ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকারের যত অর্জন: মূল চ্যালেঞ্জ উন্নত বাংলাদেশ গঠন

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৭ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail সরকারের যত অর্জন: মূল চ্যালেঞ্জ উন্নত বাংলাদেশ গঠন।

‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হওয়া সত্ত্বেও বহুকাল বহির্বিশ্বে ছিল উপেক্ষিত ও অনালোচিত দেশ। বাংলাদেশের কথা উঠলেই একটি ‘বটমলেস বাস্কেট’র সাথে তুলনা করা হতো। শেখ হাসিনা সরকার দেশের এই দুর্নামটি শুধু দূরই করেননি, তার অর্থনীতির উন্নয়নের চাকা ঘুরিয়ে দিয়ে সমালোচক দেশগুলোরও প্রশংসা অর্জন করেছেন। বিশ্বব্যাংকও এখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে। অথচ পদ্মা সেতুতে ঋণ দেওয়ার সময় পিছিয়ে গিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক। বাংলাদেশ এখন বহির্বিশ্বে একটি আলোচিত দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এ দেশটির গুরুত্ব এখন স্বীকৃত’- শনিবার (৭ জানুয়ারি) বর্তমান সরকারের চার বছর পূর্তি এবং সরকারের সাফল্যের ধারাবাহিকতা নিয়ে কথা প্রসঙ্গে এমনটিই জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। 

তাঁরা বলছেন, হাসিনা সরকারের এ সাফল্যের কথা দেশের বিএনপি-জামায়াত ও একটি তথাকথিত সুশীল সমাজ স্বীকার করতে চাইবে না, এটা সবার জানা কথা। যে শেখ হাসিনার পিতাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করা হয়েছে এবং যে শেখ হাসিনাকেও হত্যা করার জন্য গ্রেনেড হামলার মতো ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে, তিনি সব শত্রু ও সমালোচকের মুখে ছাঁই ছিটিয়ে দিয়ে তিন তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও হয়তো থাকবেন, এটা কি তাদের সহ্য হয়! তারা পাগলা মেহের আলীর মতো চিৎকার জুড়েছেন- ‘সব ঝুট হ্যায়’।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে সব তথ্য ঝুট নয়, মিথ্যাও নয়। তা অতি বাস্তব। যদি বাংলাদেশের এ উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বাংলাদেশ যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশগুলোর মতো উচ্চ আয়ের দেশ হবে তাতে সন্দেহ নেই। শিল্প, শিক্ষা, কৃষি, ক্রীড়া ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতি ঘটছে। চিরকালের খাদ্য ঘাটতির দেশটিকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে রূপান্তর করা হয়েছে। সম্প্রতি বন্যা, খরা এবং বৈশ্বিক নানা কারণে খাদ্য উৎপাদন বিঘ্নিত হলে চাল, পেঁয়াজ ইত্যাদির দাম হঠাৎ প্রচুর বেড়ে যায়। কিন্তু এ সংকট সাময়িক। সরকার এ পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছে। রোহিঙ্গা সমস্যাটি বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাটিকে একটু শ্লথ করে দিয়েছে সত্য। কিন্তু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের দরবারে প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মাদার অব হিউমিনিটি’ উপাধীতে ভূষিত হয়েছেন। 

জানা গেছে, এক সময়ে বিশ্বের অন্যতম দরিদ্রতম দশটি দেশের তালিকায় থাকা বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আজ বিশ্বের বিশ্বয় বাংলাদেশের আর্থসামাজিক খাতে বিশ্বয়কর উত্থান ও অগ্রযাত্রা- এখন সারা বিশ্বে স্বীকৃত। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগের ফলে। এরই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ’ খাতে দশ প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। রূপকল্প-২১ সামনে রেখে এসব প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন ইতিমধ্যেই দৃষ্টিগোচর হয়েছে, বাস্তবায়িত হয়েছে। এ সব প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে আর্থসামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে নতুন এক মাইলফলক রচিত হবে। একই সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।

‘শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ’ খাতের এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক ও শিশু বিকাশ, নারীর ক্ষমতায়ন, আশ্রয়ণ, শিক্ষা সহায়তা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, পরিবেশ সুরক্ষা ও বিনিয়োগ বিকাশ।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে নেয়া এই দশ কর্মসূচিকে ইতিমধ্যেই ব্র্যান্ডিং করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে দারিদ্র্যমোচনে দক্ষতা অর্জনে আয়বর্ধক কর্মসূচি হিসেবে নেয়া। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পকে এগিয়ে নেয়া এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ বিকাশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ বিকাশ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগের ফলে দেশে বিনিয়োগের খরা কাটবে বলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। ‘বিনিয়োগ বিকাশ’ বহির্বিশ্বে এমনভাবে ব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে, যাতে বিদেশিরা এদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসেন। এ ছাড়া দেশি উদ্যোক্তাদেরও আস্থা ফিরিয়ে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হবে।

এদিকে, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ইতোমধ্যেই সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিনিয়োগের প্রধান বাঁধাগুলো কি তা চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব বাঁধা দূর করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে জাতীয় শিল্পনীতিও বিনিয়োগবান্ধব করা হয়েছে। এ ছাড়া ভারত, চীন, জাপান ও কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়াতে ওই দেশগুলোর জন্য পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল সংরক্ষণ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে সরকার ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। এ ছাড়া দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নে ৩০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। শুধু তাই নয়, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে আগামী পনের বছরে সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর ফলে দেশের রফতানি আয় বৃদ্ধি পাবে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে প্রায় ১ কোটি মানুষের।

প্রধানমন্ত্রীর একান্ত আগ্রহে এই দশ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। এই কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন ও ব্র্যান্ডিং সংক্রান্ত বিষয়গুলোর সমন্বয় করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন খাতে যে সব উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তার মধ্যে অনেকগুলো উদ্যোগই প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা-প্রসূত, যা ইতোমধ্যে ‘শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এগুলোর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক রচিত হয়েছে এবং হচ্ছে।

সরকারের চলমান মেগা প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পদ্মা বহুমুখী সেতু (বাস্তবায়িত), মেট্রোরেল (আংশিক বাস্তবায়িত), পায়রা সমুদ্রবন্দর, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং এলএনজি টার্মিনাল ইত্যাদি।

পদ্মা বহুমুখী সেতু: বর্তমান সরকারের চ্যালেঞ্জ বহুল প্রত্যাশিত এ প্রকল্পটির সফল সমাপ্তির পর গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি জনসাধারনের ব্যবহারের জন্য উদ্বোধন করেন। পদ্মা সেতু রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সরাসরি সংযোগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে অপেক্ষাকৃত অনুন্নত এলাকায় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের মোট আয়তনের শতকরা ২৯ ভাগ বা ৪৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার  ২১ জেলার ৩ কোটিরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে এ সেতুর মাধ্যমে।

পদ্মা রেলসেতু সংযোগ: দক্ষিণ এশিয়ায় আন্ত:দেশিয় রেল যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প ২০২২ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিলো সরকারের। ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণের এই প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা-খুলনা পথে ২১২, ঢাকা-যশোর পথে ১৮৪ এবং ঢাকা-দর্শনা পথে দূরত্ব কমবে ৪৪ কিলোমিটার। 

মেট্রোরেল: মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা আছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্পে ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা ও জাপান ১৬ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা জোগান দেবে। ২০২৪ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সার্বিক কাজের অগ্রগতি শতকরা ৭৫ শতাংশের বেশি। ইতিমধ্যেই উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বাস্তবায়িত হয়েছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য গত ২৮ ডিসেম্বর উন্মুক্ত করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু (কর্ণফুলী) টানেল: এই প্রকল্পটির কাজও ইতিমধ্রে পুরোপুরি বাস্তবায়িত হতে চলছে। সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৯৫ শতাংশের বেশি। যে কোনো দিন জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এই টানেল। 

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হবে। তবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে তেজগাঁও রেলগেট পর্যন্ত ২০২২ সালের ডিসেম্বরে উন্মুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু কাজের অগ্রগতি ৭৮.৮৯ শতাংশ। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। 

দোহাজারি-রামু-কক্সবাজার গুনদুম রেলপথ: পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে গৃহীত প্রকল্পটির ব্যয় ১৮ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। দোহাজারী রামু কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৭১ শতাংশের বেশি। রেলপথটি আগামী ২৩ সালের জুনে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেনে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে কক্সবাজার যাওয়া যাবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প এটি। দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে পাবনার ঈশ্বরদীতে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। রাশিয়া প্রকল্প ব্যয়ের ৯০ শতাংশ ঋণ হিসেবে বাংলাদেশকে দিচ্ছে। অবশিষ্ট ১০ শতাংশ জোগান দেবে বাংলাদেশ। ২ হাজার ৪ শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে এ প্রকল্প থেকে। 

মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৬০০ মেগাওয়াট করে দুটি কেন্দ্রের মাধ্যমে মোট ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে জাপান দেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। 

পায়রা সমুদ্রবন্দর: দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের অনগ্রসরতা, আমদানি বৃদ্ধি এবং বন্দরের ভবিষ্যৎ ধারণ ক্ষমতা বিবেচনায় প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। দেশের তৃতীয় এ বন্দর নির্মাণে ২০১৩ সালের নভেম্বরে জাতীয় সংসদে ‘পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন’ নামের একটি আইন পাস হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ চ্যানেলে পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১ হাজার ১৪৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি ২০২৩ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। 

মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৪ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ইউনিটের মাধ্যমে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এই প্রকল্পে।

সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর: দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপে। বন্দরটি হলে তা প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য ব্যবহার করতে পারবে। সরকার মনে করছে, বন্দরটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি কেন্দ্রে পরিণত হবে।

এলএনজি টার্মিনাল: সাংগু গ্যাস ক্ষেত্র শেষ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস সংকট বিরাজ করছে। এ সংকট নিরসনে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির লক্ষ্যে মহেশখালী উপকূলে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। টার্মিনাল থেকে মূল ভূখণ্ডে গ্যাস আনতে ৯১ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। এ টার্মিনালের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয় ১৯ আগস্ট  ২০১৮ থেকে। ৩০ এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ ৪১৪,২৯৭.৪৭ এমএমএস সিএফ।

‘কাউকে পিছনে ফেলে নয়, সকলকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া’- এই দর্শনটি আজ বাংলাদেশের অগ্রগতির অভিযাত্রায় অন্তর্ভুক্তমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল হিসেবে সমাদৃত, যা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ধারাকে অর্থনৈতিক বিপ্লবে রূপান্তরিত করে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত আধুনিক ও উন্নত “সোনার বাংলা” বিনির্মাণে সফল ভূমিকা রাখছে। অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক সকল সমস্যা মোকাবেলা করে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠন করাই এখন বর্তমান সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।


সরকার   অর্জন   চ্যালেঞ্জ   উন্নত বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মধুখালীতে এতিমদের সাথে ইফতার করলেন মৎস্য মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:৩৩ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামালদিয়ায় এতিমখানার শিক্ষার্থীসহ অসহায় লোকজনের সাথে ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান এমপি। 

শুক্রবার (২৯ মার্চ) মধুখালীর নিজ গ্রাম কামালদিয়া খেলার মাঠে কামালদিয়া ও কয়েসদিয়া এতিমখানা-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৫ শতাধিক স্থানীয় অসহায় লোকজন ইফতার মাহফিলে অংশ নেন। 

এ সময় মন্ত্রী আব্দুর রহমানকে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ লোকজনকে ইফতার বিতরণ করতে দেখা যায়। 



ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার, মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম  (পিপিএম), মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুল হক অনিক, বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াসমিন, মধুখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও বোয়ালমারী অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। 

এর আগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানদেরকে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে মতবিনিময় সভা করেন।

ফরিদপুর   মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী   আব্দুর রহমান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কমেছে মুঠোফোনের ব্যবহার, অর্ধেক জনগোষ্ঠী ইন্টারনেটের বাইরে

প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

তিন বছর আগেও দেশের মানুষের হাতে যত মুঠোফোন ছিল, তার সংখ্যা এখন কমেছে ১ শতাংশেরও বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবাইকে সংযোগের আওতায় আনতে সরকার যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে, সে তুলনায় আশানুরূপ উন্নতি হয়নি।

২৪ মার্চ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২৩-এর ফলাফল প্রকাশ করে। সেখানে আইসিটি সেবার বিষয়ে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর চিত্র পাওয়া যায়।

বিবিএস ৫ বছরের ঊর্ধ্বে ও ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তথ্য দিয়েছে। মূলত ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে জনগোষ্ঠীকে বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, ২০২০ সালে দেশে মুঠোফোন ব্যবহারকারী ছিল ৭৫ শতাংশের বেশি। যা ২০২৩ সালে এসে হয়েছে ৭৪ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থাৎ তিন বছরে মুঠোফোন ব্যবহারকারী বাড়েনি বরং কমেছে। অপর দিকে ৫ বছরের ঊর্ধ্বে ব্যবহারকারীর হিসাবে তিন বছরে বেড়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।

সেবা খাতের প্রায় সব ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের পার্থক্য থাকে। যা তথ্য ও যোগাযোগ (আইসিটি) প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও রয়েছে। আর এ ব্যবধান অনেক। শহরের ৮২ শতাংশের বেশি মানুষের হাতে মুঠোফোন রয়েছে।  যেখানে গ্রামের ৭১ ভাগের মানুষের হাতে তা আছে।

যেকোনো সেবা খাতেই নারী- পুরুষের বৈষম্য রয়েছে। আইসিটি খাতে তা আরও বেশি। বিবিএসের তথ্যমতে, দেশের প্রায় ৬৩ শতাংশ নারীর হাতে এখন মুঠোফোন আছে। তিন বছর আগে এ সংখ্যা ছিল ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ মুঠোফোন ব্যবহারকারী নারী কমেছে।

দেশে মুঠোফোন ব্যবহারকারী পুরুষের সংখ্যা ৮৬ শতাংশের বেশি। তিন বছর আগে ছিল ৮৭ দশমিক শতাংশ।

মুঠোফোন ব্যবহারের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, করোনা মহামারির বছর ২০২১ সালে ব্যবহারকারী কমেছিল। যা ২০২২ সালে এসে তা বেড়ে যায়।  কিন্তু ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালে তা সামান্যই বেড়েছে।

দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তথ্যও তুলে ধরেছে বিবিএস। তাতে দেখা যায়, ১৫ বছর বয়সী ব্যক্তিদের ঊর্ধ্বে দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি। ২০২০ সালে ছিল ৪৩ শতাংশ, ২০২১ সালে ৪৩ দশমিক ৭ এবং ২০২২ সালে ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এখানেও নারী-পুরুষের ব্যবধান বেশি। দেশের ৫৮ শতাংশ পুরুষ ও ৪২ শতাংশ নারী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। 

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম স্তম্ভ ছিল সংযোগব্যবস্থা । কিন্তু দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী ইন্টারনেট সংযোগের বাইরে রয়েছে। 


মুঠোফোন   ইন্টারনেট   আইসিটি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দপ্তরে বসে প্রকাশ্যে ঘুষ নেন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা

প্রকাশ: ০৭:৪৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

অফিসে প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছিলেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের সহকারী আবদুল কাদির মিয়া। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

এ ঘটনায় ওই কর্মচারীকে উপজেলা ভূমি কার্যালয় থেকে কারণ দর্শানোর চিঠি (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, সেবাগ্রহীতা বলছেন, ‘সব খারিজ তো সমান না। গরিব মানুষ, কাজটা করে দিয়ে দেন।’ উত্তরে আবদুল কাদির বলেন, ‘কথা ছিল ৬ হাজার টাকা দিবেন। কম দিতে পারবেন না। প্রয়োজনে পরে হলেও দিতে হবে। একটা কাজ করে কিছু টাকা পাওয়া না গেলে চলে?’ এরপর টাকাগুলো গুনে পকেটে ভরেন আবদুল কাদির। চলে যাওয়ার সময় সেবাগ্রহীতা আবারও বলেন, ‘আপনি আরও এক হাজার টাকার আবদার করেছেন, একটা বিহিত (ব্যবস্থা) হবে। আপনি কাজটা করে রাখেন।’

স্থানীয় লোকজন ও সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের সহকারী আবদুল কাদির মিয়া। ভূমি কার্যালয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হয় সেবাগ্রহীতাদের। সরকারি ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা না দিলে কাজ তো দূরের কথা সেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে কথাও বলেন না তিনি।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম বলেন, ঘুষ নেওয়ার ভিডিও প্রকাশের পর অভিযুক্ত ভূমি সহকারী আবদুল কাদিরের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তিন দিন আগে তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আজ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান সহকারী কমিশনার।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরের নবজাগরণ সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন নবজাগরণ সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) চন্দ্রগঞ্জের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের মোস্তফার দোকান এলাকায় এই দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চন্দ্রগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি, ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি এম ছাবির আহাম্মেদ।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুব লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিংকু, সংগঠনটির সদস্য মাসুদ করিম শিফন, তোফাজ্জল হোসেন সবুজ, এডভোকেট মহসিন, মো: আরমান, মিজান মল্লিক, আলমগীর হোসেন, রাকিবুল ইসলাম, মো : মাহতাব, মো: ইব্রাহিম খলিল রাজু প্রমূখ।

ইফতারে প্রায় ছয় শতাধিক হত-দরিদ্র মানুষকে ইফতার করানো হয়। 

ইফতারের আগ মুহূর্তে সংগঠনের সামাজিক কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতা ও মুসলিম উম্মাহের সুখ-শান্তি সুনাম এবং সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

লক্ষ্মীপুর   ইফতার ও দোয়া মাহফিল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রায়পুরে কলেজছাত্রকে অপহৃরণের ঘটনায় দুজন আটক


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে তানভীর হোসেন নামে এক কলেজ ছাত্রকে অপহৃরণের ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। অপহৃত তানভীর উপজেলার চর পাতা গ্রামের চুনু মিঝি বাড়ির মোঃ হানিফের ছেলে ও গিত কালন্দি সরকারি কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র।

মঙ্গলবার কলেজ ছাত্রর বাবা বাদী হয়ে সাত জনের নামে রায়পুর থানায় অপহৃরণের একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় স্থানীয় রিফাতসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তানভীরের মা শাহানারা বেগম বলেন, আমার ছেলে অপহৃরণ করে নিয়ে গেছে। পরে আমরা রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করি। এতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমার ছেলে ফিরে এসেছে। তাবে যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কার্যকরী ভুমিকা চাই।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, অপহৃরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অপহৃরণ   লক্ষ্মীপুর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন