার হয়েছেন বলিউডের একাধিক অভিনেত্রী। তাদের সাথে এবার যোগ হলেন বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খান। সম্প্রতি আমির খানের একটি ‘ডিপফেক’ ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ওই ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, আমির একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিয়েছেন।