নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ১১ জুলাই, ২০২০
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তাফা বলেছেন, চোখের মাধ্যমেও কোন ব্যক্তি করোনা সংক্রমিত হতে পারে। বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানান দেশের খ্যাতনামা এই চক্ষু বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন,‘শুরু থেকেই আমরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছি। চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই আমরা চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। আমাদের ইমারজেন্সী ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে এবং রোগী আসলেই দরকার হলে অপারেশন করি এবং রোগীর যা যা চিকিৎসার দরকার দিচ্ছি। আমাদের ক্লিনিক আছে, রুটিন ওটিও আছে। অন্যান্য হাসপাতাল করোনা সঙ্কটের সময় চিকিৎসা সেবা বন্ধ করলেও আমরা সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে আসছি।’
করোনার সময়ে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিয়ে আসছি। পিপিই, মাস্ক, গ্লোভস, হেড কভারসহ যা যা সিএমএইচ থেকে পেয়েছি এবং তাছাড়াও আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য যা যা করা দরকার তাই করেছি। এর জন্যেই চিকিৎসকরা আমাদের সঙ্গে শুরু থেকে কাজ করে আসছে।’
ন্যাশনাল আই কেয়ারের অধীনে ঢাকার বাইরে যে ভিশন সেন্টারগুলো রয়েছে সেগুলোর কার্যক্রমও চলছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন বাংলাদেশে আমাদের মোট ৫০ টি সেন্টার চালু আছে এবং ২০ টি সেন্টার চালু করা হবে। সেখানে প্রত্যেকটি উপজেলায় রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকলেও আমাদের কার্যক্রম চালু আছে। টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজগুলোর রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে আগের তুলনায় রোগীর সংখ্যা কমেছে এবং নতুন আমরা মানিকগঞ্জ কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজে ১০ টি এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ১০ টি, মোট ২০ টি সেন্টার আমরা এই কোরবানির ঈদের পর চালু করবো।
করোনার সময়ে চোখের চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে রোগী এবং চিকিৎসকদের কি কি পরামর্শ মেনে চলা উচিত এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রথমত জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট সকাল ৮ টা থেকে খোলা থাকে এবং এখানে আসলেই রোগীরা তাঁদের চক্ষু পরীক্ষা করাতে পারবে। দ্বিতীয়ত আমাদের ইমারজেন্সী ইউনিটও খোলা রয়েছে, সেখানেও রোগীদের দেখা হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে পরামর্শ হিসেবে এই চিকিৎসক বলেন যে এই করোনাকালীন সময়ে টুকটাক সমস্যা নিয়ে না আসাই উচিত। এই সময়ে বাইরে বের হলে যেহেতু সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা থাকছে তাই সামান্য বিষয় নিয়ে না আসাই ভালো। তবে প্রয়োজন থাকলে রোগীরা আসবে।
রোগী আসলে আমরা বিভিন্ন সতর্কতা পালন করি। প্রথমেই রোগীর শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করি, হাত পরিষ্কার করাই এবং সামাজিক দুরত্ব পালন করে রোগীদের লাইনে দাঁড় করাই। রোগীদের টিকিট দেওয়ার সময় তাঁদের হিস্ট্রি নেওয়া হয়, তাঁর বাসায় কোন মানুষের জ্বর-কাশি আছে কিনা, সে কোন কোভিড রোগীর সংস্পর্শে আসছে কিনা- এমন কোন হিস্ট্রি থেকে থাকলে তাঁদেরকে আমরা কোভিড রোগী হিসেবে মনে করে আলাদা রুমে চিকিৎসা দেই। এছাড়া চিকিৎসকদের ক্ষেত্রেও আমরা সর্বোচ্চ সুরক্ষা মেনে চলি। প্রত্যেক রোগী দেখার পর চিকিৎসকের সুরক্ষা সামগ্রী বদল করি এবং রুম স্যানিটাইজ করি।’
চোখ দিয়ে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে কিনা এর উত্তরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালের এই পরিচালক বলেন যে, হ্যা, চোখের মাধ্যমে সংক্রমণ সম্ভব। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন,‘চীনে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি সম্পর্কে প্রথম যে চিকিৎসক বলেছিলেন, সেই চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. লি একজন রোগীকে পরীক্ষা করতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হন এবং পরবর্তীতে সেই চিকিৎসক করোনায় মৃত্যুবরণ করেন। অর্থাৎ করোনাভাইরাস চোখের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করতে পারে, নাক দিয়ে পারে এবং মুখ দিয়েও পারে।’
তিনি দেশের চক্ষু চিকিৎসকদের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে বলেন যে, ‘রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সময় আমাদের রোগীদের খুব কাছে চলে যেতে হয় এবং সেক্ষেত্রে আমাদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে। তাই এই সময়টাতে আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হচ্ছে। তবে আমরা এতটাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি যে এখন পর্যন্ত আমাদের কোন চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগী থেকে সংক্রমিত হয়নি। যারা সংক্রমিত হয়েছে তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে বাসা থেকে বা অন্য কোথাও থেকে সংক্রমিত হয়েছে।’
মন্তব্য করুন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্যের
দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
কার্যালয়ে রাজসিক সংবর্ধনায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
এর আগে বেলা ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে স্বপরিবারে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক-নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।
দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে তিন বছর দায়িত্ব
পালন করেছেন শারফুদ্দিন আহমেদ। এ পদের নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক
মহাপরিচালক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক
মন্তব্য করুন
সম্প্রতি সারা দেশব্যাপী অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ নিয়ে স্বাস্থ্যখাতে
বেশ সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের সুন্নতে খৎনা, অ্যান্ডোসকপিসহ
বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচারকালে এই অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগে বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
যার জন্য এ নিয়ে ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ সব মহলে। তাই এবার বিভিন্ন
বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে অভিযানের পর মন্ত্রণালয় সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে
ব্যবহৃত ওষুধ পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব জসীম উদ্দীন হায়দার
স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা জারি হয়েছে, যেখানে অ্যানেস্থেসিয়ায় ব্যবহৃত ওষুধ বদলানোর
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ওষুধের মান নিশ্চিত করতেও জোর দেওয়া হয়েছে এ নির্দেশনায়।
আদেশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি অ্যানেস্থেসিয়ার কারণে কতিপয় রোগীর
মৃত্যু ও আকস্মিক জটিলতা প্রতিরোধে এবং অ্যানেস্থেসিয়ায় ব্যবহৃত ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিতকল্পে
অ্যানেস্থেসিয়াতে হ্যালোজেন ব্যবহার ও এর বিকল্প নির্ধারণ এবং অ্যানেস্থেসিয়াজনিত মৃত্যু
ও এর অপপ্রয়োগ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার
কক্ষে ইনহেলেশনাল অ্যানেস্থেটিক হিসেবে হ্যালোথেনের পরিবর্তে আইসোফ্লুরেন অথবা সেভোফ্লুরেন
ব্যবহার করতে হবে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া হ্যালোথেন কেনা-বিক্রি এবং
ব্যবহার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে,
দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে হ্যালোথেন ভেপোরাইজারের বদলে আইসোফ্লুরেন
ভেপোরাইজার প্রতিস্থাপনের জন্য চাহিদা মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং নতুন অ্যানেস্থেসিয়া
মেশিন কেনার বেলায় স্পেসিফিকেশন নির্ধারণে স্পষ্টভাবে ভেপোরাইজারের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত
করতে হবে।
নির্দেশনাটির অনুলিপি ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ওষুধ প্রশাসন
অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
অ্যানেস্থেসিয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
চলতি বছরের শুরুতে বেশি দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। গত বছর ডেঙ্গুতে
দেশে রেকর্ডসংখ্যক মৃত্যু হয়েছে। এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি গত বছরের চেয়ে খারাপ হওয়ার
আশঙ্কা আছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ‘ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া
রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাসকরণ ও চিকিৎসাসেবা সুসমন্বিতকরণ’ বিষয়ে সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সামন্ত লাল সেন ও শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়ররা উপস্থিত ছিলেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে
কাজের সমন্বয় বৃদ্ধির জন্য এই সভার আয়োজন করা হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, সরকারের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব
নয়। নাগরিকদের মশা নিধনে সক্রিয় হতে হবে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মানুষকে সচেতন করার কাজ করতে
হবে, মানুষকে বোঝাতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা
সম্ভব নয়। নাগরিকদের মশা নিধনে সক্রিয় হতে হবে।
সভায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ঢাকা
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মশা নিধনের
ওষুধ সহজপ্রাপ্য করতে হবে। মানুষ দোকানে গিয়ে যেমন প্যারাসিটামল কেনেন, মশার ওষুধের
ক্ষেত্রেও তেমন বিষয়টি সহজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গত বছর কেনা মশকনিধনে বিটিআই তারা ব্যবহার করতে
পারেননি। বিটিআই সরবরাহের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছিল। এ বছর তাঁরা সরাসরি বিদেশ থেকে
বিটিআই কিনবেন।
সভায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে মূল উপস্থাপনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, ২০০০ থেকে
২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৮৪৯ জনের। শুধু ২০২৩ সালেই মারা গেছেন
১ হাজার ৭০৫ জন। এ বছর প্রথম আড়াই মাসে আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে
বেশি। মশা জরিপে মশার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা গেছে।
সভা শেষে তিনি আরও বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে
এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব গত বছরের চেয়ে বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে।
মীরজাদী সেব্রিনা তার উপস্থাপনায় বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলা
করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে নজরদারি বাড়ানো, স্বাস্থ্যকর্মীদের
সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, ডেঙ্গু রোগ ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা হালনাগাদ করা, মৃত্যু পর্যালোচনা
করা, ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নির্ধারণ উল্লেখযোগ্য।
সভায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ছয় বছরমেয়াদি (২০২৪–২০৩০) জাতীয়
কৌশলপত্র অনুমোদন করার কথা ছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তা সভায় উপস্থাপন
করা হয়নি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ বি এম আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
ডেঙ্গু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকুনগুনিয়া
মন্তব্য করুন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে এখন থেকে কথা কম, কাজ বেশি হবে। কথা কম কাজ বেশি করতে চাই। তাহলে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং তার ইচ্ছা পূরণ হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা না থাকলে আজ আমি থাকতাম না। আজ মন্ত্রী হতে পেরেছি, আপনারা যারা আমার সামনে এসেছেন তারা আসতে পারতেন না।
স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, মার্চ মাসে আমরা থাকতাম ইস্কাটনে। তখন হাতিরপুলে গেলে বঙ্গবন্ধু লুঙ্গি পরে নিচে আসতেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন। আমরা যারা কাছ থেকে দেখেছি, তারা জানি তার দেশের প্রতি কতটুকু ভালোবাসা ছিল। তিনি সবচেয়ে বেশি যেটি চিন্তা করতেন সেটি হলো, সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়া। তিনি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে কয়েকবারই গিয়েছিলেন। তখন ডাক্তার-নার্সদের উদ্দেশে বলতেন, তোমরা হচ্ছো ডাক্তার, নার্স। তোমরা যদি সময় মতো আসো, সময় মতো সেবা দান করো তাহলে আমি সন্তুষ্ট। তাহলে আমি বুঝবো আমার সারাজীবনের কষ্ট আর দেশ স্বাধীন করা সার্থক।
এ সময় আগত চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য সেবা সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ তাই আমরা সবাই মিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্ত করি। স্বাস্থ্যসেবাকে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাই, যাতে সারাবিশ্বের মানুষ তালি মারে। তারা যাতে বলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমি এবং প্রতিমন্ত্রীর একটাই চাওয়া, স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। আর এটার সবচেয়ে বড় কারিগর আপনারা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম প্রমুখ।
ডা. সামন্ত লাল সেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর। ভাইরাসটিতে এখনো প্রতি সপ্তাহে গড়ে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। দৈনিক শনাক্ত হচ্ছে
গড়ে ৪০ জনের বেশি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যারা ৫০ বছরের বেশি বয়সী ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন
রোগে আক্রান্ত, তারা এখনো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনায় মারা যাওয়া
ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৯.৫৬ শতাংশের বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সের ০.৩১ শতাংশ,
১১ থেকে ২০ বছরের ০.৬৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২.৩৮ শতাংশ ও ৩১ থেকে ৪০ বছরে ৫.৮৯
শতাংশ মারা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি অনবরত পরিবর্তন হচ্ছে। এতে ভাইরাসের
তীব্রতা কমে এসেছে। এ কারণে সারা পৃথিবীতে এখন করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এখনো সংক্রমণ
হচ্ছে। যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, তাঁদের নিয়মিত বিভিন্ন ওষুধ খেতে হয়। বিশেষ
করে যারা ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন তাঁরা এখনো করোনার ঝুঁকিতে।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘করোনা
আমাদের শিখিয়ে গেছে মানসম্পন্ন সেবা না দিলে রোগীর মৃত্যু হয়। কিন্তু সেটিরও উন্নতি
দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে এখনো অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের মহামারিতে
সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন হয়, সেটিও খুব বেশি হয়নি’।
অর্থাৎ স্বাস্থ্যব্যবস্থা করোনার আগে যা ছিল, করোনার পরও দৃশ্যমান
কোনো উন্নতি হয়নি।
গত এক দিনে শনাক্ত ৩৪
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, রোববার (১৭ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত
২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ সময় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া
যায়নি। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭.০৫১ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য
দিয়েছে।
অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার
১৫৫ জনের দেহে। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ২০ লাখ ১৬ হাজার ২৯২ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের
মধ্যে মারা গেছে ২৯ হাজার ৪৯২ জন। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে মোট শনাক্তের হার ১৩.৮ শতাংশ।
আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১.৪৪ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে যারা শনাক্ত হচ্ছে তাদের বেশির ভাগই নতুন উপধরন জেএন.১-এ সংক্রমিত। ২০২০ সালে দেশে করোনা শনাক্ত হয় পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ৫১০ জন। মৃত্যু হয় সাত হাজার ৫৫৯ জনের। ২০২১ সালে শনাক্ত হয় ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৯ জন। মৃত্যু হয় ২০ হাজার ৫১৩ জনের। ওই বছরে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন শনাক্ত হয় ২৮ জুলাই। ২০২২ সালে শনাক্ত হয় চার লাখ ৫১ হাজার ৫৮৬ জন। মৃত্যু হয় এক হাজার ৩৬৮ জনের। ২০২৩ সালে শনাক্ত হয় ৯ হাজার ১৮৯ জন। মৃত্যু হয় ৩৭ জনের।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত পঞ্চাশোর্ধ্ব ঝুঁকি
মন্তব্য করুন
সম্প্রতি সারা দেশব্যাপী অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ নিয়ে স্বাস্থ্যখাতে বেশ সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের সুন্নতে খৎনা, অ্যান্ডোসকপিসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচারকালে এই অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগে বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যার জন্য এ নিয়ে ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ সব মহলে। তাই এবার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে অভিযানের পর মন্ত্রণালয় সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত ওষুধ পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে।