নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪৯ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে খুব কম সময়ে ও অনেক কম খরচে ক্যানসার শনাক্ত করা যাবে। এমনই একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশে একদল বিজ্ঞানী। আর এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
গবেষক দলের প্রধান পদার্থবিজ্ঞানী ইয়াসমিন হক জানিয়েছেন, তাঁরা মানবদেহের রক্তের মধ্যে এমন কিছু `বায়োমার্কার` খুঁজে পেয়েছেন, যা ক্যানসার রোগীর ক্ষেত্রে ভিন্নভাবে সাড়া দেয়। অর্থাৎ ক্যানসারমুক্ত কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে রক্তের ওই বায়োমার্কার যে রকম রিডিং দেবে, তিনি ক্যানসার আক্রান্ত হলে তাতে পাওয়া যাবে সম্পূর্ণ অন্য ধরনের রিডিং। অন্যভাবে বললে, কোনো ব্যক্তির শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধলে তা রক্তে এক ধরনের `ছাপ` ফেলে যায় বা রক্তের ওই বায়োমার্কারে তা ধরা পড়ে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে ঠিক সেটাই ধরা যাবে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ইয়াসমিন হক জানান, ‘তাঁরা `নন-লিনিয়ার অপটিকসে`র পদ্ধতি প্রয়োগ করেই রক্তের মধ্যে ওই ধরনের বায়োমার্কার খুঁজতে শুরু করেছিলেন, যাতে অবশেষে সাফল্য মিলেছে। ষাটের দশকের শুরুতে লেসার আবিষ্কৃত হওয়ার সময় থেকেই এই পদ্ধতির প্রয়োগ হচ্ছে, কিন্তু আমাদের আগে কেউ এর মাধ্যমে রক্তের মধ্যে অপটিক্যাল বায়োমার্কার খুঁজেছে বলে আমাদের জানা নেই।’
তিনি আরও জানান, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম এই গবেষণা করতে বছর পাঁচেক লাগবে, যার মধ্যে আড়াই বছর মতো পার হয়েছে। তবে এখন গবেষক দলের কেউ কেউ আশা করছেন, এভাবে কাজ করতে থাকলে ক্যানসার পরীক্ষার একটি যন্ত্র আগামী এক বছরের মধ্যেই তৈরি করে ফেলা সম্ভব হবে। এখন দেখা যাক, কত তাড়াতাড়ি ল্যাবরেটরি থেকে এই ধরনের যন্ত্র আমরা মানুষের ব্যবহারের জন্য তৈরি করতে পারি।’
পদার্থবিজ্ঞানী বলেন, বর্তমানে ক্যানসার শনাক্ত করার যে সব সাধারণ পদ্ধতি চালু আছে, তা যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমন ব্যয়বহুল। ফলে শুধু রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেই যদি ক্যানসার নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করা যায়, তা বিশ্বের কোটি কোটি ক্যানসার রোগীর জন্য বিরাট সুখবর বয়ে আনবে সন্দেহ নেই।
বিজ্ঞানী ইয়াসমিন হক আরও বলেন, তারা ইতিমধ্যেই এই পদ্ধতির পেটেন্টের জন্য রীতিমাফিক আবেদন জানিয়েছেন। পেটেন্টের আবেদন যেমন আমেরিকাতে করা হয়েছে, তেমনি করা হয়েছে বাংলাদেশেও। তবে ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস বা মেধাস্বত্ত্ব বিষয়ক আইনজীবীদের পরামর্শে তাঁরা গবেষণার বিস্তারিত বিষয়বস্তু এখনো কোনো বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশ করেননি।
ক্যান্সারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি কি তাহলে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এমন প্রশ্নের জবাবে ইয়াসমিন হক জবাবে বলেন, ‘দেখুন, আমরা একটা যুগান্তকারী কাজ করেছি কিংবা ক্যানসার শনাক্তকরণে বিপ্লব এনে দিচ্ছি - এত বড় বড় কথা আমরা বলতে চাই না। তবে আমরা অবশ্যই উচ্ছ্বাসিত। কারণ আমরা ক্যানসার রোগীদের রক্তে একটা মারাত্মক পরিবর্তন ধরতে পেরেছি, যেটা নীরোগ মানুষদের তুলনায় ভীষণ, ভীষণ আলাদা।’
সূত্র: বিবিসি
বাংলা ইনসাইডার/বিপি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন