নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২৪ পিএম, ১৩ এপ্রিল, ২০১৮
আমাদের কাছে পয়লা বৈশাখ মানেই পুরো বাঙালির একাত্ম হওয়ার উৎসব। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে দিয়েই উদযাপন করি এই উৎসব। বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির ঐতিহ্য প্রকাশের একটি প্রধান উৎসব। আগের দিনগুলোতে আমরা এই উৎসব মনে হয় আরও বেশি মন থেকে পালন করতাম। একে অন্যকে জাঁকজমক করে শুভেচ্ছা জানাতাম, উপহার দিতাম। এখন সেই নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানোর প্রথা আটকে গেছে প্রযুক্তির জালে। সেটা কীভাবে? দেখে নিই কীভাবে-
আগে বৈশাখের শুভেচ্ছার অন্যতম অনুসঙ্গ ছিল বৈশাখী কার্ড। বাজারে পাওয়া যেত বিভিন্ন ডিজাইনের সব বাহারি কার্ড। অনেকে আবার নিজ হাতেও বানাতো বৈশাখের কার্ড। এখন সেই কার্ডের প্রচলন কমে গেছে অনেকটাই। এর মূল কারণ ডিজিটাইলেজশন। অর্থাৎ প্রযুক্তির কল্যাণে সেই দিন হারিয়ে যাচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যম হিসেবে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফেসবুক, ভাইবার, ইমো, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম। এছাড়া মোবাইলে ফোনকল, এসএমএস, ই-মেইলের ব্যবহার তো আগে থেকেই প্রচলিত। টুকটাক প্রযুক্তিতে এখন আমরা অনেকেই দক্ষ হয়ে যাচ্ছি। আর তাই সহজে, নামমাত্র খরচে শুভেচ্ছা পাঠিয়ে দিচ্ছি সামাজিক মাধ্যম দিয়ে।
এই যেমন বৈশাখের লোগো, মোটিফ, ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলে কোনো বিশেষ ছবি, ভিডিও বা জিফ (GIF) বানানো হয়। সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে থাকা বন্ধুদের এসএমএসের মাধ্যমে পাঠিয়ে, টাইমলাইনে পোস্ট করে বা ট্যাগ করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ব্যাস হয়ে গেলো বৈশাখের শুভেচ্ছা।
যারা এসএমএস এর মাধ্যমে শুভেচ্ছা পাঠায়, তাতে তো আরও সুবিধা। কিছু বিশেষ কথা বা ছবি একসঙ্গে অনেকগুলো বন্ধুকে সিলেক্ট করে পাঠিয়ে দিলে কোনো সময়ও লাগলো না। এতেই শুভেচ্ছা জানানো হয়ে গেলো।
ফোন কল আর ফোন এসএমএস এর মাধ্যমেও অনায়াসে পাঠিয়ে দিলাম শুভেচ্ছা বার্তা। এতে করে সময় আর খরচও তেমন হয়না। কিন্তু এতে করে কী হচ্ছে? মনের ভেতরের সেই ভালবাসা, উচ্ছাস, টান কমে যাচ্ছে। সেই আগের বৈশাখের স্বাদ আর পাওয়া যায়না সত্যি।
শুধু তাই নয়, নববর্ষকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ‘হালখাতা’ প্রথাটি আগের মতো চোখে পড়েনা। কালের বিবর্তনে, কালের গর্ভে হারাচ্ছে হালখাতা উৎসব।
নববর্ষের প্রথম দিন শহরে-গঞ্জে, ছোট-বড় সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হালখাতার আয়োজন করা হতো। এ উপলক্ষে ছাপানো হতো নিমন্ত্রণপত্র (দাওয়াত কার্ড)। মুসলমানদের নিমন্ত্রণপত্রে থাকত মসজিদের-মিনারের ছবি, আর হিন্দুদের নিমন্ত্রণপত্রে মাটির পাত্রে কলাগাছের পাতা, ডাব এবং উপরে দেবতা গণেশের ছবি।
প্রযুক্তির এ যুগে এখন নাকি আর বাকি টাকার জন্য চিন্তা করতে হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে দুরে বসেই টাকা পাঠিয়ে দেওয়া যায়। সেই সঙ্গে অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং তো আছেই। তাই বড় করে হালখাতা করতে হয় না আর আগের মত।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন