ইনসাইড আর্টিকেল

আইজ্যাক নিউটন: সর্বকালের শ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:১১ এএম, ০৪ জানুয়ারী, ২০২০


Thumbnail

সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানীর নাম বলতে বললে নিশ্চয় প্রথমেই আসবে আলবার্ট আইনস্টাইনের বা আইজ্যাক নিউটনের নাম। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিজ্ঞানে এরকম বিজ্ঞানীদের অবদানের কথা আমাদের কল্পনার বাইরে। বিশেষ করে আইজ্যাক নিউটন। এই মহান ব্যক্তিটির জন্মদিন আজ। ১৬৪৩ সালের ৪ জানুয়ারি লিংকনশায়ারের উল্‌সথর্পম্যানরে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

নিউটন না থাকলে বিজ্ঞান আজকের অবস্থানে আসতো না। নিউটন না থাকলে আইনস্টাইন তার যুগান্তকারী আবিষ্কার করতে পারতেন না। নিউটন না থাকলে মানবজাতি আজ রকেটে চড়ে মহাকাশ চষে বেড়ানোর কথা কল্পনাও করতে পারতো না। হ্যাঁ, নিউটন না থাকলে এমন আরও অনেক কিছুই হতো না, যা ছাড়া আজকের বিশ্ব কল্পনাও করা মুশকিল। তার আগে পর্যন্ত বিজ্ঞানের সীমানা ছিল ছোট। তিনি সেটাকে প্রশস্ত করে দিয়ে গেছেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞানের আমূল পরিবর্তন করে দিয়ে গেছেন। আর তার অবদানের জন্যই আজ আমরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পদার্থবিজ্ঞানের উপস্থিতি খুঁজে পাই।

পৃথিবীর ইতিহাসে অনেকেই আছেন যারা বিজ্ঞানের অভূতপূর্ণ উন্নতি সাধন করেছিলেন। যাদের ভুল-শুদ্ধ দিয়েই সাজানো হয়েছে বিজ্ঞানের ভিত্তি। তাদের মধ্যে একজন হলেন স্যার আইজাক নিউটন। বিজ্ঞানের প্রায় প্রতিটি শাখায় যিনি গবেষণা করে গেছেন। বলা যায়, তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই যেন রত্ন ফলেছে। অংকশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা এবং পদার্থবিদ্যায় তাঁর গবেষণাকে কেন্দ্র করে এককালে সারা বিশ্বে সৃষ্টি হয়েছিল বিরাট আলোড়ন। প্রকৃতপক্ষে তিনি তিনটি শাস্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন যেগুলো গতিসূত্র নামে পরিচিত।

তাঁর পিতার নামও ছিল আইজ্যাক নিউটন। তার জন্মের কয়েকমাস আগেই পিতার মৃত্যু হয়। তাঁর মা হ্যানা নিউটন, স্বামীর স্মৃতি হিসেবে পুত্রের নাম রেখেছিলেন আইজ্যাক নিউটন।

নিউটনের যখন দু’বছর বয়স, তখন তাঁর মা নিকটস্থ গীর্জার পাদ্রী বার্নাবাস স্মিথকে বিয়ে করেন। এই বিবাহকালে তিনি তাঁর সকল সম্পত্তি নিউটনের নামে লিখে দেন । বিধবা মায়ের সঙ্গে জীবনের প্রথম তিন বছর কেটে যায়। এসময় তাঁর মা বিয়ে করেন। একরকম অবাঞ্চিত হিসেবে নিউটন তাঁর দিদিমার কাছে লালিত-পালিত হন। একরকম এতিম অবস্থায় বিজ্ঞানী নিউটনের শৈশব-কৈশোর কাটে। এই গ্রামের পাঠশালাতে তাঁর শিক্ষাজীবনের শুরু হয়। ১২ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি এই স্কুলে লেখাপড়া করেন।

এরপর তিনি নিকটস্থ প্যানথাম শহরে গিয়ে কিংসনামক একটি স্কুলে ভর্তি হন। এসময় তাঁর অসাধারণ মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। বালক নিউটনের জ্ঞান প্রতিভায় শিক্ষকগণ মুগ্ধ হয়ে যান।

দ্বিতীয়বার নিউটনের মা বিধবা হলে তাঁর মা ও সৎ ভাইবোনসহ আবার একত্রে বসবাস শুরু করেন। তখন মায়ের একার পক্ষে ক্ষেত-জমিজমা তদারকি করা সম্ভব হল না। অবশেষে মা স্কুল ছাড়িয়ে চৌদ্দ বছরের নিউটনকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এলেন। কিন্তু নিউটন তাঁর ক্ষেত খামারের কাজের পাশাপাশি তাঁর বন্ধুর বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যান।

ভাগ্যের চাকা হঠাৎই সচল হলো। কাকা উইলিয়াম ভাইপোর জ্ঞানতৃষ্ণায় মুগ্ধ হয়ে নিজের কাছে নিউটনকে রেখে দিলেন। কাকা কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আবার নিউটন স্কুলে ভর্তি হলেন। এবার সম্পূর্ণ কাকার উদ্যোগে। একবছর পর নিউটন ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হলেন। শুরু হলো নতুন জীবন।

অঙ্কে ছিল নিউটনের বেশ ভালো দখল। যেকোনো জটিল অঙ্কের সহজ সমাধান করে দিতেন তিনি। প্রকৃতির দুর্জেয় রহস্য তাঁকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করত। নিউটনের এ বিশ্বাস ছিল প্রবল, একমাত্র বিজ্ঞানের মাধ্যমেই প্রকৃতির এই গোপন রহস্যকে উদঘাটন করা সম্ভব।

১৬৬৫ সালে নিউটন স্নাতক ডিগ্রি লাভ করলেন। কলেজে ছাত্র থাকাকালীন তিনি কিছু জটিল তথ্যের আবিষ্কার করেন- বাইনমিয়াল থিওরেম Binomial theorem), ফ্লাক্সসন (Fluxions) যা বর্তমানে ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস (Interegal Calculus) নামে পরিচিত। এছাড়াও তিনি আবিষ্কার করেন কঠিন পদার্থের ঘনত্ব (The method for Calculating the area of curves or the volume of slides)| ১৬৬৬ সালে Fluxions পদ্ধতি উদ্ভাবনের পরপরই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সন্বন্ধে চিন্তা-ভাবনা করতে শুরু করেছেন। অবাক করা বিষয়, এসময় নিউটনের বয়স তখন মাত্র ২৪ বছর।

মধ্যাকর্ষণ তত্ত্বের একটি ঘটনা। কলেজ ছুটিতে মায়ের কাছে গিয়েছেন। প্রকৃতির পরিবেশে প্রেমিকাকে নিয়ে বসে আছেন বাগানে। সেই মুহূর্তে হঠাৎ খসে পড়ল একটা আপেল মাথা বরাবর। মগ্ন হলেন অন্যচিন্তায়। ঠোঁটের কোণায় অজান্তে জলন্ত সিগারেট ধরলেন প্রেমিকার হাতে। ফলে প্রেমিকা দৌড়ে পালালেন। এদিকে বিজ্ঞানী নিউটনের মাথায় খুরপাক খেলো, কেন আপেলটি আকাশে না উঠে মাটিতে এসে পড়ল? এভাবে মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্বের সৃষ্টি হলো। যদিও এই চিন্তার সূত্রপাত হয়েছিল বহু পূর্বেই। নিউটন গবেষণা প্রকাশ করলেন তাঁর কালজয়ী গ্রন্থ “Mathmetical principles of Nature philosophy”।

তখন তিনি ২৫ বছরের এক তরুণ। এসময় তিনি চাঁদ ও অন্য গ্রহ-নক্ষত্রের গতি নির্ণয় করতে সচেষ্ট হলেন। কিন্তু তাঁর উদ্ভাবিত তত্ত্বের মধ্যে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকা সত্ত্বেও তাঁর কৃতিত্বের অবদানস্বরূপ ট্রিনিটি কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফেলো হিসেবে নির্বাচিত করলেন। এ যেনো এক দুর্লভ পাওয়া। এবার তিনি আলোর প্রকৃতি ও তাঁর গতিপথ নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন। আর এই কাজের প্রয়োজনেই তিনি তৈরি করলেন প্রতিফলক টেলিস্কোপ (Reflecting telescope)। পরবর্তীকালে মহাকাশ সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যে উন্নত ধরনের টেলিস্কোপ আবিষ্কৃত হয়। তিনিই তাঁর অগ্রগামী পথিক।

নিউটন ট্রিনিটি কলেজের গণিতের অধ্যাপক হিসেবে নির্বাচিত হলেন। এ সময় তিনি আলোর বর্ণচ্ছটা নিয়ে গবেষণার কাজে আত্মমগ্ন হলেন। ইংল্যান্ডের রয়াল সোসাইটিও নিউটনের বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজ শুরু হলে তাঁকে সোসাইটির সদস্য নির্বাচিত করলেন। তখন তাঁর বয়স ২৯ বছর মাত্র। ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের পাশে তাঁর স্থান হলো। সোসাইটির প্রথম সভায় নিউটন তাঁর আলোকতত্ত্ব নিয়ে একটি প্রবন্ধ পাঠ করলেন। তাঁর বিষয়বস্তুর সঙ্গে একমত না হতে পারলেও সোসাইটির অন্য সদস্যগণ উচ্চকণ্ঠেই তাঁর বৈজ্ঞানিক নিবন্ধের প্রশংসা করলেন।

মানুষের জানা ছিল না চন্দ্র-সূর্যের সঠিক আয়তন। নিউটন তা নির্ণয় করলেন। প্রতিষ্ঠা হল মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব। আর এই তত্ত্বের যাবতীয় বিবরণ লিখলেন তাঁর Pricipia Mathmetical গ্রন্থে। বইটি প্রকাশের ফলে অধিকাংশ মানুষের কাছেই মনে হলো এই বই জটিল দুর্বোধ্য। এজন্য নিউটনের এক দার্শনিক বন্ধু একদিন জিজ্ঞাসা করলেন, কিভাবে তোমার লেখার অর্থ বোঝা সম্ভব। নিউটন তাকে একটি বইয়ের তালিকা দিয়ে বললেন, এই বইগুলো আগে পড়ুন তাহলে আমার তত্ত্ব বোঝা সম্ভব।

১৬৭১ সালে তিনি লন্ডনের রয়াল সোসাইটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৬৭২ সালে তাঁর প্রথম বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ ‘আলোক বিজ্ঞান’ প্রকাশিত হয়। ১৬৮৪-১৬৮৬ সালে তিনি লেখেন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘প্রিন্সপিয়া’। ১৬৮৯ সালে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৬৯৬ সালে তিনি সরকারি টাকশালের ওয়ার্ডেন এবং পরে প্রধান পদ লাভ করেন। ১৭০৩ সালে নিউটন পেলেন এক অভূতপূর্ব সম্মান। তিনি রয়াল সোসাইটির সভাপতি। আমৃত্যু তিনি এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৭০৫ সালে রানী এয়ানি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেন। রানীর পক্ষ থেকে নিউটনের নাইটহুড উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

নিজেই নিজের বিরাট তত্ত্বকে সঠিকভাবে চিনতে পারেননি বিজ্ঞানী নিউটন। তার ভাষায় তিনি বলেন ‘আমি এতদিন কেবল নুড়ি পাথর কুড়িয়েছি।’ অসাধারণ আবিষ্কারের পরও তিনি ছিলেন অসুখী মানুষ। মৃত্যুর আগে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এই মহান বিজ্ঞানী মৃত্যুবরণ করেন ১৭২৭ সালের ২০ মার্চ। সাতদিনের মাথায় ওয়েস্ট মিনিস্টার এরিতে সমাধিস্ত করা হয় তাকে।

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী বলেই তার পরিচয় শেষ করা যায় না। তিনি এসকল বিশেষণের উর্ধ্বে। শেষ করছি কালের আরেকজন শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর তার সম্বন্ধে করা উক্তিটি দিয়ে।

‘প্রকৃতি ছিল নিউটনের কাছে একটি খোলা বইয়ের মতোই, যার পাতাগুলো নিউটন কোনোরকম কষ্ট ছাড়াই পড়তে পারতেন।’

–আলবার্ট আইনস্টাইন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

সুশিক্ষা প্রয়োগেই হতে পারে প্রজন্মের বিকাশ

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের শিক্ষার সাথে সুশিক্ষিত কথাটা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। নৈতিক গুণাবলী না থাকলে যেমন সুশিক্ষার আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় তেমনি শিক্ষা পরিণত হয় কুশিক্ষায়। প্রকৃত শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন, মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করা কিংবা সুনাগরিকে পরিণীত হওয়া। যা চলামান জীবনের প্রতিফলন হয়ে দেশ ও জাতীর উন্নতিতে অবদান রাখবে। তাই শিক্ষিত হওয়ার চেয়ে  সুশিক্ষিত হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।

সুশিক্ষিত একজন মানুষের মধ্যে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকবে। মনকে সুন্দর করবে। মানসিকতাকে পরিপূর্ণ করবে মানবিকতায়। অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসবে। এক কথায় প্রজন্মকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। আর তাই শিক্ষাকে পর্যবসিত করতে হবে সুশিক্ষায়।

 সুশিক্ষার অর্থ হচ্ছে শিক্ষার এমন এক অবস্থা, যে শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলে। একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত মানুষ হিসাবে গড়ে ওঠে সুশিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে।

শিক্ষিত সমাজে অনেক ব্যক্তিই প্রতিনিয়ত হাজারও জঘন্য ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। আর নিজেকে শিক্ষিত বলে দাবি করছে একদল স্বার্থপর শিক্ষিত মানুষ। যাদের কাছে জিম্মি দেশের নানান শ্রেণী পেশার মানুষ,বৃদ্ধ,শিশু কিংবা নারীরা।

শিক্ষিতের ব্যানার প্রয়োগ করে হাসিল করছে তাদের নিজস্ব স্বার্থ। যা কিনা দেশ জাতীর সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব নামধারী শিক্ষিত মানুষদের যেন দেখার কেউ নেই।

দেশের বর্তমান ঘটনাবহুল পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, বাবা তার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে, আবার তাকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে, শিক্ষক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। আবার ছাত্র শিক্ষককে ধর্ষণ করছে তাহলে, শিক্ষিত সমাজে শিক্ষিত ব্যক্তির মানসিকতা কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে। যেখানে বর্তমান সমাজে বাবার কাছেই তার মেয়ে নিরাপদে থাকে না। এটাই কি তাহলে শিক্ষা?

যেখানে বাবা মায়ের কলিজার টুকরা শিক্ষিত সন্তান তার পিতা-মাতাকে রেখে আসে বৃদ্ধাশ্রমে।

শিক্ষা নামক শব্দকে ব্যবহার করে শিক্ষিত নামক লোগো লাগিয়ে ঘুরছে কিছু শিক্ষিত মহল। আর এর মারাত্মক ফলাফল হচ্ছে এসব ঘটনাগুলো। সমাজে সন্তানকে বাবা-মা বড় করছেন। শিক্ষার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু সন্তান তার বাবা-মাকে ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। তাহলে এখানে আমাদের শিক্ষার আলো কোথায় গেল?

যদি শিক্ষার বদলে মানুষ সুশিক্ষা অর্জন করত, তাহলে হয়তো নারীরা লাঞ্ছিত হতনা, হতনা বিবাহ বিচ্ছেদ, পরকীয়া, শিশু ধর্ষণ, কিংবা পরম মমতাময়ী মা কে থাকতে হত না বৃদ্ধাশ্রমে।

তবে, দেশের বড় বড় দায়িত্বতে থাকা শিক্ষিত ও সুশিক্ষিত দায়িত্ববান ব্যক্তিরা, কিংবা রাজনীতি, সমাজ কিংবা কোন নাম করা প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা তাদের সুশিক্ষিত মনোভাবে যদি দেশের তরুন প্রজন্মকে শিক্ষিত নয়, বরং সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য ভূমিকা রাখেন তাহলে হয়ত বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের নাম প্রথম সারিতে নিয়ে যাবে।


সুশিক্ষা   প্রজন্ম   বিকাশ   তরুণ তরুণী   শিক্ষা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

নারীর প্রতি এক পৃথিবী সম্মান থাকুক প্রতিটি পুরুষের

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ০৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

পুরুষের কাছে নারী মানে মহীয়সী, নারী মানে আত্মবিশ্বাসী, নারী মানে সম্মান, নারী মানেই মাতৃত্ব, নারী মানে ঠিক যেন তাজা পবিত্র ফুল। যে ফুলকে আগলে রাখতে হয় পরম মমতায় ভালোবাসায় যত্নে। নারী নামক এই ফুলকেই সাজিয়ে রাখতে হয় ফুলদানিতে। যেন সম্মান ছড়ায় এক পৃথিবী সমপরিমাণ।

পুরুষের কাছে নারী হয় ভালোবাসার ফুল, আবার সেই নারীর জন্যই কোন পুরুষ হারায় তার কূল। কেননা পৃথিবীতে নারী স্থান যতটাই অপ্রত্যাশিত থাকে না কেন, একটি সংসার, পরিবার, সমাজ কিংবা জাতি পরিপূর্ণই হয় এই নারীর কারণেই।

পুরুষবিহীন যেমন পৃথিবী অসম্পূর্ণ তেমনি নারীবিহীন এই জগতসংসার পরিপূর্ণ নয়। কেননা, মাতৃগর্ভের প্রবল নিরাপত্তা ডিঙ্গিয়ে ধূলোর এই পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয় ঠিক নারীর গর্ভ থেকেই।

পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, পুরুষের ন্যায় নারীদের জীবনেও উচ্চ মানসম্পন্ন এবং মূল্যবান ব্যক্তিত্বের অবস্থা থাকা জরুরী। এটি নারীদের অধিকার, স্বাধীনতা, সমর্থন, এবং সমানুভূতির মাধ্যমে তাদের সম্প্রদায়ে এবং সমাজে প্রতিরোধশীল ও উন্নত করতে সাহায্য  হয়ে থাকে। এটি একটি ব্যক্তির যোগাযোগে, সাধারণ জীবনে, শিক্ষা, কাজে, এবং সমাজে প্রভাবিত হওয়ার একটি উপায়ও হতে পারে।

যুগের বিবর্তনে প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের পরিবর্তন হওয়াটা যেমন স্বাভাবিক, তেমনি সেই পরিবর্তনের ফলে যুগের মহিমায় পৃথিবীতে প্রযুক্তিগত দিক থেকে পুরুষদের মতে নারীদেরও ভূমিকা চোখে পড়ার মতো। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুরুষরা নারীদেরকে কর্মস্থলে তাদের সমান অবস্থানে রাখা জরুরী। এতে তৈরি হবে কর্মবন্ধন, সম্পূর্ণ হবে প্রযুক্তির উদ্দেশ্যের সফলতা আর পরিপূর্ণ হবে পৃথিবীর চলমান প্রথা।

এছাড়াও ধর্মীয় জায়গা থেকে দেখা যায়,  একটা সময় যেখানে গোটা দুনিয়া যেখানে নারীকে একটি অকল্যাণকর তথা সভ্যতার অপ্রয়োজনীয় উপাদান মনে করতো সেখানে ইসলাম নারীকে দিয়েছে অনন্য মর্যাদা। যেসব দোষ নারীকে দেওয়া হতো আল্লাহ তা’আলা কুরআন-উল-কারিমে আয়াত নাজিল করে নারীকে সেসব দোষ অপনোদন থেমে মুক্তি দিয়েছে। তাই নারীদের তার নিজ প্রেক্ষাপটে নিজের স্ব স্ব সঠিক দায়িত্বটা অবগত হয়ে তা পালনে মনযোগী হলে সঠিক পুরুষের কাছে নীতিগত নারী ঠিক সঠিক মূল্যয়ন ই পাবে।

তবে, এক শ্রেনির পুরুষ নামক কিছু অপ্রত্যাশিত মানুষের কাছে নারীর মর্যাদা নেই বল্লেই চলে, এদের মধ্যে কিছু পুরুষের মস্তিস্কহীন, কিছু পুরুষ মনুষ্যত্বহীন আর কিছু পুরুষ অমানুষের গণনায় অবস্থিত। কেননা পৃথিবীতে নারীদের যে পুরুষ সম্মান ভালোবাসা আর মমতায় আগলে রাখতে পারেনা বা জানেনা, সেই পুরুষ কখনোই সঠিক পুরুষের মধ্যে পড়েনা। এতে করে ওইসব নারীদের কাছে পুরুষদের অবমানা হয় যে সব নারী সঠিক পুরুষদেরকে দায়িত্ববান মনে করেন।

তবে, পুরুষ সর্বদা নারীদেরকে তার মনুষ্যেতর স্থান থেকে পৃথিবীর সেরা সম্মানটা দেওয়া উচিত। কেননা সঠিক পুরুষ আর সঠিক ব্যক্তিত্বের অধিকারি হতে এই নারীদের ভূমিকাই অপরিসীম। অবস্থান, আস্থা আর বিশ্বাষের দিক থেকে নারী পুরুষ উভয়েই সমান্তরাল হয়ে জীবন পরিচালনা করা উচিত। এতে করে তৈরি হবে সঠিক বন্ধন। হোক সেটা সামাজিক, পারিবারিক কিংবা জাতীগত। চলে যাবে অবমাননা, চরিত্রহীনতা কিংবা নারীর মূল্যহীনতা। থেকে যাবে হৃদয়ের বন্ধন ভালোবাসা সম্মান আর চলমান জীবন পরিচালনার সুশিল সমাজের পারিবারিক বন্ধন। তৈরি হবে নারী পুরুষের সঠিক বন্ধন আর ভবিষ্যত প্রজন্মের সঠিক নির্দেশনা।


নারীর প্রতি সম্মান   পুরুষের ভালোবাসা   নারী দিবস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

অধিকার আদায়ের স্মারক নারী দিবস

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

“পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের চোখে নারী এভাবেই ধরা পড়েছে। তবে সবসময় নারীদের এমন মহান দৃষ্টিতে দেখা হতো না। এর জন্য করতে হয়েছে নানা আন্দোলন। নারীর সংগ্রামের ইতিহাস পৃথিবীতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

১৮৫৭ সালের ৮ই মার্চ নারীদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন বলে বিবেচিত। এ দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের একটি সূচ তৈরি কারখানার নারী শ্রমিকেরা আন্দোলন শুরু করেন। কারখানার মানবেতর পরিবেশ, ১২ ঘণ্টার কর্মসময়, অপর্যাপ্ত বেতন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের বিরুদ্ধে তাদের এক প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। কিন্তু পুলিশ এই শান্তিপূর্ণ মিছিলে মহিলা শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন চালায়। বহু শ্রমিককে আটক করা হয়। এই ঘটনার স্মরণে ১৮৬০ সালের ৮ মার্চ মহিলা শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করে নিউইয়র্ক সূচ শ্রমিকেরা। এভাবেই সংঘবদ্ধ হতে থাকে মহিলা শ্রমিকদের আন্দোলন। এক সময় তা কারখানা ও ইউনিয়নের গন্ডি অতিক্রম করে।

১৯০৮ সালে জার্মান সমাজতন্ত্রী নারী নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জার্মানিতে। এই সম্মেলনে নারীদের ন্যায্য মজুরী, কর্মঘণ্টা এবং ভোটাধিকারের দাবী উত্থাপিত হয়। ১৯১০ সালের ২য় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ডেনমার্কের কোপেনহেগে। এতে ১৭টি দেশের প্রতিনিধিরা যোগ দেয়। এ সম্মেলনেই ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯১১ সালে প্রথম ৮ মার্চ দিবসটি পালিত হয়। ১৯১৪ সাল থেকে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে দিবসটি বেশ গুরুত্বের সাথে পালিত হতে থাকে। ১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘ দিবসটি পালন করতে থাকে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দিবসটি পালনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয় ১৯৭৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর। এ সময় জাতিসংঘ দিবসটির গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে দিবসটি পালনের আহবান জানায়। এর ফলে অধিকার বঞ্চিত নারী সমাজের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির পথ সুগম হয়। নারীর অধিকার রক্ষা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এটি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।

বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে আসছে। নারী দিবসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বাংলাদেশের সংবিধানে নারী দিবসের শিক্ষাসমূহের প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। কেবল নারী হওয়ার কারণে যাতে কেউ বৈষম্যের শিকার না হয় তার আইনগত সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনে নারীর সুরক্ষার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে এবং নারীর নিরাপত্তায় বিশেষ বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান শিল্প পোশাক শিল্প, যার অধিকাংশ শ্রমিকই নারী। পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ, কর্মঘণ্টা এবং ন্যায্য মজুরী পাওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ গুরুত্বের সাথে দেখে থাকে। যে নারী শ্রমিকদের মধ্য থেকেই দিবসটির উৎপত্তি হয়েছিল বাংলাদেশে। বর্তমানে সেরূপ নারী শ্রমিক রয়েছে কয়েক লক্ষ। নিউইয়র্কের সেদিনকার সূচ কারখানার নারী শ্রমিক ও বাংলাদেশের পোশাক তৈরি কারখানার নারী শ্রমিক যেন একই পথের অনুসারী। বাংলাদেশ প্রতি বছর। যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে থাকে। কিন্তু এখানকার নারী পোশাক শ্রমিকেরা কতটা সুরক্ষিত তার প্রশ্ন থেকেই যায়।

বাংলাদেশে নারীদের জন্য অনেক আইন ও বিধি বিধান থাকলেও বাস্তব ক্ষেত্রে এখনও নারীরা উপেক্ষিত। নারীদের গৃহস্থালী কাজের অর্থনৈতিক স্বীকৃতি নেই, মাতৃত্বকালীন ছুটির অভাব, নিরাপত্তার অভাব ইত্যাদি লক্ষ্যণীয়। তবে এখন এর এ সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমেছে। বাংলাদেশের নারী শ্রমিকেরা যে সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে এর পেছনে নারী দিবসের কিছুটা হলেও ভূমিকা আছে বলে মনে করা হয়।

 

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে নারী শ্রমিকেরা আজও নানা ভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশের রানা প্লাজা ও তাজরিন ফ্যাশনস এর দুর্ঘটনার পর দেখা গেছে, এতে হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী। নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও মজুরী অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশেই নিশ্চিত হয়নি বলে মনে করা হয়। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন কোনো উপকারে এসেছে বলে মনে হয় না। অনেকের মতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস বর্তমানে কেবল একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে, যার বাস্তব কোনো সফলতা নেই।

বর্তমান যুগকে বলা হয় গণতান্ত্রিক যুগ, সমতার যুগ। কিন্তু এ সময়েও নারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। নারীরা এখন কাজের জন্য ঘরের বাইরে যাচ্ছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গবেষণা, শিল্প-সাহিত্য ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই নারীর পদচারণা লক্ষণীয়। কিন্তু তারপরও নারীরা এখনও বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। নারী উন্নয়নের প্রথম এবং প্রধান বাধা হলো পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে সব সময় পুরুষের অধীন এবং ছোট করে দেখা হয়। সামাজিক কুসংস্কার নারীর অগ্রগতিকে মেনে নিতে পারে না। এটিও নারী উন্নয়নের পথে এক বড় অন্তরায়। নারী যদি শিক্ষার আলোয় আলোকিত না হয় তবে সে সচেতন হয় না। তার আয় বাড়ে না। ফলে সে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়। এরূপ অবস্থা নারীকে দুর্বল করে দেয়।  নারীর কাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না থাকাও উন্নয়নের পথে বাঁধার সৃষ্টি করে।

নারী উন্নয়ন করতে হলে নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। নারী উন্নয়নে সমাজ ও রাষ্ট্রকে একসাথে কাজ করতে হবে। নারীর প্রধান শক্তি  শিক্ষা, এ শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে হবে। নারীশিক্ষার বিস্তার ঘটলে নারীর কর্মসংস্থান হবে, আয় বাড়বে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তৈরি হবে। নারী-পুরুষের বিদ্যমান বৈষম্য দূর করা। এর জন্য নারীর নিরাপদ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে নারীর ক্ষমতায়ন, নারী স্বার্থের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সহ নারীর উন্নয়নে সহায়ক সেবা প্রদান করতে হবে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস নারীর অধিকার আদায়ের আন্দোলনের এক স্মারক দিবস। নারীর প্রতি অবিচার ও বৈষম্যের প্রতিবাদে এক বলিষ্ট পদক্ষেপ ছিল এই দিনটির আন্দোলন। যদি বর্তমানে আমরা। নারীর ন্যায্য অধিকার ও চাহিদা পূরণ করতে পারি, তবেই দিবসটির উদ্যাপন সার্থক হবে।

নারী উন্নয়নের প্রথম এবং প্রধান বাধা হলো পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে সব সময় পুরুষের অধীন এবং ছোট করে দেখা হয়। সামাজিক কুসংস্কার নারীর অগ্রগতিকে মেনে নিতে পারে না। এটিও নারী উন্নয়নের পথে এক বড় অন্তরায়। নারী যদি শিক্ষার আলোয় আলোকিত না হয় তবে সে সচেতন হয় না। তার আয় বাড়ে না। ফলে সে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়। এরূপ অবস্থা নারীকে দুর্বল করে দেয়। নারীর কাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না থাকাও উন্নয়নের পথে বাঁধার সৃষ্টি করে।

নারী দিবস নিয়ে কিছু শিক্ষার্থী, ডাক্তার ও কর্পোরেট সেক্টরে নিয়োজিত কর্মজীবী নারীদের মতামত জানতে চাইলে তারা জানায়, মানুষ এখন নারীদের অধিকার নিয়ে সচেতন হয়েছে। নারীরা নিজেরাও তাদের মতামত নিয়ে বেশ সোচ্চার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ) জানায়, মেয়েদের নিজের প্রতি আত্নবিশ্বাসী হতে হবে, কখনো দমে যাওয়া যাবেনা। একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করে এগিয়ে যেতে হবে।

প্রতিবছর নারী দিবস উদযাপন নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক আয়োজন করে থাকে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৪ এর প্রতিপাদ্য - নারীর সম অধিকার, সমসুযোগ, এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস নারীর অধিকার আদায়ের আন্দোলনের এক স্মারক দিবস। নারীর প্রতি অবিচার ও বৈষম্যের প্রতিবাদে এক বলিষ্ট পদক্ষেপ ছিল এই দিনটির আন্দোলন। যদি বর্তমানে আমরা নারীর ন্যায্য অধিকার ও চাহিদা পূরণ করতে পারি, তবেই দিবসটির উদযাপন সার্থক হবে।


অধিকার   স্মারক   নারী দিবস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

জাগো নারী বহ্নি-শিখা

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারী দিবস উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সুদীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। বিশ্বের প্রান্তে প্রান্তে নারীদিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য নারীর প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা ও সংহতি জ্ঞাপন, নারীর আর্থিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবদমন প্রতিহত করা এবং নারীর বিরুদ্ধে নানামুখী আক্রমণ, সন্ত্রাস ও নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে নারীর মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

১৮৫৭ সালে সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন। সেই মিছিলে চলে সরকারি দমন-পীড়ন। প্রতিবাদে নারীরা ক্রমেই সংগঠিত হতে থাকেন।

সর্বপ্রথম ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনে নেতৃত্বে দেন নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন। ক্লারা ছিলেন জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন।

এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক না0রী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছরের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন।

এই সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয় যে, পরের বছর, অর্থাৎ ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে অংশ নেয় দেশের গণতান্ত্রিক ও সমাজতন্ত্রীরা। এরপর ১৯১৪ সাল বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয় এবং দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে।

তবে, শতবছরেরও পুরনো নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই অনেক সাফল্য অর্জন করলেও নারী-পুরুষের সমতা সুনিশ্চিত হয়নি। সমাজে এখনও নারীরা পশ্চাৎপদ ও অবহেলিত। এই অবদমন আর্থিক ক্ষেত্রে যেমন প্রকট, তেমনি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও সুস্পষ্ট। নারী বিষয়ক তথ্য-পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে এ সত্য প্রতিভাত হয় যে, নারীরা ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে।

পশ্চিমা কিছু কিছু দেশে সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা ও অংশগ্রহণে নারী ও পুরুষের সমতার বিষয়টি কিছুটা অগ্রসর হলেও উন্নয়নকামী দেশে অসাম্য ভয়াবহ। অনেক দেশেই নারীরা মানবিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ও মানবিক অধিকার বঞ্চিত।

বাস্তবতা হলো এই যে, নারীর প্রতি কর্মক্ষেত্রে, পাবলিক প্লেসে, গৃহে, বিদ্যাপীঠে নিপীড়ন, নির্যাতন ও নৃশংসতা চলছে। যৌন লালসার শিকার হচ্ছে শিশুরাও। নারী শ্রমিকের উপযুক্ত মর্যাদা ও মজুরি দেওয়া হচ্ছেনা।

নানা গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক নির্যাতনের ভয়ংকর ঘটনার তথ্য। যৌতুক ও অর্থের জন্য চলছে নারী হত্যা। সামগ্রিক অপরাধের পরিসংখ্যানের সিংহভাগ জায়গা দখল করে রেখেছে নিহত, নির্যাতিত, আহত নারী।

পাশবিক বর্বরোচিত কায়দায় মধ্যযুগীয় নৃশংসতা যেমনভাবে নারীর উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রামে, গঞ্জে, গৃহকোণে, তেমনিভাবে নারীর সম্ভ্রম হানিকর বহু ঘটনা ঘটছে শহরের শিক্ষিত সমাজের অভিজাত এলাকা, অফিস ও বিশ্ববিদ্যালয়ে।

দক্ষিণ এশিয়ায় নারী নির্যাতন ও পীড়ন সম্ভবত অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে। দিল্লি, বেঙ্গালুরু, ঢাকা, করাচি, চট্টগ্রামে নারী নির্যাতনের রোমহষর্ক ঘটনায় উত্তাল হয়েছে প্রতিবাদী মানুষ।

বিশ্ব নারী দিবসে এসব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশে দেশে কথা ও, প্রতিবাদ জারি রেখেছে আন্দোলনকারীরা। নারীর অধিকার নিশ্চিত করে সমতাসূচক বাড়ানোর জন্য নেয়া হচ্ছে নানা কর্মসূচি।  এইসব আশাবাদী উদ্যোগ শুধু নারী দিবসেই নয়, সারা বছরই গ্রহণ করা জরুরি। সমাজের টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও মর্যাদায়, সম্মানে, অধিকারে এগিয়ে আনা প্রগতি ও মানবতার দাবি। কুসংস্কার, পশ্চাৎপদতা ও অবদমন থেকে নারীর মানবিক উন্নয়ন ও উত্তরণ সভ্যতার বিকাশের জন্যই জরুরি।

দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন ও সুসভ্যতার আলোকিত দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ নারী অগ্রগতিতে অনেকটুকু এগিয়েছে, এটা সত্য। অনেকক্ষেত্রেই বাংলাদেশের নারীরা অন্যান্য দেশের তুলনায় এগিয়ে। তারপরও নারীমুক্তি, নারী অধিকার, ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণের পথে বহুদূর যেতে হবে বাংলাদেশকে। ২০২৪ সালের প্রতিপাদ্য তাই, 'নারী সমানাধিকার, সমসুযোগ, এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ।

নারী মুক্তির অগ্রদূত বেগম রোকেয়া যে 'অবরোধবাসিনী'র উদাহরণ টেনে ছিলেন, নারী বিষয়ক পদক্ষেপের মাধ্যমে তাকে নিয়ে আসতে হবে আত্মমর্যাদা ও আত্মবিশ্বাসের পাদপ্রদীপের আলোয়। জাগরণের পথে সম্মিলিত পদভারে সবাইকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অবিস্মরণীয় উক্তির সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে হব, 'জাগো নারী বহ্নি-শিখা '।


নারী   বহ্নি-শিখা   নারী দিবস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

মাতৃভাষায় কেন পিছিয়ে পড়ছে তরুণরা?

প্রকাশ: ০৭:৫১ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

অন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সাহিত্যে ইংরেজি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষা। এই ভাষা বিশ্ব বাণিজ্যে মূল্যবান ভাষা হিসেবে পূর্ণভাবে স্থাপিত হলেও বাংলাদেশের প্রজন্মকালে এই ইংরেজি ভাষার ব্যবহার ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। এতে বুঝা যায়, বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু বর্তমান প্রজন্মে কাছে এই ইংরেজি ভাষার ফলে তাদের নিজস্ব বাংলা ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে নিমিষেই।  কারণ বিশ্ববাণিজ্যে, সামাজিক মাধ্যমে, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা দেশের নিজস্ব বাংলা ভাষাকে ক্রমাগতভাবে ভুলে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারন হয়ে দাঁড়াবে।

এই ইংরেজি ভাষা প্রচলনটি বর্তমান তরুণ তরুণীদের চলমান জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। কিন্তু বিদেশী এই ভাষা সারা বছর দেশে প্রচলন থাকলেও ২১ ফেব্রুয়ারি কিংবা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এই দিনটি আসলে বাংলা প্রচলন টা এক রকম বেড়ে যায়। কেননা স্মার্ট বাংলাদেশে শিক্ষিত তরুন তরুণনিদের মাতৃভাষার এই দিনটি পালন করা হয় হাঁসি আনন্দে ফুলে সুভাষিত করে।

আবার তাদের কিছু মানুষের কাছে স্মার্ট বাংলাভাষায় কথা বলতে হলে ইংরেজি শব্দ মিস্রিত করে তাদের মতামত প্রকাশ করে। কথার মাঝেই কথার ছলে ইংরেজি শব্দকে মিস্রিত করে ফেলে। তাদের ভাষায় ইংরেজি মিস্রিত বাংলা ভাষায় কথা বলা হলে বুঝা যায় যে হয়ত তারা স্মার্ট নয়ত অধিক জ্ঞানের অধিকারি।

এই ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষিত হয় বলে ইংরেজি ব্যবহারেই তারা বেশি উৎসাহবোধ করে। এতে করে চলমান জীবনে বাংলাভাষা সংস্কৃতি যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বাংলাভাষা অনেকটাই বিব্রত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

দি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্য অনুসারে বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মানুষ ইংরেজি ভাষায় কথা বলে। তবে ৪০ কোটিরও কম মানুষের ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজ এই ভাষা’। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ভাষা শিক্ষিত তরুন তরুণীদের মুখে সবচেয়ে বেসি শুনা যায়। তাহলে কি ইংরেজি ভাষা বলার ফলে বাংলাভাষাকে বিব্রত করা হচ্ছে, নাকি ইংরেজি চর্চায় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মাতৃভাষাকে হারিয়ে ফেলা হচ্ছে?

বাংলাদেশে প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার শিক্ষার ক্ষেত্রে ভাষা হল ইংরেজি। তাই প্রযুক্তিবিদ-ব্যবস্থাপকরা কার্যক্ষেত্রেও ইংরেজি প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু দেশপ্রেমের স্থান থেকে প্রযুক্তি খাতে এই ইংরেজি প্রয়োগ করলেও অনেক সময় বাংলা প্রয়োগে তারা ব্যর্থ হয়।

তবে দেশের স্বার্থে, প্রযুক্তির কল্যাণে, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে উপস্থাপন করতে হলে এই ইংরেজি ভাষা বলা বা ইংরেজি ভাষায় নিজেকে নিয়োজিত রাখাটা এক প্রকার গুরুত্বপূর্ণ। তার মানে এই নয় যে, বাংলা ভাষাকে বিব্রত করে, গুরুত্বহীন মনে করে সেখানে ইংরেজি ভাষা গুরুত্ব দিতে হবে।

এছাড়াও বাস্তবতায় দেখা যায়, বিভিন্ন শিক্ষা এবং পেশাদার ক্ষেত্রে, ইংরেজি ভাষা একটি প্রধান আবশ্যকতা হিসেবে মনোনিবেশ করছে। যার কারনে অনেকাংশে এটি আমাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহার করতে কষ্টকর বা অসম্ভাব্য হতে পড়ছে।

যদিও বর্তমান প্রজন্মের তরুন তরুণীদের কাছে ইংরেজি ভাষা বেসি প্রচলনের অন্যতম কারন হতে পারে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া। যা কিনা এই ইংরেজি ভাষা ইন্টারনেটে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে, যার কারনে তরুন তরুনীরা এই ইংরেজি ভাষা সম্পর্কে বেশি ধারণা পায়। এবং এই ধারণার ফলে তাদের নিজস্ব ভাষাকে ভুলে যাচ্ছে অনায়েসে।

এছাড়াও সারা বিশ্বের বৃহত্তম এক দিক হল বিজ্ঞান। রয়েছে প্রযুক্তি এবং শিক্ষা, এসবের ক্ষেত্রে ইংরেজি একটি প্রধান ভাষা হয়ে আছে। কেননা এসব ক্ষেত্রে কাজ করতে হলে এবং দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হলে ইংরেজি ভাষা জানা গুরুত্বপূর্ণ।

যদিও ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক যোগাযোগের জন্য হলেও ইংরেজি একটি প্রভাবশালী সরঞ্জাম কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মের তাগিদে দেশের সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশি ভাষা লালন বন্ধ করতে হবে এবং বিদেশি সংস্কৃতি এসব ভাষা মোকাবেলায় দেশীয় সংস্কৃতিকে উপযোগী করতে হবে।


মাতৃভাষা   তরুণ   অন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন