ইনসাইড বাংলাদেশ

ইউনূস বনাম সরকার: কে জিতবে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৯ অগাস্ট, ২০২২


Thumbnail ইউনূস বনাম সরকার: কে জিতবে?

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সরকারের বিরোধ এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। শুধু প্রকাশ্য রূপ নেয়নি, এই দুজনের মধ্যে রীতিমতো একটি নীরব যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে কে জিতবে তার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যতের অনেকখানি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা এবং তাদের ন্যায্য মজুরি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিলো। এই অভিযোগে কর্মচারীরা মামলা করেছিলেন। কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করে সেই মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন। এজন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইনজীবীকে ১৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ বিষয়টি আমলে নেয় এবং এই বিষয়ে আইনজীবীকে প্রশ্ন করে এবং পুরো মামলার বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে। এই সময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইনজীবী বলেছিলেন যে, আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করানোর জন্য তিনি পারিশ্রমিক হিসেবে টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু সবকিছু শেষে সম্প্রতি আদালত অভিমত ব্যক্ত করেছে যে, ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং কর্মচারী-কর্মকর্তাদের ঠকানোর মামলাটি চলবে। ফলে ইউনূস এখন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন। এই মামলায় যদি ইউনূস শেষ পর্যন্ত দোষী প্রমাণিত হন তাহলে তার ক্যারিয়ার বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে। এমনকি প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার নোবেল শান্তি পুরস্কার বাতিল হয়ে যেতে পারে। কারণ, নোবেল শান্তি পুরস্কারের রীতি অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং ফৌজদারি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে নোবেল কমিটি তার পুরস্কার প্রত্যাহার করে নিতে পারে।

এরকম একটি ঝুঁকির মধ্যেই শুধু নয়, ড. ইউনূস আরও অনেক ঝুঁকির মধ্যে আছেন। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সামাজিক ব্যবসার উদ্যোগ এবং বিভিন্ন দেশে একজন বিশেষজ্ঞ তিনি যে লবিং করেন সেটিও হুমকির মুখে পড়বে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্যারিয়ার একটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এর মধ্যে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সরকারের হাতে এসেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তত তিন হাজার কোটি টাকা তার এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে সরিয়েছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ ব্যাংক তৈরি করার পর যে সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো গঠন করেছেন ড. ইউনূস সেগুলো সবই তার নিজস্ব মালিকানায় নিয়েছেন এবং এইসব প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তিনি অবৈধভাবে টাকা নিজের একাউন্টে এবং তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে সরিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সবকিছু মিলিয়ে ড. ইউনূসের আর্থিক অনিয়ম, প্রতারণা এবং দুর্নীতির অভিযোগ যদি শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয় তাহলে সেটা শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের জন্য হবে বড় খবর। আর ইউনূসও সেটা ভালোভাবেই জানেন। ইউনূস জানেন যে, বর্তমান সরকার যতক্ষণ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন এই বিষয়গুলো চলমান থাকবে এবং শেষ পর্যন্ত হয়তো তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হবে। আর এ কারণেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখন মরণ কামড় দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সরকারের বিরুদ্ধে যেমন বিষেদাগার করছেন, তেমনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজকে সরকারের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করছেন। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে সিপিডি, টিআইবিসহ বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংগঠন যেভাবে আর্তনাদ করছে তার পেছনে রয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইভাবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যে অব্যাহত অতিকথন এবং প্রচারণা চলছে সেটিও ড. ইউনূসের আগ্রহের কারণেই হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ড. ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে ডেমোক্রেট পার্টির সঙ্গে তার যোগাযোগ অত্যন্ত গভীরে। হিলারি ক্লিনটন তার ব্যক্তিগত বন্ধু ছিলেন। জো বাইডেনের সঙ্গেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত পরিচয় রয়েছে। এই ব্যক্তিগত সম্পর্ক, পরিচয় গুলোকে তিনি তার অস্তিত্ব রক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। আর এ কারণেই ডেমোক্র্যাট পার্টি এখন ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের মানবাধিকার, সুশাসন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নানারকম চাপ সৃষ্টি করছে। ফলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেমন একদিক থেকে দেশের সুশীল সমাজকে দিয়ে অর্থনৈতিক সংকটের কথা বলছেন, অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে দিয়ে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। যাতে সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করতে পারে এবং সরকারের চাপে পড়ে সরে যেতে বাধ্য হয়। অন্যদিকে সরকার আইনের যথাযথ প্রয়োগের দিকেই আগ্রহী। আইন সবার জন্য সমান। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেই হন না কেন, তিনি যদি আইনের কোনো অমান্য করেন তাহলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা উচিত, এটিই হলো সরকারের মনোভাব। এই দৃষ্টান্তটি স্থাপন করেই সরকার এগুতে চায়। ফলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সরকারের লড়াইটা ক্রমশ প্রকাশ্য হচ্ছে এবং এই লড়াইটির ওপর বাংলাদেশের রাজনীতির ভাগ্য এবং মেরুকরণ অনেকখানি নির্ভর করছে। এখন দেখার বিষয় হলো, এ লড়াইয়ে কে জিতে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৩

প্রকাশ: ১০:৩৩ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফরিদপুরের কানাইপুরে বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।   

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের তেঁতুলতলা অ্যাবলুম হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে তাৎক্ষনিকভাবে হতাহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, নিহতরা সবাই পিকআপ ভ্যানের যাত্রী ছিলেন।

পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মাগুরাগামী ইউনিক পরিবহনের সঙ্গে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন মারা যান। 

ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হয়েছেন। 


সড়ক দুর্ঘটনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ময়মনসিংহে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২

প্রকাশ: ১০:১৩ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যাত্রী নিহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কোদলধর এলাকার হিমালয় পেট্রোল পাম্পের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তারাকান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াজেদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

 

 

বিস্তারিত আসছে...


সড়ক দুর্ঘটনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জয়পুরহাটে পৃথক দুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৯:৫৮ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জয়পুরহাটে পৃথক দুর্ঘটনায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী এলাকা ও পাঁচবিবি রেলস্টেশন এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন, ক্ষেতলাল উপজেলার আটিদাশড়া গ্রামের আকবরের ছেলে জনি ও নীলফামারীর সৈয়দপুর এলাকার জয়নাল আবেদিনের ছেলে সেলিম হোসেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী তুলশীগঙ্গা নদীর সেতুর নিচে জনি নামে একজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে তার মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারনা সেতু থেকে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হতে পারে।

অন্যদিকে, ট্রেনে করে বাড়িতে ফিরছিলেন সেলিম নামে একজন। পথে পাঁচবিবি রেল স্টেশনে ট্রেনটি যাত্রা বিরতি দিলে তিনি ট্রেন থেকে থেকে আখের রস খেতে যান। এরপর লাইন পার হওয়ার সময় অপর দিক থেকে আসা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়।


পৃথক দুর্ঘটনা   ট্রেনের ধাক্কা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১১

প্রকাশ: ০৯:৫৭ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফরিদপুর জেলার কানাইপুরের তেতুলতলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত। আজ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের কানাইপুরের দিকনগর এলাকায় বাস-পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে চারজন সহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই ছিলেন পিকাপভ্যানের যাত্রী।

ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, এ সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।


সড়ক দুর্ঘটনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুবাইয়ের পথে নাবিকরা, শিগগির ফিরছেন দেশে

প্রকাশ: ০৮:৪১ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সম্প্রতি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে মুক্ত করতে টানা এক মাস ধরে আপ্রাণ চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সরকার, জাহাজ মালিকসহ, সংশ্লিষ্টরা। অবশেষে সেই চেষ্টা সফল হলো। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন এমভি আব্দুল্লাহসহ জাহাজটির ২৩ নাবিক। এজন্য দিতে হয়েছে মুক্তিপণ। কিন্তু কত টাকা মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত হলো এমভি আব্দুল্লাহ, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে চান না জাহাজ মালিকপক্ষের কেউই।

তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যথাযথ নিয়ম মেনেই মুক্ত করা হয়েছে এমভি আব্দুল্লাহ। তবে সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, লেনদেন হওয়া মুক্তিপণের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছে সোমালিয়ার গণমাধ্যম দ্য ডেইলি সোমালিয়া। দুই জলদস্যুর বরাত দিয়ে রোববার একই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এদিকে নাবিকদের মুক্তির খবরে স্বস্তি ফিরেছে ২৩ নাবিকের পরিবারে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাজটি মুক্ত করা হয়েছে। এটি এখন আরব আমিরাতের দিকে যাচ্ছে। সেখানে পণ্য খালাস করবে, আর নাবিকরা দেশে ফিরে আসবে শিগগির’।

এদিকে রোববার (২৪ এপ্রিল) সকালে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘টাকা-পয়সা কিংবা মুক্তিপণের সঙ্গে আমাদের কোনো ইনভলভমেন্ট নেই। টাকা দিয়ে জাহাজ ছাড়িয়ে আনা হয়েছে, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখাচ্ছেন, এসব ছবির কোনো সত্যতা নেই। ছবিগুলো কোথা থেকে আসতেছে, কীভাবে আসতেছে, সেটা আমরা জানি না। আমরা তাদের (জলদস্যু) সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেছি দীর্ঘদিন। এখানে মুক্তিপণের কোনো বিষয় নেই। আমাদের আলাপ-আলোচনা এবং বিভিন্ন ধরনের চাপ আছে। সেই চাপগুলোও এখানে কাজে দিয়েছে।’

তবে, কতজন ফিরবেন দেশে, এখনো আসেনি সিদ্ধান্ত সোমালিয়ান দস্যুদের হাতে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত ২৩ নাবিকই এমভি আব্দুল্লাহর সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পথে রয়েছেন। আগামী ১৯ কিংবা ২০ এপ্রিল জাহাজটি আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এর পরই জানা যাবে, মুক্ত নাবিকদের মধ্যে কারা কারা জাহাজে থাকবেন এবং কারা আবুধাবি থেকে দেশে ফেরত আসবেন।

কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আবুধাবির আল হারমিয়া বন্দরে পৌঁছানোর পর সিদ্ধান্ত হবে, মুক্ত নাবিকদের মধ্যে কারা জাহাজে থাকতে চান, কারা চান না। যারা আবুধাবি থেকে দেশে ফিরতে চাইবেন তাদের যাবতীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দেশের আনা হবে।’

সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা ২৩ নাবিক দেশে ফিরবেন বিমানযোগে। জাহাজটি আরব আমিরাতের দুবাই যাওয়ার পর সেখান থেকেই বিমানে উঠবেন তারা।

জলদস্যুদের কবল থেকে নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত হওয়ার আগেই নাবিকরা কে কোথা থেকে সাইন অফ (জাহাজের কর্ম থেকে অব্যাহতি) করবেন, তার তালিকা চূড়ান্ত করে রাখে জাহাজের মালিকপক্ষ। তাদের নির্দেশে এ ব্যাপারে ক্যাপ্টেনকে একটি তালিকাও দিয়েছেন নাবিকরা। সেই তালিকায় জাহাজের ২৩ নাবিকের মধ্যে ১৮ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে সাইন অফ করবেন বলে জানিয়েছেন।

বাকি পাঁচজন জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে সাইন অফ করবেন বলে জানিয়েছেন। তার পরও নাবিকদের সবাইকে দুবাই থেকে এক যোগে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে জাহাজটির মালিকপক্ষ।

কেএসআরএম গ্রুপের ডিপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান রাহাত জানান, ঈদের আগেই নাবিকদের ফিরিয়ে আনার কথা ছিল; কিন্তু এর সময় পরিবর্তন হয়। অতীতে জাহান মণির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত সময়ে ২৩ নাবিককে মুক্ত করা হয়।

তিনি আরও জানান, মুক্ত হওয়া ২৩ নাবিককে বিমানে চট্টগ্রামে নেওয়া হবে। চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা ফিরবেন স্বজনদের কাছে। আর উদ্ধার হওয়া জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ যাবে দুবাইয়ে। সেখানে ওই জাহাজে যোগ দেবেন নতুন নাবিকরা।

যেভাবে পৌঁছানো হয় টাকা মুক্তিপণ হিসেবে ডলারভর্তি তিনটি বস্তা পেয়ে জিম্মি ২৩ নাবিককে মুক্ত করে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ত্যাগ করেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। গত শনিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় মুক্তিপণের ডলার জলদস্যুদের হাতে পৌঁছালে নাবিকসহ জাহাজটি তারা ছেড়ে দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেএসআরএম গ্রুপের ডিপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান রাহাত।

জলদস্যুদের এক আবদিরাশিদ ইউসুফ রয়টার্সকে বলে, আমাদের কাছে দুই রাত আগে মুক্তিপণের অর্থ এসেছে। সেগুলো জাল কি না, তা পরীক্ষা করে দেখেছি। তারপর আমরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে সরকারি বাহিনীকে এড়িয়ে চলে যাই। সব নাবিকসহ জাহাজ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ডেইলি সোমালিয়া বলছে, মার্চে ভারত মহাসাগরে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর মুক্তি জন্য জলদস্যুরা ৫০ লাখ ডলার নিয়েছে বলে জানা গেছে। জলদস্যু পালিয়ে গেছে এবং পান্টল্যান্ড বাহিনী তাদের ধরতে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বলে পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তিন দিন বিলম্বে ঈদ এসেছে নাবিকদের ঘরে অক্ষত অবস্থায় সব নাবিকের মুক্তি পাওয়ার খবর শুনে জিম্মি থাকা নাবিকদের পরিবার এখন আনন্দে উদ্বেলিত। ঈদের তিন দিন পরই যেন প্রকৃত ঈদ আনন্দ এসেছে তাদের ঘরে। জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা আতিকুল্লাহ খানের মা শাহনুর আক্তার বলেন, ‘ঈদের তিন দিন পরেই যেন ঈদ এসেছে আমাদের ঘরে। আমার ছেলেসহ সবাই অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পেয়েছে, এই খবর শোনার পর ভালো লাগছে সব। তারা এখন নিরাপদে দেশে ফিরলে টেনশন থেকে মুক্তি পাব।’

মালিকপক্ষের সংবাদ সম্মেলন এমভি আব্দুল্লাহ

এদিকে জাহাজটি মুক্ত হওয়ার পর রোববার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে অবস্থিত কেএসআরএম ভবনে সংবাদ সম্মেলনে করে জাহাজের মালিকপক্ষ। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) শাহরিয়ার জাহান রাহাত জাহাজটিকে ২৩ নাবিকসহ দস্যুমুক্ত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘পুরো ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোরভাবে মনিটর করেছেন। এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এমভি আব্দুল্লাহকে উদ্ধারে বিদেশি যুদ্ধজাহাজ অভিযান চালাতে চেয়েছিল; কিন্তু আমরা বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চেয়েছি। আমাদের কাছে নাবিকদের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। যে কারণে আমরা অভিযানে সম্মত ছিলাম না। আমাদের সরকার কুইক রেসপন্স করেছে। পুরো ঘটনায় সাংবাদিকরা সহযোগিতা করেছে। আশা করছি, ১৯-২০ এপ্রিল জাহাজটি আমিরাত পৌঁছাবে। এরপর নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, জাহান মণির সময় আমাদের জ্ঞানের অভাব ছিল। তখন উদ্ধারে সময় বেশি লেগেছিল। এবার জাহাজ দস্যুদের কবলে পড়ার পর থেকেই আমরা জাহাজের লোকেশন ট্র্যাক করতে থাকি। যোগাযোগ শুরুর পর প্রতিদিনই দস্যুদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। গত দুদিন আগে আমাদের দাবি অনুযায়ী প্রত্যেক নাবিকের ভিডিও নিয়েছি। মুক্তিপণের প্রতিটি কাজ আইনগতভাবে করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে করা হয়েছে। কত ডলার সে বিষয়টি আমরা নানা কারণে বলতে পারছি না। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সোমালিয়া, কেনিয়ার নিয়ম মানতে হয়েছে।

আবারও জলদস্যুদের হামলার শঙ্কা মুক্তিপণ দিয়ে ফেরার পথে আবারও জলদস্যুদের কবলে পড়ার শঙ্কায় এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি স্পেন ও ইতালির নৌবাহিনীর স্কর্টে ভারত মহাসাগরের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ অতিক্রম করতে যাচ্ছে ‘এমভি আব্দুল্লাহ’। সোমালীয় জলদস্যুদের অন্য কোনো গ্রুপ হামলা চালানোর শঙ্কায় এ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান মেরিন বিশেষজ্ঞরা।

কেএসআরএম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) শাহরিয়ার জাহান রাহাত জানান, ‘ছয়টি যুদ্ধ জাহাজ ঘিরে রেখেছে এমভি আব্দুল্লাহকে। তারাও একটি মানসিক চাপের মধ্যে ছিল। আমাদের মতো চারটি দেশের নৌবাহিনীর তাগিদ ছিল, যাতে তাড়াতাড়ি ওই ইস্যুটা সমাধান করা যায়। এ কারণে আল্লাহর রহমতে আমরা এ ইস্যুটা দ্রুত সমাধান করতে পেরেছি।’

কেএসআরএমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, আমেরিকার একটা কন্ডিশন আছে, একটি ডলার নিতে হলেও তাদের সংস্থার অনুমতি নিতে হয়। ওটা আমাদেরও নিতে হয়েছে। এ ধরনের ইন্টারন্যাশনাল কাজে তাদের অনেক অ্যাসোসিয়েটের সমন্বয় করতে হয়।


কেএসআরএম গ্রুপ   এমবি আব্দুল্লাহ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন