নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩৬ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশ ব্যাংকের আট কোটি ডলারের বেশি লুটের নেপথ্যে কে বা কারা, বর্তমানে সেটি একটি আলোচিত ইস্যু। বলা হচ্ছে, বিশ্বে সাড়া ফেলা উত্তর কোরিয়ার অন্যতম হ্যাকার পার্ক জিন হিয়ক ই এই অর্থ লুটের জন্য দায়ী। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই যুক্তরাষ্ট্র গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই হ্যাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে।
কে এই হ্যাকার
মার্কিন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, পার্ক জিন হিয়ক ছিল একটি হ্যাকার টিমের সদস্য। এই টিমটি `ল্যাজারাস গ্রপ` নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিরক্ষা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন কর্পোরেশনকে তারা টার্গেট করেও সফল হয়নি।
এর আগে ২০১৪ সালে এই টিমটি সনি কর্পোরেশনে একটি বড় সাইবার হামলা চালিয়ে অনেক তথ্য চুরি করে, অনেক তথ্য নষ্ট করে। হামলাটি চালানো হয় উত্তর কোরিয়ার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার পর `দ্য ইন্টারভিউ` ছবি নিয়ে । ছবিটির একটি চরিত্র ছিল উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের আদলে। এতে দেখানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। উত্তর কোরিয়া চায়নি সনি কর্পোরেশন এই ছবি বানাক।
পার্ক জিন হিয়ক ফেসবুকে এবং টুইটার বিভিন্ন নামে অ্যাকাউন্ট খুলে লোকজনের কাছে এমন লিংক পাঠাতো, যাতে উত্তর কোরিয়ার নানা ম্যালওয়ার থাকতো। তাদের সবচেয়ে মারাত্মক সাইবার হামলা ছিল `ওয়ানাক্রাই র্যানসামওয়ার` দিয়ে। বিশ্বের অনেক দেশ এবং প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালে এই সাইবার হামলার শিকার হয়। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) এই হামলায় অচল হয়ে পড়ে।
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ কিছু সাইবার হামলার জন্য এই দলটিকে দায়ী করা হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাইবার ডাকাতির ঘটনাও আছে। চীনা প্রতিষ্ঠান `চুসান এক্সপো`র আড়ালে এই হ্যাকার চক্র কাজ করতো বলে তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের অভিমত কি
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপকে একটা বড় অগ্রগতি বলছেন। তাঁর মতে, নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে এই অর্থ চুরি হয়েছিল বলে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই এই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশেও সিআইডি এই সাইবার হামলার ঘটনা তদন্ত করছে।
তবে সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্টতার কথা তারা আগেও শুনেছেন, কিন্তু এ ব্যাপারে নিজেদের তদন্তে নিশ্চিত হওয়ার মতো কিছু পাননি।
সিআইডির স্পেশাল সুপারিনটেন্ডেন্ট মোল্লা নজরুল ইসলাম বিবিসিকে বলেন, উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্টতা কোনো বিদেশি সংস্থা পেলে তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে, প্রমাণগুলোও দেখা হবে। এজন্য এফবিআই এর সঙ্গেও বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সূত্র: বিবিসি
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন