নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৮ পিএম, ০৯ মে, ২০১৮
একটা সময়ে টাইপ মেশিনের খটাখট শব্দ অফিস আদালতের কাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতো। আমাদের কাগজ, নথিপত্রের যেকোনো প্রয়োজনে সেই টাইপ মেশিনই ছিল একমাত্র ভরসা। এখন তো সময় কতই পাল্টেছে। প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার প্রয়োজনীয় নথিপত্র টাইপ করছি ফোনে বা কম্পিউটারে, প্রিন্ট করে নিচ্ছি অত্যাধুনিক সব প্রিন্টারে। প্রয়োজন ও বাজেট বিবেচনায় প্রিন্টার নিয়েই আজকের আলোচনা।
কত রকমের প্রিন্টার আছে
ডট মেট্রিক্স
এই ধরনের প্রিন্টারগুলো মূলত কমদামী। এ প্রিন্টারে কালির রিবনের ওপর হেডারের পিন চেপে কাগজে ছাপা হয়। এর প্রিন্টের মান নির্ভর করে হেডারের পিনের ওপর। পিন বেশি থাকলে প্রিন্ট ভালো হয়। তবে এই প্রিন্টারগুলো একটু ধীরে কাজ করে।
লাইন প্রিন্টার
এই প্রিন্টারকে ইঙ্কজেট প্রিন্টারও বলে। এর নিয়ম হলো প্রতিবার একটি সম্পূর্ণ লাইন ছাপা হয়। ব্যক্তিগত পর্যায় ও অফিস-আদালতের ছোটখাটো কাজের জন্য এই ধরনের প্রিন্টার বেশি ব্যবহার করা হয়।
লেজার প্রিন্টার
উন্নত মানের প্রিন্টিং, ভালো রং এবং দ্রুত কম্পোজ করতে লেজার প্রিন্টারই সেরা। এ প্রিন্টারে ট্রেসিং পেপারে লেজার প্রিন্ট করে উচ্চ আলোতে পেস্ট করে অফসেট প্রেসে লাখ লাখ কপি ছাপিয়ে বই মুদ্রণ করা হয়। আমাদের দেশে প্রকাশনা কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত এ জাতীয় প্রিন্টারের মুদ্রণ পদ্ধতি বেশ জটিল। লেজার প্রিন্টারে কিন্তু কোনো রিফিল ব্যবহার করা হয় না। এখানে টোনার বা ড্রামে গুঁড়া কালি ব্যবহৃত হয়। লেজার প্রিন্টারে খরচ তুলনামূলকভাবে কম, তবে প্রিন্টারের দাম অনেক বেশি।
নন-ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার
এর বাইরেও আছে নন-ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার। এসব প্রিন্টারে চাপ না দিয়ে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় উত্তাপের সাহায্যে কাগজে প্রিন্ট দেওয়া হয়, তাই একে নন-ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার বলা হয়। নন-ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার সাধারণত ইঙ্কজেট প্রিন্টার ও লেজার—দুই ধরনের হয়ে থাকে। এ ছাড়া রয়েছে থার্মাল প্রিন্টার। মুদ্রণ ও সাধারণ কাজের দিক দিয়ে ইঙ্কজেট প্রিন্টার ও লেজার প্রিন্টার বেশি ব্যবহার করা হয়।
কেনার আগে
কেনার আগে যে মডেলটি কেনা হবে সেটি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত জেনে নেওয়া ভালো। প্রিন্টারটিতে কী ধরনের সুবিধা আছে, প্রতি মিনিটে কত পেইজ প্রিন্ট হয়, একটি টোনার বা কালিতে কী পরিমাণ প্রিন্ট করা যাবে ইত্যাদি আগে থেকেই জেনে নিতে পারবেন। কেনার সময় প্রিন্টারটি ওয়ারেন্টি কত দিনের ও ডিভাইস প্যাকেটটি খোলা হয়েছে কি না দেখে নিতে হবে। প্রিন্টার কেনার সময় ওয়ারেন্টি কার্ড, প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ যেমন সিডি, পাওয়ার কর্ড, ইউএসবি কেব্ল্, কার্টিজ বা টোনার বুঝে নিতে হবে। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে ওই প্রিন্টারের টোনার/কার্টিজ পাওয়া যাবে কি না তা নিশ্চিত হতে পারে। কারণ বাজারে এমন কিছু ব্র্যান্ড রয়েছে যেগুলোর কার্টিজ বা টোনার সহজে পাওয়া যায় না।
কোন প্রিন্টার কিনবেন আগেই যাচাই করে নিন
কী ধরনের বা কেমন দামের প্রিন্টার কেনা হবে তা নির্ভর করে ব্যবহারকারীর কাজের ধরনের ওপর। যদি রঙিন ছবি প্রিন্ট করার প্রয়োজন না হয়, তাহলে সাদাকালো ইঙ্কজেট প্রিন্টার কেনা ভালো। বাজারে মডেল অনুযায়ী ভিন্ন দামের এইচপি, স্যামসাং, ক্যানন, ইপসন, ব্রাদার ইত্যাদি ব্র্যান্ডের প্রিন্টার পাওয়া যায়।
অফিস এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য লেজার প্রিন্টার বেশ জনপ্রিয়। পরিমাণে বেশি ও ভালো রঙে প্রিন্ট করার জন্য লেজার প্রিন্টার ব্যবহার করা ভালো। ওয়ারলেস প্রিন্টার অফিসের যেকোনো স্থানে স্থাপন করা যায়। এ ক্ষেত্রে কেবল টানার ঝামেলা থাকে না। সুবিধাজনক স্থানে ওয়াইফাই সক্ষম অয়ারলেস প্রিন্টার স্থাপন করে অন্যান্য ওয়াইফাই ডিভাইস থেকে সহজেই এতে প্রিন্ট অর্ডার দেওয়া যায়। গত দুই-তিন বছরে এর ব্যাপক পরিচিতি ও প্রসার হয়েছে। নতুন সংস্করণের ওয়াইফাই প্রিন্টারে রয়েছে বাড়তি মোবাইল প্রিন্টিং, এনএফসি সুবিধাও।
এখন বাজারের সেরা কিছু প্রিন্টার
ক্যানন পিক্সমার মডেলগুলোর মধ্যে রয়েছে এমজি৪২৫০, টিএস৯১২০, ক্যানন ইমেজ ক্লাস এমএফ২১৭ডব্লিউ, ক্যানন ম্যাক্সিফাইি এমবি৫৪২০।
এইচপি এনভি ফটো ৭১৩৪, পেইজওয়াইড প্রো ৫৭৭ ডিডব্লিউ।
ব্রাদার এইচএল-এল২৩৪০ডিডব্লিউ, এমএফসি- জে৯৮৫ডিডব্লিউ, এমএফসি- জে৫৬২০ডিডব্লিউ
ইপসন এর রয়েছে ইকোট্যাংক ইটি-২৬০০, ডব্লিউএফ ২৭৬০, উপসন এক্সপ্রেশন এক্সপি-৬৪০।
বাজেট এবং কাজের দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে এগুলো এ বছরের জনপ্রিয় একটি প্রিন্টার। স্ক্যানিং, কপি করা এবং কালার প্রিন্টিং এর জন্য এগুলো সমানভাবে দক্ষ। সবচেয়ে বড় কথা হলো এগুলো ওয়্যারলেস বলে ফোন বা কম্পিউটারের সঙ্গে সংযোগ করতে হয়না। এটির রয়েছে অল্প সময়ে তুলনামূলক প্রিন্ট করার ক্ষমতা আছে এগুলোর।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন