ইনসাইড বাংলাদেশ

অভিযোগের ভান্ডার ‌‘ফুডপান্ডা’

প্রকাশ: ০৭:৫২ এএম, ০৩ অক্টোবর, ২০২২


Thumbnail অভিযোগের ভান্ডার, ফুডপান্ডা

ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে নওশাদ শুভ, ব্যাচেলর ভাড়া বাসায় থাকার দরুণ অনেক সময় তাকে নির্ভর করতে হয় ফুডপান্ডার মত খাবার সরবরাহকারী অ্যাপসের উপর। কিন্তু এই সেবার অভিজ্ঞতার  ব্যাপারে জানতে চাইলে বেশ খানিকটা ক্ষোভ উগ্রে দেন তিনি। তার অভিযোগ মতে ফুডপান্ডা ঘরের দুয়ারে খাবার পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার করলেও, রাইডাররা অনেক সময় সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে খাবার পৌঁছে দিতে অপারগতা জানায়। তিনি জানান যদি আমাকে নিচে নেমেই খাবারটা নিতে হবে তাহলে আমি বাইরে গিয়েই খেতে পারি, বাসায় এক্সটা ডেলিভারি চার্জ দিয়ে কেন খাবার আনতে আমি নিচে যাব? এছাড়া এক খাবার অর্ডার দিয়ে আরেক খাবার পাওয়ার ঘটনাও তার সাথে ঘটেছে অহরহ। এছাড়া রাইডারের ঘরের দুয়ারে খাবার পৌঁছে না দেয়া নিয়ে বাকবিতণ্ডায় খাবার কেনসেল ঘটনাও ।

আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রেসাত আমিন প্রিয়া, তার অভিজ্ঞতা আরও এক সরস বেশি। তার অভিযোগ মতে ফুডপান্ডায় রাত ১০টায় খাবার অর্ডার করে দীর্ঘক্ষণ খাবার না পেয়ে ঘুমিয়ে যান তিনি। রাত ৩ টায় ঘুম ভাঙ্গে ফুডপান্ডার রাইডারের কলে। সে সময় খাবার অর্ডার করার কথা বললে ফুডপান্ডার অফিস থেকে তাকে আবার কল দিয়ে জিজ্ঞেস করা হয় খাবার কেন কেনসেল করছেন তিনি। শেষ অব্ধি খাবারটা কেনসেল করে ফুডপান্ডা। এমন খাবার অর্ডার দিয়ে দীর্ঘক্ষণ খাবারের জন্য অপেক্ষা করার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন অনেক গ্রাহকই।

বাংলাদেশে এখন ই-কমার্স ব্যবসা দারুণ ভাবে জমে উঠেছে। কিন্তু এর বিপরীতে আছে নানান অভিযোগ, ক্ষোভ এবং গ্রাহক ভোগান্তি। বাংলাদেশের সব থেকে জনপ্রিয় একটি খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফুডপান্ডা। অভিযোগ আছে এই প্রতিষ্ঠানটি ডিজিটাল মাফিয়ার মত আচরণ করছে। এই প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে গ্রাহকদের আছে পাহাড় সমান অভিযোগ। খাবার অর্ডার করে কেনসেল হয়ে যাওয়া, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরেও খাবার সঠিক সময়ে না পৌছানো, খাবার অর্ডার করে টাকা পরিশোধের পরেও খাবার না আসা, দাম বেশি নেয়া, ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার মত গুরুত্বর সব অভিযোগ উঠছে এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

খাবার ডেলিভারির পাশাপাশি গ্রোসারি পণ্যও সরবরাহ করে ফুডপান্ডা। সেখানেও রয়েছে সেই একই অভিযোগ। চলতি মাসের ১১ই সেপ্টেম্বর টিস্যুর দাম ২ টাকা বেশি রাখায় খুলনা মহানগরীতে ফুডপান্ডাকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এক ভোক্তার লিখিত অভিযোগের পরিপেক্ষিতে  এই পদক্ষেপ নিয়েছিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর। অভিযোগে জানানো হয়েছিল যে,  ফুডপান্ডা ২৮ টাকার টিস্যু পেপার ৩০ টাকা বিক্রি করেছিল। শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ফুডপান্ডাকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল সে সময়। জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৫০০ টাকা সেই ভোক্তাকে দেয়া হয়েছিল পরে।

এছাড়া ভ্যাট ফাঁকি দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। ফুডপান্ডার  কম্পিউটার ও ল্যাপটপ  জব্দ করে জানা যায়  ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি ও এপ্রিল-মোট আট মাসে মোট ২৭ কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৭ টাকার বিক্রয় তথ্য পাওয়া যায় । কিন্তু এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি গুলশান ভ্যাট সার্কেলে দাখিলপত্রে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ৯৭২ টাকা বিক্রয়মূল্য দেখিয়েছে। আট মাসে প্রতিষ্ঠানটি মোট ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫৪৫ টাকা বিক্রয়তথ্য গোপন করেছে। যার উপর পরিহার করা ভ্যাট ৫৩ লাখ ১০ হাজার ৭৪ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৬২০ টাকা।

ফুডপান্ডার মত খাবার এবং গ্রোসারি পণ্য ডেলিভারি দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্ভর হয়ে উঠছে মানুষ। আর মানুষের আস্থার জায়গাটা তারা শুরুতে নিতে পেরেছিল জন্যেই মানুষ তাদের উপর নির্ভর হয়ে উঠছে। কিন্তু এখন এই আস্থা রাখাটাই গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রাহকদের। শুরুতে ফুডপান্ডার খাবার ডেলিভারি, ভাউচার অফার, গ্রাহক অভিযোগ দিয়ে সাহায্য পাওয়ার মত ব্যবস্থা ছিল বলে ফুডপান্ডা সেই আস্থা পেয়েছিল। কিন্তু এখন আস্থার জায়গাটা ধরে রাখতে পারছে না এই প্রতিষ্ঠানটি। বরং গ্রাহকের সেই আস্থাকে এখন তারা ফাঁদ হিসেবে নিয়েছে। এখন গ্রাহকদের অভিযোগের পরিপেক্ষিতে শুধুমাত্র পরবর্তীতে সমস্যা হবে না বলে জানালেও তারা ঘটে যাওয়া সমস্যার সমাধান করছে না। আবার গ্রাহকদের পেমেন্ট করা টাকার বিপরীতে কোন খাবার ডেলিভারি না হলেও সেই টাকা রিফান্ড করে না এই প্রতিষ্ঠান। 

ফুডপান্ডা ডিসকাউন্ট নিয়েও নানারকম ভাওতাবাজির আশ্রয় নিয়েছিল এই ফুডপান্ডা। কয়েকদিন আগেই রেস্টুরেন্টের খাবার ২০% বাড়িয়ে ২০% ডিসকাউন্ট দেওয়ার প্রস্তাব দেইয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয় এই ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকের আস্থা রাখার অঙ্গীকার করলেও এ ধরনের নোংরা চালাকি গ্রাহকের শুধুমাত্র আস্থাই নষ্ট করছে না। অপরদিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের উপর বিশ্বাস-আস্থা নষ্ট হচ্ছে অনেক গ্রাহকের।

নতুন করে আরেকটি ফি বাড়িয়েছে ফুডপান্ডা। প্ল্যাটফর্ম ফি’ নাম করে বাড়তি টাকা নিচ্ছে অনলাইনে খাবার অর্ডারকারী প্রতিষ্ঠানটি। শুরুর দিকে ফুডপান্ডা ফ্রি ডেলিভারি দিলেও এরপর ডেলিভারি ফি যুক্ত করে এই প্রতিষ্ঠানটি। দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি এবং নানা পারিপাশ্বিকতায় ডেলিভারি ফি সংযুক্তির যুক্তিযুক্ত কারণ থাকলেও এই প্লাটফর্ম ফি নেয়ার কারণ অযৌক্তিক মনে হয়। অবশ্য ফুডপান্ডা যুক্তি দেখিয়েছে তারা এই ফি নিচ্ছে তাদের টেকের উন্নয়নের জন্যে যাতে গ্রাহকরা সেরা সেবা উপভোগ করতে পারে। কিন্তু সেরা সেবার চিত্রের দিকে তাকালে এই বাড়তি টাকা নেয়াটাকে প্রতারণাই মনে হয়।

ঢাকার বাইরে ৬৪ জেলায় ফুডপান্ডার সেবা চালু আছে। ঢাকার ভেতরের রেস্টুরেন্টের খাবার মোটামুটি ভালো ডেলিভারি দিলেও ঢাকার বাইরের জেলা শহরের মানুষের অভিজ্ঞতা আরও খারাপ। ভ্যান থেকে ৩০০ টাকা দামের চায়নিজ খাবার চার গুণ বেশি দামে ফুডপান্ডায় ডেলিভারি দেয়ার অভিযোগ আছে। ফুডপান্ডায় যেসকল ছবি ব্যবহার করা হয় সেগুলো ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে আপলোদ দেয়া হয় গ্রাহককে আকর্ষণ করার লক্ষে। ফলে ছবি দেখে এক খাবার অর্ডার করে আরেক খাবার পাবার তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে গ্রাহকদের। এছাড়া আছে পচা খাবার ডেলিভারি পাবার অভিজ্ঞতা। এ ক্ষেত্রে ফুডপান্ডাকে অভিযোগ করলে তারা জানায় তাদের সেবা শুধু খাবার পৌঁছে দেয়া, প্যাকেট খাবার খুলে দেখার পলিসি তাদের নেই। কিন্তু ফুডপান্ডায় ডেলিভারি হওয়া খাবারটি আদৌ রেস্টুরেন্ট দিচ্ছে কিনা, এটি নিশ্চিত করা অবশ্যই ফুডপান্ডার দায়িত্বের মধ্যেই পরে। গ্রাহক দাম দিয়ে যদি সেই খাবারটি খেতেই না পারে, পচা খাবার যদি ফুডপান্ডা দুয়ারে পৌঁছে দেয়াটাই শুধু দায়িত্ব মনে করে তাহলে এ ধরনের সেবা মানুষ নিবে কেন?

ফুডপান্ডা মানুষের সময় বাঁচাচ্ছে, এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগের পাহাড়, তা নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের এখনই ভাবা উচিত। ফুডপান্ডার ম্যনেজিং ডিরেক্টর আম্বারীন রেজা এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, গ্রাহকদের বৈচিত্রময় অভিজ্ঞতা দিতে নতুন সেবা ও ফিচার চালু করছেন তারা। এই বিচিত্র অভিজ্ঞতা এবং সেবা যেন ভাওতাবাজি, এবং গ্রাহক ভোগান্তির না হয় তা নিয়ে যেন ভাবে এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি।

ফুডপান্ডা   অভিযোগ   গ্রাহক ভোগান্তি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গরিব-দুস্থদের শাড়ি বন্ধুকে দেয়ার অভিযোগ ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে

প্রকাশ: ১০:২৯ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গরিব ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের শাড়ি পেয়েছেন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট ও মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমনের দুই বন্ধুর স্ত্রী। ফলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা মুখে পড়েছেন এই সাংসদ।

জানা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৪০০টি শাড়ি, ৪৮টি থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক বরাদ্দ দেওয়া হয় হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হককে। বরাদ্দের একটি করে শাড়ি পেয়েছেন চুনারুঘাট উপজেলার গাদি শাইল গ্রামের প্রাণিচিকিৎসক আব্দুল মুকিতের স্ত্রী ও গেরারুক গ্রামের মো. সানু আহমেদের স্ত্রী। আব্দুল ও সানু দুজনই সংসদ সদস্য সায়েদুল হকের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। তবে দুই বন্ধু এই উপহার প্রত্যাখ্যান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিষয়টি জানিয়েছেন।

সানু আহমেদ নামে একজন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ব্যারিস্টার সুমনের দেওয়া আমার বউয়ের জন্য জাকাতের সুতি শাড়ির বাজারমূল্য ২৮০ টাকা।...আমার বউ এসব শাড়ি পরে না। আগামীকাল একজন অসহায় মানুষকে শাড়িটি দিয়ে দেব।

সানু আহমেদ আরও বলেন, আমি সুমনের বন্ধু। তার কাছে কিছু পাওয়ার আশায় এ বন্ধুত্ব নয়। সে অন্য মানুষের মাধ্যমে কী করে এ শাড়ি পাঠাল, তা বুঝে উঠতে পারছি না। এ শাড়ি তো আমার পাওয়ার কথা না। এগুলো তো গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণের কথা। তাই মনের কষ্ট থেকে ফেসবুকে এ স্ট্যাটাস দিয়েছি।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে গত ২০ বছর আমার আসনের কোনো সংসদ সদস্য তা প্রকাশ করেননি। এবার প্রথম আমি এই তালিকা জনগণের মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রকাশ করি। প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার আমার দুই উপজেলায় বিতরণের জন্য যাদের দায়িত্ব দিই, তাদের একজন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চান। তিনি তার এক বন্ধুর স্ত্রীকে এ শাড়ি বিলি করেন। আবার তারাই একই শাড়ি অন্যজনকে দিয়ে ফেসবুকে এ প্রচারণা করেন। প্রকৃত বিষয় হচ্ছে, একটা পক্ষ আছে, যারা আমার ত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। এ পক্ষই এখন এ শাড়ি নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ব্যারিস্টার সুমন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা: পাঁচ সংকটে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ পাঁচটি বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল সেখান থেকে নতুন সরকার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আবার যদি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ শুরু হয় বা অস্থিরতা দীর্ঘমেয়াদি হয়, তাহলে বাংলাদেশ নতুন করে অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং অস্থিরতা বাংলাদেশকে পাঁচটি প্রধান সংকটের মধ্যে ফেলতে পারে। এই সংকটগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রথমত, অভিবাসী ও প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার শঙ্কা। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি যে সংকটটি তৈরি করতে পারে তা হলো প্রবাসী আয় কমে যেতে পারে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মী পাঠানো এবং নতুন নিয়োগ ঝুঁকিতে পড়বে। এজন্য কর্মী পাঠানো কমে যেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা দেখা দিলে অনেকে চাকরি হারাবেন এবং এরকম একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বাংলাদেশে প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ার সংকট রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্যের দেশে রপ্তানি বাণিজ্য। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা দেখা দিলে সেখানে রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, এই অস্থিরতা ইউরোপসহ পশ্চিমা বিশ্বেও বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমিয়ে দিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।

তৃতীয়ত, জ্বালানি আমদানি বিঘ্নিত হবে। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বাংলাদেশের জ্বালানি আমদানি বিঘ্নিত করতে পারে। বিশেষ করে এই অস্থিরতার কারণেই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি হলে বাংলাদেশের ওপর একটি বড় ধরনের চাপ তৈরি করবে। এমনিতে আমাদের সামনে গ্রীষ্মকাল। জ্বালানির চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমাদের যে জ্বালানি আমদানি করতে হয় তার মূল্য বৃদ্ধি করতে গেলে সরকারের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। সরকারকে লোডশেডিং এর মতো অস্বস্তিকর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

শুধু তাই নয়, জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিলে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটি দেখা দেবে, তা হল উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়বে। শিল্প কল কারখানাগুলোতে জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে যদি উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটে সেটি বাংলাদেশকে এখন একটি নতুন সংকটে ফেলতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।

আর সবচেয়ে বড় কথা হল যে, মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকটের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে নতুন করে চাপ সৃষ্টি হবে, সেই চাপ মোকাবেলা বাংলাদেশ কীভাবে করবে সেটাই হল একটি বড় সমস্যা। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ এই যুদ্ধ পরিস্থিতি উত্তেজনায় বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়তে পারে। তবে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর অনেক দেশই এমন সংকটে পড়বে।

মধ্যপ্রাচ্য   ইরান   বাংলাদেশ   প্রবাসী আয়   জ্বালানি তেল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতের নির্বাচন: বাংলাদেশে কী প্রভাব পড়বে?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আগামীকাল থেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নির্বাচন। সাত ধাপে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে ৪ জুন। নানা কারণে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারা বিশ্ব এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। ভারতের গণতন্ত্রের গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে বিশ্বের অনেক কিছুই। 

বাংলাদেশ হল ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ভারত এবং বাংলাদেশের জন্য নয়, উপমহাদেশের ভারসাম্য এবং শান্তি স্থিতিশীলতার জন্য ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

গত এক যুগে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উপনীত হয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের রাজনীতিতে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। কংগ্রেসের হাত থেকে বিজেপি ক্ষমতা গ্রহণ করেছে এবং টানা ১০ বছর নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় ছিল। এরকম বাস্তবতায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন হয়নি। ভারতের সরকার পরিবর্তন দুই দেশের সম্পর্কের পরিবর্তন আনেনি। বরং কংগ্রেস যেখান থেকে শুরু করেছিল বিজেপি ক্ষমতায় এসে সেখান থেকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গত নির্বাচনে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন মাত্রা স্পর্শ করেছিল। আর এই কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এক ধরনের ভারত বিরোধী আবহাওয়ার তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও সাধারণ মানুষ সেই উদ্যোগে তেমন আগ্রহী নন এবং সাড়াও দেননি। 

নানা কারণে ভারতের নির্বাচনের প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে এবং বাংলাদেশ ভারতের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে একটি কথা অনস্বীকার্য যে, ভারতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, ইন্ডিয়া জোট বা বিজেপি বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন অবস্থানগত পরিবর্তন হবে না। ইতোমধ্যে কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে। আর বিজেপি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটাকে আলাদা দৃষ্টিতে দেখে সেটি প্রমাণিত। ফলে ভারতের নির্বাচনে জয় বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে না। 

তবে যদি নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি নির্বাচনে পরাজিত হয়, যদিও সে সম্ভাবনা খুবই কম। তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতে পারে। বিশেষ করে বিজেপির বিরুদ্ধে এখন যেমন বিএনপি এবং মৌলবাদী রাজনৈতিক দলগুলো একটা অবস্থান নিয়েছে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে হয়তো সেই অবস্থানের পরিবর্তন ঘটবে। কারণ কংগ্রেসের বাংলাদেশ নীতি বিজেপির চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। বিজেপি যেমন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট। তারা আওয়ামী লীগের বাইরে কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় না। কংগ্রেসের বিষয়টি একটু ভিন্ন রকম। তারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। বিজেপি যেমন বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী এবং উগ্র মৌলবাদীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের অবস্থান অনেকটাই নমনীয়। সবকিছু মিলিয়ে যদি ভারতের ক্ষমতার পালা বদল হয় তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মেরুকরণে কিছুটা হলেও পরিবর্তন হতে পারে। তবে সেটি কোন মৌলিক পরিবর্তন নয় বলেই মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।


ভারতের নির্বাচন   বাংলাদেশ   লোকসভা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করা হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৮:৪৭ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চিকিৎসক ও রোগীর সুরক্ষায় জাতীয় সংসদে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালকসহ অন্যান্য চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরও অংশ নেন কুমিল্লা–৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, চান্দিনা আসনের সংসদ সদস্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. তাহসীন বাহার, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার প্রমুখ।

আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন, আমি যেমন চিকিৎসকদের মন্ত্রী, তেমনি রোগীদেরও। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করতে সংসদে বিল উত্থাপন করা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশে চিকিৎসা নিরুৎসাহিত করতে দেশে চিকিৎসকদের আরও বেশি সেবা মনোভাবী হওয়ার অনুরোধ জানান। স্থানীয় সংসদ সদস্যের দাবির প্রেক্ষিতে কুমিল্লায় একটি ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণেরও প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী।

এর আগে সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করে রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।


স্বাস্থ্যমন্ত্রী   স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আমার চেয়ে খারাপ লোক এ জেলায় নাই: প্রাণ ভিক্ষা পাওয়া মেয়রপুত্র

প্রকাশ: ০৮:৩৮ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

‘কেউ ভয় পাবেন না। অল্প পানিতে মাছ তিরতিরায়। ধৈর্য ধরেন, আমার চেয়ে বড় খারাপ লোক এ জেলাতে হয় নাই, হবেও না।’ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক প্রার্থীর পক্ষে জনসংযোগ করতে গিয়ে এমন ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন বহুল আলোচিত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু তাহেরের ছেলে এএইচএম আফতাব উদ্দিন বিপ্লব। এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন বাজারে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলুর পক্ষে জনসংযোগে এসব কথা বলেন। 

ভুলুর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর দাবি, বিপ্লব ওই এলাকায় বহিরাগত। তাঁর এমন উসকানিমূলক বক্তব্যে ভোটের পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। 

তবে বিপ্লবের দাবি, দলীয় নেতা ভুলুর নির্বাচনী গণসংযোগে তিনি ওই এলাকায় যান। তার ওপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন হামলা করায় তিনি রাগে এ ধরনের কথা বলেছেন।  

এএইচএম আফতাব উদ্দিন বিপ্লব হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমায় তিনি ওই দণ্ড থেকে মুক্ত হন। 

এ দিকে বিপ্লব নিজের ফেসবুক পেজে বক্তব্যের ভিডিও শেয়ার করেন। প্রায় ১১ মিনিটের ওই ভিডিওতে বক্তব্যের একপর্যায়ে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘কেউ ভয় পাবেন না। অল্প পানিতে মাছ তিরতিরায়। ধৈর্য ধরেন। আমার চেয়ে বড় খারাপ লোক এ জেলাতে হয় নাই, হবেও না। আমিও মানুষের ভালোবাসার জন্য দুয়ারে দুয়ারে হাটি। জনগণই বড় শক্তি। ভোটের মাধ্যমে মানুষ জবাব দেবে। আজকের হামলার ঘটনার জন্য একটা কথা বলি। আমি প্রত্যেকদিন এক ঘণ্টা করে এখানে আসব। যতক্ষণ পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ না হবে, কথা দিচ্ছি আমি এখান থেকে যাব না। ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবো। আমি দায়িত্ব নিয়েছি, তেওয়ারীগঞ্জ আমি ছাড়ব না। ভোটের দিন পর্যন্ত আমি তেওয়ারীগঞ্জে থাকব। আমি দেখব কে কত বড় সন্ত্রাস হয়েছেন। এটার জবাব ভোটের ব্যালটে দেবো, ইনশাআল্লাহ। যে আচরণ করেছেন তা ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেবো।’ 

উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আইনজীবী (সাবেক পিপি) নুরুল ইসলামকে লক্ষ্মীপুর শহরের বাসা থেকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। বহুল আলোচিত নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ২০০৩ সালে তাহেরপুত্র বিপ্লবসহ পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। বিপ্লব ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর আবু তাহের তার ছেলে বিপ্লবের প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। ওই বছরের ১৪ জুলাই তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান তার সাজা মওকুফ করেন। পরের বছর আরও দুটি হত্যা মামলায় (কামাল ও মহসিন হত্যা) বিপ্লবের যাবজ্জীবন সাজা কমিয়ে ১০ বছর করেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০১২ সালে ফিরোজা হত্যা মামলা থেকেও বিপ্লবের নাম প্রত্যাহার করা হয়। ২০১৪ সালের ১ আগস্ট কারাগারে থেকে বিয়ে করে দেশব্যাপী ফের আলোচনায় আসেন বিপ্লব। অবশেষে ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর তিনি কারামুক্ত হন।

লক্ষ্মীপুর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন