মন্তব্য করুন
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায়
অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম আরও শক্তিশালী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিকের স্বাক্ষর করা
এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর
ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম
মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর
থেকে ১৫৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে,
মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে
১৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর
ও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে
বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার
আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ
রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা
ও পায়রা সমুদ্ররকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর
বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না
দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রাম-১২
(পটিয়া) আসনে ১৫ বছর ধরে সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। গত পাঁচ বছর তিনি জাতীয় সংসদের
হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হলফনামা অনুযায়ী শুরুতে আয়-সম্পদ ছিল খুবই কম। নির্ভরশীলদের
নামে কোনো অর্থ-সম্পদ ছিল না। দেড় দশকে ক্ষমতায় থাকাকালীন তার আয় বেড়েছে ৩০ গুণ। সম্পদ
হয়েছে অঢেল।
২০০৮ সালে প্রথম
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সময় (পটিয়া তখন চট্টগ্রাম-১১ ছিল) তার স্ত্রীর কোনো আয় ছিল না।
ছিল না কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ। কিন্তু ১৫ বছরের ব্যবধানে পত্নীসহ হুইপের বার্ষিক
আয় বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ। স্বামী-স্ত্রী দুজনের নামে বর্তমানে রয়েছে কয়েক কোটি টাকার
সম্পদ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বরের দেওয়া হলফনামা এবং দ্বাদশ
সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের সময় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া ২০২৩ সালের ২৯ নভেম্বরের
হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য মিলেছে।
২০০৮ সালের
নভেম্বর মাসে সামশুল হক চৌধুরীর বার্ষিক আয় ছিল সাকুল্যে ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে
বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ও অন্য ভাড়া থেকে ৪৫ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে দুই লাখ
৫০ হাজার টাকা আয় হতো তার। ওই সময়ে স্ত্রী কিংবা নির্ভরশীলদের কোনো আয় ছিল না হলফনামায়।
২০০৮ সালের
২০ নভেম্বর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে সামশুল হক চৌধুরীর হাতে নগদ ছিল ১ হাজার ৩৬৯ টাকা।
লিমিটেড কোম্পানির ৪০টি শেয়ার ছিল। যার মূল্য দেখানো হয়েছিল ৪০ হাজার টাকা। ২০ লাখ
৬০ হাজার টাকা মূল্যের একটি টয়োটা গাড়ি ছিল। সোনা ও মূল্যবান ধাতু ছিল ২৫ হাজার টাকার।
ইলেকট্রনিক সামগ্রী ছিল ৩০ হাজার টাকার এবং ২০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ছিল।
স্থাবর সম্পদের
মধ্যে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অকৃষি জমি, হালিশহর হাউজিং এস্টেট এবং রিয়াজ উদ্দিন বাজারে
দুটি দালানের দাম দেখানো ছিল ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ওই সময়ে ২৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকার
ঋণ ছিল সামশুল হক চৌধুরীর।
বর্তমানে চিত্র
একেবারে ভিন্ন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলে দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, বর্তমানে
স্ত্রীসহ হুইপের বার্ষিক আয় ৮৮ লাখ ৫২ হাজার ১৯৮ টাকা। এর মধ্যে স্ত্রীর বার্ষিক আয়
রয়েছে ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৩১৮ টাকা।
বার্ষিক আয়ের
মধ্যে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকানসহ অন্য ভাড়া খাতে আয় ১৩
লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৪ টাকা। ব্যবসা খাতে আয় ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র কিংবা
ব্যাংক আমানত খাতে আয় ৭ লাখ ৯৬ হাজার ১০৮ টাকা। হুইপের ভাতা খাতে ১১ লাখ ৪ হাজার এবং
অন্য খাতে আয় রয়েছে ২৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮৮ টাকা।
একইভাবে হুইপপত্নীর
আয়ের মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকানসহ অন্য ভাড়া খাতে বছরে আয় ৪ লাখ ১৫ হাজার
৮শ টাকা। ব্যবসা খাতে আয় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। সঞ্চয়পত্র খাতে আয় ৪ লাখ ৬০ হাজার ৮শ
টাকা এবং ব্যাংক আমানতের সুদ হিসেবে আয় ১৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭১৮ টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তির
মধ্যে বর্তমানে হুইপের হাতে নগদ রয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৬২৪ টাকা, রয়েছে ১০ হাজার ৩২
ডলার ৭ সেন্ট। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৬১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯ টাকা। গণনা
প্রপার্টিজ লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ২৬০০ শেয়ার রয়েছে হুইপের। এই শেয়ারের দাম
দেখানো হয়েছে ২ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের ১০০০ শেয়ার রয়েছে সামশুল হক
চৌধুরীর। এসব শেয়ারের মূল্য দেখানো হয়েছে ১০ লাখ টাকা। ব্যাংকে এফডিআর রয়েছে ২ কোটি
৩৫ লাখ টাকার। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩০ লাখ টাকার। ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি এবং ৭১
লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মিলে মোট দুটি ল্যান্ড ক্রুজার রয়েছে হুইপ সামশুলের।
১৫ বছর আগের
মতোই বর্তমানে সোনা ও মূল্যবান ধাতু ২৫ হাজার টাকার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৩০ হাজার টাকার
এবং ২০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। অন্য খাতে অস্ত্র ও ব্যবসায়িক মূলধন হিসেবে দেখানো
হয়েছে ২২ লাখ ১৩ হাজার ৯২৭ টাকা।
একইভাবে হুইপপত্নীর
নগদ টাকা রয়েছে ২৮ লাখ ২৬ হাজার ৯৮৬ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ১০
লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা। গণনা প্রপার্টিজ লিমিটেডের শেয়ার রয়েছে ২০০০টি।
এসব শেয়ারের
দাম দেখানো হয়েছে ২ লাখ টাকা। একইভাবে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের হুইপের সমপরিমাণ
১০০০ শেয়ার রয়েছে হুইপপত্নীর। এসব শেয়ারের মূল্য দেখানো হয়েছে ১০ লাখ টাকা। ব্যাংকে
এফডিআর রয়েছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯১ টাকার। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৫০ লাখ টাকার এবং
ব্যাংকে ডিপিএস (ডিপোজিট পেনশন স্কিম) রয়েছে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার। এই সময়ে নতুন করে
সোনা ও মূল্যবান ধাতু যুক্ত হয়েছে ৩০ তোলা। যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার
টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১ লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র রয়েছে ৬০ হাজার টাকার। বর্তমানে
ব্যবসায়িক মূলধন রয়েছে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬১৩ টাকার।
একই হলফনামায়
হুইপ সামশুলের স্থাবর সম্পদের মধ্যে কোনো কৃষিজমি নেই। তবে তিন দাগে অকৃষি জমি রয়েছে।
এর মধ্যে তিন কাঠা ভিটি ভূমি, যার মূল্য ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ৯ কাঠা ৫ ছটাক ভিটি,
যার মূল্য ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৫২০ টাকা। ৫ কাঠা ভিটি ভূমি, যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৩২
লাখ ৬০ হাজার ৪শ টাকা। প্রতিতলা ৯শ বর্গফুট বিশিষ্ট চারতলা দালান। যার মূল্য ২ লাখ
৮০ হাজার টাকা। ৫ কাঠা ভিটিতে চারতলা বাড়ি রয়েছে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর। যার অর্জনকালীন
মূল্য দেখানো হয়েছে ৪৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
স্ত্রীর অর্জিত
স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে আট শতক ভিটি, যার মূল্য ৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা। ১৫ গন্ডা
১ কড়া, যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১৩ লাখ ১২ হাজার টাকা। ৭ শতক ভিটি, যার মূল্য দেখানো
হয় ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৫০ টাকা। হুইপপত্নীর রয়েছে আটটি টিনশেড দোকান। যার মূল্য ৫ লাখ
৫০ হাজার টাকা। রয়েছে ৪০ লাখ টাকা মূল্যের একটি টিনশেড গোডাউন।
তাছাড়া স্বামী-স্ত্রীর
যৌথ নামে কৃষিজমি রয়েছে ৭৫ শতক। যার ৫১ শতকের মূল্য ২৮ হাজার টাকা এবং ২৪ শতকের মূল্য
৩৩ হাজার ৬শ টাকা। বর্তমানে তাদের কোনো ঋণ নেই।
মন্তব্য করুন
মহান বিজয় দিবস
উদযাপন উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে
কর্তৃপক্ষ। সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করতেই এ আদেশ দেওয়া হয় বলে জানায় গণপূর্ত
বিভাগ।
রোববার (৩ ডিসেম্বর)
বিকেলে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল ফটকে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ দেখা গেছে।
টাঙানো নোটিশে
বলা হয়েছে, মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
ও ভিআইপি নিরাপত্তার জন্য ৪ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের দর্শনার্থীদের
প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের
ইনচার্জ গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, মহান বিজয় দিবসে জাতীয়
স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশি কূটনীতিকরা শ্রদ্ধা জানাবেন। এ কারণে
১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্মৃতিসৌধে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ সময়
স্মৃতিসৌধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হবে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়
দিবসের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের
জন্য স্মৃতিসৌধের গেট উন্মুক্ত করা হবে।
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিএনপিসহ সমমনা দলের নবম দফার ডাকা ৪৮ঘন্টা অবরোধের প্রথম দিনে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়া হয়েছে। রবিবার রাত পৌনে দশটার দিকে পাবনা-বগুড়া মহাসড়কের উল্লাপাড়ার নবগ্রাম এলাকায় অবরোধ সমর্থকরা মশাল মিছিল থেকে করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ীতে আগুন দেয়। আগুনে কাভার্ডভ্যানের কেবিনসহ কিছু মুল্যবান মালপত্র পুড়ে গেছে। তবে চালক ও সহযোগীর কোন ক্ষতি হয়নি'। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রন করেন।
হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম.এ ওয়াদুদ জানান, পাবনা থেকে ঢাকাগামী করতোয়া পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ড ভ্যানটি পৌনে দশটার দিকে উল্লাপাড়ার নবগ্রাম এলাকায় অবরোধ সমর্থকদের মশাল মিছিলে সামনে পড়ে। এসময় অবরোধ সমর্থকরা ইটপাটকেল ছুড়লে চালক গাড়ী থামিয়ে দেয়। তখন অবরোধ সমর্থকরা গাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে কাভার্ডভ্যানের সম্মুখভাগ ও কিছু মালপত্র পুড়ে গেছে।'
মন্তব্য করুন
পছন্দের থানা
পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। নির্বাচন কমিশন (ইসি)
বদলির নির্দেশ দেওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রীতিমত কাছে ধরনা দিচ্ছেন অনেকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে, সুবিধামতো থানা পেতে নানা ‘মানবিক’ কারণ সামনে আনছেন তারা। অনেকেই নিজের
সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবারের সদস্যদের কারও কারও অসুস্থতার চিত্র তুলে ধরছেন
বড় কর্মকর্তাদের কাছে। কেউ কেউ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের কাছেও ছুটছেন তদবির নিয়ে।
পুলিশ সূত্র
জানায়, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একই থানায় ওসির দায়িত্বে রয়েছেন—এমন
কর্মকর্তাদের অন্য জেলা বা অন্যত্র বদলির জন্য ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে
প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়। এর পরই ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একই স্টেশনে থাকা ওসিদের তালিকা
তৈরির কাজ শুরু হয়। সে অনুযায়ী গতকাল রোববার পর্যন্ত সারা দেশে ৬৩৬ থানার মধ্যে ৩২৬
ওসিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তারা ছয় মাস থেকে তারও বেশি সময় ধরে একই থানায় দায়িত্ব
পালন করছেন। ওই তালিকায় ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) ৩৩ জন ওসি রয়েছেন।
জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের আগে দেশের সব থানার ওসিদের বদলির সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার ইসি থেকে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। ওই
চিঠিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের নিমিত্তে সব থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয়
মাসের অধিক চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে, তাদের অন্য জেলায় বা অন্যত্র বদলির প্রস্তাব আগামী
৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করা প্রয়োজন।’
পুলিশ কর্মকর্তারা
বলছেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার আলোকে ওসিদের বদলির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তা ছাড়া
পরিদর্শকদের থানায় ওসি হিসেবে পদায়নের একটা নীতিমালা রয়েছে। ইসির নির্দেশনা বাস্তবায়নে
সেটিও দেখা হচ্ছে। কারও তদবিরের জোরে পছন্দের জায়গায় বদলির সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র
জানায়, সাধারণত দুই বছরের জন্য ওসিদের থানায় নিয়োগ দেওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে
পরিদর্শকদের বদলি করে মেট্রোপলিটন এবং রেঞ্জে পাঠানো হয়। এরপর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার
ও রেঞ্জ ডিআইজির আদেশে থানায় ওসিদের পদায়ন হয়। এই ওসি বদলি ও পদায়নে পুলিশ সদর দপ্তরে
একটি নীতিমালা রয়েছে, যা প্রায় সময় পালন করা হয় না। বেশিরভাগ থানাতেই নানা তদবিরে ওসি
পদায়ন হয়ে থাকে। অনেক ‘প্রভাবশালী ওসি’ নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ থানাগুলোতেও পদায়ন
নেন। অনেক এলাকায় এমপি, মন্ত্রীসহ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা তাদের পছন্দের কর্মকর্তাকে
ওসি হিসেবে পোস্টিং করে নিয়ে থাকেন। এজন্য একই জেলা বা মেট্রোপলিটনে ঘুরেফিরে পরিচিত
মুখ ওসির দায়িত্ব পালন করে থাকেন। একই জেলা বা মেট্রোপলিটনে বছরের পর বছর ধরে একই ওসিদের
দেখা যায়। নিয়ম রক্ষায় শুধু জেলার ভেতরই তাদের থানা বদল করা হয়। এ ধরনের কর্মকর্তারা
এবার বিপাকে পড়েছেন। তারা নানা জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করলেও নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকায়
ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন না।
কয়েকটি থানার
ওসির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এ ধরনের ‘গণবদলির’ জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন না। বিভিন্ন
নির্বাচনের আগে কেবল পক্ষপাতমূলক আচরণ বা দায়িত্ব পালনে সমোলোচনা ও দায়িত্বে অবহেলার
কারণে ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে। এবারই প্রথম সব থানার ওসিকে বদলির
নির্দেশনা আসায় তারা অনেকটা বিস্মিত হয়েছেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের
এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, তারা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার আলোকে ওসি বদলির প্রক্রিয়া
শুরু করেছেন। তবে একসঙ্গে তিন শতাধিক ওসিকে বদলি ও পদায়ন করা কঠিন কাজ হবে। কারণ, একটি
নির্বাচনী আসনে একাধিক থানা রয়েছে। এতে চাইলেই ওসিদের থানা বদল করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে
হয়তো অনেককে জেলা থেকেই বদলি করতে হবে। সে বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে। এজন্য হয়তো ৫ ডিসেম্বরের
মধ্যে নির্বাচন কমিশনে তালিকা পাঠানো সম্ভব নাও হতে পারে।
মন্তব্য করুন