নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
‘কলেজ থেকে ফেরার পর বাসায়ই থাকি। প্রাইভেটে যাওয়া ছাড়া খুব একটা বের হই না। ফুটপাতের টং দোকান আর পার্ক ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে না। এর চেয়ে বাসাই ভালো, ঘরে বসে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করি। সোস্যাল মিডিয়া, ইউটিউব ও অনলাইনে মুভি দেখেই অধিকাংশ সময় কাটে। এর পাশাপাশি রেগুলার পড়াশোনা তো আছেই।’
ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মামুন আদনানের অবসর যাপন এমনই। বর্তমান সময়ের অধিকাংশ তরুণের অবসর-বিনোদনের অন্যতম প্রিয় অনুসঙ্গ বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ। স্ক্রিন ছুয়ে ছুয়ে সময় কাটানোর এ প্রবণতা শহর ও গ্রামে প্রায় একই রকম। বরং গ্রামাঞ্চলে ক্রমেই এ সংখ্যা বাড়ছে।
এ প্রতিবেদন তৈরির জন্য ঢাকার বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রত্যেকের হাতেই আছে স্মার্টফোন। বন্ধুরা জড়ো হয়েছেন, গল্প করছেন, খাওয়া-দাওয়া করছেন, টিপ্পনি কাটছেন। তারপরও বেশিরভাগের মনোযোগ হাতের স্মার্ট ডিভাইসের দিকে। ফাঁক বুঝে মুঠোফোনের শুভ্র স্ক্রিন ছুয়ে দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে কেউ কেউ একাকী সময় পার করলেও, আঙুলের স্পর্ষে ঢুকে পড়ছেন ডটকম দুনিয়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পলাশ মাহবুব বলেন, আড্ডায়ও তো আজকাল সোস্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলি। সবসময়ই নেট চালু থাকে। সময় সময় বিভিন্ন নটিফিকেশন আসে, চেক করি। লাগলে রিপ্লাই দিই। সঙ্গে আড্ডাও চলে।’
ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্ব পরিস্থিতি, ইতিহাস, সংবাদ, তথ্য ও শিল্প-সংস্কৃতিক আদান-প্রদানসহ নানা বিষয় জানার সুযোগ পাচ্ছে তরুণেরা। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার কাঠামো ও জ্ঞান চর্চায় যুক্ত হয়েছে বিবিধ সম্ভাবনা। দৈনন্দিন জীবনের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটও বদলে দিচ্ছে ইন্টারনেটের ব্যবহার। তরুণদের মধ্যে উন্নত ও আধুনিক জীবনের আকাঙ্খা বাড়ছে। একই সঙ্গে কমছে মানসকি সীমাবদ্ধতা, বৃদ্ধি পাচ্ছে বিষয়ভিত্তিক সৃজনী দক্ষতা।
আরেক শিক্ষার্থী হেমন্ত সরোয়ার বলেন, সব কিছুই এখন ইন্টারনেটে। এটা ছাড়া চলে না। জ্যামে বসে বিরক্তি কাটাতে, কারো অপেক্ষায় বসে থাকলে, বিশাদগ্রস্থ হলে, যোগাযোগ, অবসর কিংবা বিনোদন- সবটাই এখন ইন্টারনেটভিত্তিক।
অবসরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তরুণদের বেশিরভাগই ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ভাইবার, ইমো, উইচ্যাট, ইন্সট্রগ্রামসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুঁ মারেন। এসব ব্যবহার করে তারা সরাসরি অডিও-ভিডিও কল, সাধারন কথপোকথন ও তথ্য আদান-প্রদানের কাজ করেন। কখনো কখনো জমে ওঠে অনলাইন আড্ডাও। অনেকে ইন্টারনেটভিত্তিক নানা ধরনের গেম খেলেও অবসর কাটায়। এ বিষয়ে একাধিক তরুণ জানিয়েছেন, ইদানিং তাঁরা একেবারেই টেলিভিশন দেখেন না। খেলা, খবর বা বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান দেখার কাজে টেলিভিশন নির্ভরশীলতা কমে এসেছে। মুভি, নাটক, অডিও বা ভিডিও গান- সবই দেখেন ইউটিউবে।
এ কাজে তাঁরা ব্যবহার করেন স্মার্টফোন, ট্যাবলেন, নোটবুক, ল্যাপটপ ও ডেক্সটপ কম্পিউটার। তবে এগুলোর মধ্যে স্মার্ট মুঠোফোন সহজলভ্য ও সব ধরনের পরিবেশে পরিবহনযোগ্য বলে এর ওপরই তরুণদের আগ্রহ বেশি।
বাংলা ইনসাইডার/আরজে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন