ইনসাইড পলিটিক্স

মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন তোফায়েল আহমেদ?

প্রকাশ: ০৮:০৪ এএম, ১৫ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিলো প্রশ্নবোধক। তারা সব কিছু জানতো। সব জানার পরও খুনীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। আগস্ট ট্রাজেডি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায় তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইউজিন বোস্টারের তারবার্তায়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর ঢাকার মার্কিন দূতাবাসকে ঘিরে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া প্রশ্নে একটি অস্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ‘আশ্রয় প্রার্থনার অনুরোধ’ শিরোনামে বোস্টার যে তারবার্তাটি পাঠান তা হুবহু এরকম:

১। আমরা মুজিবের ভাগনে প্রয়াত শেখ ফজলুল হক মনির পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আজ সকালের অভ্যুত্থানের পর তাঁদের আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ পেয়েছি। তাঁরা এখন আমাদের পলিটিক্যাল কাউন্সিলরের বাসায় রয়েছেন। তাঁর বাসাটি শেখ মনির বুলেটে ঝাঁঝরা হওয়া বাড়িটির মাত্র তিনটি বাড়ি পরই। এঁদের মধ্যে রয়েছেন শেখ মুজিবের মা, বাবা, এক বোন, এক ভাইয়ের স্ত্রী, দুই সন্তান ও কাজের লোক।

২। যেহেতু তাঁরা গুরুতর সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন, আমরা মনে করি, তাঁরা আমাদের কাছ থেকে এফএএ ২২৮.৩ [সম্ভবত রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদানসংক্রান্ত সরকারি আদেশ] অনুসারে অস্থায়ী আশ্রয় পাওয়ার যোগ্য। আজ রাতটা কীভাবে কাটবে এটা ভেবে তারা খুবই চিন্তিত, খুবই উদ্বিগ্ন। তাঁরা বলেছেন, কারফিউ প্রত্যাহার হলে তাঁরা চলে যাবেন । আশা করা যায়, কাল কারফিউ প্রত্যাহার হতে পারে, তখন তাঁরা তাঁদের পুরান ঢাকার বাড়িতে চলে যাবেন। তাঁরা যখন যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করবেন, আমরা তখন তাঁদের যেতে দেব। এবং পুনরায় বার্তা পাঠাব যদি তাঁরা কোনো কারণে আরও বেশি সময় ধরে থাকতে চান।

১৬ আগষ্ট ১৯৭৫ বোষ্টার পৃথক এক তারবার্তার উল্লেখ করেন যে, শেখ মনির পরিবারের সদস্যরা আজ সকালে দূতাবাস-কর্মকর্তার বাসভবন ত্যাগ করেছেন। তাঁদের অনুরোধে ঢাকার অন্যত্র তাঁদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে তাঁদের পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

১৮ আগস্ট ১৯৭৫ বোস্টার যে তারবার্তাটি (১৯৭৫ঢাকা০৩৯৭৮) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠান তার শিরোনাম ‘আশ্রয়ের অনুরোধ করেছেন তোফায়েল আহমেদ’। বোস্টারের এই তারবার্তা হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো:

১। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবর রহমানের বিশেষ সহকারী তোফায়েল আহমেদ জন এডামসের মাধ্যমে কোনো একটি দূতাবাস ভবনে আশ্রয় লাভের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। জন এডামস হলেন বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা দিতে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন সরকারের সেন্সাস ব্যুরো স্পেশালিষ্ট। মি. এডামস তোফায়েল আহমেদের নিকটতম প্রতিবেশী।

২। এডামসের মতে, তোফায়েল উর্দিধারী ব্যক্তিদের দ্বারা ১৫ আগস্ট ভোর সাড়ে পাঁচটায় অবরুদ্ধ হন। তবে এডামস স্পষ্ট করতে পারেননি যে তারা সেনাবাহিনীর লোক কি না। কিন্তু আমরা অনুমান করি, তারা অবশ্যই সেনাবাহিনীর লোক। ১৬ আগস্ট আড়াইটায় তোফায়েল তাঁর বাড়িতেই ফিরে আসেন। সেখানে তাঁকে প্রহরায় রাখা হয়। ১৬ আগস্ট রাত ১০টায় তোফায়েল এডামসকে তাঁর বাড়িতে যেতে অনুরোধ জানান। তিনি তাঁকে বলেন যে তিনি নিজেকে ‘সংকটাপন্ন ও অনিরাপদ’ মনে করছেন । তাই তিনি কোনো একটি দূতাবাস ভবনে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। এডামস বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে তোফায়েলকে আশ্বস্ত করেন এবং এডামস তোফায়েলের অনুরোধ আমাদের জানাতে ১৮ আগস্ট দূতাবাসে আসেন।

৩। আমরা যেহেতু তোফায়েলের সঙ্গে কথা বলিনি, তাই তাঁর ভয়ের কারণ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই। তবে যেহেতু তাঁকে একবার আটক করে নতুন সরকার (যাঁদের অবশ্যই এ কথা জানা আছে যে, শেখ মনির নেতৃত্বাধীন তৎপরতার কারণে তোফায়েল ক্রমশ মুজিবের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলেন) আবার ছেড়ে দিয়েছে, তাই আমরা মনে করি, অনিশ্চয়তাপূর্ণ এই সময়ে তোফায়েলের নিজের নিরাপত্তার স্বার্থেই তাঁকে অন্তরীণ করে রাখা হচ্ছে। আমাদের উপসংহার হচ্ছে এই যে তোফায়েল তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত রক্ষীদের সাহস ও নিষ্ঠার ওপর খুব বেশি ভরসা রাখতে পারছেন না। তিনি সন্দেহ করছেন যে এ সময় কেউ যদি তার সঙ্গে পুরোনো শত্রুতার হিসাব চুকাতে চায়, তাহলে তার রক্ষীরা তাঁকে আগলে রাখার পরিবর্তে দ্রুত পালিয়ে যাবে।

৪। শেখ মনির পরিবার-পরিজনদের আশ্রয় প্রার্থনার চেয়ে তোফায়েলের আশ্রয় চাওয়ার বিষয়টি লক্ষণীয়ভাবে ভিন্ন। তোফায়েলের বেলায় :

ক. তাঁর পরিবারের এমনটা ভাবার সংগত কারণ রয়েছে যে নতুন সরকারের দিক থেকে তাঁরা এই মুহূর্তে জীবনের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি বোধ করছেন।

খ. তারা যখন আমাদের কাছে অনুরোধ করে, তার আগেই তাঁরা দূতাবাস ভবনে প্রবেশের সুযোগ লাভ করেছেন। এবং

গ. তাঁরা দূতাবাস ভবনে আশ্রয় লাভের সময় আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে পরবর্তী সান্ধ্য আইন প্রত্যাহারের আগেই তাঁরা দূতাবাস ভবন ত্যাগ করবেন (তাঁরা সেটা রক্ষা করেছিলেন)।

তাই বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে—

ক.  তোফায়েলের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর সময় ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত হয়েছে বলে মনে হয়। এবং

খ.  প্রহরীবেষ্টিত অবস্থায় তোফায়েল এখনো তাঁর বাসভবনে রয়েছেন। এই প্রহরীদের দায়িত্ব কেবল তাঁকে অন্তরীণ রাখাই নয়, বরং তাঁকে সুরক্ষা প্রদান করাও বলে মনে হচ্ছে।

এই অবস্থায় আমরা তোফায়েলকে এটা জানিয়ে দিচ্ছি যে বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাঁকে কীভাবে সহায়তা   করতে পারি তা বুঝতে পারছি না।’ 


মার্কিন   দূতাবাসে. রাজনৈতিক   আশ্রয়   চেয়েছিলেন   তোফায়েল আহমেদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিলেন মঈন খান

প্রকাশ: ০২:২২ পিএম, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘জনতার আদালতে আওয়ামী লীগকে আগামীতে যে বিশাল মূল্য দিতে হবে, সেটা তারা আজ কল্পনাও করতে পারছে না।’

আজ শনিবার (২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, সরকার মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনটিকে তাদের নির্বাচনে বিজয়ের দিন বলে উল্লাস করছে। এটা যে তাদের জন্য কত বড় ভ্রান্তিবিলাস, তা তারা আজ বুঝতে না পারলেও এ ভুলের জন্য তাদের মূল্য দিতে হবে। সরকার মনে করেছে, আগের মতো এবারও একতরফা একটি নির্বাচন করে স্বাচ্ছন্দ্যে ক্ষমতায় থাকবে, সেটা হওয়ার নয়। কেননা এখন ২০১৪ বা ২০১৮ নয়। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এ দেশে জনগণের আন্দোলন কখনোই বৃথা যায়নি। এবারও যাবে না।’

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘ক্ষমতার মোহে ও অর্থবিত্ত আহরণের লোভে অন্ধ হয়ে তারা দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে গিয়েছে, যা শুধু আওয়ামী লীগের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্যই অচিরে মারাত্মক এক পরিণতি ডেকে আনবে।  জনগণের ভোটাধিকারকে চিরতরে হরণ করা সরকারের এই যে কাণ্ডজ্ঞানহীন চিন্তাধারা, যা বাংলাদেশকে ৭ জানুয়ারি একটি নির্বাচনী সার্কাসের দিকে ধাবিত করছে। সেটা আজ শুধু দেশের ভেতরে নয়, বরং সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মননশীল মানুষের সামনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটি কলঙ্কময় ভাবচিত্র প্রতিস্থাপন করবে।

মঈন খান বলেন, ‘বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে উচ্ছ্বাস কিংবা আগ্রহ কোনোটাই নেই। এটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট যে নির্বাচনের দিন ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। কারণ নির্বাচনের ফলাফল ইতিমধ্যেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। মানুষের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন বাংলাদেশে চিরতরে ফুরিয়ে গেছে। ক্ষমতার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে এই যে নির্বাচন নির্বাচন খেলা, সেটির পরিণাম কখনোই জাতির জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে না।’


মঈন খান   বিএনপি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন ঠেকাতে কৌশল খুঁজছে বিএনপি

প্রকাশ: ১০:১৭ এএম, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ভোট ঠেকাতে উঠে পড়ে লেগেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। ২৮ অক্টোবরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলা, গ্রেপ্তার এবং এবং নির্বাচনের কার্যক্রম ঠেকাতে অবরোধ-হরতাল দিয়ে যাচ্ছে দলটি। নির্বাচন ঠেকাতে খুঁজছে নতুন কৌশল।

আসন্ন নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ। নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি ও তার শরিক বেশ কয়েকটি দল। ৭ জানুয়ারির ভোট ঠেকানোতে কৌশল নির্ধারণে ইতোমধ্যেই যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ শুরু করেছে বিএনপি। এ ছাড়া যুগপতের বাইরে থাকা যেসব দল নির্বাচনে যায়নি, নির্বাচন প্রতিহত করতে তাদের সঙ্গেও সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে উচ্ছ্বাস কিংবা আগ্রহ কোনোটিই নেই। এটি ইতোমধ্যেই স্পষ্ট যে, নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের ভোট দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে গেছে। কারণ, নির্বাচনের ফলাফল ইতোমধ্যেই নির্ধারিত হয়ে গেছে, মানুষের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন বাংলাদেশে চিরতরে ফুরিয়ে গেছে। ক্ষমতার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে এই যে নির্বাচন নির্বাচন খেলা, সেটির পরিণাম কখনোই জাতির জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য, জনগণের ভোটাধিকার পুনর্বহালের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্দোলন চলতেই থাকবে, যতদিন না গণমানুষের এই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়। ইতোমধ্যে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল পাতানো নির্বাচনের তপশিল বর্জন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বও এই নির্বাচন নিয়ে আস্থাহীনতার প্রশ্ন তুলেছে। তারা যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল, সরকার তা আমলেই নেয়নি। ফলে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ নির্বাচনে পর্যবেক্ষকও পাঠাচ্ছে না। কারণ, তারা বুঝে গেছে, নির্বাচনের নামে এখানে কত বড় প্রহসন হতে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এ দেশে জনগণের আন্দোলন কখনোই বৃথা যায়নি, এবারও যাবে না। সরকার মনে করেছে, আগের মতো এবারও একতরফা একটি নির্বাচন করে স্বাচ্ছন্দ্যে ক্ষমতায় থাকবে, সেটা হবার নয়, কেননা এখন ২০১৪ বা ২০১৮ নয়।’

গত ৩০ নভেম্বর ছিল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ৩০টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আর বিএনপি, সিপিবি, বাসদসহ ১৪টি দল ভোটে যায়নি। তবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) নির্বাচন করছে। শেষদিনে দল দুটির প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৯টি নিবন্ধিত দলের সবগুলোই অংশ নিয়েছিল। আর বিএনপিসহ বেশিরভাগ দল বর্জন করলেও দশম সংসদ নির্বাচনে ১৭টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল।

বিএনপি ও যুগপৎ শরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হওয়ায় এখন আন্দোলনকে দুই পর্বে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথম পর্ব হচ্ছে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর দ্বিতীয় পর্ব হলো ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্দোলনের কর্মকৌশল ও পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে গত কয়েকদিনে দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করে বিএনপির হাইকমান্ড। এ ছাড়া সম্প্রতি দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে হাইকমান্ড। তারা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে হরতাল-অবরোধ অব্যাহত রাখার ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকমান্ড। যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের ইতোমধ্যে এই কর্মসূচির ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আগামীকাল রোববার সকাল থেকে নবম ধাপে দেশব্যাপী ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হবে, যা আগামী মঙ্গলবার ভোর ৬টায় শেষ হবে।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি নেতারা আত্মগোপনে থেকে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে ঝটিকা মিছিলের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে নেতারা বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে সরাসরি মাঠে নামতে পারছেন না। সে কারণে কৌশলের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে এসব কর্মসূচি করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছেন।

তপশিল অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হবে। তখন পরিস্থিতি বুঝে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করবে বিএনপি। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে ফের হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিতে যেতে পারে দলটি। নির্বাচনের দিন সারা দেশে হরতালের ডাক দেওয়া হতে পারে। তবে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচনের পরও কিছুদিন হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে, আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দিতে সরকারবিরোধী দল ও জোটগুলোকে এক মঞ্চে আনার কথা ভাবছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার যুগপৎ আন্দোলনের সব শরিককে নিয়ে একত্রে বৈঠক করেছে দলটি। আন্দোলন বেগবান করতে সেখানে যুগপতের পরিধি বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে যুগপতে থাকা ৩৯টি দল ছাড়াও বাইরে থেকে এবি পার্টি অংশ নেয়। এ ছাড়া নির্বাচন বর্জন করে যুগপতের বাইরে আন্দোলনে থাকা অন্য দল ও জোটকেও যুগপতে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে আলোচনা হয়েছে ‘একতরফা’ নির্বাচন ঠেকানোর কর্মকৌশল নিয়েও। এর অংশ হিসেবে তপশিল বাতিলের দাবির পাশাপাশি ভোটারদের ভোট বর্জন করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, শিগগির আবারও বৈঠকে বসবে যুগপতের ৩৯ দল। সেখানে যুগপতের বাইরে থাকা বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং সমমনা ইসলামী দলগুলো নামের মোর্চাকেও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে।

যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দুজন শীর্ষ নেতা বলেন, সরকার একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় একদফার আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে যুগপতের পরিধি বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন বর্জন করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোকে যুগপতে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগও করা হচ্ছে। যদি যুগপতে সম্পৃক্ত হতে রাজি না হয়, তাহলে তারা আগের মতো নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্দোলন করবেন। বাম গণতান্ত্রিক জোট ছাড়া অন্য দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তারা জানান।


জাতীয় নির্বাচন   বিএনপি   ভোট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এতিম ১৪ দলের নেতারা

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

১৪ দল হল আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনৈতিক জোট। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো আছে, তাদেরকে নিয়ে এই জোট গঠন করেছিল। এই জোটের তত্ত্বাবধানেই আওয়ামী লীগ বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। প্রতিটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ ১৪ দল এবং মহাজোট করেছিল। 

মহাজোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি তাদের নিজস্ব প্রতীক অংশগ্রহণ করেছে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো সবাই গত তিনটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশা, শিরিন আখতার এমপি হয়েছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে। কিন্তু এবার নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্যায়ে আওয়ামী লীগের শরিকদের সাথে কোন আলোচনা করেনি। ১৪ দলের জন্য আলাদা কোন আসনও ছেড়ে দেয়নি। একমাত্র কুষ্টিয়াতে জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনুর আসনটি তারা খালি রেখেছে। বাকি সবগুলো আসনে ১৪ দলের নেতাদের জায়গায় আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, যখন আসন বণ্টন চূড়ান্ত হবে তখন ১৪ দলের নেতাদের জন্য আসন ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কটা আসন ছেড়ে দেওয়া হবে বা শরিকদেরকে কতগুলো আসন আওয়ামী লীগ দেবে এ সম্পর্কে কোনো ঐক্যমত এখনও পর্যন্ত হয়নি। এ নিয়ে শরিকদের সাথে আওয়ামী লীগের চাওয়া পাওয়ার বিস্তর ফারাক রয়েছে। 

আওয়ামী লীগ যেমন শুধুমাত্র যারা জনপ্রিয় এবং নিজ যোগ্যতায় ভোটে জিততে পারবেন, তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে। অন্যদিকে শরিকদের যে হিসেব তাতে তারা ৫০ থেকে ৭০ টি আসন চায় আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। কিন্তু সেটি আওয়ামী লীগের দেবে না তা স্পষ্ট৷ তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে যে, এবারে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ১৪ দলের বেশ কয়েকজন বড় বড় নেতাকে রীতিমতো এতিম করে দিয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেননের আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা এবং দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমকে। ফলে এই আসনটি রাশেদ খান মেননকে যে ছেড়ে দেওয়া হবে না তা মোটামুটি নিশ্চিত। রাশেদ খান মেননকে বরিশালে নির্বাচন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বরিশালে যে আসনটিতে তাকে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেখানে সাদিক আবদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন এবং এটি রাশেদ খান মেননের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। 

ওয়ার্কার্স পার্টির আরেক নেতা ফজলে হোসেন বাদশার জন্য রাজশাহীর আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়নি। তবে এই আসনে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি অত্যন্ত দুর্বল। শেষ মুহূর্তে সমঝোতা হলে ফজলে হোসেন বাদশার আসনটি ছেড়ে দেওয়া হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে হাসানুল হক ইনুর জন্য আওয়ামী লীগ জায়গা ছেড়ে দিলেও ওই দলের অন্য কোন নেতার জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম হয়ে গেছে। কারণ শিরীন আখতার যে আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সেই আসনটিতে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের আরেক জনপ্রিয় নেতা আলাউদ্দিন নাসিম চৌধুরী, যিনি প্রধানমন্ত্রীও ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। কাজেই কোনো অবস্থাতেই তার আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন হবে না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। শিরীন আখতার হয়তো নারী কোটায় নির্বাচন করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এরকম অনেকগুলো আসনেই ১৪ দলের নেতাদেরকে এতিম করে দেওয়া হয়েছে। এখন এতিম ১৪ দলের নেতারা শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রতি কতটুকু অনুগত থাকবেন নাকি তারা এবার বিদ্রোহ করবেন, সেটি এখন রাজনীতিতে বড় প্রশ্ন। এমনি যখন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নানামুখী চাপে, তখন ১৪ দল থেকে যদি কোন বিদ্রোহ হয় সেটা আওয়ামী লীগের জন্য হবে আরও বাড়তি চাপ।

১৪ দল   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রওশনের পাশে কেন দাঁড়াল না আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় তৎকালীন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। অবাধ, সুষ্ঠু হচ্ছে না। এই অর্থহীন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যাবে না। এই ঘোষণা দেওয়ার পরপরই জাতীয় পার্টির একটি বড় অংশ তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়।এরপর শুরু হয় নাটক। সেই সময় আওয়ামী লীগের পাশে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন তার নাম রওশন এরশাদ। রওশন এরশাদ এরশাদের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দেন এবং রওশন এরশাদের অনুসারীরা এরশাদের নির্দেশ অমান্য করে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। ফলে শেষপর্যন্ত জাতীয় পার্টির আংশিক হলেও নির্বাচনে থেকেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর রওশন এরশাদ হয়েছিলেন বিরোধী দলের নেতা। 

এরশাদ ওই নির্বাচনকে পরে মেনে নিয়েছিলেন। তিনি নিজেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার সত্ত্বেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন রংপুর-৩ আসন থেকে। এবার নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং মতদ্বৈততা ছিল। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছিলেন তারা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাদের মধ্যে নির্বাচনে না যাওয়ার একটা প্রবণতাও লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় আবার আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়ান রওশন এরশাদ। তিনি নির্বাচনে তফসিলকে স্বাগত জানান এবং এরপর মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রপতিকেও তিনি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশ গ্রহণের কথা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন। এরপর দল ভাঙার আতঙ্ক থেকে রক্ষা পাওয়ার কারণেই মূলত জিএম কাদের পন্থীরা নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন এবং মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু এই মনোনয়ন ফরম বিক্রিতে রওশন এরশাদ এবং তার অনুসারীরা কেউই অংশগ্রহণ করেননি। তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগও করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত রওশন এরশাদ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তাই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেননি। এমনকি তার অনুসারীরাও এবার নির্বাচনে অন্তত জাতীয় পার্টি থেকে অংশগ্রহণ করছেন না। এরকম বাস্তবতায় রওশন এরশাদের রাজনৈতিক অধ্যায়ের যবনিকা দেখছেন অনেকে। 

কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, রওশন এরশাদকে মনোনয়ন দেওয়া এবং তার লোকজনকে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো মনে করছে যে, শেষ মুহূর্তে জিএম কাদেরের সঙ্গে সরকারের একটি সমঝোতা হয়ে যায় এবং সেই সমঝোতার একটি বড় শর্ত ছিল রওশন এরশাদকে কোনোরকম সমর্থন এবং সহানুভূতি না দেওয়া। জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে কণ্টকমুক্ত করার জন্যই সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে ছিলেন, যাতে রওশন এরশাদের প্রতি তাদের সহানুভূতি এবং সমর্থন প্রত্যাহার করা হয়। সরকার জিএম কাদেরকে সেই সুযোগটা দিয়েছেন। এই নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত জিএম কাদের পন্থীরা জাতীয় পার্টিতে নিরঙ্কুশ হল। কিন্তু জিএম কাদের শেষ পর্যন্ত কি করবেন সেটি এখনও একটি বড় প্রশ্ন। কারণ ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়। এই সময়ের মধ্যে যদি জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত পাল্টে দেয় কিংবা ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো ঘটনা ঘটায় তখন সরকার কি করবে? 

রওশন এরশাদকে পাশে রাখলে হয়তো সরকার এই ঝুঁকির মধ্যে পড়ত না। তবে সরকারি মহলরা আশাবাদী যে, জিএম কাদের নির্বাচনে যাবেন। বিভিন্ন সরকারি সূত্রগুলো বলছে, জিএম কাদেরের সঙ্গে যারা আছেন তাদের অনেকেই সরকারের ঘনিষ্ঠ এবং তারা আশ্বাস দিয়েছেন যে, রওশন এরশাদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের কারণে জিএম কাদের অন্য রকম আচরণ করছেন। কাজেই রওশন এরশাদকে যদি সমর্থন না দেয় আওয়ামী লীগ সেক্ষেত্রে জিএম কাদের নির্বাচনে থাকবেন। এ রকম একটি আপসরফার মাধ্যমেই রওশন এরশাদের পাশে আর দাঁড়াননি সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিএম কাদের নির্বাচনে থাকবেন তো?


রওশন এরশাদ   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচিত হলে ঢাকা-৮ আসনকে স্মার্ট এলাকায় পরিণত করব: নাছিম

প্রকাশ: ০৭:৪৯ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

নির্বাচিত হলে ঢাকা-৮ আসন এলাকাকে স্মার্ট এলাকায় পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

তিনি বলেন, ঢাকা-৮ আসনের সকল থানা, ওয়ার্ডে ইতোমধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। মানুষের ভিতরে প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তারা জাতির পিতার আদর্শের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পেয়েছে এবং আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার জন্য তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। আমরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই ১৮ তারিখ থেকে নৌকার ভোটের জন্য মানুষের কাছে যাব ও দোয়া চাইব এবং ভোট প্রার্থনা করব। 

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ আদায় শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন নাছিম।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আজ বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের কাছে আমি দোয়া চেয়েছি, যাতে সকলেই আমার জন্য দোয়া করে। আমি যেন সকলের সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হতে পারি। আমি নির্বাচনি আচরণবিধি মেনেই আমার কার্যক্রম পরিচালনা করব এবং আমাদের নেতাকর্মীরাও আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনে উৎসবমুখর করে তুলবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায়। ইতোমধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা শুরু করেছে। এ উৎসবকে নষ্ট করতে যারা হরতাল ও অবরোধ ডেকেছে তাদের হরতাল অবরোধ ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের কোন সমর্থন তাদের প্রতি নেই। তাই তারা চাইলেও নির্বাচনে  বানচাল করতে পারবে না। 

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না চাইলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা কাউকে নির্বাচন করতে বাধা সৃষ্টি করিনি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে চাইলে যে কেউ নির্বাচন করতে পারে। বিএনপি জনগণের সমর্থন পাবে না জেনেই নির্বাচন করছে না। তাদের অপকর্ম দেশের মানুষ জানে। দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সুশৃংখল রাজনৈতিক দল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এটি পরিচালনা করেন। নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু কন্যার দিকে সব বিষয়ে তাকিয়ে থাকে। তিনি যা নির্দেশ দেন সবাই তাই পালন করে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১৭ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে। সুনির্দিষ্ট  জায়গা ছাড়া যে কোন জায়গায় ইচ্ছে মতো কেউ প্রার্থী হতে পারবে না। সময় আসলে এটি আরো সুন্দরভাবে পরিষ্কার হবে। 

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করে তিনি সেখানকার মুসল্লিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অতঃপর পায়ে হেঁটে হাইকোর্ট মাজারে যান এবং মাজার জিয়ারত করেন। মাজার জিয়ারত শেষে তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াহিদ উল্লাহর জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শ্রী বিপ্লবী রানীর স্মরণ সভায় যোগদান করেন এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময় করেন।

ঢাকা-৮ আসন   আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন