মন্তব্য করুন
একলা ঘর, ধূলো জমা গীটার
পড়ে আছে লেলিন, পড়ে আছে শেক্সপিয়ার
টিশার্ট জিন্সগুলো দেরাজে আছে
শুধু মানুষটা তুই নেইতো, নেইরে কাছে
ও বন্ধু তোকে মিস করছি ভীষণ
তোকে ছাড়া কিছুই আর জমেনা এখন
এই গানটার মতই আমরা ফেলে আসা বন্ধুদের মিস করতে থাকি আজীবন।
বন্ধু এমন একটা সম্পর্ক যার কোন বয়স হয় না। একদম ছোট্ট পায়ে চলতে শুরু করা থেকে লাঠি
হাতে বৃদ্ধ বয়েসেও আমরা যাদের সাথে নির্দ্বিধায় মনের সমস্ত কিছু খুলে বলতে পারি, যার
সামনে অনায়াসে হাসতে পারি, কাঁদতে পারি সেই হল বন্ধু। আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার পালিত
হয় বন্ধু দিবস। এই দিনে সবাই সবার বন্ধুদের কাছাকাছি থাকতে চায়। কিন্তু যাদের বন্ধুরা
অনেক দূরে চলে গেছে দীর্ঘদিন যোগাযোগ নেই অভিমান কিংবা রাগ করে দূরে সরে আছে অথবা এতটাই
দূরে সরে গেছে যেখান থেকে আর কখনোই ফিরে আসা যায় না তাদের কাছে বন্ধু দিবসটা আসলে কেমন?
তানভীর ( ছদ্মনাম) বলছিলেন তার বন্ধু মেহেদীর কথা। একই এলাকায়
বড় হয়েছেন, দুজন দুই স্কুলে পড়লেও স্কুল ছুটির সাথে সাথে দৌড়ে একজন আরেকজনের কাছে চলে
যেতেন। তারা একসাথে ফুটবল, ক্রিকেট খেলতেন মাঠে, রাত অবধি একসাথে আড্ডা দিয়ে বাসায়
ফিরতেন। হুট করেই একদিন তানভীর জানতে পারেন মেহেদীর যক্ষা হয়েছে। মেহেদীকে হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়েছে। বন্ধুকে একবার দুবার দেখতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে ভেবেছিলেন সুস্থ হয়ে
যাবে। কিন্তু হুট করেই একদিন খবর পান মেহেদী আর এই পৃথিবীতে নেই। তানভীর সেদিন যেমন
এই খবরটা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না আজও পারেন না। তার এখন মাঝে মাঝে ভীষন অপরাধবোধ
কাজ করে। কেন বন্ধুকে আরেকটু সময় দিলেন না ? কেন রোজ হাসপাতালে দেখা করতে গেলেন না
। এই অপরাধবোধ এখনো যন্ত্রনা দেয় তানভীরকে।
রেহমান সাহেব (ছদ্মনাম) বয়স এখন প্রায় ৭৫ বছর। কিছুদিন আগেই
হারিয়েছেন প্রিয় বন্ধু গিয়াস কে। গিয়াস তার ছেলেবেলার বন্ধু। তার সকল সুখ দুঃখের সঙ্গী
ছিল গিয়াস। একবার দুজনে মিলে সাঁতরে পার হয়েছিলেন কালীগঙ্গা নদী। মাঝ নদীতে তিনি খেই
হারিয়ে ফেললে টেনে পাড়ে নিয়ে গিয়েছিল গিয়াস। তার পালিয়ে বিয়ে করার সাক্ষীও ছিলেন প্রিয়
বন্ধু গিয়াস। তারা একসাথে বুড়ো হয়েছেন। কিন্তু গত বছর করোনা কেড়ে নিয়েছে তার প্রিয়
বন্ধুকে। শেষ দেখাও দেখতে পারেননি প্রিয় বন্ধুর মুখ। তিনি এখনো সকাল হলেই গিয়াসের বাড়ির
সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। এই হয়তো তার প্রিয়
বন্ধু চা হাতে রাস্তায় এসে দাঁড়াবে।
শিলা (ছদ্মনাম) এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। রোকেয়া হলে
থাকে। তার হলে প্রথমে উঠেই যে মেয়েটার সাথে পরিচয় হয় তার নাম নিশা। একই রুমে থাকত তারা।
নিশা তাকে আপন বোনের মতন করে আগলে রাখত। রান্না করতে পারত না শিলা। নিশা রোজ রাতে শিলার
জন্য রান্না করে রাখত। দুজনে মিলে বৃষ্টির দিনে টিএসসিতে ভিজত। রিকশা নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস
ঘুরে বেড়াত। বছর খানেক আগে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছিল দুজনে। একই দিনে হল থেকে বের হয়ে
একজন সায়দাবাদ আরেকজন গাবতলির দিকে আলাদা হয়ে যায়। সিলেটগামী শিলা সিলেট পৌছানোর আগেই
জানতে পারে তার প্রিয় বন্ধু আর নেই। বাস দুর্ঘটনায় ঘটনা স্থলেই মৃত্যু হয় তার। সেবার
চোখের জলেই ঈদ হয়েছিল শিলার। এখন শিলা আর সেই রুমে থাকেন না। মাঝে মাঝেই তার মনে হয়
৩১৮ নং রুম থেকে কে যেন তাকে ডাকছে শিলা শিলা বলে।
এইসব হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা আমাদের সবটা জুড়ে থাকে। আমরা চাইলেও
তাদের ভুলতে পারি না। তাদের অস্তিত্ব আমাদের বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয় জীবনভর। হারিয়ে যাওয়া
সেইসব মানুষের বন্ধুরা ভলো থাকুক।
মন্তব্য করুন
বন্ধুত্ব বন্ধন স্বার্থহীন ভালোবাসা বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
"বৈষম্য" বর্তমানে বৈশ্বিক ভাবে একটা বড় সংকটের নাম। পৃথিবী জুড়ে মানুষ নানা কারণে, নানা দিক থেকে বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। মানুষে মানুষে কলহ এবং বিবাদের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় মানুষের অভ্যন্তরীণ বৈষম্যভিত্তিক চিন্তা চেতনাকে। বয়স, ধর্ম, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, লিঙ্গ, বর্ণ নানা দিক থেকেই এই ভেদাভেদের রেশ চলেই আসছে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে, লিঙ্গ এবং ধর্ম ভিত্তিক বৈষম্য বেশি বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের জন্য দেশে নারীরা আজও পিছিয়ে আছেন। শিক্ষাগত বাধ্যকতার জন্য শিক্ষাহার তুলনামূলক বাড়লেও রাজনৈতিক এবং অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে এখনো নারী অংশগ্রহণের হার কমের দিকেই। লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে মানুষ আজও লিঙ্গ অন্ধত্বকেই বুঝে। অথচ সমতার বিষয়বস্তু মানব অধিকার অধিদপ্তর থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে সকল লিঙ্গের মানুষের সমান অধিকার এবং কাজ করার সুনিশ্চিত বাস্তবায়ন।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, দেশে বৈষম্যের একটি প্রধান কারণ বৈষম্যের স্বীকার হওয়া মানুষদের তাদের অবস্থার বিষয়ে নিরপেক্ষতা। বিভিন্ন সেক্টরে মানুষ অবস্থা পরিবর্তনের জন্য প্রতিবাদ বা প্রয়োজনীয় দাবি তুলে না ধরার জন্য তাদের অবস্থার সঠিক পরিবর্তন ঘটে না। যার ফলস্বরূপ পর্যায়ক্রমে এই বৈষম্য চলতে থাকে। কিছু শ্রেনীর মানুষ তার বর্তমান সম্বল হারানোর ভয়ে অনেক সময় নিজেদের দাবির কথা উল্লেখ করে না। ফলে বৈষম্য চক্রকারে চলতেই থাকে।
এই প্রেক্ষাপটে এক দশকের বেশি সময় ধরে নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বৈষম্যবিরোধী আইন করার দাবি করে আসছিল সরকারের কাছে। দেরি হলেও সরকার সেই দাবি মেনে নিয়ে ৫ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বৈষম্যবিরোধী বিল ২০২২ উত্থাপন করেছে। পরে বিলটি পর্যালোচনার জন্য সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। বিলটিতে বলা হয়েছে, এ আইন অনুযায়ী এবং নীতিকরণ অনুসারে একজন নাগরিক কোনো সরকারি বা বেসরকারি অফিস, জনসমাগম হয় এমন কোনো স্থান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেকোনো রকম বৈষম্যের শিকার হলে প্রতিকার চাইতে পারবেন৷ তবে এই আইনের সীমাবদ্ধতা পর্যালোচনা করেছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।
তাদের মতে দেশে বৈষম্য, হোক সেটা নারী ভিত্তিক কিংবা ধর্মীয়, এটিকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। কেউ সামাজিক বা অন্য কোনো ক্ষেত্র বিশেষে যদি কোনো ধরণের বৈষম্যেএ স্বীকার হন তবে সেইক্ষেত্রে শাস্তির দাবি করতে পারেন। যেখানে শাস্তির কার্যকারিতা বাস্তবায়ন করতে হতে পারে বিলম্ব। অথচ দেশে গড়ে ১০ জনের মধ্যে ৪ জন নারী কোনো না কোনো ভাবে বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে কর্মক্ষেত্র এবং অন্যান্য সেক্টরে। আবার মূল জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩৭ শতাংশ লোক নিয়মিত বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন কোনো না কোনো ভাবে।
সম্প্রতি নেপালের বৈষম্য বিরোধি আইন পাশ হওয়ার সুবাদে রাজনৈতিক দিক থেকে বৈশ্বিক প্রশংসা লাভ করছে এই দেশটি। এই আইনে উল্লেখ করা হয়েছে বৈষম্য, যেকোনো ধরনের বৈষম্য অপরাধ। এই ক্ষেত্রে যদি বৈষম্য ভিত্তিক কাজের সাথে কেউ সরাসরি কিংবা পরোক্ষাভাবে যুক্ত থাকে তাহলে অবশ্যই তাঁকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
নাগরিক সমাজ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো গুলো যে দাবি রাখছে তা হলো, দেশের বৈষম্য কমানোর জন্য অবশ্য সরকার এবং নাগরিকদের সচেতনা। যদি বৈষম্যকে অন্য দেশের মতো অপরাধের দৃষ্টিতে দেখা হয় এবং শাস্তি বাস্তবায়নের নিশ্চতকরণ করা যায় তাহলে এই বৈষম্যের হার নিম্নমুখী হবে। তাছাড়া, কর্মক্ষেত্রে নারীদের যেকোনো বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। ধর্মীয় বৈষম্য এবং যেকোনো ধরণের উগ্রবাদী ঘটনা রোধে সরকারি আইন পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের দিকে সচেষ্ট হতে হবে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির। আঞ্চলিক এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ভিত্তিক যেসকল বৈষম্য দেশে তৈরি হয়, সেইসবের জন্যও প্রয়োজন আঞ্চলিক এবং জেলা প্রশাসন ভিত্তিক আইনি ব্যবস্থা পরিচালনা বিষয়ক উদ্যোগ। শিক্ষা বৈষম্যের ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি নারী শিক্ষা এবং অনৈতিক ভাবে দূর্বল মানুষদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য তহবিল এবং সরকারি আইন পাশ করার নিশ্চিতকরণ করাও প্রয়োজন।
লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য নারী পুরুষ বৈশ্বিক সংকট
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এই গানটার মতই আমরা ফেলে আসা বন্ধুদের মিস করতে থাকি আজীবন। বন্ধু এমন একটা সম্পর্ক যার কোন বয়স হয় না। একদম ছোট্ট পায়ে চলতে শুরু করা থেকে লাঠি হাতে বৃদ্ধ বয়েসেও আমরা যাদের সাথে নির্দ্বিধায় মনের সমস্ত কিছু খুলে বলতে পারি, যার সামনে অনায়াসে হাসতে পারি, কাঁদতে পারি সেই হল বন্ধু। আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার পালিত হয় বন্ধু দিবস...
আগ্রার তাজমহলে সৌন্দর্য বিশ্বাসীকে মুগ্ধ করে। এর কাঠামোগত সৌন্দর্য দেখে পর্যটকরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান। ভারতের সর্বাধিক দর্শনীয় একটি স্থান হলো তাজমহল। এটি বিশ্বের সাতটি আশ্চর্যের মধ্যে একটি। তাজমহটি পারস্য, ইসলামিক ও ভারতীয় স্থাপত্যের একটি নিখুঁত সংমিশ্রণ। তবে আপনি কি জানেন, ভারতে আরও একটি তাজমহল আছে। যেটি ‘কালো তাজমহল’ নামে পরিচিত। ভারতের বুরহানপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরেই এই তাজমহলের অবস্থান।