দেশের ছয় শিল্প গ্রুপের কাছে বর্তমানে ৩ লাখ ২ হাজার ১৬৩ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল মজুত রয়েছে। আর পাঁচ শিল্পগ্রুপের কাছে চিনি মজুত আছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৩ মেট্রিক টন। এছাড়া ২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৪৫ টন ভোজ্যতেল এবং ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৫০ টন চিনি পাইপলাইনে রয়েছে।
রোববার (১৯ মার্চ) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স’- শীর্ষক ষষ্ঠ সভায় উপস্থাপিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভায় ব্যবসায়ীদের কাছে ভোজ্যতেল ও চিনির মজুত কী পরিমাণ আছে সে তথ্য উপস্থান করা হয়। পাশাপাশি পাইপলাইনে থাকার চিত্রও উপস্থাপন করা হয়। সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লিমিটেড এবং বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে ৩ লাখ ২ হাজার ১৬৩ টন ভোজ্যতেল মজুত রয়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়া পাইপলাইনে রয়েছে আরও ২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৪৫ টন বলেও সভায় উপস্থান করা হয়েছে। অন্যদিকে সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, আব্দুল মোনেম এবং দেশ বন্ধু সুগার লিমিটেডের কাছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৩ দশমিক ৬৮ টন চিনি মজুত রয়েছে। এর বাইরে পাইপলাইনে রয়েছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৫০ টন চিনি।
সভায় জানানো হয়েছে, ভোজ্যতেল ও চিনি সব থেকে বেশি মজুত রয়েছে এস আলম গ্রুপের কাছে। এ গ্রুপটির কাছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ২৬৯ টন ভোজ্যতেল এবং ৮৬ হাজার ৯৮ দশমিক ৬৮ টন চিনি মজুত আছে। এর বাইরে ১ লাখ ৮ হাজার টন ভোজ্যতেল এবং ৩ লাখ ৮৫ হাজার টন চিনি পাইপলাইনে রয়েছে। মেঘনা গ্রুপের কাছে ভোজ্যতেল মজুত আছে ৪৬ হাজার ২৩৯ টন। পাইপলাইনে আছে ২২ হাজার টন ভোজ্যতেল। এ শিল্প গ্রুপের কাছে চিনি মজুত আছে ৫০ হাজার টন। আর পাইপলাইনে আছে ৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি। আরেক শিল্পগ্রুপ সিটির কাছে ২৩ হাজার ৮৬৪ টন ভোজ্যতেল এবং ৬৬ হাজার ৮৬৫ টন চিনি মজুত আছে। পাইপলাইনে ভোজ্যতেল আছে ৩২ হাজার টন এবং চিনি ৫৩ হাজার ৫৫০ টন।
এছাড়া টিকে গ্রুপের কাছে ২১ হাজার ৭৫০ টন, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের কাছে ২৩ হাজার ৯৪১ টন এবং বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে ২ হাজার ১০০ টন ভোজ্যতেল মজুত আছে। এর বাইরে টিকে গ্রুপের কাছে ৪৬ হাজার টন, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের ৩২ হাজার ৮৪৫ টন এবং বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে ৩৫ হাজার টন ভোজ্যতেল পাইপলাইনে রয়েছে। আব্দুল মোনেম’র কাছে চিনি মজুত আছে ১৯ হাজার ১০০ টন এবং ৬০ হাজার টন চিনি। দেশবন্ধু সুগার লিমিটেডের আছে চিনি মজুত আছে ৩ হাজার ৫০০ টন এবং পাইপ লাইনে আছে ৪০ হাজার টন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ভোজ্যতেল-চিনির মজুত ও চাহিদা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে, আমাদের যা প্রয়োজন তার মিনিমাম দেড়গুণ তাদের কাছে মজুত রয়েছে। তাদের হাতে আছে ও পাইপ লাইনে আছে। ফলে কোনোভাবেই কোনো সমস্যা হবে না। তেল এবং চিনি এ দুটাই তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে আছে। ফলে কোনো সমস্যা হবে।
তিনি বলেন, চিনিতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। আমরা অনেক হিসাব-নিকাশ করে দেখেছি চিনির দাম সাড়ে চার টাকার মতো কমানো যায়। আমরা তাদের (ব্যবসায়ী) অনুরোধ করেছি ৫ টাকা কমানোর। তারা আমাদের সঙ্গে এগ্রি করেছে। যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে, সে সুবিধার পণ্য এখনো বাজারে আসেনি, আরও কয়েকদিন লাগবে। তারা কিছুদিন সময় চেয়েছেন। আশাকরি রোজার প্রথম সপ্তাহেই নতুন দামটা চলে আসবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা নিজে থেকে একটা কথা বলেছেন মিলগেটে যে দামে তারা দেয় তার থেকে ৫-৬ টাকা প্রফিট করে দোকানে বিক্রি করে। সেটা চলবেই। তবে তারা নিজ উদ্যোগে ঢাকার পাশাপাশি প্রধান শহরে মিলগেটের প্রাইসে ট্রাক সেল (বিক্রি) করবে। চিনি যথেষ্ট পরিমাণে আছে, মানুষের মনে ভয় লেগে আছে চিনি নেই। চিনি কিন্তু পাইপ লাইনেও প্রচুর আছে। ফলে চিনি নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। ব্যবসায়ীরা ৫ টাকা কম রেটে মিলগেট থেকে দেশের সব স্থানে চিনি পৌঁছে দেবেন। ব্যবসায়ীদের অবস্থান পজিটিভ। আমরা তাদের বলেছি, আগামীকাল থেকে মনিটরিং করতে শুরু করবো। নতুন ট্যারিফে পণ্য ছাড় করতে শুরু করেছেন কি না। যদি না করেন তাহলে আমরা বলবো তিনদিনের মধ্যে করতে হবে। সেটা তাদের অনুসরণ করতে হবে।
টিপু মুনশি বলেন, আমরা জাতির সামনে একটি কথা বলতে চাই, রমজান সামনে রেখে আমাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমাদের কাছে যে চিনি-তেল আছে, তাতে বর্তমানে বাজারে যে দাম চলছে বা যেটা ঠিক করে দেওয়া আছে, তার চেয়ে বাড়ার কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশে প্যানিক হওয়ার মতো কোনো কারণ নেই। প্যানিক হয়ে কেউ কিনতে যাবেন না। আমরা যেভাবে কিনি, সেভাবে কিনবো। যথেষ্ট মজুত আছে।
মজুদ সোয়া ২ লাখ টন চিনি সোয়া ৩ লাখ টন ভোজ্যতেল টিপু মুনশি বাণিজ্য মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
রমজান মাস শুরু হওয়ার পর টানা তিন
দিন ছিল ছুটি। ফলে গত তিন দিনে রাজধানীতে ছোট-বড় কোনো ধরণের
যানজট সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু ছুটি শেষে রমজানের প্রথম কর্মদিবসে আজ যানজটে যেনো
নাকাল ঢাকা শহর।
সোমবার (২৭ মার্চ) সকাল
থেকে রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন পয়েন্ট ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে
গাড়ির জট লেগে রয়েছে।
রোজা রেখে যানজটে গাড়িতে বসে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে শহরে যানজটের পরিমাণও বাড়ছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় গাড়ি আটকে রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানীর বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানী, বাড্ডা, মহাখালী, হাতিরঝিল, রামপুরা, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী ও কালশী এলাকায় যানজট রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে রাস্তায় গাড়ির চাপও বাড়ছে বলে জানা গেছে।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা চলছে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত সড়কে। সকাল থেকেই বিমানবন্দর সড়ক থেকে মহাখালী পর্যন্ত তীব্র যানজট। গাড়ি এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে। দীর্ঘসময় গাড়িতে বসে থেকে হাল ছেড়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন অফিসগামীরা।
রাজধানীজুড়ে যানজটের বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বলছে, তিন দিন ছুটি থাকার পর রমজানের প্রথম কর্মদিবসে একসঙ্গে সবাই কর্মস্থলে যাচ্ছেন। ফলে রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। তাছাড়া রমজানে অফিস টাইম পরিবর্তনের কারণেও রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। ফলে রাজধানীজুড়ে এমন যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত সড়কে সরেজমিনে দেখা যায়, বিমানবন্দর থেকে শেওড়া ওভার ব্রিজ পর্যন্ত যানচলাচল স্থবির হয়ে রয়েছে। শেওড়া থেকে বনানী পর্যন্ত সড়কে ধীরগতিতে যানচলাচল করছে। আবার বনানী থেকে ধীরগতিতে যানচলাচলের কারণে মহাখালী পার হয়ে জাহাঙ্গীর গেট এলাকা পর্যন্ত সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট যাওয়ার জন্য সকাল ৮ টায় বাসে উঠেন কাজী সালেহ। তিনি বলেন, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বনানীর দিকে গাড়ি কোনোভাবেই এগোচ্ছিল না। ঘণ্টার বেশি সময় গাড়ি শেওড়ায় আটকে ছিল। সর্বশেষ ধীরগতিতে মহাখালী এলেও আবার আটকে যায়। পরে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রওনা হই ফার্মগেটের দিকে। রোজা রেখে এভাবে যানজটের মধ্যে চলাচলের কারণে অনেক ভোগান্তি হচ্ছে আমাদের।
বনানী ও বিমানবন্দর সড়কের যানজট নিয়ে ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগের গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজ রাস্তায় গাড়ির চাপ তুলনামূলক একটু বেশি। তিন দিন বন্ধ থাকার পর আজ রাজধানীতে সব অফিস খুলেছে। এদিকে, রমজানের কারণে অফিস টাইম একটু পরিবর্তন হয়েছে। সবমিলিয়ে একসঙ্গে সকাল থেকে গাড়ির চাপ বেড়েছে। তাই এই যানজট। এছাড়া এখনো সব স্কুল বন্ধ হয়নি। অনেক স্কুল এখনো খোলা। একসঙ্গে সকাল ৮টা থেকে রাস্তায় মানুষ ও গাড়ি বের হওয়ায় চাপ বেড়ে গেছে।
এদিকে, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডা পার হয়ে রামপুরা পর্যন্ত সড়কেও রয়েছে যানজট ও গাড়ির চাপ। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ অবস্থার কোনো উন্নতি ছিল না।
রাজধানীর ভাটারা থেকে বনশ্রী এলাকায় অফিসে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন মো. ফরিদুর রহমান। তিনি বলেন, নতুন বাজারে এসে দেখি রাস্তা একদম বন্ধ। এ পরিস্থিতি দেখে বাসে না উঠে হেঁটে রওনা হয়ে উত্তর বাড্ডা পর্যন্ত আসি। পরে উত্তর বাড্ডা থেকে একটি রিকশা নিয়ে বনশ্রী পর্যন্ত আসি।
প্রগতি সরণি এলাকার যানজট নিয়ে ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ইমরান হোসেন বলেন, রাজধানীর অন্য সব এলাকার মতো প্রগত সরণি এলাকায়ও সকাল থেকে প্রচুর গাড়ির চাপ। তবে আশা করছি দুপুরের দিকে চাপ কিছুটা কমে যাবে। তবে ইফতারের আগে আবার গাড়ির চাপ কিছুটা বাড়বে।
এদিকে, সকাল থেকে চলমান যানজটের প্রভাব পড়ছে হাতিরঝিল এলাকায়ও। সাধারণত রাজধানীর অন্য সব এলাকায় যানজট থাকলেও এই এলাকা যানজটমুক্ত থাকে। তবে আজ হাতিরঝিলেও যানজট। এই যানজট সোনারগাঁও হোটেল সিগন্যাল পর্যন্ত পৌঁছেছে।
এ বিষয়ে হাতিরঝিল দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রী মকসুদুর রহমান বলেন, আজ যানজট থেকে হাতিরঝিলও রক্ষা পায়নি। সাধারণত হাতিরঝিলে যানজট থাকে না। তবে তিন দিনের ছুটির প্রভাবে আজ হাতিরঝিলেও যানজট।
এদিকে, সোনারগাঁও হোটেল মোড়ে যানজটের বিষয়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পরিদর্শক আনোয়ার কবির বলেন, হাতিরঝিল, বাংলামটর ও সোনারগাঁ হোটেল মোড়সহ আশপাশের সব রাস্তায় গাড়ির চাপ খুব বেশি। যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি গাড়ি রাস্তায় চলমান রাখার।
মন্তব্য করুন
দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের দুর্ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে। রমজান ঘিরে পণ্যের দাম এখন আরও চড়া। বিশেষত, নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য কিনতে বাজারে গিয়ে কপালে ভাঁজ পড়ছে ক্রেতাদের। ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় সীমিত আয়ের মানুষেরা। তবে রমজানে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রির ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের
উদ্যোগে পবিত্র রমজান মাসে রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ
বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম রোজা থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলবে
২৮ রোজা পর্যন্ত।
কম দামে এসব পণ্য পেয়ে খুশি ক্রেতারা। বলছেন, বাজারে মাংস, দুধ, ডিমের যে দাম সে তুলনায় এখানে অনেকটা কম। ফলে সামর্থ্যের মধ্যে এসব পণ্য কেনা সম্ভব হচ্ছে। তবে বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গতবারের তুলনায় দাম বাড়ানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথা বলছেন তারা।
সচিবালয়ের পাশে আবদুল গণি রোডে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সব এলাকায় এই সুলভ মূল্যের বিক্রয়কেন্দ্র না থাকায় অনেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে আসছেন। ক্রেতারা বলছেন, এখান থেকে মুরগির মাংস, গরুর মাংস আর ডিম নিতে পারছেন তাঁরা অল্প দামে। বর্তমানে বাজারে যে দাম সেটা কেনা খুব কঠিন, সেই হিসাবে সুলভ মূল্যে পণ্য পেয়ে তাঁদের বেশ সুবিধা হচ্ছে। সারাদেশে এই কার্যক্রম আরও বাড়ানো উচিত বলেও মনে করছেন তাঁরা।
একজন ব্যক্তি এখান থেকে সর্বোচ্চ এক কেজি গরুর মাংস, এক কেজি খাসির মাংস, এক কেজি মুরগির মাংস, এক ডজন ডিম, এক লিটার দুধ নিতে পারছেন। এক একটি বিক্রয়কেন্দ্রে প্রতিদিন এখানে গরুর মাংস ১০০ কেজি, খাসি ৪০-৫০ কেজি, মুরগি ৫০ কেজি, ১২০০ পিস ডিম ও দেড়শো লিটার দুধ নিয়ে আসা হয় বিক্রির জন্য।
রাজধানীর নতুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি, খামারবাড়ি, আজিমপুর মাতৃসদন, গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি, ৬০ ফুট রোড, খিলগাঁও (রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আবদুল গণি রোড), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), আরামবাগ, রামপুরা, কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বছিলা, হাজারীবাগ (সেকশন), লুকাস মোড় (নাখালপাড়া), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা) এবং কামরাঙ্গীর চর এলাকায় সুলভ মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
এ বছর প্রাথমিকভাবে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুধ, ডিম ও মাংসের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে রমজান মাসে জনসাধারণ যেন প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে সে লক্ষ্যে ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারী ও সাপ্লাই চেইন সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
মন্তব্য করুন
নিয়ন্ত্রণে এসেছে রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তির আগুন। সোমবার সকাল ৮টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এর আগে সকাল পৌনে ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিস এই অগ্নিকাণ্ডের খবর পায়।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোমবার সকাল ৬টা ৪৭ মিনিটে মহাখালী সাততলা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট সেখানে যায়। তারা ইতোমধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
মন্তব্য করুন
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যে সম্মানী ভাতা আর বীর নিবাস তৈরি করে দিচ্ছে তা অন্য কোনো দলের সরকার এর আগে করেনি।’
রোববার (২ মার্চ) বান্দরবান জেলা প্রশাসকের বাসভবন প্রাঙ্গণে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর এসব কথা বলেন।
পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই। তিনি আছেন বলেই আজ বাংলাদেশ এত সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের সার্বিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে।’
মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা ভাবেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে পাশাপাশি তাদের বসবাসের উপযোগী বীর নিবাস তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। তাই আমাদের সকলকে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কেননা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শত্রুরা এখনো দেশে নানা ধরনের অরাজকতা করছে আর এতে দেশের মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং অনেক উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্থ হয়ে দেশের সামগ্রিক অগ্রগতিতে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’
বীর বাহাদুর আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যে সকল শহিদ তাদের প্রাণ দিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনে যারা অবদান রেখেছেন সেসকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। মন্ত্রী আগামির স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
পরে বান্দরবান জেলার ৫৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সম্মানী ও পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বান্দরবান পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম কাউছার হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী, বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবীসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং
মন্তব্য করুন
‘সবুজ যুদ্ধ, সবুজে মুক্তি, একসাথে জলবায়ু পরিবর্তন রুখি’- এই স্লোগান নিয়ে ব্যতিক্রমী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে গ্লোবাল ল থিঙ্কার্স সোসাইটি নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
রোববার (২৬ মার্চ ) স্বাধীনতা দিবসে ২৬ মিনিটের ‘সবুজ মানব প্রাচীর’ তৈরি করে বিশ্ব রেকর্ডের এ আয়োজনটি ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ হতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ সময় সবুজে যুদ্ধ, সবুজে মুক্তি স্লোগানে মুখরিত হয় মানিক মিয়া এভিনিউ।
ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের নির্বাহী কো-অর্ডিনেটর ও পরিবেশ কর্মী শরীফ জামিল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে স্কাউটের জাতীয় উপ কমিশনার (স্বাস্থ্য) জামাল উদ্দীন শিকদার, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ডেইভ ডাউলন্ড। বক্তব্য রাখেন জিএলটিএসের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল আলম জন, জিএলটিএসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং গার্ডিয়ান অফ দ্যা আর্থের উদ্যোগতা রাওমান স্মিতা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, জিএলটিএস এর সহ-সংগঠন গ্রীণ ইউনাইটেড ন্যাশনের কো-ফাউন্ডার মো. মাহির দাইয়ান।
শরীফ জামিল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন মহাবিশ্বে মহা সমস্যা এবং বিপর্যয় হয়ে দাড়িয়েছে। সময় এখন সবুজ রক্ষায় যুদ্ধে নামার। ২৬ মিনিটের এ মানববন্ধন সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসকে। বাংলাদেশকে আবারো চিনবে বিশ্ব। ডেইভ ডাউলন্ড অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করেন এবং বিশ্বকে সবুজ বিশ্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
আহসানুল আলম জন বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে এবং এর মাধ্যমেই সংহতি তৈরি হবে পরিবেশ বাঁচানোর জন্য। বাংলাদেশের নদী, বন ও পরিবেশ রক্ষার জন্য ১ কোটি গাছ লাগানোর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাওমান স্মিতা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবেশ শিক্ষা মূলক ক্যাম্পেই শুরু করবেন বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, গ্লোবাল ল থিঙ্কার্স সোসাইটি পরিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হতে বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীকে একত্রিত করার লক্ষ্য ‘গার্ডিয়ান অফ দ্য আর্থ’ নামক ২০৩০ সাল অবধি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিতকরণের জন্য উদ্যেগ নিয়েছে। বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে বিশ্বের শিক্ষার্থী ও বহু পেশাজীবিদের নিয়ে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অগ্রসর হচ্ছে জিএলটিএস। এরই ধারাবহিকতায় স্বাধীনতা দিবসে রোববার ৫টি মহাদেশের ১০টি দেশ (ভারত, নেপাল, মেক্সিকো, পাকিস্তান, মালয়, আইভরি কোস্ট, হাংগিরি, গাম্বিয়া, ক্যমেরুন, অস্ট্রেলিয়া) ও বাংলাদেশের ৮ টি বিভাগের ৯ জেলায় (ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, সিলেট ও বরগুনা), সবুজ বিশ্ব গঠনের প্রতিশ্রুতি এবং সংহতি দেখানো হয়। বাংলাদেশ থেকে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ স্কাউট, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ইপসা, আমরা সবাই ফাউন্ডেশন, সম্প্রতি ও সৌহার্দ, সিএসডাব্লিউপিডিসহ আরো অনেকে। আমেরিকা মহাদেশ থেকে আবনার প্লাটা, অস্ট্রেলিয়া থেকে ৯৮/০০ নিউ এক্ট, ইউরোপ থেকে মাইন্ডফুলেয়েন্সার, আফ্রিকা থেকে গার্লস রাইজিং মালাউই, সেইভ লাইফ গাম্বিয়া এবং এভিএসডি, এশিয়া থেকে লুম্বিনি ওয়ার্ল্ড পিস নেপাল, ইন্ডিয়া থেকে মাউন্ড গাইড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং পিস অফ পাকিস্তান অংশগ্রহণ করেছে।
বিশ্ব সর্ববৃহৎ সবুজ মানব প্রাচীর জিএলটিএস
মন্তব্য করুন
রাজধানীজুড়ে যানজটের বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বলছে, তিন দিন ছুটি থাকার পর রমজানের প্রথম কর্মদিবসে একসঙ্গে সবাই কর্মস্থলে যাচ্ছেন। ফলে রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। তাছাড়া রমজানে অফিস টাইম পরিবর্তনের কারণেও রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। ফলে রাজধানীজুড়ে এমন যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত সড়কে সরেজমিনে দেখা যায়, বিমানবন্দর থেকে শেওড়া ওভার ব্রিজ পর্যন্ত যানচলাচল স্থবির হয়ে রয়েছে। শেওড়া থেকে বনানী পর্যন্ত সড়কে ধীরগতিতে যানচলাচল করছে। আবার বনানী থেকে ধীরগতিতে যানচলাচলের কারণে মহাখালী পার হয়ে জাহাঙ্গীর গেট এলাকা পর্যন্ত সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
‘সবুজ যুদ্ধ, সবুজে মুক্তি, একসাথে জলবায়ু পরিবর্তন রুখি’- এই স্লোগান নিয়ে ব্যতিক্রমী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে গ্লোবাল ল থিঙ্কার্স সোসাইটি নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। রোববার (২৬ মার্চ ) স্বাধীনতা দিবসে ২৬ মিনিটের ‘সবুজ মানব প্রাচীর’ তৈরি করে বিশ্ব রেকর্ডের এ আয়োজনটি ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ হতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ সময় সবুজে যুদ্ধ, সবুজে মুক্তি স্লোগানে মুখরিত হয় মানিক মিয়া এভিনিউ।