নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:১৩ পিএম, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৮
প্রযুক্তি আমাদের জীবনে এনে দিয়েছে আভিজাত্য। দৈনন্দিন জীবনে আমরা যে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করি তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্মার্টফোন। আধুনিক জীবনে ছবি তোলা, গান শোনা, মুভি দেখা, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ, ইন্টারনেট ব্রাউজিং- এসব কিছু একদম হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে স্মার্টফোন। বাজারে এত এত স্মার্টফোনের ভিড়ে নিজের বাজেট আর পছন্দসই স্মার্টফোন বেছে নিতে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। আসুন জেনে নিই স্মার্টফোন কেনার সময় কোন কোন বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে-
ডিজাইন:
যেকোনো ধরনের স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এর ডিজাইন। আগে মনস্থির করতে হবে কোন ডিজাইনের স্মার্টফোন ভালো লাগে। নিজের ব্যক্তিগত চাহিদা এবং রুচি অনুযায়ী ডিজাইন পছন্দ করাই ভালো। কোন ডিজাইন ভালো চলছে, কোন ডিজাইন মানানসই তা বিবেচনা করা দরকার।
আকৃতি:
কেমন আকৃতির মোবাইল ফোনসেট কিনবেন তা একবার ভেবে নিতে হবে। কারণ মোবাইল ফোনসেট যত বড় হয় সাধারণত এর ওজনও তত বেশি হয়। অনেক সময় বেশি ওজনের ফোন হলে তা বহন আর ব্যবহারে সমস্যা হয়। তাই কম ওজনের ফোনই ভালো হয়।
ডিসপ্লে
ডিসপ্লের আকার বা রেজল্যুশন কেমন হলে ভালো হয়, তা নির্ভর করে স্মার্টফোনের ব্যবহারের ওপর। ভিডিও, ছবি বা ভিডিও সম্পাদনা অথবা ডাউনলোড ও সিনেমা দেখার জন্য ডিভাইসের ডিসপ্লে সাড়ে ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি হলে ভালো হয়। এক্ষেত্রে এইচডি বা কোয়াড-এইচডি রেজল্যুশনের ডিসপ্লে সংবলিত স্মার্টফোন উপযুক্ত। ডিসপ্লের আকার ৬ ইঞ্চির বড় হলে ডিভাইস শুধু পুরুই নয়, বহন করাও বেশ কঠিন হবে। তবে নিয়মিত মেইল চেকিং, চ্যাটিং বা সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহারের জন্য ৫ থেকে সাড়ে ৫ ইঞ্চির এইচডি বা কোয়াড-এইচডি ডিসপ্লে হলেই যথেষ্ট।
ব্যাটারি
ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে স্মার্টফোন ব্যাটারি কেমন চলবে। বিভিন্ন অ্যাপ, গেম এবং ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মতো কাজের জন্য স্মার্টফোন ব্যাটারি ৩০০০ থেকে ৩৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ারের হলে ভালো হয়। শুধু যোগাযোগের কাজে ব্যবহারের জন্য হলে ৩০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার আওয়ার বা তার আশেপাশে হলেও হয়।
র্যাম
ডিভাইস কত দ্রুত কাজ করবে, তা অনেকটা র্যামের ওপর নির্ভর করে। ইন্টারনেট সেবার সহজলভ্যতার কারণে ডাটা ব্যবহার বেড়েছে। স্বাচ্ছন্দ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার বা মুভি দেখার জন্য ২-৩ গিগাবাইটের র্যাম সংবলিত ডিভাইস হলে ভালো। তবে সাধারণ কাজের জন্য ২ গিগাবাইট র্যামের স্মার্টফোন হলেই স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করা যায়।
ক্যামেরা
মেগাপিক্সেল বেশি হলেই স্মার্টফোনের ক্যামেরাটি সেরা হবে, এমন ধারণা অনেকের। কিন্তু বিষয়টি একেবারেই তা নয়। মেগাপিক্সেলের পাশাপাশি ক্যামেরা অ্যাপারচার, আইএসও লেভেল, পিক্সেলের আকার ও অটোফোকাসের মতো ব্যাপারগুলো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ডিভাইসের ১৬ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ক্যামেরা ১২ মেগাপিক্সেলের চেয়ে ভালো হবে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। একই কথা বলা চলে ফ্রন্ট ফেসিং ক্যামেরার ক্ষেত্রেও। স্মার্টফোন ক্যামেরা ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহার করতে চাইলে বেছে নিতে পারেন এফ/২.০ অ্যাপারচারের ১২ বা ১৬ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। এতে স্বল্প আলোতেও ভালো ছবি ধারণ করা সম্ভব হবে। সাধারণ কাজের জন্য এফ/২.০ থেকে এফ/২.২ অ্যাপারচারের ৮ বা ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা হলেই চলে।
ডিসপ্লের গুণগত মান:
স্মার্টফোন কেনার সময় পর্দার গুণগত মান দেখে নেওয়াটা অনেক বেশি প্রয়োজনীয় । সবচেয়ে ভালো মানের ডিসপ্লে ১০৮০পি (১৯২০-১০৮০ পিক্সেলস) ফোনের দাম বেশ চড়া। এক্ষেত্রে কেনার আগে খেয়াল করে দেখতে হবে ভিন্ন ভিন্ন কোণ থেকে দেখলে ছবি পরিষ্কার দেখা যায় কি না। তবে সাধারণ মানের মোবাইলের ডিসপ্লে ৭২০পি-এর কম হয়ে থাকে।
কাঠামো
স্মার্টফোনের মতো মোবাইল ডিভাইসের স্থায়ীত্বনির্ভর করে এর কাঠামোর ওপর। ধাতব ও প্লাস্টিক এ দুই কাঠামোয় বিভক্ত হ্যান্ডসেটের পুরো বাজার। তবে এখন প্রিমিয়াম কিছু ডিভাইসে গ্লাস ও সিরামিকের তৈরি কাঠামো ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও এ ধরনের ডিভাইসের সংখ্যা খুবই সীমিত এবং চড়া দামের। এছাড়া হালকা আঘাতে গ্লাস বা সিরামিকের তৈরি কাঠামোর ডিভাইস ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা থাকার কারণে বিশেষজ্ঞরা ধাতব বা প্লাস্টিক কাঠামোর স্মার্টফোন ব্যবহার করা ভালো।
অপারেটিং সিস্টেম:
এখনকার সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড, আইফোন, আইওএস ৭, উইন্ডোজ অন্যতম। এক্ষেত্রে স্মার্টফোন কেনার আগে পছন্দেরটি বেছে নিন। কারণ অপারেটিং সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করেই গোটা ফোনের সব কার্যক্রম নির্ধারিত হয়।
অ্যাক্সেসরিজ:
অ্যাক্সেসরিজ সব মোবাইলের সঙ্গেই দেওয়া হয়। তবে অ্যাক্সেসরিজ দেখে ফোন পছন্দ করার দরকার নেই। স্মার্ট অ্যাক্সেসরিজ বেশ আকর্ষণীয় দেখায়। আর ভালো মানের ফোনের অ্যাক্সেসরিজও বেশ ভালো হয়।
অ্যাপ্লিকেশন:
আপনার মোবাইল ফোনসেটটি যেসব অ্যাপস সাপোর্ট করে তাই ব্যবহার করুন। আর যেসব অ্যাপস আপনার মোবাইলের জন্য নয় তা অবশ্যই কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন না। তা ছাড়া মোবাইল ফোনসেট অনুযায়ী আলাদাভাবে অ্যাপসের কালেকশন ইন্টারনেটে দেওয়া থাকে। সেখান থেকেই ফোনটির জন্য অ্যাপস বাছাই করে নেওয়া উচিত।
বাংলা ইনসাইডার/ এসএইচ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন