নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
মানুষের মুখাবয়ব, বিচিত্র অভিব্যক্তি, বিস্ময়কর! সেই চেহারার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখে বোঝা যাবে মানুষের আবেগ-অনুভূতি। জানা যাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত সব তথ্য। সমসাময়িক প্রযুক্তি মানুষের চেহারার অভিব্যক্তি পাঠ করার চেষ্টা করছে। সফলও হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু অ্যাপলিকেশন (অ্যাপ) ও সফটওয়্যার সফলভাবে এ কাজ করছে।
চেহারা শণাক্তকরণ পদ্ধতি ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে আঙুলের ছাপ পরীক্ষার মাধ্যমে তথ্য যাচাইয়ের মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। বিশ্বের অনেকে দেশেই এখন, যে কারোর পক্ষে মোবাইল ফোন দিয়ে একটা ছবি তুলে চেহারা শনাক্তকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য যাচাই করা সম্ভব। রাশিয়াতে ‘ফাইন্ড ফেস’ নামের একটি অ্যাপ ব্যবহার করে আগন্তুক লোকদের ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই করা হয়। ওই দেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা ব্যবহারের সুযোগ আছে। পাশাপাশি এ অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রয় ৭০ শতাংশ সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসে।
সিলিকন ভ্যালির গাড়ির শো-রুমগুলোয় ক্রেতারা আসলে তাঁদের ছবি নেওয়া হয়। পরে চেহারা শনাক্তকরণের মাধ্যমে ‘ফেসবুক ব্যাংক’ ব্যবহার করে ক্রেতাদের কাছে পণ্যের বিজ্ঞাপন পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বেসকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকভাবে এ কাজ শুরু করতে না পারলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়ই এ পদ্ধতির সুবিধা নেয়।
চীনের সরকার তাদের নাগরিকদের ছবি সংরক্ষণ করে রাখে। আমেরিকাও তাদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের সকল তথ্য একটা ডাটাবেজে সংরক্ষণ করে রাখে, যা ওই দেশের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) দরকারের সময় ব্যবহার করে। চেহারা শনাক্তকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করে। যদিও এ মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য বেরিয়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকে।
একজনের চেহারা শুধুমাত্র নাম নির্দেশক নয়। এটা একইসঙ্গে ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে রাখে। বিশ্বের কিছু প্রতিষ্ঠান চেহারা বিশ্লেষণের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুর্লভ জিনগত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রোগ নির্ণয়ের কাজ করছে। চেহারা বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী লোকদের সামাজিক তথ্য সংগ্রহ সম্ভব হচ্ছে, যা আগে অধরাই ছিল।
এরপরও এ প্রযুক্তি হুমকির মুখে আছে। স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক তথ-প্রমাণসহ বলছেন, যখন আলাদা আলাদা ভাবে একজন সমকামী ও একজন বিপরীতকামী লোকের ছবি দেখানো হবে, তখন চেহারা বিশ্লেষণ পদ্ধতির গাণিতিক নিরীক্ষণে ৮১ শতাংশ সঠিকভাবে তাদের যৌন অবস্থান নির্ণয় করতে সক্ষম হবে। এ নির্ণয় সাধারণ মানুষ ৬১ শতাংশ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। ফলে যে সব দেশে সমকামীতা অপরাধ, সেসব দেশে সফটওয়্যার পদ্ধতি ব্যবহার করে চেহার বিশ্লেষণের মাধ্যমে চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিপদে পড়ার আশঙ্কাও থাকবে।
বাংলা ইনসাইডার/আরজে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন