ইনসাইড বাংলাদেশ

হারিয়ে যাওয়া পাবনার শিশু কুড়িগ্রামে


Thumbnail

পথ হারিয়ে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ট্রেনে কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন এসে কান্না করছিলেন শাওন নামের (১১) এক শিশু। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ লাইনে ফোন পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ। 

এর আগে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কুড়িগ্রাম সদর থানার একটি টহল টিম কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন থেকে মো. আলামিন ওরফে শাওনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

পুলিশ জানায়, শাওন পাবনার ঈশ্বরদী কদমতলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বাবা রফিকুল ইসলাম গ্যাস কোম্পানির পিকআপচালক। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সকালবেলা ট্রেনে উঠে চলে এসেছে। পরবর্তীতে ঈশ্বরদী থানায় যোগাযোগ করে শাওনের বাবা মাকে খবর দেন সদর থানা পুলিশ। 

পরে খবর পেয়ে শাওনের বাবা-মা ও ভাই কুড়িগ্রাম থানায় উপস্থিত হলে শাওনকে হস্তান্তর করা হয়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ লাইনে খবর পেয়ে শাওন নামের এক শিশুকে কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে রাতে তার বাবা, মা ও ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শিশু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশ নিয়ে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব: কার লাভ, কার ক্ষতি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বাংলাদেশ নিয়ে গত কিছুদিন ধরে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন যে, কিছু পশ্চিমা দেশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি এই মন্তব্য করলেন এমন একটা সময় যখন বাংলাদেশের নির্বাচন দ্বারপ্রান্তে এবং এই নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি রহস্যময় নীরবতা পালন করছে। আর অ্যালেকজান্ডার তার বক্তব্যে এটিও বলেছেন যে, বিদেশিদের সহায়তা ছাড়াই বাংলাদেশের সরকার যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সক্ষম বলেই তিনি বিশ্বাস করেন এবং তার দেশ সেটাই মনে করেন। তার এই বক্তব্য যখন দেওয়া হচ্ছিল ঠিক তার কিছুক্ষণ আগেই বড় রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগ সমন্বয়ক জন কিরবি। তিনি বলেছেন, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বিরুদ্ধে রাশিয়ার করা অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। তিনি এক ব্রিফিংয়ে এই বক্তব্য রাখেন। 

জন কিরবি বলেন যে, এটা পুরোপুরি মিথ্যা। রুশরা জানে এটা মিথ্যা। এটা রাশিয়ার নিখাত প্রচারণা ছাড়া অন্য কিছু নয়। করবি অবশ্য এটাও বলেছেন যে, বাংলাদেশের জনগণ যা চায় তারাও তা চান। আর তা হলো অবাধ,  সুষ্ঠু ও নির্বাচন। এই লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার দল কাজ করে যাচ্ছিল। তারা একই ভাবে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, বিরোধী দল, সরকার সহ বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষের সঙ্গেই কাজ করে যাবেন বলে করবি তার প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করেছেন। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার বাংলাদেশ নিয়ে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। গত কয়েক মাস ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে রাশিয়া কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বাংলাদেশের ব্যাপার নিয়ে তারা অতি আগ্রহী হয়ে বক্তব্য রাখছে। বিশেষ করে পিটার হাস বাংলাদেশের বিরোধী দলের সঙ্গে যোগসাজস করেছেন এমন অভিযোগ রাশিয়ার পক্ষ থেকে করা হয়েছে। করবি যেটি আনুষ্ঠানিকভাবে নাকচ করলেন। তবে এর আগেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এই বক্তব্য খণ্ডন করেছিলেন।

প্রশ্ন হচ্ছে যে, বিশ্বে যখন রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরস্পর মুখোমুখি, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যখন পুরো বিশ্ব বিভক্ত, তখন বাংলাদেশ ইস্যুতে রাশিয়া কেন সরব হল? এর আগে রাশিয়া বাংলাদেশের ব্যাপারে এমন সরব ছিল না। বিশেষ করে দু বছর আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন এবং গণতন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলেছে তৎপরতা দেখিয়েছে। একাধিক মার্কিন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বাংলাদেশে এসেছেন এবং আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও তারা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশে সুশাসন, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কথাবার্তা বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এই সময়গুলোতে রাশিয়ার তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করেই গত চার মাস আগে থেকে রাশিয়া বাংলাদেশের ব্যাপারে সরব অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপকে তারা ‘বাড়াবাড়ি’ বলে মনে করছে। 

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, এটি কৌশলগত অবস্থান। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কোণঠাসা হয়ে পড়া রাশিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বে যেখানে পারছে সেখানেই বিতর্কিত এবং সমালোচিত করার কৌশল নিয়ে কাজ করছে এবং সে কারণেই বাংলাদেশ ইস্যুটিকে তারা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে সামনে নিয়ে এসেছে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে তা নিয়ে কূটনৈতিক মহল বিভক্ত। কোনো কোনো কূটনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন যে, এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সজাগ সচেতন থাকবে। তারা বাংলাদেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে মাথায় রাখবে যে রাশিয়া সব বিষয়গুলো নিরীক্ষা করছে এবং পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু অনেক কূটনৈতিক বিশ্লেষক এই মতের সাথে একমত নয়। বরং তারা বলেছে যে, রাশিয়ার এই অতি আগ্রহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ব্যাপারে আরও আগ্রহী করে তুলবে। বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তারা ভালোভাবে নেবেন না। ফলে বাংলাদেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করতে পারে। এখন দেখার বিষয় যে এই দ্বন্দ্বের পরিণতি বাংলাদেশে পরিস্থিতি কোনদিকে নিয়ে যায়।

বাংলাদেশের নির্বাচন   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   রাশিয়া   পিটার ডি হাস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৬:৩৮ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারের কথা বলে কোনো কোনো দেশকে দমন করে রাখার চেষ্টা করা হয়। দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিবৃতিজীবীরা হারিয়ে গেছে।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, কিছু বিবৃতিজীবী আছেন, বিবৃতি দেওয়ায় তাদের পেশা। বাংলাদেশেও কিছু বিবৃতিজীবী আছেন। ইদানিং অবশ্য তাদের দেখা যাচ্ছে না। বিবৃতিজীবীরা বেশিরভাগ হারিয়ে গেছেন। দেশে যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, সবসময় যারা এ ধরনের বিবৃতি দেন, তাদের বিবৃতি এখন দেখতে পাচ্ছি না। এ বিবৃতিজীবীরা কই? জনগণ এদের খুঁজছে, আমিও তাদের খুঁজছি। আমি একটু উদ্বিগ্ন তাদের জন্য। তারা জ্বর কিংবা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হল কি না! তাদের নিয়ে মানুষ চিন্তায় আছে। 

মন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীর মানবাধিকার নিয়েও কেউ কেউ সোচ্চার হয়। কিন্তু সে সন্ত্রাসী যে এত মানুষ মারল, সেটি নিয়ে কোনো কথাবার্তা নেই। পৃথিবীতে কিছু মানবাধিকার সংগঠন আছে, যেগুলো মূলত মানবাধিকারের ব্যবসা করে। তারা ফিলিস্তিনে সাধারণ মানুষসহ দশ হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা নিয়ে বিবৃতি দেয়নি। অথচ তারা বরিশালে একজন আরেকজনকে ঘুষি মারল এবং কোথায় কিছু মানুষ একজনকে ধাওয়া করল সেজন্য বিবৃতি দিল। আমি কথাগুলো বলছি, কারণ আগামী পরশু দিন ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এ দিবসকে সামনে রেখে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে। ওই সময় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয় এবং সেটিকে আইনে পরিণত করে হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা হয়েছিল। দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে। ওই সময় নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমান বাহিনীর অফিসারদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। একজনের নামের সঙ্গে আরেকজনের মিল আছে, সেজন্য ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং ফাঁসি কার্যকর হবার পর রায় হয়েছে ফাঁসির, এমন ঘটনাও আছে। তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব। এগুলো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা। 

মানবাধিকার   তথ্যমন্ত্রী   ড. হাছান মাহমুদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়া গেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রকাশ: ১১:৪৮ এএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

নিজ নির্বাচনী এলাকায় আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সকালে টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়া গেছেন তিনি। নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনেই গোপালগঞ্জে দুইদিনের সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সরকারি প্রোটোকল না‌ নিয়ে পতাকাবিহীন ব্যক্তিগত গাড়িতে টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়া গেছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা‌ আজ সকালে নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনেই সরকারি প্রোটোকল না‌ নিয়ে পতাকাবিহীন ব্যক্তিগত গাড়িতে টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়া যান।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকা থেকে সড়কপথে গোপালগঞ্জ গিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকাল ১০টার কিছু আগে সীমিত গাড়িবহরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান।

স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ বিকেলেই সড়কপথে তার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।


প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ঢাকার ওসিরা থেকে গেলেন ঢাকাতেই

প্রকাশ: ১০:০৮ এএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুমোদনের পর সারা দেশের ৩৩৮ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করা হয়েছে। বদলির তালিকায় দেখা গেছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৫০ থানার মধ্যে যে ৩৪ জন ওসিকে বদলি করা হয়েছে, তাদের ঢাকাতেই রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তর এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির কথা জানিয়েছে।

ডিএমপির একজন ওসিকে থানা থেকে গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) বদলি করা হয়েছে। ডিবি থেকে একজনকে ওসি করা হয়েছে। তবে ঢাকার মতোই অন্যান্য মহানগরেও তেমন রদবদল হয়নি। ঢাকার বাইরে অনেক ওসিকে ভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়েছে। তবে ঢাকার আশপাশের ওসিদের দু–একটি ব্যতিক্রম ছাড়া একই জেলায় কিংবা নিকটবর্তী জেলার থানায় বদলি করা হয়েছে।

তালিকায় থাকা সাভার থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহাকে বদলি করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা, সোনারগাঁ থানার ওসিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় বদলি করা হয়েছে। বদলির তালিকায় মানিকগঞ্জের সাত থানার ওসিদের এক থানা থেকে অন্য থানায় বদলি করা হয়েছে। গাজীপুরের একটি থানার ওসিকে বদল করে সাভার থানায় দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার ১১ জন ওসি নানাভাবে ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ঘুরেফিরে ডিএমপির বিভিন্ন থানায় থাকছেন। দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে থানার ওসিদের বদলির নিয়ম রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র। তবে ডিএমপির ৫০ থানার মধ্যে অন্তত ২১ থানার ওসি ডিএমপিতেই দুই বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন। পুলিশ পরিদর্শক বি এম ফরমান আলী ২০১৩ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল থানায় ওসি হিসেবে যোগ দেন। পরে তাকে মতিঝিল থেকে বনানী থানার ওসি হিসেবে বদলি করা হয়। সেখান থেকে ডিএমপির বিমানবন্দর থানার ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। পুলিশের এই কর্মকর্তাকে গত বছর গুলশান থানার ওসি করা হয়। প্রায় ১০ বছর ঘুরেফিরে তিনি ডিএমপিরই বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল তাকে গুলশান থেকে বদলি করে যাত্রাবাড়ী থানায় দেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব থানার ওসিদের পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ওসির বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের বেশি চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে, তাদের অন্য জায়গায় বদলির প্রস্তাব ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়। পরে ওসিদের বদলির প্রস্তাব পাঠানোর সময় বাড়িয়ে ৮ ডিসেম্বর করা হয়।

ওসিদের বদলির প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ওসি বদলি করা হয়েছে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানার সেই আলোচিত ওসি তোফায়েল আহমেদকে একই জেলার বাঁশখালী থানায় বদলি করা হয়েছে।

পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বলছে, ঢাকা ও আশপাশ জেলার ওসিদের বদলি না হওয়ার পেছনে পুলিশের ভেতরে কয়েক দিন ধরে দেনদরবার হয়েছে। একাধিক ওসি ঢাকায় থাকার জন্য বিপুল অর্থ খরচ করেছেন বলে আলোচনা আছে।

এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঢাকার ওসিদের ঢাকায় থাকার জন্য যে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে, এটা অবাক করার মতো কোনো বিষয় নয়। আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আগেও ছিল, এখন হয়তো এটা আরও বেড়েছে।

এদিকে একই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার প্রথম পর্যায়ে ৪৭ জন এবং গতকাল ১৫৮ জন ইউএনওকে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলি করা হয়।

 

 


ওসি   বদলি   ঢাকা মহানগর পুলিশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বিএনপি কি তার কর্মী-সমর্থকদের প্রত্যাশার সম্মান রাখছে

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail গত ২৭ নভেম্বর বিকেলে দেখা যায়, বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট দিয়ে একটি চেয়ারে কিছু সংবাদপত্র দেখা যায়। এ ছাড়াও একটি টেবিল ও চারপাশে ধুলার আস্তর পড়ে থাকতেও দেখা গেছে।

আজ শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনামের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। শুধুমাত্র পাঠকের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে লেখাটি  হুবুহু  প্রকাশ করা হলো। উল্লেখ্য, বাংলা ইনসাইডার ও এর কর্তৃপক্ষ এই লেখার সাথে সম্পূর্ণ ভিন্নমত পোষণ করে।


বিএনপি কি তার কর্মী-সমর্থকদের প্রত্যাশার সম্মান রাখছে

আজকের দিনে বিএনপি শুধু হরতালের ডাক দিচ্ছে, যা কেউ মানছে না; অবরোধের ডাক দিচ্ছে, যা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে কাউকে দেখা যাচ্ছে না; গণবিক্ষোভের ডাক দিচ্ছে, যা কেবলই ফাঁকা বুলি।

একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে চরম ব্যর্থতার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমরা অনেক কিছুই লিখেছি। ক্ষমতাসীন দল বিরোধীদের—মূলত বিএনপি—সঙ্গে যে আচরণ করছে তা নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেছি।

বিএনপির নেতাকর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, দলটির শত শত নেতাকর্মী কারাগারে, হাজারো নেতাকর্মীর নামে মামলা এবং লাখো নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভিন্নমত পোষণকারীদের দমনে আইনি প্রক্রিয়াকে অস্ত্রে পরিণত করা হয়েছে। পুলিশকে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে রাখা হয়েছে, যাতে তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের শাস্তি দেওয়া যায়, হয়রানি করা যায় এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যায়। পুরো বিষয়টি অবিশ্বাস্য পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

কিন্তু মুদ্রার অপর পিঠের পরিস্থিতি কেমন? বিএনপি কি তার দলীয় কর্মী, কিংবা বর্তমান সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট ও আওয়ামী লীগের প্রতি মোহভঙ্গ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে? তাদের প্রত্যাশার প্রতি সম্মান দেখাতে পেরেছে? নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত কি তারা সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নিয়েছে, নাকি নিজেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সবার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে?

আমাদের ভোটাররা ঐতিহ্যগতভাবেই শাসক-বিরোধী মনোভাব পোষণ করে।  আর সেইসঙ্গে যোগ হয়েছে আওয়ামী লীগের নিরন্তর ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে এটা অনুমান করা মোটেই অযৌক্তিক নয় যে মানুষ পরিবর্তন চাইছে। কিন্তু বিএনপি কি পরিবর্তন আনতে কাজ করছে?

আমাদের প্রতিবেদকদের দেওয়া তথ্য ও জরিপের ফলাফল—যা খারাপ পরিণামের ভয়ে প্রকাশ করা হয়নি—এবং কিছু গোয়েন্দা প্রতিবেদন সংক্রান্ত গুজব থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে, বিরোধী দলের প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন সর্বাত্মক না হলেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রয়েছে। কিন্তু বিএনপি এই সমর্থনকে ভিত্তি করে কী করেছে?

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পরই বিএনপি ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। একইসঙ্গে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি জানায়।

গত বছর থেকে দলটি বিভাগীয় পর্যায়ে সমন্বয় করে বড় আকারের জনসমাবেশের আয়োজন করতে সক্ষম হয় এবং পরিবহন ধর্মঘট ও সরকার আরোপিত নানা কঠোর বাধা-বিপত্তি এসব সমাবেশে জনসমাগম বন্ধ করতে পারেনি। ফলে বিএনপি ও সমমনারা মনে করছেন যে তাদের আন্দোলন সফল হচ্ছে।

কিন্তু, সরকারের প্রতিক্রিয়া ঠিক কতটা কঠোর হতে পারে, সেটা সম্ভবত তারা সঠিকভাবে অনুমান করতে পারেনি। এমনকি সরকার কঠোর হলে তাদের করণীয় কী হবে, সেটাও সম্ভবত তারা হিসাব করে রাখেনি। গণজোয়ার তৈরি হওয়ার ভয়ে ক্ষমতাসীন দল নানা অগণতান্ত্রিক ও আইন-বহির্ভূত ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপিকে দমনের চেষ্টা করে।

২৮ অক্টোবরের পরবর্তী সময়ে সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তাকে যেকোনো মানদণ্ডে দমন-পীড়ন বলা চলে। সরকারের নেওয়া এমন ব্যবস্থার পর গণআন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির যে সক্ষমতা, সেটা বড় আকারে প্রভাবিত হয়ে পড়ে। মহাসচিবসহ প্রায় সব শীর্ষনেতাকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি বিএনপির প্রায় সব নেতাকর্মীকে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য করে দেশের অন্যতম বৃহৎ এই দলটিকে প্রায় পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, বিএনপি আন্দোলন শুরু করেছিল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য, অন্তত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সেটাই প্রকাশ পায়। কিন্তু আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তারা যথোপযুক্ত প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামেনি। আর এটা এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। গত বছর বিশাল জনসমর্থনের বীজ বপন করতে পারলেও এ বছর সেখান থেকে সাফল্যের কোনো ফসল ঘরে তুলতে পারেনি বিএনপি।

বিএনপির আরেকটি মারাত্মক ভুল হচ্ছে কোনো বিকল্প পরিকল্পনা না রাখা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার দাবি জানানো হলে এর প্রতিক্রিয়া যে কঠোর কিছু হবে, তা অবধারিতই ছিল। কিন্তু কঠোর পরিস্থিতি এলে কীভাবে টিকে থাকা যাবে, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা তাদের ছিল না।

যদি বিএনপির উদ্দেশ্য এটাই হয়ে থাকে যে তারা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের একচেটিয়া প্রভাব কমাবে, তাহলে নির্বাচনের সময় ক্ষমতা ভাগের প্রস্তাব দিতে পারত। সেক্ষেত্রে উভয়পক্ষের সম্মতিতে সাংবিধানিক দায়বদ্ধতাকে মাথায় রেখে সরকারের কিছু পদ বিরোধী দল বা নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিতে পারত। যেহেতু নির্বাচনে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, সেক্ষেত্রে এই বাহিনীর ওপর ক্ষমতাসীন দলের নিয়ন্ত্রণ কমাতে বিশেষ কিছু প্রস্তাব দেওয়া যেত। এ ধরনের বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়া হলে তা ভোটারদের এই বার্তা দিত যে, বিএনপি তাদের দাবিতে অনড়, কিন্তু তাদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার আগ্রহ রয়েছে।

এমন সব বিকল্প আলোচনার পথ রুদ্ধ করে দেওয়া বিএনপির আরেকটি বড় ভুল। বিএনপি যে 'বাইরের চাপ'র ভরসায় ছিল, সেখান থেকেও তারা পুরোপুরি হতাশ হয়েছে। বিএনপি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে যখনই আলোচনায় বসেছে, তাদের কেউই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের পরিকল্পনাকে সমর্থন করেননি। বরং সবাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপির কানে এই বার্তা পৌঁছায়নি।

এক্ষেত্রে তর্কের খাতিরে বলা যেতে পারে যে, আওয়ামী লীগ আসলে কখনোই চায়নি যে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এবং বিএনপিও কখনোই টের পায়নি যে তাদের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটি আসলে তাদেরকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে হাসিলেই সহায়তা করছে। সব মিলিয়ে বোঝা যায় যে দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী রাজনৈতিক দলটি কখনোই এ বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করে দেখেনি যে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটি তাদের দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদে স্বার্থরক্ষামূলক হবে কি না।

২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ফল কী হয়েছিল, সেটা সম্ভবত পূর্ণাঙ্গভাবে বিশ্লেষণ করেনি বিএনপি।

অন্য অনেক বিষয়ের পাশাপাশি এমন যুক্তিও দেওয়া যায় যে, বিএনপি যদি ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন না করত, তাহলে খালেদা জিয়া বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবে তার অবস্থান হারাতেন না। বিএনপি ক্ষমতায় যেতে না পারলেও, সংসদে বিরোধী দল হিসেবে থাকতে পারত এবং হয়তো তাদেরকে এত বেশি নির্যাতন ও কারাবরণ করতে হতো না।

এমনকি, বিএনপি বিরোধী দল হিসেবে থাকলে বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে খালেদা জিয়াও তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়ার মামলাগুলো লড়তে বাড়তি সুবিধা পেতেন, যা এখন পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়া সক্রিয় নেতৃত্বে না থাকার একটি বড় নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছে বিএনপির ওপর। যদি বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন না করত, তাহলে বিষয়টি কি এমন হতো? বিএনপি কি এসব বিষয় আমলে নিয়েছিল?

এবারও যদি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে তা হবে বিএনপির দ্বিতীয় নির্বাচন বয়কট। এই অঞ্চলে তো বটেই, সম্ভবত কোনো গণতান্ত্রিক দেশেই কোনো রাজনৈতিক দল এক দশকের মধ্যে দুটি নির্বাচন বয়কট করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারেনি। এবারের নির্বাচন বয়কটও কি বিএনপির অস্তিত্ব সংকট সৃষ্টি করতে পারে?

বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে যে, নির্বাচনে জয়ের নিশ্চয়তা না পেলে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো কারণই নেই। আমাদের দৃষ্টিতে এমন চিন্তা একটি মারাত্মক ভুল। শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকার প্রয়োজনগুলো তাদের কাছে যৌক্তিক মনে হচ্ছে না। বিএনপি এটা বিবেচনা করছে না যে তাদের নিজস্ব নীতি ও ভিশন প্রচারে শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে সংসদ এবং আগামীতে তারা সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে নিজেদের গ্রহণযোগ্য ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে পারে।

বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য যত দুঃখজনক ও ক্ষতিকরই হোক না কেন, দেশের সবচেয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কখনোই বিরোধী দলের ভূমিকাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। তারা সবসময় ক্ষমতা চায় এবং কখনোই দায়িত্বশীল সমালোচকের ভূমিকায় সরকারকে জবাবদিহিতায় রাখার গুরুত্ব অনুধাবন করে না।

শাসকবিরোধী মনোভাব, সরকারের নানান ব্যর্থতা, ব্যাপক দুর্নীতি ও উদ্ধত মনোভাবের কারণে মানুষ পরিবর্তন চাইছে। কিন্তু এতকিছুর পরও বিএনপি সেই সুযোগ নিয়ে পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়েছে। হয়তো তারা পরবর্তী সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন এককভাবে জিততে পারত না। কিন্তু নিঃসন্দেহে তারা একটি শক্তিশালী বিরোধী দল গঠন করতে পারত। তেমনটি হলে তারা ২০২৯ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার উপযোগী মঞ্চ তৈরি করতে পারত। কিন্তু এ ধরনের কৌশলে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তাদের এমন 'সব না হয় কিছুই না' মনোভাবের কারণেই বিএনপি নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে দেশ ও গণতন্ত্রকে চড়া মূল্য দিতে হবে।

বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নিত, তাহলে তাদের একক বা জোটগত ৩০০ মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী দেশের আনাচে-কানাচে নিজেদের পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারতেন এবং আওয়ামী লীগের ক্ষমতার অপব্যবহার, অপকর্ম ও দুর্নীতির চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরতে পারতেন। এই প্রচারণায় ক্ষমতাসীন দল খানিকটা হলেও জবাবদিহির আওতায় আসত এবং বিএনপির প্রতি জনগণের সমর্থন জোরালো হতো। আর কিছু না হলেও বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণার কারণে ক্ষমতাসীন দল কিছুটা হলেও সংযত হতো। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে বিদেশি পর্যবেক্ষকরাও আসার আগ্রহ পেতেন, যা নিঃসন্দেহে আমাদের নির্বাচনের মানোন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারত। আওয়ামী লীগের 'বিদ্রোহী' প্রার্থীদের অংশগ্রহণে গ্রাম পর্যায়েও নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিএনপির সমর্থকরা সেগুলো কেবল দেখছেন, তাদের করার আর কিছুই নেই।

আজকের দিনে বিএনপি শুধু হরতালের ডাক দিচ্ছে, যা কেউ মানছে না; অবরোধের ডাক দিচ্ছে, যা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে কাউকে দেখা যাচ্ছে না; গণবিক্ষোভের ডাক দিচ্ছে, যা কেবলই ফাঁকা বুলি। কী এক নিদারুণ করুণ দশায় রয়েছে আমাদের দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দলটি।

মাহফুজ আনাম: সম্পাদক ও প্রকাশক, দ্য ডেইলি স্টার


বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন