ভোর বেলায় বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমা। মূহুর্তেই ঝড়ে গেলো সাতটি প্রাণ। আহত কয়েকজনকে নেয়া হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও তিন প্রাণ নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। পিতা-মাতা, স্বজনদের আর্তনাদে ভারি হয়ে গেলো রাজধানী ঢাকার আকাশ। বাতাসে বারুদের গন্ধ। এ যেন যুদ্ধ নগরীতে পতিত হলো রাজধানী ঢাকা। নাকে-মুখে-চোখে বাতাসে বারুদের ঝাঁঝালো গন্ধ আর ধোঁয়ায় কলরব-কোলাহলে খালি হয়ে গেলো রমনা পার্ক। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর আরেকটি, রিমোট কন্ট্রোলের চাপে পরপর পুতে রাখা দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয় সেদিন। বলছিলাম, ২০০১ সালের পহেলা বৈশাখের দিন ভোরে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের কথা।
সেই থেকেই শুরু বাঙালির সংস্কৃতিতে আঘাত হানার সশস্ত্র ষড়যন্ত্রের নীলনকশা। যে ষড়যন্ত্র এখনও চলমান, বাঙালির সংস্কৃতিকে পঙ্গু করে দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে বাংলার মানচিত্র গিলে খাওয়ার ষড়যন্ত্র এখনও চলমান। এখনও মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধের জন্য আইনি নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ আদালতে মামলা ঠুকে দেওয়া হয় বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে র্যালি বন্ধের পায়তারায়। তবুও পালিত হচ্ছে বাঙালির সাংস্কৃতিক উৎসব পহেলা বৈশাখ!
আজ শুক্রবার। পহেলা বৈশাখ-নতুন বাংলা বর্ষ। জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি’ এভাবে বিদায়ী সূর্যের কাছে এ আহ্বান জানায় বাঙালি। পহেলা বৈশাখ আমাদের সকল সঙ্কীর্ণতা, কুপমুন্ডকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভিতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যোমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়।
এবারের পহেলা বৈশাখ বরণের আনন্দে মেতে ওঠেছে পুরো জাতি। মনে কোনো শঙ্কা না রেখে বাঙালির প্রাণের এই উৎসব উদযাপনে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গন। বাংলাদেশে অবস্থানরত সকল ভাষাভাষী সম্প্রদায় নানান আয়োজনে ভিন্ন ভিন্ন নামে উৎসবমুখর দিনটি পালন করতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা, হালখাতা, বৈশাখী গ্রামীণ মেলা, পান্তা-ইলিশ খাওয়া, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের পানি খেলা, ফুলবিজু পালনসহ নানা আয়োজন ও কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হয় বাংলা নতুন বছরকে।
বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ সকল অন্ধকার ও বাধা বিপত্তি দূর করে আগামী বছরগুলোতে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কামনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই শুভ নববর্ষের প্রাক্কালে আমাদের প্রার্থনা এই যে, আমরা যেন সমস্ত অন্ধকার ও বাধা বিপত্তি দূর করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারি।’
তিনি বলেন, ‘নানা ধরনের বাধা বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে দেশ আরও একটি বছর পার করেছে। দেশ-বিদেশে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘শুভ নববর্ষ’।
পহেলা বৈশাখে বর্ণিল উৎসবে মেতেছে দেশ। ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। ছায়ানট ভোরে রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করছে। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করছে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান আবশ্যিকভাবে জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস ও ইউনেস্কো কর্তৃক এটিকে বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসাবে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বাংলা নববর্ষে সকল কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার ও ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে।
এক সময় নববর্ষ পালিত হতো আর্তব উৎসব বা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। তখন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষির, কারণ কৃষিকাজ ছিল ঋতুনির্ভর। পরে কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে বাংলা সন গণনার শুরু হয়। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌর সনের ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয় নতুন এই বাংলা সন। অতীতে বাংলা নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এটি পুরোপুরিই একটি অর্থনৈতিক ব্যাপার। গ্রামে-গঞ্জে-নগরে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের প্রারম্ভে তাঁদের পুরানো হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে হিসাবের নতুন খাতা খুলতেন।
এ উপলক্ষে তাঁরা নতুন-পুরাতন খদ্দেরদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করতেন এবং নতুনভাবে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসূত্র স্থাপন করতেন। চিরাচরিত এ অনুষ্ঠানটি আজও পালিত হয়।
মূলত ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে। এসময় ঢাকায় নাগরিক পর্যায়ে ছায়ানটের উদ্যোগে সীমিত আকারে বর্ষবরণ শুরু হয়। আমাদের মহান স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে এই উৎসব নাগরিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে।
পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে। কালক্রমে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন শুধু আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। যা ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।
আনেক বাঁধা-বিপত্তি আর তাজা প্রাণের বিনিময়ে আজ বাঙালির সংস্কৃতির পহেলা বৈশাখ উৎসব বিকশিত। আজও পালিত হচ্ছে অকুতোভয় বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। আজও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ মঙ্গল শেভাযাত্রা নামে র্যালি বের করেছে। আজও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা বৈশাখের বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখের র্যালিতে অংশগ্রহণ করেছে। বৈশাখ মমত্ববোধের, বৈশাখ ভালোবাসার, অম্লান থাকুক এই প্রত্যাশা এবং প্রাণের দাবি আজ প্রতিটি বাঙালি সত্তার। এতো বাঁধা-বিপত্তি; তবুও আজ পালিত হচ্ছে বাঙালির সাংস্কৃতিক উৎসব পহেলা বৈশাখ!
বাঙালি সাংস্কৃতি উৎসব পহেলা বৈশাখ
মন্তব্য করুন
হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতাগ্রহণ করলে সেটির পরিণাম যে নির্মম হয় সেটার উৎকৃষ্ট উদাহরণ স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। পঁচাত্তরে জাতির পিতার নির্মম হত্যাকাণ্ড, এরপর ৩রা নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ডের প্রধান সুবিধাভোগী জেনারেল জিয়াউর রহমান একের পর এক ক্যূ-পাল্টা-ক্যূ, হত্যাকাণ্ড, মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁসি, চাকরিচ্যুতি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার যে চেষ্টা করেছেন তার পথ ধরেই নিজেও নির্মমভাবে নিহত হন। আজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী
জিয়া প্রথমে জাতির পিতাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যা করেন এবং তারপর একই বছরের ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেন। জিয়া পরে একের পর এক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে অনেক সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করেন। জিয়াউর রহমান যেসব সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করেছিলেন, তারাও জানেন না, তাদের দোষ কী ছিল। জিয়া শুধু সামরিক কর্মকর্তাদেরই হত্যা করেননি, আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকেও হত্যা করেছেন।
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নানা সময় বিভিন্নভাবে সেনা-অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছিল। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ এবং সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন বিরোধী গোষ্ঠীর একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ সেই সময়ে ঘটে চলেছিল নিয়মিতভাবেই।
বলা যায়, এমন পরিস্থিতির ধারাবাহিকতায় ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সামরিক বাহিনীর একদল অফিসারের হামলায় নিহত হন দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান। ছয় বছর আগে ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে সামরিক বাহিনীতে আরেকটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই তিনি দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন। এর পরের বছরগুলিতে তাকে উৎখাতের জন্য বিভিন্ন সময় সামরিক বাহিনীতে চেষ্টা করা হলেও তাঁর অনুগত সেনা অফিসার এবং সদস্যরা সেই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাগুলি দমন করেন।
কিন্তু ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমান নিহত হন সেনা অফিসারদের হামলাতেই। চট্টগ্রাম সেনানিবাসে তখন যে সেনা অফিসাররা ছিলেন তাদের অনেকেই জিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তা সত্বেও ঘটে যায় এই হত্যাকাণ্ড। প্রশ্ন ওঠে, অনুগত অফিসাররাই কি জিয়াকে হত্যা করেছিলেন? নাকি তার অনুরাগী অফিসারদের ব্যবহার করে অন্য কোনো গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থের জন্য হত্যা করেছিল তাকে?
এই হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রাম সেনানিবাসের প্রভাবশালী অফিসাররা কয়েকদিন চট্টগ্রামে কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখলেও ঢাকা সেনা সদর এবং দেশের অন্যান্য সেনানিবাস তাদের সঙ্গে নেই এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যেতেই তাদের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম সেনানিবাসের তৎকালীন জিওসি বা ডিভিশনাল কমান্ডার জেনারেল আবুল মঞ্জুর তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন অফিসারকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও দ্রুতই ধরা পড়ে যান এবং তাকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ফিরিয়ে এনেই হত্যা করা হয়। বলা হয়, উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্যরা তাঁকে হত্যা করেছে।
জেনারেল মঞ্জুরকে বিচারের সম্মুখীন না করে এভাবে হত্যা করা অনেক প্রশ্ন আর সন্দেহের জন্ম দেয় স্বাভাবিকভাবেই। জিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় যে সেনা অফিসারদের তাদের অনেকেই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। চট্টগ্রাম কারাগারে গোপনে এবং খুব তাড়াহুড়ো করে বিচারের পর ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে ফাঁসি দেওয়া হয়, অনেককে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় এবং পরবর্তীতে সেনাবাহিনী থেকে চাকুরিচ্যুত করা হয় আরও বেশ কিছু অফিসারকে।
সত্তরের দশকের শেষ দিকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অফিসাররা একাধিকবার জিয়াকে উৎখাতের চেষ্টা করেন। ১৯৮০ সালে দুই মুক্তিযোদ্ধা অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল দিদারুল আলম ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুন্নবী খানের মাধ্যমেও এই অফিসাররা জিয়ার বিরুদ্ধে সেনা-অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেন। নুরুন্নবী খান মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়ার নেতৃত্বাধীন জেড ফোর্সের একটি বাহিনীতে থেকেই যুদ্ধ করেছিলেন। জিয়ার বিরুদ্ধে সংঘটিত সেনা অভ্যুত্থানসমূহের কোনোটাই অবশ্য সফল হয়নি।
এমন জটিল এক পরিস্থিতিতেই ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে সফরের সময় শেষ রাতে এক সামরিক হামলায় প্রেসিডেন্ট জিয়া নিহত হন। চট্টগ্রাম সেনানিবাসে মঞ্জুরের অধীনস্থ সেনা অফিসাররা এই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাই হত্যাকাণ্ডের পর মেজর জেনারেল মঞ্জুরকেই এই পরিস্থিতির দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়।
৩০ মে গভীর রাতে সার্কিট হাউসে প্রেসিডেন্ট জিয়ার ওপর আক্রমণ চালানো হবে তা কি জেনারেল মঞ্জুর জানতেন? সেই সময় চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার ছিলেন জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। তাঁর বর্ণনা থেকে জানা যায়, যেদিন রাষ্ট্রপতি জিয়া চট্টগ্রাম পৌঁছান তখন তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য জেনারেল মঞ্জুর বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন না। মঞ্জুর কেন আসেননি সে ব্যাপারে জিয়া চট্টগ্রাম সেনানিবাসের অন্য একজন উর্দ্ধতন সেনা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেসও করেন (এই প্রসঙ্গে আবার অন্য বর্ণনায় জানা যায়, রাষ্ট্রপতি জিয়াই নাকি জেনারেল মঞ্জুর যেন বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে না আসেন সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন)।
মন্তব্য করুন
২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসটি এদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশ বর্তমানে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। সশস্ত্রবাহিনী থেকে এ অবধি ১,৮৩,৩৭৮ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত হয়েছেন।শান্তি রক্ষায় কাজ করার সময় নিহত হয়েছেন ১৩৯ জন,আহত হয়েছেন ২৪০ জন।২০২২ সালে এসে আমরা সশস্ত্রবাহিনী থেকে ৬৩২৪ জন সদস্যকে শান্তি রক্ষার কাজে নিয়োজিত দেখতে পাচ্ছি। এ ভেতর নারী সদস্য রয়েছেন ৩৭১জন। বর্তমানে ৯টি মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী সদস্য কাজ করছেন।উল্লেখ্য, সশস্ত্রবাহিনী থেকে ৪৩টি দেশে এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন।এসব তথ্যই বলে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসটি কতটা গুরুত্ববহ।
২. শান্তিরক্ষীদের সীমাহীন আত্মত্যাগকে স্মরণ করে ২০০৩ সাল থেকে দিবসটি বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে। বর্তমানে রাশিয়ার আক্রমণের শিকার ইউক্রেনের শান্তিরক্ষী সংস্থা এবং ইউক্রেন সরকারের যৌথ প্রস্তাবনায় ১১ ডিসেম্বর, ২০০২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের গৃহীত ৫৭/১২৯ প্রস্তাব অনুযায়ী এ দিবসের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। ১৯৪৮ সালে সংঘটিত আরব-ইসরাইল যুদ্ধকালীন যুদ্ধবিরতী পর্যবেক্ষণে গঠিত জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গ্যানাইজেশন (আন্টসো) দিনকে উপজীব্য করে ২৯ মে তারিখটি স্থির করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ট্রুপস সুপারভিশন অর্গ্যানাইজেশন (আন্টসো)-ই হচ্ছে প্রথম জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী। এই হিসেবে(১৯৪৮ সাল থেকে) জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী ৭৫ বছর পূর্ণ করল। এদিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সকল পুরুষ-নারীকে শান্তি রক্ষার লক্ষ্যে সর্বোৎকৃষ্ট পেশাদারী মনোভাব বজায়, কর্তব্যপরায়ণতা, নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁদের আত্মত্যাগের ঘটনাকে গভীর কৃতজ্ঞতা ও যথোচিত সম্মানপূর্বক স্মরণ করা হয়। ২০০৯ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় নারীদের অবদান ও ভূমিকার উপর সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। শান্তিরক্ষায় নারীর ভূমিকা ও লিঙ্গ-বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যেই ওই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
আগেই উল্লেখ করেছি, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পূর্ণ করেছে ৭৫ বছর। পক্ষান্তরে জাতিসংঘের অধীনে চলতি বছর বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী ৩৫ বছর পূর্ণ করল(১৯৮৮-২০২৩)। তবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে যুদ্ধরত সিরিয়াতে একটি মেডিকেল টিম পাঠিয়ে শান্তি রক্ষায় মুসলিম দেশগুলোর সাথে তাঁর সরকারের বন্ধুত্ব স্থাপনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে স্বীকৃতি দেয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা প্রশংসিত হয়েছেন দেশ-বিদেশে। যেমন, নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা কোভিড-১৯(২০২০-২০২১)মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অব্যাহত ও নিবেদিতভাবে যে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপসমূহের কথা তুলে ধরে তিনি বলেছিলেন, শান্তিরক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির বিষয়টি বাংলাদেশের ‘নারী, শান্তি ও সুরক্ষা’ বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনার মূল কৌশলের একটি।এর আগে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছিলেন, মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সেনাদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মহিলা পুলিশ দল সোচ্চার রয়েছেন সামাজিক-সম্প্রীতি সুসংহত করতে। আমি কোনো মিশনে গেলেই উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের সেনাদের কথা বলি।’ জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রশংসা অর্জন আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থেই গৌরবের। এ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সেসময় বলেছিলেন, শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্রবাহিনীর অংশগ্রহণের ব্যাপক সুযোগ করে দেয়া আওয়ামী লীগ সরকারের অঙ্গীকার। তাঁর মতে, ‘বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি আর সমৃদ্ধি ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন। সে দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে সবাই বিশ্বশান্তি বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর। সে আলোকেই বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।’ প্রকৃতপক্ষে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে বিভিন্ন দেশের জাতিগত সংঘাত মোকাবেলা এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত বিচিত্র দেশের রাস্তাঘাট, অবকাঠামো নির্মাণ ও চিকিৎসা সেবায় আমাদের শান্তিরক্ষীরা অনুকরণীয় দায়িত্ব পালন করায় বিশ্বব্যাপী প্রসংশিত হচ্ছেন।
অর্থাৎ বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর বড় অংশ এবং পুলিশ ও অন্যান্য সদস্যরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন। ‘দেশের প্রতিরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ আর জনগণের জন্য ভালোবাসা’- এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আমাদের সশস্ত্রবাহিনীর দেশপ্রেম। এখন বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী একটি পরিচিত ও আস্থার প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটি পৃথিবীর যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দুর্যোগময় পরিবেশে শান্তি স্থাপন করে অপরিচিত দেশের অচেনা মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। শান্তি রক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী বেশ কিছু সেনা কর্মকর্তা তাঁদের অভিজ্ঞতা নিয়ে গ্রন্থ রচনা করেছেন। যেমন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বায়েজিদ সরোয়ার লিখেছেন ‘কম্বোডিয়া’, ‘কুর্দিস্তানের দিনগুলি’ লিখেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামস। আরো অনেকের গ্রন্থ রয়েছে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ নিয়ে। ফলে শান্তি মিশনের অভিজ্ঞতা নিয়ে এদেশে ‘সামরিক সাহিত্যে’র একটি ভিন্ন ধারা সৃষ্টি হয়েছে।
জাতিসংঘ সনদের ষষ্ঠ অধ্যায়ে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা এবং সপ্তম অধ্যায়ে শান্তি প্রয়োগের বিধান রয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম সংঘর্ষে লিপ্ত দুপক্ষের সম্মতি এবং মতৈক্যের উপর ভিত্তি করে শুরু হয়। শান্তিরক্ষা বাহিনীকে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ কর্তৃক অনুমোদিত একটি শান্তি চুক্তি বা শান্তি ব্যবস্থা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে মোতায়েন করা হয়। এ পর্যন্ত জাতিসংঘের ৬৮টি মিশনের মধ্যে ৪৩টিতে দেড় লাখের বেশি বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী সদস্য
মন্তব্য করুন
সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে গ্যাস পাইপলাইন বিষ্ফোরণের খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। পুরাতন ঢাকার ধূপখোলা বাজারে রাস্তার পাশে তিতাস গ্যাস পাইপলাইন লিকেজ থেকে বিষ্ফোরণে পাশ্ববর্তী দোকান ও বাড়িঘরে আগুন লেগে শিশু, নারীসহ ৯ জন দগ্ধ হয়েছেন।
গত ২৭ এপ্রিল ২০২৩ বিকালে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে রূপসী-কাঞ্চন সড়কের পাশে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশনের ৮ ইঞ্চি ব্যাসের একটি পাইপলাইনে সৃষ্ট ফুটো থেকে বিষ্ফোরণ সংঘটিত হয়েছে। সম্প্রতি নারায়নগঞ্জ এলাকায় Dhaka-Narayangonj-Demra (DND, ডিএনডি) Paddy field project এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত একটি পাকা মসজিদের নীচে থাকা গ্যাস পাইপলাইন বিষ্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
রাজধানী ঢাকা ৪ ও ৫ এবং নারায়নগঞ্জ-৪ নির্বাচনী এলাকার পাশাপাশি বেশকিছু এলাকা নিয়ে গঠিত ডিএনডি প্রকল্প এলাকায় অবহেলায় পড়ে থাকা ঢাকা ও নারায়নগঞ্জের মধ্যকার বিশাল বিলে অব্যবহৃত জমিতে ধান চাষের আওতায় আনার জন্য ১৯৬২ সালে জাপানের অর্থনৈতিক সহায়তায় চারিদিকে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ধানক্ষেতে সেচ দেওয়ার জন্য এই বাঁধের মধ্যে ৯৫ কিলোমিটার লম্বা আঁকাবাঁকা খাল খনন করা হয়। কিন্তু মেগাশহর ঢাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট আবাসন সংকট মোকাবেলায় ডিএনডি বাঁধের মধ্যকার ধানক্ষেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাঁচাপাকা অসংখ্য বাড়ীঘর নির্মাণ হতে থাকে। ধানক্ষেতের আইল ধরে নিজেদের সুবিধামত রাস্তা তৈরি করা হয়। প্রথমে কাঁচা রাস্তা, পরে ইট বিছানো রাস্তা, সর্বশেষ পাকা রাস্তা। চারিদিকে নির্মিত বাঁধ এর লেবেল থেকে প্রায় ১৫-২০ ফুট নীচে ধানক্ষেতে গড়ে উঠে অপরিকল্পিত জনবসতি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। এই সকল অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠা আবাসিক বাড়িঘরের বাসিন্দাদের জ্বালানী চাহিদা মেটাতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি থেকে ঐ সকল অপরিকল্পিত রাস্তায় গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন করেছে। চারিদিকে রয়েছে উঁচু বাঁধ। ফলে গভীর নলকূপে উত্তোলিত নিত্যদিনের ব্যবহার্য পানি, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় অপরিকল্পিত বসতি ও রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে থাকলে সমর্থ্য অনুযায়ী যে যার বাড়িতে মাটি ভরাট করে উঁচু করতে থাকে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে স্থানীয় প্রশাসন রাস্তাঘাট, অলিগলি গুলো মেরামতের নামে মাটি ভরাট করে উঁচু করতে থাকে। সর্বশেষ, ডিএনডি বাঁধের মধ্যকার জলাবদ্ধতার স্থায়ী নিরসনে স্থানীয় রাস্তা ও তার শাখা-প্রশাখাসমূহ উঁচু করে চারিদিকে নির্মিত ডিএনডি প্রকল্পের বাঁধের সমান উচ্চতায় আনা হয়। ফলে গত দীর্ঘ ২৫-৩০ বছর পূর্বে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি যে পাইপলাইন স্থাপন করেছিল, লৌহনির্মিত সেই পাইপলাইন সমূহ প্রায় ১৫-২০ ফুট মাটির নীচে চাপা পড়ে যায়।
রাস্তাসমূহ মেরামতের পূর্বে, কদমতলীর অনেক জলমগ্ন এলাকায় রাস্তার পাশে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত গ্যাস পাইপলাইন থেকে বুঁদ বুঁদ করে গ্যাস নির্গত হতে দেখা গিয়েছিল। এবিষয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সরেজমিনে তদন্ত করে এই সমস্যা নিরসনে পরীক্ষামূলকভাবে পদক্ষেপ নেয়া হয়। একটি নির্দিষ্ট এলাকার কয়েক কিলোমিটার রাস্তায় ১৫-২০ ফুট মাটির নীচের পুরাতন গ্যাস পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে ২ ফুট মাটির নীচে ২ ইঞ্চি ব্যাসের নতুন পাইপলাইন স্থাপন করে অনুমোদিত প্রত্যেক গ্রাহককে পুনঃসংযোগ দেওয়া হয়। ঐ নতুন সংযোগপ্রাপ্ত গ্রাহকদের তরফ থেকে বর্তমানে তেমন কোন অভিযোগ না থাকলেও, ডিএনডি বাঁধের মধ্যকার বৃহৎ এলাকায় ২০-২৫ বছর পূর্বে স্থাপিত তিতাস গ্যাস পাইপলাইনে সংযুক্ত গ্রাহকদের অভিযোগের শেষ নেই। বাড়িতে অপ্রতুল গ্যাস সরবরাহের অভিযোগতো রয়েছেই। এছাড়া সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গ্যাসের চুলার সুইচ অন করার পর প্রথমে পানি নির্গমন হয়, পরে খুবই ক্ষীণ চাপে গ্যাস পাওয়া যায়। রান্নার কাজে ভোগান্তির শেষ নেই। অনেক বাড়ীতে লাকড়ির চুলা বা কেরোসিনের চুলায় রান্না করতে হয়। যদিও গ্যাস বিল নিয়মিত করে যাচ্ছে গ্রাহকগন।
এমনি পরিস্থিতিতে গত কয়েক মাস পূর্বে কদমতলী থানার ৫৩ নং ওয়ার্ডের হাজী খোরশেদ আলী সরদার রোডের বাসিন্দারা স্থানীয় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অফিসে গিয়ে উপরোক্ত অভিযোগ দায়ের করলে, ১৫-২০ বছর পূর্বে স্থাপিত ২০-২৫ ফুট মাটির নীচের ধ্বংস প্রাপ্ত পাইপলাইনে সৃষ্ট ফুটো খুঁজতে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে মাটি খুড়তে শুরু করে। ২০-২৫ ফুট মাটির নীচের পুরাতন গ্যাস পাইপলাইন খুঁজতে গিয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো পুকুর খনন করেও পাইপে ফুটো বা ফাটা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঐ সকল এলাকায় চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায়, স্থানীয় বাসিন্দারা, একই এলাকায়, ইতিপূর্বে পরীক্ষামূলকভাবে গৃহীত প্রকল্পের ন্যায় পুরাতন পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে দুই ফুট মাটির নীচে নতুন পাইপলাইন স্থাপন করার পরামর্শ দেন। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কর্তৃপক্ষ পুরাতন গ্যাস পাইপলাইন খুঁজতে রাস্তায় পুকুর খননের কাজ বন্ধ করলেও নতুন পাইপলাইন স্থাপন করার কাজ অদ্যাবধি শুরু করেননি।
২৫-৩০ বছর পূর্বে স্থাপন করা লোহার তৈরি পাইপগুলোর টেম্পার নষ্ট হওয়া এবং ১৫-২০ ফুট নিচে মাটির চাপে ঐ পাইপলাইন গুলো ফেটে যাওয়া বা মরিচা ধরে ছিদ্র হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেই ফেটে যাওয়া স্থান বা ছিদ্র দিয়ে পানি বা কাঁদা ঢুকে যাওয়াও অস্বাভাবিক কিছু নয়। এছাড়া ২৫-৩০ বছর পূর্বের স্বল্পসংখ্যক স্থানীয় বাসিন্দার চাহিদা অনুযায়ী যে ব্যাসার্ধের পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছিল, পরবর্তিতে প্রয়োজনের তাগিদে সেই একই পাইপলাইন থেকে অনেক বেশি সংখ্যক গ্রাহকদের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে অপেক্ষাকৃত সরু পাইপলাইনে সক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত সংযোগ দেওয়ায় গ্যাসের চাপও কমেছে।
এমতাবস্থায়, ফেটে যাওয়া বা ফুটো হওয়া গ্যাস পাইপলাইন থেকে নির্গমিত গ্যাস থেকে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে পুরাতন গ্যাস পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন করে নতুন পাইপলাইন স্থাপন করা প্রয়োজন। এছাড়া গ্রাহকদের যথাযথ সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরিমাণ গ্যাস সরবরাহে নিশ্চিত করতে পুরাতন গ্যাস পাইপলাইন বাতিল করে অধিক ব্যাসার্ধের নতুন পাইপলাইন স্থাপন করা সময়ের দাবী।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
‘ভালো থেকো ফুল, মিষ্টি বকুল, ভালো থেকো- ভালো থেকো ধান, ভাটিয়ালি গান, ভালো থেকো- ভালো থেকো মেঘ, মিটিমিটি তারা- ভালো থেকো পাখি, সবুজ পাতারা ... ’- এভাবেই বাংলার প্রকৃতি আর প্রাণের প্রতি ভালবাসা জানিয়েছিলেন প্রথাবিরোধী বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদ।
সেই ভালবাসার আকাক্ষায় ছিল শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ। সেই সুবাদে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রবল সোচ্চার ছিলেন এই প্রথাবিরোধী লেখকের কলম। ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ নামের উপন্যাস লিখে স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদীদের রোষানলে পড়েছিলেন তিনি। শিকার হতে হয়েছিল নৃশংস জঙ্গী হামলার। কয়েকজন তুচ্ছ মানুষের চাপাতির আঘাতে হুমায়ুন আজাদের মতো একজন মেধাবী লেখক ও অধ্যাপকের মৃত্যু হয়।
আজ শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) একুশে পুরস্কারজয়ী এই বহুমাত্রিক লেখকের ৭৭তম জন্মদিন ও ৭৬তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়িখাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই কীর্তিমান লেখক। বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে অনন্য মননশীল, বহুমাত্রিক জ্যোতির্ময়, প্রথা ভাঙার রূপকার ছিলেন হুমায়ুন আজাদ।
আরেকজন হুমায়ুন আজাদকে এই বাংলায় ফিরে পাওয়া কি সম্ভব? চাইলেই কি সবাই পারবেন তার মতো সাহসী লেখক হতে? চাইলেই কি লেখা যাবে ‘লাল নীল দীপাবলী’ কিংবা ‘কতো নদী সরোবর’র মতো বই। সৃজনশীলতার ভুবনে বহুমুখী পথে বিচরণ করেছেন হুমায়ুন আজাদ। লিখেছেন পাঠকসমাদৃত কবিতা থেকে উপন্যাস। একই সঙ্গে ছিলেন তিনি ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক ও গবেষক, রাজনৈতিক ভাষ্যকার ও কিশোর সাহিত্যিক। কর্মজীবনে বেছে নেন শিক্ষকতা পেশাকে। সবশেষ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অলৌকিক ইস্টিমার’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয় এই লেখকের আলোচিত ও সমালোচিত প্রবন্ধের বই ‘নারী’। মূলত গবেষক ও প্রাবন্ধিক হলেও হুমায়ুন আজাদ ১৯৯০-এর দশকে একজন প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
বাংলা সাহিত্যে প্রথাবিরোধী লেখক হিসেবে হুমায়ুন আজাদ যোগ করেন এক ভিন্ন মাত্রা। তাঁর সমস্ত বই, প্রবন্ধ, কবিতা সৃষ্টি হয়েছে প্রথাকে অস্বীকার করে, তার প্রবচনগুচ্ছ এ দেশের যুক্তিবাদী পাঠকসমাজকে করে তুলেছে সচেতন।
হুমায়ুন আজাদের লেখাতে বাঙালি মুসলমান সমাজের কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি নিয়ে যুক্তিনির্ভর বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে ভিন্ন মতবাদ তুলে ধরা হয়েছে। এতে একদিকে তিনি যেমন নন্দিত হয়েছেন, আবার নিন্দিতও হয়েছেন। এর সপক্ষে তাঁর জবাব ছিল, তিনি এই গোত্রেরই মানুষ, তাই এ জাতির কাছে তাঁর প্রত্যাশা অনেক; কিন্তু যখন দেখেন বাঙালি অনিবার্যভাবে পতনকেই বেছে নিচ্ছে, তখন তিনি তার সমালোচনা করেছেন। তিনি কুসংস্কারহীন এক আধুনিক সমাজের স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু মৌলবাদীরা তাঁর স্বপ্নকে সত্যি হতে দেয়নি। তাঁকে হত্যার প্রচেষ্টা এবং পরবর্তীকালে মৃত্যুর মাধ্যমে তাঁর মতবাদকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
এই প্রখ্যাত লেখক, সাহিত্যিক ও কবিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা জানাই। হুমায়ুন আজাদ ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক, রাজনীতি ভাষ্যকার ও কিশোর সাহিত্যিক। তিনি ৭০টির বেশি বই লিখেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই সৃষ্টি করেছেন ভিন্ন ধারা।
ছাত্রজীবনে হুমায়ুন আজাদ অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি ১৯৬২ সালে রাঢ়িখাল স্যার জে সি বোস ইনস্টিটিউশন থেকে পাকিস্তানের মধ্যে ১৮তম স্থান অধিকার করে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। উভয় ক্ষেত্রে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান লাভ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
গবেষক ও প্রাবন্ধিক হুমায়ুন আজাদ নব্বইয়ের দশকে প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। হুমায়ুন আজাদের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘অলৌকিক ইস্টিমার’, ‘লাল নীল দীপাবলি (বাঙলা সাহিত্যের জীবনী)’ ‘জ্বলো চিতাবাস’, ‘শামসুর রাহমান-নিঃসঙ্গ শেরপা’, 'Pronominalization in Bengali’, ‘বাঙলা ভাষার শত্রুমিত্র’, ‘বাক্যতত্ত্ব’, ‘সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে’, ‘ফুলের গন্ধে ঘুম আসেন’, ‘কতো নদী সরোবর (বাঙলা ভাষার জীবনী)’, ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল’, ‘আমাদের শহরে একদল দেবদূত’, ‘আমার অবিশ্বাস’, ‘সীমাবদ্ধতার সূত্র’, ‘নারী’, ‘দ্বিতীয় লিঙ্গ’, ‘আধার ও আধেয়’, ‘আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম’, ‘মানুষ হিসাবে আমার অপরাধসমূহ’, ‘কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ’, ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ প্রভৃতি।
২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় একুশে বইমেলা থেকে বের হয়ে বাসায় ফেরার পথে হুমায়ুন আজাদের ওপর শারীরিক আক্রমণ করেন ধর্মীয় উগ্রবাদীরা। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে সরকার তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে পাঠায়। পরবর্তী সময়ে জার্মানির মিউনিখ শহরে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ হুমায়ুন আজাদ পেয়েছেন ১৯৮৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী শিশু-সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬), মার্কেন্টাইল ব্যাংক পুরস্কার (২০০৪) এবং ২০১২ সালে তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদক দেওয়া হয়।
প্রথাবিরোধী বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদ
মন্তব্য করুন
জিয়া প্রথমে জাতির পিতাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যা করেন এবং তারপর একই বছরের ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেন। জিয়া পরে একের পর এক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে অনেক সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করেন। জিয়াউর রহমান যেসব সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করেছিলেন, তারাও জানেন না, তাদের দোষ কী ছিল। জিয়া শুধু সামরিক কর্মকর্তাদেরই হত্যা করেননি, আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকেও হত্যা করেছেন।
শান্তিরক্ষীদের সীমাহীন আত্মত্যাগকে স্মরণ করে ২০০৩ সাল থেকে দিবসটি বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে। বর্তমানে রাশিয়ার আক্রমণের শিকার ইউক্রেনের শান্তিরক্ষী সংস্থা এবং ইউক্রেন সরকারের যৌথ প্রস্তাবনায় ১১ ডিসেম্বর, ২০০২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের গৃহীত ৫৭/১২৯ প্রস্তাব অনুযায়ী এ দিবসের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। ১৯৪৮ সালে সংঘটিত আরব-ইসরাইল যুদ্ধকালীন যুদ্ধবিরতী পর্যবেক্ষণে গঠিত জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গ্যানাইজেশন (আন্টসো) দিনকে উপজীব্য করে ২৯ মে তারিখটি স্থির করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ট্রুপস সুপারভিশন অর্গ্যানাইজেশন (আন্টসো)-ই হচ্ছে প্রথম জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী। এই হিসেবে(১৯৪৮ সাল থেকে) জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী ৭৫ বছর পূর্ণ করল।
গত ২৭ এপ্রিল ২০২৩ বিকালে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে রূপসী-কাঞ্চন সড়কের পাশে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশনের ৮ ইঞ্চি ব্যাসের একটি পাইপলাইনে সৃষ্ট ফুটো থেকে বিষ্ফোরণ সংঘটিত হয়েছে। সম্প্রতি নারায়নগঞ্জ এলাকায় Dhaka-Narayangonj-Demra (DND, ডিএনডি) Paddy field project এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত একটি পাকা মসজিদের নীচে থাকা গ্যাস পাইপলাইন বিষ্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
একটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আসছে। রোববার সকাল নাগাদ এটি বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টির নামের বানান ও উচ্চারণ বিভ্রান্তিতে পড়েছে দেশের মিডিয়া জগত। মোচা, মোকা, মোখা, মকা, মখা, মউকা ইত্যাদি নামে ডেকে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের নাম কেন দরকার ? আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের আসল নাম কোনটি ? নাকি সবই সঠিক ?