নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৫ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
সময় কাটছে না, হাতে তেমন কাজ নেই বা খুব কাজের চাপের সময়ে হাতে যদি একটি মোটামুটিমানের স্মার্টফোন থাকে তবে আপনি কি করেন? নিশ্চয়ই গেম নিয়ে বসে যান। হ্যাঁ, ঠিক তাই। এই গেম খেলা রীতিমত একটি নেশায় দাঁড়িয়ে গেছে সব বয়সীদের কাছে। এজন্য স্মার্টফোন কোম্পানিগুলোও যেন প্রতিযোগিতায় নেমে যায় ভালোমানের গেম খেলার উপযোগী ফোন নির্মাণে। আর বিভিন্ন গেম তৈরির স্বত্ত্বাধিকারীরা হুড়োহুড়ি করে সেরা গেমটি সবার সামনে নিয়ে আসার জন্যও পিছিয়ে থাকে না। আজ আমরা বিদায়ী বছরের বিশ্বসেরা ১০টি গেম নিয়ে আলোচনা করবো-
পোকেমন গো
পোকেমন মূলত একটি ভার্চ্যুয়াল প্রাণী। জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র হিসেবে আমরা বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই পোকেমনকে দেখে আসছি। আর এই গেমটিও পোকেমনের মতো করে বানানো। এই গেমে গেমারকে বিভিন্ন স্থান ঘুরে বা হেঁটে পোকেমন খুঁজে বেড়াতে হয়। আবার এটিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে অন্যান্য পোকেমন ধরা বা অন্য গেমারদের পোকেমনের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিতে ব্যবহার করতে হবে। সবচেয়ে মজার কথা হলো, ২০১৬ সালে বাজারে আসার মাত্র ১৩ ঘণ্টার মধ্যেই এটি জনপ্রিয় হয়ে যায়। সেটি এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। গেমটি এখনো সেরাদের মধ্যে জায়গা ধরে রেখেছে।
পাবজি মোবাইল
স্মার্টফোনের জন্য প্লেয়ার আননোওন ব্যাটল গ্রাউন্ড বা পাবজি অন্যতম একটি জনপ্রিয় গেম। এটি বিনামূল্যের, টিকে থাকার একটি শুটিং গেম। নিয়মটা এরকম যে- একজন গেমারকে আরও ৯৯জন সহ বেঁচে থাকার সরঞ্জামাদি ছাড়াই অচেনা এক দ্বীপে ছেড়ে দেওয়া হলো। সেখানে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার তার সবই কিন্তু আপনাকে করতে হবে। স্বভাবতই গেমটি বেশ মজার। তাই পছন্দের শীর্ষতালিকায় এই গেমটিও রয়েছে এই বছরে। পাবজি পিসি এবং স্মার্টফোন গেমের দুটি সংস্করণই সমান জনপ্রিয়।
ফোর্টনাইট
এই গেমটি আপনি দলবদ্ধভাবে খেলতে পারবেন। সেভাবে খেলে শেষ পর্যন্ত কে টিকে থাকতে পারে, সেটিই হলো মজা। ফোর্টনাইট এ বছরের অন্যতম আলোচিত একটি গেম। এই গেমের লবিতে ম্যাচ শুরুর আগে সবাইকে একটি দ্বীপে একসঙ্গে রাখা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ফোর্টনাইটের মূল দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হবে উড়ন্ত বাসে করে। এরপর শুরু হবে একে অপরকে দমনের পালা। ফোর্টনাইট দ্বীপে রক্ষিত বাড়িঘর ও অপরিচিত জায়গা থেকে বিভিন্ন অস্ত্র খুঁজে নিতে হবে আপনাকে। এভাবেই চলবে ম্যাচ আর কমবে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী। ভাবলেই বোঝা যাচ্ছে গেমটা যথেষ্ট মজার।
মাইনক্র্যাফট
এই মাইনক্র্যাফট গেমটি এই বছর সারাবিশ্বে সব বয়সীদের কাছে জনপ্রিয় ছিল। এই খেলার মধ্যে ঢুকলে আপনি পাবেন বিশাল একটি খনি। সেখানে আপনাকে নতুন করে আরও অনেককিছু বানাতে হবে, খারাপ চরিত্রগুলোকে মারতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো যে, এখানে যা খুশি তাই আপনি করতে পারবেন। এখানে রয়েছে বেঁচে থাকার সারভাইভাল মোড। এখানে আপনার সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে আপনার গোপনীয় জিনিসপত্র, খাবার ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সম্পদ লুকিয়ে রাখতে হবে আপনাকে। তাই এখনো যদি না খেলে থাকেন, আজই একবার চেষ্টা করে দেখুন।
ক্র্যাশল্যান্ড
ক্র্যাশল্যান্ড মুক্তি পেয়েছিল ২০১৬ সালে। সেই থেকে এখনো ক্র্যাশল্যান্ড গেমটি জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড গেমগুলোর মধ্যে একটি। এতে পরস্পরবিশিষ্ট ট্র্যাকার রয়েছে। এই ট্র্যাকারটি এলিয়েনদের গ্রহে বিচ্ছিন্নভাবে ক্র্যাশ করে। একজন গেমার হিসেবে আপনার কাজ হলো কী ঘটছে তা খুঁজে বের করা। এছাড়া সেখানে নিজের বিভিন্ন ভিত্তি তৈরি করতে হয়, বিভিন্ন আইটেম বা নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আবার দুর্বৃত্তদের চক্রান্ত থেকে অবশ্যই রক্ষা করতে হয় পৃথিবীটাকে।
ইভোল্যান্ড
ইভোল্যান্ড সিরিজের ১ ও ২ সংস্করণের গেম দু’টি বিশ্বজুড়ে অ্যান্ড্রয়েড গেমগুলোর মধ্যে অন্যতম দুটি গেম। তারা তাদের ভিন্ন ধরনের গেম মেকানিজমের জন্য সবার চেয়ে কিছুটা আলাদা স্থান দখল করে আছে। এই গেমে আপনি পাবেন বিভিন্ন পাজল বা ধাঁধা, টপ ডাউন শুটার, ক্লাসিক যোদ্ধা, ট্রেডিং কার্ড আর প্ল্যাটফরমার মেকানিক্স। এই মেকানিক্সের প্রতিটি সুইচ খেলার অংশকে আরও ভালোভাবে সাজানো যায়। এজন্য এর গ্রাফিকসেও আপনি চাইলে মনের মতো করে পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
হোলডাউন
গ্রহ-নক্ষত্র নিয়ে আমাদের আগ্রহের তো কোনো শেষ নেই। কিন্তু আমরা চাইলে তো আর সেখানে চলে যেতে পারিনা। কিন্তু অন্যভাবে তো যাওয়া সম্ভব। এই ধরুন কোনো গেমের ভার্চুয়াল জগতের মাধ্যমে। এর জন্য আপনার আছে বছরসেরা হোলডাউন গেমটি। এতে রয়েছে শুটিং বল ও ভাঙা ব্লক। এগুলো দিয়ে ভূগর্ভস্থ খনন কিংবা গ্রহ থেকে গ্রহে ঘুরেফিরে বেড়ানো যায়। এই গেমের প্রতিটি রাউন্ডই সীমিত। এখানের কিছু ব্লক আবার শক্তপোক্তভাবে প্রাচীরের সঙ্গে সংযুক্ত। আপনাকে অনেক কৌশল খাটিয়েই লক্ষ্যের দিকে এগোতে হবে। পর্যাপ্ত স্ফটিক সংগ্রহ করে পৃষ্ঠের নিচে গভীরতা কমাতে হবে একজন গেমারকে।
অ্যাল্টোস অ্যাডভেঞ্চার
গেমের মাধ্যমে আপনি চাইলেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে ঘুরে আসতে পারেন। এজন্য সেরা ছিল এই বছরের অন্যতম শীর্ষস্থানে থাকা অ্যাল্টোস অ্যাডভেঞ্চার গেমটি। অপরূপ সুন্দর পাহাড়ের দৃশ্য, চোখের সামনে অদ্ভূতভাবে দিন থেকে রাত নেমে আসা। এরই মধ্যে আবার অপূর্ব সুরে স্নোবোর্ডিং করতে পারবেন। হাতের মুঠোর মোবাইলে আপনি এতো কাজ করতে পারছেন, বিষয়টাই তো মজার। এজন্য আপনার চাই অ্যাল্টোস অ্যাডভেঞ্চার গেমটি। এই গেমটি খেলাও খুব সহজ। ছোটবড় সবার কাছেই গেমটি সমান জনপ্রিয়।
হেলিক্স জাম্প
নাম শুনেই বোঝাই যাচ্ছে এতে যথেষ্ট দৌড়ঝাপ আর লাফালাফি করতে হবে আপনাকে। হেলিক্স জাম্প গেমটি বেশ মজার আর্কেড গেম। এটি খেলতে হলে আপনাকে হেলিক্স মেজের নিচের দিকে নেমে যেতে হবে। আর সেজন্য একটি পতনশীল বলকে ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আপনার মূল কাজটা হলো হেলিক্স মেজের ঘূর্ণন নিয়ন্ত্রণ করা। এজন্য আপনার বলটার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণও করতে হবে।
ব্যাডল্যান্ড ব্রাউল
এই গেমটাও অন্য গেমগুলোর তুলনায় কিছুটা ভিন্ন গেম। এই গেমের মাধ্যমে পুরোপুরি ভিন্ন অভিজ্ঞতা পাবেন আপনি। এতে ক্লাস রোয়েল, জনপ্রিয় ক্লাশ অব ক্ল্যান্সের মতো ট্রেডিং মেকানিক্স ও প্ল্যাটফর্ম মেকানিক্স ব্যবহার করা হয়েছে। ক্লাশ অব ক্ল্যান্সের ভিন্নধর্মী দারুণ আর্টওয়ার্ক ব্যাডল্যান্ড ব্রাউল গেমেও রাখা রয়েছে। আপনার গেমে থাকা ক্লোন এবং বিভিন্ন অক্ষরগুলোকে অন্যরকম রঙিন অবয়বে বদলে দিতে হবে। ফ্রগমাইন্ড কর্তৃপক্ষের এই রোমাঞ্চকর গেমটি একবার খেললে বার বার খেলতে ইচ্ছে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/এমআর
মন্তব্য করুন
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে
ইন্টারনেট পরিষেবা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে।
গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ সাবমেরিন
কেব্লস (বিএসসিপিএলসি)-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএসসিপিএলসির সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো
যাচ্ছে, কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্ল রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এ কারণে বৃহস্পতিবার
দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এই কেব্লের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ পরিষেবা
বন্ধ থাকবে।
বিএসসিপিএলসি জানিয়েছে, এতে গ্রাহকরা সাময়িকভাবে ইন্টারনেটে ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারেন বা ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। তবে একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে অন্য সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সেবা যথারীতি চালু থাকবে।
মন্তব্য করুন
ইন্টারনেট সেবা সাবমেরিন ক্যাবলস কোম্পানি লিমিটেড
মন্তব্য করুন
আবারও মেটার মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রাম বিভ্রাট দেখা
দিয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে থমকে গেছে এই দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিষেবা। বার্তা
আদান-প্রদানে সমস্যার মুখে পড়ছেন ব্যবহারকারীরা।
তবে কী কারণে এই বিভ্রাট, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি
মেটা। এক মাসের মধ্যেই দু’বার মেটার বিভিন্ন পরিষেবা বিভ্রাটের সম্মুখীন হলো।
বুধবার (৩ এপ্রিল) রাত পৌনে ১২টা নাগাদ সমস্যার শুরু হয়। অনেক ব্যবহারকারী
লক্ষ করেন তারা হোয়াটসঅ্যাপের ওয়েব সংস্করণে লগইন করতে পারছেন না। মোবাইল অ্যাপ থেকে
মেসেজ পাঠানোর চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হন তারা।
এ ছাড়া সমস্যা দেখা দেয় ইনস্টাগ্রামেও। ব্যবহারকারীরা বার বার তাদের
ফিড রিফ্রেশ করলেও নতুন কোনো পোস্ট দেখতে পারছিলেন না। তবে ফেসবুকের পরিষেবা ঠিকই ছিল।
সেখানেই অনেকে জানান, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামের পরিষেবা বিভ্রাট সংক্রান্ত সমস্যার
কথা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের তথ্যভান্ডার থেকে বাংলাদেশের কমপক্ষে ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) নাগরিকের ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে ‘ডাটাভেঞ্চার’ পরিচয় দেওয়া একটি হ্যাকার গোষ্ঠী। তারা জানিয়েছে, তাদের কাছে বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কেন্দ্রিক তথ্য, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ইমেইল ঠিকানাসহ আরও কিছু তথ্য রয়েছে।
তারা দাবি করছে এগুলো ১২ হাজার ডলারে বিক্রির জন্য হ্যাকারদের একটি প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে নেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, তথ্য হাতিয়ে নেওয়া বাংলাদেশি নাগরিকের প্রকৃত সংখ্যা কয়েক কোটি হতে পারে। এ ধারণা সঠিক হলে এটিই বাংলাদেশ থেকে তথ্য ফাঁসের সর্ববৃহৎ ঘটনা।
জানা গেছে, ‘ব্ল্যাক হ্যাট’ নামে পরিচিত ক্ষতিকারক হ্যাকারদের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘ব্রিচ ফোরাম’। এরা কোন দেশ থেকে পরিচালিত হয় অথবা এর সদস্যদের পরিচয় এখনো অজানা। গত ২৬ মার্চ এই প্ল্যাটফর্মের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়। ‘ডাটাভেঞ্চার’ পরিচয় দেওয়া হ্যাকারের দাবি, তার কাছে বাংলাদেশের কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের তথ্যভান্ডার থেকে সংগৃহীত তথ্য রয়েছে। কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর মধ্যে ‘এসএ পরিবহন’, ‘রেডেক্স’ এবং ‘সুন্দরবন’-এর নাম উল্লেখ করে ‘অন্যান্য’ প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। পুলিশ সম্পর্কিত তথ্য থাকার বিষয়ে হ্যাকারের দাবি, ‘পুলিশ ডাটা, যেখানে সব পুলিশের তথ্য রয়েছে।’
হ্যাকারের দাবি, ১০ মিলিয়নের (১ কোটি) বেশি বাংলাদেশি নাগরিকদের এনআইডি সংশ্লিষ্ট তথ্য রয়েছে তার কাছে। যার মধ্যে আছে নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ এবং এনআইডি নম্বর। এ ছাড়া নাগরিকদের মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট নম্বর ও শাখার নামসহ আরও বেশকিছু তথ্য রয়েছে বলেও দাবি তার। পুলিশের তথ্যসহ নাগরিকদের এসব তথ্য বিক্রির জন্য ১০ হাজার মার্কিন ডলার চেয়েছে হ্যাকার। পাশাপাশি এনআইডির তথ্য চাইলে দিতে হবে আরও ২ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে এসব তথ্য ১২ হাজার ডলারে বিক্রির ঘোষণা দিয়ে ‘ব্রিচ ফোরাম’-এর ওয়েবসাইটে পোস্ট করেছে ‘ডাটাভেঞ্চার’।
বিপুল পরিমাণ তথ্য ফাঁসের এ ঘোষণা ইতোমধ্যেই দেশীয় হ্যাকার কমিউনিটি এবং সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তবে এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করার আগে পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই জানতে পারেনি সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট)।
যোগাযোগ করা হলে নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান এবং সার্টের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল আলম খান কালবেলাকে পৃথকভাবে জানান, এখনো তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
তবে একাধিক সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং এথিক্যাল হ্যাকার কালবেলাকে তথ্য ফাঁসের ঘটনা নিশ্চিত করেছে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এথিক্যাল হ্যাকার বলেন, বিক্রির জন্য উত্থাপিত তথ্যের কিছু নমুনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় ৬ কোটি নাগরিকের তথ্য হ্যাকারের দখলে রয়েছে। এসব নমুনার কিছু তথ্য যাচাই করে সেগুলো সঠিক পেয়েছি। নমুনার সূত্র ধরে কুমিল্লার এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনে কল দিলে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্মতারিখ এবং ঠিকানা নিশ্চিত হয়েছি। অর্থাৎ তথ্যগুলো সঠিক।’
বিষয়টি আরও যাচাই করতে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ আল জাবের দেশের এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্রিচ ফোরাম হ্যাকারদের একটি গোষ্ঠী, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের হ্যাকাররা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। এখানে কেউ কারও সঠিক পরিচয় জানে না। কারও কাছে এ ধরনের তথ্য এলে বেচাকেনার জন্য এখানে যোগাযোগ করেন তারা। কোনো ভুয়া তথ্য দিয়ে এখানে পোস্ট করা কঠিন। ৬ কোটি নাগরিকের তথ্য ফাঁস হয়ে থাকলে এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনা।’
এ ধরনের তথ্য ফাঁসের ভয়াবহতা কী জানতে চাইলে জাবের বলেন, ‘একজন ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, ব্যাংক হিসাবের নম্বর এসব তথ্য অন্য কারও হাতে থাকা মানে ওই ব্যক্তির সবকিছুই হ্যাকারের দখলে। খেয়াল করলে দেখবেন, সম্প্রতি আপনার আমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ইংরেজিতে কথা বলে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এটা মূলত চায়নিজ হ্যাকারদের কাজ। তারা আমাদের নম্বর, নাম এবং অন্যান্য তথ্য কীভাবে পায়? এভাবেই কারও বিক্রি করা বা ফাঁস করা থেকে পায়। এ ধরনের তথ্য গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার ডলারে বেচাকেনা হয়ে থাকে ভার্চুয়াল জগতে।’
তবে এক কোটির বেশি মানুষের তথ্য বিক্রির বিজ্ঞাপনকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে পাতা ফাঁদ উল্লেখ করে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য তাদের কাছে আছে বলে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এটা করে তারা। এটা তেমনি একটা জিনিস। আমাদের কোনো ধরনের তথ্য ডার্ক ওয়েবে বিক্রির কথা কেউ যদি বলে থাকে তাহলে সেটা মিথ্যা বলছে। ওরা প্রতারণার উদ্দেশ্যে এটা করছে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের জুনের শেষ দিকে বাংলাদেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের তথ্যভান্ডার থেকে বড় পরিসরে নাগরিকদের তথ্য উন্মুক্ত থাকার খবরে দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। ভিক্টর মার্কোপোলস নামে একজন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের কারিগরি দুর্বলতা তুলে ধরে সেসব তথ্য খুব সহজেই উন্মুক্ত অবস্থায় পেয়েছিলেন বলে জানান।
মন্তব্য করুন
বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের তথ্যভান্ডার থেকে বাংলাদেশের কমপক্ষে ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) নাগরিকের ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে ‘ডাটাভেঞ্চার’ পরিচয় দেওয়া একটি হ্যাকার গোষ্ঠী। তারা জানিয়েছে, তাদের কাছে বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কেন্দ্রিক তথ্য, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ইমেইল ঠিকানাসহ আরও কিছু তথ্য রয়েছে।