নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৮ পিএম, ২৫ জুন, ২০১৮
বিচিত্র এই পৃথিবীতে এমন সব প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশে ঘটছে যার সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া কঠিন। ঘটনাগুলো আমাদের প্রত্যাহিক জীবনের হলেও অনেক সময়ই আমরা এই কারণ জানি না। আসুন আজ জেনে নিই রহস্যময় ১০ ঘটনা এবং এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা:
মানুষ ঘুমায় কেন?
শুধুমাত্র মানুষই নয়, প্রাণীকূলের প্রায় সকলেই ঘুমায়। বিজ্ঞানের দেওয়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ঘুম স্মৃতি ও শক্তি সংরক্ষণের কাজ করে। ঘুম প্রাণীদেহের সঠিক শ্বাসক্রিয়া, রক্ত সঞ্চালন, শারীরীক বৃদ্ধি ও সংক্রমন রোধে সহায়তা করে। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস নামক একটি উপাদান ঘুমের জন্য দায়ী। এটি স্নায়ু কোষ গুলোর ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করে যার ফলে আমরা তন্দ্রা অনুভব করি।
হাই তোলা!
ক্লান্তি থেকে মানুষের হাই ওঠে, এ কথা সবার জানা। তবে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় বলা হয়, আমাদের শরীরে যখন প্রয়োজনীয় পরিমাণ অক্সিজেনের অভাব বোধ হয়, তখন শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি কমতে থাকে। এর ফলে মানুষ হাই তোলে। হাই তোলার ফলে রক্তে অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মধ্যে স্বাভাবিক মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়।
বরফ কেন পিচ্ছিল হয়?
বরফের উপরিভাগ খুবই মসৃণ আর পিচ্ছিল থাকে। বিজ্ঞানের মতে, বরফের উপরিভাগে আলাদা একটা পানির স্তর থাকে, এটির কারণেই কঠিন পদার্থ হয়েও এটি অনেক পিচ্ছিল হয়। সাধারণ জুতা বা স্যান্ডেল দিয়ে বরফের ওপর হাঁটা কঠিন, কারণ পিচ্ছিল থাকার কারণে সাধারণ জুতার সঙ্গে বরফের ঘর্ষণ কম হয়। এজন্য বরফের দেশে হাঁটার জন্য বিশেষ জুতা পরতে হয়।
কেন পুরনো জানালায় ঢেউ দেখা যায়?
কাঁচকে স্বচ্ছ তরল মনে হলেও আসলে এটি অ্যামরফাস নামক একটি নিরাকার কঠিন পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। তাই এর ক্ষুদ্র অণুগুলোর সঠিক গঠন সম্ভব হয় না। জানালার কাঁচের টুকরোগুলো অসম থাকার কারণেই মূলত: পুরনো জানালা এমন তরঙ্গায়িত দেখায়। তবে, এই বিষয়টি নিয়ে এখনো অনেক গবেষণা চলছে।
গাছ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে?
এ বিষয়টি অনেকেরই অজানা। গবেষণায় জানা গেছে, গাছ এক ধরনের গন্ধ ছড়ানোর মাধ্যমে প্রাণীদের আকর্ষিত করতে পারে ছোট ছোট পোকা-মাকড় খেতে, যাতে এ সকল পোকা- মাকড় গাছের ক্ষতি সাধন করতে না পারে। শিকড়ের সাথে সংযুক্ত এক প্রকার ছত্রাকের মাধ্যমে তাঁরা এটি করতে পারে। শিকড়ের মাধ্যমে তারা অন্য গাছের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।
জোনাকি কীভাবে জ্বলে?
জোনাকি পোকার দেহে ‘লুসিফেরিন’ নামক এক প্রকার রাসায়নিক উপাদান থাকে। এই উপাদানটির সঙ্গে অক্সিজেনের বিকিরণ ঘটলে আলো জ্বলে ওঠে। মজার বিষয় হলো, জোনাকি পোকার আলো থেকে তাপ উৎপন্ন হয় না। গবেষণায় দেখা যায়, পুরুষ জোনাকির আলোর উজ্জ্বলতার ওপর নির্ভর করে মেয়ে জোনাকিরা আকৃষ্ঠ হয়।
পাখিরা কীভাবে দেশান্তরিত হয়?
উত্তর আমেরিকার প্রায় ৩৫০টি প্রজাতির পাখির মধ্যে ৪০ প্রজাতির পাখি প্রচণ্ড শীতে একটু গরমের আশায় অন্য দেশগুলোতে পাড়ি জমায়। এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে তাঁরা এক ধরনের চৌম্বকীয় শক্তির ব্যবহার করে। পাখিদের ঠোঁটে একধরনের লৌহ উপাদান থাকে যার সাহায্যে সে এক ধরণের চৌম্বকীয় শক্তির ব্যবহার করে দেশান্তরিত হতে পারে।
মাছ কীভাবে তাঁর জন্মভূমিতে ফিরে আসে?
ছোট মাছগুলো নদীর স্রোতে ভাসতে ভাসতে একসময় সাগরে চলে আসে যেখানে তাঁর জীবনের কয়েক বছর সময় কাটায়। যখন তাদের ডিম ছাড়ার সময় হয়, তখন আবার তাঁরা সেই পুরনো নদীতে ফিরে আসতে পারে। বিজ্ঞানের মতে, তাঁরা সূর্যের অবস্থান, পানির লবণাক্ততা, তাপমাত্রার পার্থক্য প্রভৃতি বিষয় ধরে আবার পূর্বের জায়গায় ফিরে আসতে পারে।
তিমি কেন গান গায়?
১৯৫০ সালে তিমির গান গাওয়ার বিষয়টি আবিষ্কার করা হয়। গবেষণায় জানা যায়, তিমি একই গান বার বার গায়। তবে সে গানের ভাষা বা কেন গাওয়া হয় সে বিষয়ে তেমন কিছুই জানা সম্ভব হয় নি। তবে বিজ্ঞানীরা বলছে, নারী তিমিকে আকর্ষিত করতে অথবা তাদের সম্পর্ককে মজবুত করত পুরুষ তিমি এ ধরনের গান করতে পারে।
মানুষ কেন গান শোনে?
গানের সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্কের গভীর যোগাযোগ রয়েছে, এমনটাই মনে করা হয়। এটি মানুষের মস্তিষ্ককে গভীরভাবে আন্দোলিত করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, অতীতের কোন স্মৃতি হারিয়ে গেলে তা ফিরিয়ে আনতে গান সাহায্য করতে পারে। কারণ গানের সময় অতীতের অনেক বিষয় চোখের সামনে ভেসে ওঠে যা পুরনো স্মৃতি মনে করতে সাহায্য করে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডআই/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন