নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৯ পিএম, ২৩ অগাস্ট, ২০১৭
একবার ভেবে দেখুন, দুপুরে খেতে বসেছেন। আপনি জানেন মেন্যুতে রয়েছে ইলিশ মাছ ভাজা। খাবার যখন সামনে আসলো অমনি চোখ কপালে উঠে গেল। সামনে রাখা মাছটাকি ইলিশ না জাটকা ঠাহর করতে পারছেন না। কীভাবে এত ছোট হয়ে গেল মাছ? বিষয়টি অতিকল্পনা নয় অদূর ভবিষ্যতে এমনটাই ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন যদি সাগরের পানির উষ্ণতা দিন দিন বাড়তেই থাকে তবে মাছের আকার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানিয়েছেন, কেন মাছেরা ছোট হয়ে যেতে পারে।
ওশান ও ফিশারিজ ইনস্টিটিউটের অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসর উইলিয়াম চিউং জানান, মাছেরা আসলে ঠান্ডা রক্তের প্রাণী। তারা তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যখন সাগরের পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাবে তখন তাদের শরীরের মেটাবলিজমের হার বেড়ে যাবে। শরীরের বাড়তি এই কাজের জন্য মাছেদের প্রচুর পরিমাণের অক্সিজেনের প্রয়োজন হবে। বাড়তি এই অক্সিজেন মাছেদের ফুলকা সরবরাহ করতে পারে না। ফলে মাছেদের বৃদ্ধি কমে যেতে থাকবে। মাছেরা যখন একটু বেশি বয়সী হবে তখন তাদের ফুলকা শরীর অনুযায়ী বাড়বে না। যেমন- কড মাছের মতো শরীর যদি ১০০ শতাংশ বাড়ে তবে ফুলকা বাড়বে মাত্র ৮০ শতাংশ। তাই বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মাছেরাও আকারে কমে যেতে থাকবে।
উষ্ণ পানির ভেতরে মাছেদের অক্সিজেন পরিমাণে বেশি প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে সাগরে অক্সিজেনও পরিমাণে কম থাকবে। তার মানে ফুলকা শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনসরবরাহ করতে পারবে না। এর ফলে মাছেদের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাবে যাতে অল্প অক্সিজেনে তার যেন বাঁচতে পারে। কিছু কিছু মাছ আছে যাদের অক্সিজেন ও শক্তি দুটোই বেশি প্রয়োজন হয়। তারা বেশি আকারে ছোট হয়ে যাবে যা মৎস্যখাতের জন্য্ও হুমকিস্বরূপ। যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের জন্য এটি অশনি সংকেত। এই পরিবর্তন পরিবেশেও বড়সড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
বাংলা ইনসাইডার/আরএইচবি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন