ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রতিপক্ষের গুলিতে বাগেরহাট জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা নিহত

প্রকাশ: ০৯:২৯ এএম, ১২ নভেম্বর, ২০২২


Thumbnail

বাগেরহাটে প্রতিপক্ষের গুলিতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক  দল ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম তানু ভূঁইয়া (৩৭) নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে শহরের বাসাবাটি পদ্মপুকুরের মোড় এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহত নুরে আলম তানু ভূঁইয়া বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকার মৃত আব্দুর রউফ ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি বাগেরহাট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

একই এলাকার টুটুল শেখের ছেলে ফরিদের গুলিতে তানু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত তানুর বড় ভাই আবুল কাশেম সেলিম ভূঁইয়া বলেন, আমার ভাইকে ওরা (দুর্বৃত্তরা) গুলি করে মেরে ফেলেছে।

নিহতের বোন লোপা বলেন, রাত ৯টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে বগা ক্লিনিকের দিকে যায় আমার ভাই তানু। কিছুক্ষণ পরেই পরপর চারটা গুলির শব্দ পাই। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা আমার ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন। আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, তানু ভূঁইয়া আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।

এদিকে ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাগেরহাট জেলা পুলিশের গণমাধ্যম শাখার সমন্বয়ক পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম বলেন, তানু ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তি ফরিদ নামের এক ব্যক্তির গুলিতে নিহত হয়েছেন। তার নামে মাদক, বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মোট ৮ট মামলা রয়েছে। এছাড়া বন্দুকধারী ফরিদকে আটক করতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। ফরিদের নামে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৫টি মামলা রয়েছে।

গুলি   ছাত্রদল   নিহত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পিটার ডি হাস কি বাড়াবাড়ি করছেন?

প্রকাশ: ০১:৫৮ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। ২০২২ সালের মার্চে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই তিনি নানা আলোচনা, সমালোচনা এবং বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশে যারা সাধারণত মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তারা এক ধরনের সম্মান এবং শ্রদ্ধা আদায় করেন। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু বিশ্বের একটি প্রভাবশালী দেশ, সে জন্য দেশটির রাষ্ট্রদূত আলাদা মর্যাদা পান। তাদেরকে সকলে সমীহ করে দেখেন। অনেক রাষ্ট্রদূতই বাংলাদেশে এসেছেন এবং জনগণের হৃদয় জয় করেছেন।

তাদের মধ্যে মার্সিয়া বার্নিক্যাটের কথা উল্লেখ্য। তিনি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে মিশেছিলেন এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতি কৃষ্টির সঙ্গে নিজেকে মিলিয়েছিলেন। আর এর ফলে তিনি উঠেছিলেন এক অনন্য উচ্চতায়। মার্সিয়া বার্নিক্যাটের বিদায়ের সময় বাঙালিদের অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়েছিলেন। বার্নিক্যাট কখনো বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেননি বরং আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে চেয়েছিলেন।

অন্যান্য রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে এসেছেন, বিশেষ করে ২০০৯ এর পর থেকে, তারা সকলেই রাষ্ট্রদূত হিসাবে একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ কারণেই তাদেরকে সকলেই শ্রদ্ধার চোখে দেখতো। কিন্তু পিটার ডি হাসের ক্ষেত্রে বিষয়টি অন্যরকম।

সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে একটি বিতর্কে জড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন যে গণমাধ্যমও এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারে। চ্যানেল ২৪ এর সঙ্গে প্রদত্য এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। তার এই মন্তব্যের পর বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো মার্কিন রাষ্ট্রদূত যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সমর্থন করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি কূটনৈতিক শিষ্টাচারের এক উজ্জ্বল উদাহরণ সৃষ্টি করে এই প্রশ্নটিকে কূটনীতি-সুলভ ভাবে উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যারা যারা ভিসা নিষেধাজ্ঞায় আসতে পারে তাদের পেশাগত পরিচয়ে উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে গণমাধ্যমকর্মীরা নেই। মূলত তার এই বক্তব্যটি ছিল কূটনৈতিক পরিভাষা ব্যবহারের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কি করা উচিত তা বাংলাদেশের কূটনীতিকরা ম্যাথু মিলারের চৌকুস এবং তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে শিখতে পারেন।

কিন্তু ম্যাথু মিলারের এই অবস্থান পিটার ডি হাসকে কিছুটা হলেও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে বলে অনেক কূটনীতিক মনে করেন। বিশেষ করে পররাষ্ট্র দপ্তর যেখানে তার বক্তব্য সমর্থন করছেন না, তখন পিটার ডি হাস কি বাড়াবাড়ি করছেন? এই প্রশ্নটি এখন কূটনৈতিক অঙ্গনে বেশি করে চাউর হয়েছে। কারণ পিটার ডি হাস গত দেড় বছর সময়ে নিরপেক্ষতার আবরণ ঝেড়ে ফেলেছেন। তাকে অনেকটাই আওয়ামী বিরোধী বা সরকারের বিরোধী হিসেবেই দেখা যাচ্ছে। এমন সব ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি সক্ষতা তৈরি করছেন যারা সরকার বিরোধী হিসেবে বিভিন্নভাবে পরিচিত। অন্যদিকে যারা সরকারের সমর্থক হিসাবে পরিচিত তাদের সাথে পিডার ডি হাসের একটা দূরত্ব ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে।

যেমন তিনি বিএনপি সমর্থিত মায়ের ডাকের একজন সংগঠকের বাসায় গিয়েছিলেন এবং এটিতে নিরাপত্তার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এছাড়াও তৃতীয় মাত্রার বিতর্কিত উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়েও বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন আসে। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি অনেকটাই বেপরোয়া বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেন। যদিও অনেক কূটনীতিক বলেন যে এটি মার্কিন অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে। আর এই কারণেই রাষ্ট্রদূত তাদের পররাষ্ট্র দফতরের নির্দেশেই এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করছেন। এটি তার ব্যক্তিগত অভিপ্রায় নয়। কিন্তু গণমাধ্যম কর্মীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্যটি এই ধরনের যুক্তির পক্ষে যায় না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে যে পিটার ডি হাস কি বাড়াবাড়ি করছেন? বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ যে সম্পর্ক সেই সম্পর্ক নষ্ট করার ক্ষেত্রে কি তিনি ভূমিকা পালন করছেন?

সরকার একটি প্রতিষ্ঠান, আর জনগণই সরকার গঠন করে। কিন্তু পিটার ডি হাসের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব এবং এক ধরনের দম্ভক্তি কিংবা তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ অনেক সময় মনে করিয়ে দেয় যে বাংলাদেশ বোধহয় পরাধীন কোনো রাষ্ট্র এবং মার্কিন করতালগত রাষ্ট্র। পিটার ডি হাস এখানে গভর্নর বা ভাইস রয়।

এমন একটি ভাবধারা যদি তৈরি হয় তাহলে জনগণের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত আবেগপ্রবণ। আবেগের বশে তারা অনেক কিছুই করে। কাজেই পিটার ডি হাস যদি সত্যিই বাড়াবাড়ি করেন তাহলে সেই বিষয়টি কি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর দেখবে?



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তিনদিনের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, স্বস্তিতে নগরবাসী

প্রকাশ: ১২:৩৩ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী এবং সাপ্তাহিক দুইদিনের ছুটি মিলিয়ে মোট তিনদিনের ছুটিতে ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে। নগরের ব্যস্ততম জীবনে স্বস্তি নেমে এসেছে। টানা তিনদিনের ছুটি কাজে লাগিয়ে বুধবার রাতেই রাজধানী ছেড়েছেন অনেক মানুষ। কেউ গেছেন গ্রামের বাড়িতে আবার কেউবা পরিবার নিয়ে বেড়াতে গেছেন কোনো পর্যটন এলাকায়। এর ফলে রাজধানীর সড়কে কমেছে মানুষের চাপ। কোথাও ব্যস্ততা নিয়ে ছুটে চলা মানুষের জনজট নেই। সবখানেই প্রায় ফাঁকা ফাঁকা ভাব।

সাধারণত বৃহস্পতিবারে ঢাকার রাস্তাঘাটে যানবাহন ও যাত্রীদের প্রচুর চাপ থাকলেও সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে নেই কোনো যানজট। আসাদ গেট, বিজয় সরণি, কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরা, শান্তিনগর ও পল্টন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে ঢাকার রাজপথে যানবাহন ও যাত্রীদের উপস্থিত খুবই কম।

তবে যাত্রী উপস্থিতি কম হলেও জানজট না থাকায় সন্তুষ্ট বাস চালকরা। মিরপুর থেকে থেকে সায়েদাবাদগামী একটি বাসের চালক জাকির হোসেন বলেন, যাত্রী কম হলেও ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি চালাইয়া আরাম পাচ্ছি।

মোটরবাইকে রাইড শেয়ার করা নুরুল কাদেরও জানান একই অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, সাধারণত মিরপুর থেকে গুলিস্তান আসতে কমপক্ষে দেড় ঘণ্টার মতো লেগে যায়। আজ এসেছি মাত্র ২০ মিনিটে।

যাত্রীরা বলছেন, টানা ছুটিতে রাস্তা প্রায় ঈদের ছুটির মতো ফাঁকা রয়েছে। এক ঘণ্টার রাস্তা এখন ১০-১৫ মিনিটেই ভ্রমণ করা যাচ্ছে।

ছুটির দিনে রাস্তার পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর বাড্ডায় কর্মরত এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গতকাল (বুধবার) অনেক মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। সে কারণে রাস্তায় গাড়ির অনেক চাপ ছিল। কিন্তু আজ থেকে টানা তিনদিনের ছুটি শুরু হওয়ায় রাস্তায় গাড়ির চাপ অনেক কমে গেছে। যানজট নেই বললেই চলে। তবে বিকেলের দিকে গাড়ির চাপ কিছুটা বাড়তে পারে, কারণ ছুটির দিনে অনেক মানুষ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে বের হবেন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সিনেটর-কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রকাশ: ১১:১৪ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সিনেটর এবং কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বিএনপি টাকার মাধ্যমে তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ছে; আপনারা নৈতিকতা-আদর্শ দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তুলুন।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সেখানকার প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় থাকেন; সেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধি আছে, সিনেটররা আছে, কংগ্রেসম্যানরা আছে; আপনারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান; বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগ সম্পর্কে ইতিবাচক তথ্য তুলে ধরুন।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত টাকা দিয়ে বিদেশিদের কিনে নিচ্ছে। আপনারা টাকা নয়, নৈতিকতা-আদর্শ দিয়ে বিদেশি নীতিনির্ধারণীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলুন।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছিলেন শেখ হাসিনা আর প্রধানমন্ত্রী হবে না, আওয়ামী লীগ আর একবারও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এখন বিএনপি আর একবার ক্ষমতায় যেতে পারে কি না দেখা যাক....।’

এরপরই উপস্থিত নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে ‘পাকিস্তানে চলে যা’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী মজার ছলে বলেন, ‘ওনারে পাকিস্তানও নেবে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি এখন মিছিল করছে, সভা করছে। আমরা তাদের বাধা দিচ্ছি না। তারা তো ক্ষমতায় থাকতে অনেক টাকা কামিয়েছে, ওইগুলো তো কিছুটা শেষ করতে হবে। এখন তারা টাকা দিয়ে মানুষ ভাড়া করে মিছিল করছে।’


সিনেটর   কংগ্রেসম্যান   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের উন্নতি নেই, বললেন চিকিৎসকেরা

প্রকাশ: ১০:০২ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

৫০ দিন ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি।

তাঁর লিভার, কিডনিসহ মূল প্রত্যঙ্গগুলোর জটিলতা বেড়েই চলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁর কিডনি ও হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যাও জটিল হচ্ছে। এসব জটিলতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখছেন না।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গতকাল বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের জটিলতা বা সমস্যাগুলো এমন পর্যায়ে গেছে যে এখন দেশে চিকিৎসা দিয়ে সেসব সমস্যার উন্নতি আশা করা যায় না।

গত ৯ আগস্ট ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। সেই থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর আগেও গত ১৩ জুন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় পাঁচ দিন পর তিনি বাসায় ফেরেন।


খালেদা জিয়া   চিকিৎসা   এভারকেয়ার হাসপাতাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

স্মৃতির দখিন দুয়ার


Thumbnail

আজ প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষ্যে শেখ হাসিনার আত্ম স্মৃতিচারণ মূলক এই লেখাটি বাংলা ইনসাইডার প্রকাশ করলো-

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামখানি একসময় মধুমতি নদীর তীরে ছিল। বর্তমানে মধুমতি বেশ দূরে সরে গেছে। তারই শাখা হিসেবে পরিচিত বাইগার নদী এখন টুঙ্গীপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে কুল কুল ছন্দে ঢেউ তুলে বয়ে চলেছে। রোদ ছড়ালে বা জ্যোৎস্না ঝরলে সে নদীর পানি রুপোর মতো ঝিকমিক করে।

নদীর পাড় ঘেঁষে কাশবন, ধান-পাট-আখ ক্ষেত, সারিসারি খেজুর, তাল- নারকেল আমলকি গাছ, বাঁশ-কলাগাছের ঝাড়, বুনো লতা-পাতার জংলা, সবুজ ঘন ঘাসের চিকন লম্বা লম্বা সতেজ ডগা। শালিক-চড়ুই পাখিদের কল-কাকলি, ক্লান্ত দুপুরে ঘুঘুর ডাক। সব মিলিয়ে ভীষণরকম ভালোলাগার একটুকরো ছবি যেন। আশ্বিনের এক সোনালি রোদ্দুর ছড়ানো দুপুরে এ টুঙ্গীপাড়া গ্রামে আমার জন্ম। গ্রামের ছায়ায় ঘেরা, মায়ায় ভরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ এবং সরল-সাধারণ জীবনের মাধুর্যের মধ্য দিয়ে আমি বড় হয়ে উঠি।

আমাদের বসতি প্রায় দু'শ বছরের বেশি হবে। সিপাহী বিপ্লবের আগে তৈরি করা দালান-কোঠা এখনও রয়েছে। আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা সেখানে বসবাস করেন। তবে বেশিরভাগ ভেঙে পড়েছে, সেখানে এখন সাপের আখড়া। নীলকর সাহেবদের সঙ্গে আমাদের পূর্বপুরুষদের অনেক গোলমাল হতো। মামলা-মোকদ্দমা হয়েছে। ইংরেজ সাহেবদের সঙ্গেও গণ্ডগোল লেগেই থাকত। একবার এক মামলায় এক ইংরেজ সাহেবকে হারিয়ে জরিমানা পর্যন্ত করা হয়েছিল। ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে সে ভাঙা দালান এখনও বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক সেনাবাহিনী ঐ দালানের ওপর হামলা চালিয়েছিল। আমার দাদা-দাদিকে সামনের রাস্তায় বসিয়ে রেখে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল।

আমাদের গ্রামে ঢাকা থেকে স্টিমারে যেতে সময় লাগত সতেরো ঘন্টা। রাস্তা- ঘাট ছিলই না। নৌকা ও পায়ে হাঁটা পথ একমাত্র ভরসা ছিল। তারপরও সে গ্রাম আমার কাছে বিরাট আকর্ষণীয় ছিল। এখন অবশ্য গাড়িতে যাওয়া যায়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্পীডবোটেও যাওয়া যায়। গোপালগঞ্জ থেকে টুঙ্গীপাড়া নৌকায় যেতে তিন-চার ঘণ্টা সময় লাগে।

আমার শৈশবের স্বপ্ন-রঙিন দিনগুলো কেটেছে গ্রাম-বাংলার নরম পলিমাটিতে, বর্ষার কাদা-পানিতে, শীতের মিষ্টি রোদ্দুরে, ঘাসফুল আর পাতায় পাতায় শিশিরের ঘ্রাণ নিয়ে, জোনাক-জ্বলা অন্ধকারে ঝিঁঝির ডাক শুনে, তাল- তমালের ঝোপে বৈচি, দীঘির শাপলা আর শিউলি-বকুল কুড়িয়ে মালা গেঁথে, ধুলোমাটি মেখে, বর্ষায় ভিজে খেলা করে।

আমার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান রাজনীতি করতেন। বেশির ভাগ সময় তাঁকে তখন জেলে আটকে রাখা হতো। আমি ও আমার ছোট ভাই কামাল মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির কাছে থাকতাম। আমার জন্মের সময় বাবা কলকাতায় পড়তেন, রাজনীতি করতেন। খবর পেয়েও দেখতে আসেন বেশ পরে।

আমার বাবা যখনই সময় ও সুযোগ পেতেন একবার বাড়ি এলে আমরা কিছুতেই তাঁকে ছেড়ে নড়তাম না। বাবার কোলে বসে গল্প শোনা, তার সঙ্গে খাওয়া, আমার শৈশবে যতটুকু পেয়েছি তা মনে হতো অনেকখানি।

বাবাকে একবার গোপালগঞ্জ থানায় আনা হলে দাদার সঙ্গে আমি ও কামাল দেখতে যাই। কামালের তো জন্মই হয়েছে বাবা যখন ঢাকায় জেলে। ও বাবাকে খুব কাছ থেকে তখনও দেখেনি। আমার কাছেই বাবার গল্প শুনত মুগ্ধ হয়ে। গোপালগঞ্জ জেলখানার কাছে পুকুর পাড়ে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, বাবাকে নিয়ে যাবে কোর্টে তখনই আমরা দেখব। কামাল কাছ ঘেঁষে বলল : হাচুপা, তোমার আব্বাকে আব্বা বলতে দেবে। আমার শৈশবের হৃদয়ের গভীরে কামালের এ অনুভূতিটুকু আজও অম্লান হয়ে আছে। বাবাকে আমাদের শৈশবে-কৈশোরে খুব কমই কাছে পেয়েছি। শৈশবে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত ছিলাম বলে দাদা-দাদি, আত্মীয়- স্বজন, গ্রামের মানুষের অশেষ স্নেহ-মমতা পেয়েছি।

আমাদের পরিবারের জন্য মৌলভী, পণ্ডিত ও মাস্টার বাড়িতেই থাকতেন। আমরা বাড়ির সব ছেলেমেয়ে সকাল-সন্ধ্যা তাঁদের কাছে লেখাপড়া শিখতাম। গ্রামের প্রাইমারি স্কুলেও কিছুদিন পড়াশোনা করেছিলাম। আমার কৈশোরকাল থেকে শহরে বাস করলেও গ্রামের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল। ১৯৫২ সালে আমার দাদার সঙ্গে আমাদের বাড়ির নিজস্ব নৌকায় চড়ে প্রথম ঢাকা শহরে আসি। আমার স্নেহময়ী দাদা-দাদি আত্মীয়-স্বজন বেশিরভাগ গ্রামে বাস করতেন। স্কুলে ছুটি হলে বা অন্যান্য উৎসবে বছরে প্রায় তিন-চারবার গ্রামে চড়ে যেতাম। আজও আমার গ্রামের প্রকৃতি, শৈশব আমাকে ভীষণভাবে পিছু টানে।

আমার শৈশবের দিনগুলো ভীষণরকম স্মৃতিময়। আজ সেসব দিনের কথা যেন স্মৃতির  দুখিন দুয়ার খোলা পেয়ে বারবার ভেসে আসছে। একটি ঘটনার কথা উল্লেখ না করে পারছি না। আমার বাবার এক চাচাতো বোন, আমার চেয়ে বয়সে তিন-চার বছর বড় হবে। সে ফুফুর সঙ্গে বাড়ির সব ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছি। খালের ওপর ছিল বাঁশের সাঁকো। সে সাঁকোর ওপর দিয়ে যেতে হবে। প্রথমদিন কি দারুণ ভয় পেয়েছিলাম। আমার হাত-পা কাঁপছিল। ফুফুই আমাকে সাহস দিয়ে হাত ধরে সাঁকো পার করিয়ে দিয়েছিল। এরপর আর কখনো ভয় করেনি। বরং সবার আগে আমিই থাকতাম।

খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সমবয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নদীর ধারে বেড়ানো, শীতের দিনে নদীর উষ্ণ পানিতে পা ভেজানো আমার কাছে ভীষণরকম লোভনীয় ছিল। নদীর পানিতে জোড়া নারকেল ভাসিয়ে অথবা কলাগাছ ফেলে সাঁতার কাটা, গামছা বিছিয়ে টেংরা পুঁটি খল্লা মাছ ধরা। বর্ষাকালে খালে অনেক কচুরিপানা ভেসে আসত। সে কচুরিপানা টেনে তুললে তার শেকড় থেকে বেরিয়ে আসত কই ও বাইন মাছ। একবার একটি সাপ দেখে খুব ভয় পেয়েছিলাম।

বৈশাখে কাঁচা আম পেড়ে কুচি কুচি করে কেটে সর্ষেবাটা ও কাঁচা মরিচ মাখিয়ে, তারপর কলাপাতা কোনাকুনি করে সে আম মাথা পুরে, তার রস টেনে খাওয়ার মজা ও স্বাদ আমাকে এখনও আপ্লুত করে রাখে। কলাপাতায় এ আম মাথা পুরে যে না খেয়েছে, কিছুতেই এর স্বাদ বুঝবে না। আর কলাপাতায় এ আম মাথা পুরলে তার ঘ্রাণই হতো অন্যরকম। এভাবে আম খাওয়া নিয়ে কত মারামারি করেছি। ডাল ঝাঁকিয়ে বরই পেড়ে কাড়াকাড়ি করে খেতাম। গ্রামের বড় তালাবের (পুকুর) পাড়ে ছিল বিরাট এক বরই গাছ। ঝাঁকুনির ফলে লালের আভা লাগা সব থেকে টলটলে বরইটি পুকুরের গভীর পানিতে গিয়ে পড়ত এবং কারও পক্ষে কিছুতেই সেটি যখন তুলে আনা সম্ভব হতো না তখন সে বরইটির জন্য মন জুড়ে থাকা দুঃখটুকু এখনও ভুলতে পারলাম কই?

পাটক্ষেতের ভেতর দিয়ে আমরা ছোট ডিঙ্গি নৌকা চড়ে ঘুরে বেড়াতাম। আমার দাদার একটি বড় নৌকা ছিল, যার ভেতরে দুটো ঘর ছিল, জানালাও ছিল বড় বড়। নৌকার পেছনে হাল, সামনে দুই দাঁড় ছিল। নৌকার জানালায় বসে নীল আকাশ আর দূরের ঘন সবুজ গাছপালা ঘেরা গ্রাম দেখতে আমার বড় ভালো লাগতো। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় সে নৌকা ভেঙে নষ্ট হয়ে যায়। শৈশবের ফেলে আসা সে গ্রাম আমার কাছে এখনও যেন সুভাষিত ছবির মতো।

আমার বাবার জন্মস্থানও টুঙ্গীপাড়ায়। তিনি এখন ঐ গ্রামের মাটিতেই ছায়াশীতল পরিবেশে ঘুমিয়ে আছেন। তার পাশেই আমার দাদা-দাদির কবর। যারা আমার জীবনকে অফুরন্ত স্নেহমমতা দিয়ে ভরিয়ে তুলেছিলেন, আজ আমার গ্রামের মাটিতেই তারা মিশে আছেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে আমার মা, বাবা, ভাই ও আত্মীয়-পরিজন অনেককে হারাই। দেশ ও জাতি হারায় তাদের বেঁচে থাকার সকল সম্ভবনা, আশা-আকাঙ্খার স্বাধীন সত্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ঘাতকের দল বাংলার প্রাণকেন্দ্র ঢাকা থেকে সরিয়ে সে মহাপুরুষকে নিভৃতে পল্লীর মাটিতেই কবর দিয়েছে। ইতিহাসের পাতা থেকে তাঁকে মুছে ফেলার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছে – কিন্তু পেরেছে কী?

বাবার কাছাকাছি বেশি সময় কাটাতাম। তাঁর জীবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক আলোচনা করার সুযোগও পেতাম। তাঁর একটি কথা আজ খুব বেশি করে মনে পড়ে। তিনি প্রায়ই বলতেন, 'শেষ জীবনে আমি গ্রামে থাকবো। তুই আমাকে দেখবি। আমি তোর কাছেই থাকব।' কথাগুলো আমার কানে এখনও বাজে। গ্রামের নিঝুম পরিবেশে বাবার মাজারের এ পিছুটান আমি পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেন, আমাকে বারবার আমার গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

আমি এখন নিজেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে নিয়েছি। দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে পেরে আমি গর্বিত। আমার জীবনের শেষ দিনগুলো আমি টুঙ্গীপাড়ায় স্থায়ীভাবে কাটাতে চাই। খুব ইচ্ছে আছে নদীর ধারে একটি ঘর তৈরি করার। আমার বাবা-মার কথা স্মৃতিকথামূলকভাবে লেখার ইচ্ছে আছে। আমার বাবা রাজনীতিবিদ মুজিবকে সবাই জানতেন। কিন্তু ব্যক্তি মুজিব যে কতো বিরাট হৃদয়ের ছিলেন, সেসব কথা আমি লিখতে চাই।

গ্রামকে তো আমি আমার শৈশবের গ্রামের মতো করেই ফিরে পেতে চাই। কিন্তু চাইলেই তো আর হবে না। এখন সময় দ্রুত বদলাচ্ছে। যান্ত্রিকতার স্পর্শে গ্রামের সরল সাধারণ জীবনেও ব্যস্ততা বেড়েছে, চমক জেগেছে। মানুষও ক্রমশ অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। এ শতাব্দীতে বাস করে বিজ্ঞানের আশীর্বাদকে অস্বীকার করার উপায় নেই। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর গ্রামীণ জীবনের মানোন্নয়ন ও শ্রমের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে।

আমার শত ব্যস্ততা থাকলেও এবং একটু সময় পেলেই আমি গ্রামে চলে যাই । কেন যে মনে হয় আমার শৈশবের গ্রামকে যদি ফিরে পেতাম! গ্রামের মেঠোপথটি যখন দূরে কোথাও হারিয়ে যায় আমার গলা ছেড়ে গাইতে ইচ্ছে করে, ‘গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙ্গা মাটির পথ, আমার মন ভোলায় রে......।’

 

(শেখ হাসিনা রচনাসমগ্র ১।। পৃষ্টা: ২৫-২৮)



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন