ইনসাইড বাংলাদেশ

সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রপতি, এরশাদের ক্ষমতা দখলের কালো দিন


Thumbnail

আজ ২৪ মার্চ। ১৯৮২ সালের এই দিনে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লে. জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেকে গদিনশিন করেন। ওই দিন বেতার ও টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে তিনি বলেন, ‘জনগণের ডাকে সাড়া দিতে হইয়াছে, ইহা ছাড়া জাতির সামনে আর কোনো বিকল্প ছিল না।’ তিনি বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো সামরিক শাসন জারি করে নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করেন। এই ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরন করেন।

১৯৮১ সালের ৩০শে মে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। সে সময় জেনারেল এরশাদ সেনাপ্রধান ছিলেন। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর সে সময়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন এবং তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি সরকার গঠন করেছিল। কিন্তু সেই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।

সেনাবাহিনীর ভেতরে ও সাধারণ মানুষের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কথা ভেবে জিয়া হত্যার পরপরই এরশাদ ক্ষমতা দখল করেননি। তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের প্রতি সমর্থন জানান। জিয়া-মঞ্জুর হত্যার ব্যাপারে এরশাদের প্রতি যে সন্দেহের তির ছিল, তা থেকেও তিনি নিজেকে রক্ষা করতে সচেষ্ট থাকেন। চট্টগ্রামের সেনা অভ্যুত্থানে প্রথমে জিয়া নিহত হন। এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণকারী জেনারেল মঞ্জুরকেও পরে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে হত্যা করা হয়; ফলে জিয়া হত্যার সঙ্গে মঞ্জুরের সম্পৃক্ততা ছিল কি ছিল না, তা কখনো জানা যাবে না।

জিয়া হত্যার দায়ে যাঁরা বিচারের মুখোমুখি হলেন, তাঁরা প্রায় সবাই মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা। এর আগে যতগুলো বিদ্রোহ ও অভ্যুত্থান হয়েছে, সব কটির সঙ্গে মূলত মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন। এরশাদ এই সুযোগে সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তান প্রত্যাগত কর্মকর্তাদের আনার ব্যবস্থা করেন; তিনি নিজেও একজন পাকিস্তান প্রত্যাগত কর্মকর্তা। অন্যদিকে বিএনপিতেও তখন মুক্তিযোদ্ধা ও অমুক্তিযোদ্ধা শিবির প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে লিপ্ত ছিল।

সেনাপ্রধান হয়েও এরশাদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে ‘হস্তক্ষেপ’ করেন। বিএনপির একাংশ চাইছিল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া প্রার্থী হোন। অপরাংশ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তারের সমর্থক ছিল। এ প্রসঙ্গে জিয়ার এককালীন মন্ত্রী ও দ্বিতীয় জাতীয় সংসদের প্রভাবশালী সদস্য মওদুদ আহমদ লিখেছেন, ‘সাত্তারের প্রতি সেনাবাহিনীর সমর্থনের কারণে তাঁদের (সাত্তারের অনুসারীদের) পক্ষে ওই একগুঁয়ে মানসিকতা ও শক্তি প্রদর্শন সম্ভব হয়।’ (চলমান ইতিহাস, জীবনের কিছু সময়, কিছু কথা )

সে সময়ে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ে উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের দু’মাস পরই জেনারেল এরশাদ কয়েক জন জেনারেলকে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে মন্ত্রীদের ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন এবং এভাবে দেশ চলতে পারে না বলে বার্তাও দিয়েছিলেন। সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, বিচারপতি সাত্তারকে বার্তা দেয়ার পর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্র তৈরি করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ জেনারেল এরশাদ বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন। 

সামরিক শাসন জারির পরপরই তৎকালীন আওয়ামী লীগপন্থী দৈনিক বাংলার বাণী এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণকে সমর্থন দিয়েছিল। শেখ ফজলুল করিম সেলিম সম্পাদিত এই দৈনিকে মোনাজাতরত এক মহিলার ছবি ছাপা হয়। সামরিক আইন জারি হওয়ায় তিনি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছেন। তখন হয়তো আওয়ামী লীগ মনে করেছিল যে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি তো গেল, এটাই লাভ।

বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে জেনারেল এরশাদের নয় বছরের শাসনের পতন হলেও তিনি রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছেন। তিনি সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখলের পর জাতীয় পার্টি নামে দল গঠন করেন। তবে তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে অন্য সব দলের বিরোধীতার বিষয়টি ছিল তাঁর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। জেনারেল এরশাদের শাসনের সময় ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী আনা হয়।

১৯৮২ সালের সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতায় এসে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি। ক্ষমতা ছেড়ে দিলে দুর্নীতির মামলায় বিএনপি সরকারের আমলে জেল খাটেন তিনি। জেলে থেকেই রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই (রোববার) সকালে তিনি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যের কাছে প্রত্যাশা

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক আজ দায়িত্ব নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, অধ্যাপক, নার্স সহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন দিয়ে বরণ করে নেন। এটি একজন উপাচার্যের জন্য বড় প্রাপ্তি। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা উপাচার্য হয়েছেন তারা কেউ এরকম রাজসিক অভ্যর্থনা পাননি। তাকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ অনেক উঁচুতে উঠে গেছে। 

দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হকের বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য হওয়াটা ছিল একটা বড় চমক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই চমক দেখিয়েছেন এবং একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্যই তিনি দ্বীন মোহাম্মদকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলেই প্রতীয়মান হয়। বিএসএমএমইউ-এ যারা বিগত দিনগুলোতে উপাচার্য হয়েছেন তাদের মধ্যে দু-একজন ছাড়া কেউ এই পদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে পারেননি। 

বর্তমান সরকারের আমলে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য হিসেবে কয়েকজন দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তবে তাদের কেউই বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে একজন আদর্শ উপাচার্য হিসেবে নিজেদেরকে প্রমাণ করতে পারেননি। অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত ছিলেন দুই মেয়াদের উপাচার্য। এই সময় তিনি বিএসএমএমইউ এর কিছু কাজ করেছিলেন বটে। তবে চিকিৎসার মান, সেবার মান এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ড দিয়ে তিনি এই প্রতিষ্ঠানটিকে সেন্টার অফ এক্সেলেন্স করতে পারেননি। রাজনীতিতে জড়িয়ে তিনি উপাচার্যের চেয়ে বেশি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করেছিলেন। পরবর্তীতে যারা বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য হয়েছেন অধ্যাপক কামরুল কিংবা কনক কান্তি বড়ুয়া তারা প্রত্যেকেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইতিবাচক ছিলেন। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন। 

তবে সবাইকে ছাপিয়ে বিতর্কিত উপাচার্যের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। শারফুদ্দিন আহমেদের উপাচার্য হওয়াটা ছিল যেমন বিস্ময়, তেমনি তিনি তার তিন বছরের মেয়াদে নানা রকম বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন এবং উপাচার্যের পদটিকে ভুলণ্ঠিত করেছেন। শারফুদ্দিন আহমেদ উপাচার্য হওয়ার পর সমস্ত বিএসএমএমইউতে তার ছবি টানিয়ে যে কদর্য আত্মপ্রচারে মেতে ছিলেন, সেটি ছিল অনভিপ্রেত অনাকাঙ্খিত এবং লজ্জাজনক। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সীমাহীন অভিযোগ, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল, যেজন্য শেষ দিনগুলোতে তাকে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। 

আমরা কখনই চাই না যে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এ রকম করুণ বিদায় হোক। আমরা কখনই চাই না যে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠুক। আমরা কখনই চাই না যে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তার অযোগ্যতা, স্বজনপ্রীতি এবং অপকর্মের জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের মানমর্যাদা তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করুক। আর এরকম বাস্তবতায় অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়েছে। নতুন উপাচার্যের কাছে সাধারণ মানুষের এবং চিকিৎসক সমাজের প্রত্যাশা খুব সোজাসাপ্টা, স্বাভাবিক। অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ যা করেছেন সেটা তিনি করবেন না। তাহলেই তিনি একজন ভাল উপাচার্য হতে পারবেন। তিনি একজন রাজনীতিবিদ নন, বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার একজন অভিভাবক হিসেবে নিরপেক্ষ এবং নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। 

বিএসএমএমইউকে তৈরি করা হয়েছিল সেন্টার অফ এক্সিলেন্স করার মানসিকতা থেকে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএসএমএমইউ করেছেন। এটি হবে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসা গবেষণা এবং সর্বাধুনিক চিকিৎসার প্রাণকেন্দ্র এবং আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা প্রদানই হবে বিএসএমএমইউ এর একটি বড় লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে একজন উপাচার্যকে নেতৃত্ব দিতে হবে। অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ একজন দক্ষ ব্যক্তি। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এখন সেই দক্ষতার সঙ্গে তাকে অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। সবকিছুর উর্ধ্বে তাকে দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে। নিজেকে যদি দুর্নীতি থেকে দূরে রাখতে পারেন এবং সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে যদি তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারেন তাহলে বিএসএমএমইউ বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি পথপ্রদর্শক কেন্দ্র হিসেবে দাঁড়াতে পারে। অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক সেটি করতে পারেন যদি তার স্বইচ্ছা থাকে, আন্তরিকতা থাকে। ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হককে মনে রাখতে হবে যে, দলীয় পরিচয় নয়, যখন তিনি উপাচার্য হয়েছেন তখন তাকে একজন নিরপেক্ষ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার অভিভাবক হিসেবেই দাঁড়াতে হবে। তাহলেই তিনি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবেন এবং একটি আর্দশ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএসএমএমইউকে দাঁড় করাতে পারবেন।


বিএসএমএমইউ   অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

‘ভোটে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা আমি তুলবই’

প্রকাশ: ১০:৪২ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এইটা আমি তুলব, যেভাবেই হোক। এটুকু অন্যায় আমি করব, আর করব না।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার লালপুর উপজেলা অডিটোরিয়ামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ। 

ভিডিওতে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কালামকে বলতে শোনা যায়, ‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এটা আমি তুলব, যেভাবেই হোক। এটুকু অন্যায় আমি করব। আর করব না।’

আবুল কালাম গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মহিদুল ইসলাম বকুলকে পরাজিত করে এমপি হন। উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আবুল কালাম বলেন, ‘আমার সংসদ সদস্য হওয়ার বয়স ১ মাস ২৪ দিন। আপনাদের টাকা তো আমি বাড়ির জমি বিক্রি করে দেইনি। আমার বেতন-ভাতার টাকাও দেইনি। আমার ৫ বছরের বেতন-ভাতার ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ছাড়া কোনো সম্পদ ছিল না, আগামীতেও থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছি। এক টাকাও খরচ নাই। ২৫ লাখ টাকা তুললাম। পরে ২৭ লাখ টাকা দিয়ে ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি কিনেছি। আমি ১ কোটি টাকা দিয়ে গাড়ি কিনতে পারতাম। কিন্তু আমার যেহেতু টাকা নাই, সে জন্য ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। খালি এই ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা আমি তুলব, তারপর গাড়ি কিনব।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আখতার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত আমান আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ সাগর প্রমুখ।

ইউএনও শারমিন আখতার জানান, এমপির বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করা তার সমীচীন হবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার এমপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে নিছক মজা করে কথাগুলো বলেছিলাম। এখন এটিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।’


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

১৬ হাজার টিকিটের জন্য এক কোটি ৫৭ লাখ হিট

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ঈদযাত্রায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি চলছে। এবছর শতভাগ অনলাইনে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) টিকিট কিনতে সার্ভারে প্রায় ১ কোটি হিট পড়েছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সরওয়ার। 

তিনি জানান, ৭ এপ্রিলের জন্য ১৬ হাজার টিকিট বরাদ্দ ছিল এবং বেলা ১২টা নাগাদ সকল টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। আর সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হিট পড়েছে ৮২ লাখ। অনেকেই শবে কদরের সঙ্গে মিলিয়ে বাড়ি যেতে চান, তাই ৭ ও ৮ তারিখের টিকিটের জন্য মানুষের আগ্রহ বেশি।

সব টিকেট অনলাইনে বিক্রি করার কারণে কমলাপুর রেল স্টেশন একদমই ফাঁকা। এদিকে ট্রেন ছাড়ার স্টেশনের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ভোগান্তি এড়াতে ৩ এপ্রিল থেকে আন্তঃনগর চিলাহাটি ও নীলসাগর এক্সপ্রেস ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে যাত্রা করবে।

৩ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৯টি ট্রেন ঢাকাগামী ফিরতি যাত্রায় বিমানবন্দর স্টেশনে থামবে না। ট্রেনগুলো হলো একতা, দ্রুতযান, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি, রংপুর, চিলাহাটি, পঞ্চগড় ও বুড়িমারি এক্সপ্রেস ট্রেন।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি টিকিটের বিপরীতে প্রায় ৬শ' বার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২৪ তারিখ থেকে টিকিট বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ঈদযাত্রা   ট্রেন   আগাম টিকিট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মন্ত্রী নেই তাদের আওয়াজও বন্ধ

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

মন্ত্রিত্ব হারিয়েই আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেছে তাদের। যদিও তারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন। আওয়ামী লীগেও তাদের উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু তারপরও মন্ত্রিত্ব হারিয়ে যেন তারা সব হারিয়ে ফেলেছেন। 

২০১৮ মন্ত্রিসভায় আলোচিত তিন মন্ত্রীর কথা বলছি। এই তিনজন মন্ত্রী নানা বক্তব্যের কারণে আলোচিত সমালোচিত ছিলেন। তাদের বাকপটুতা নিয়ে চর্চা হত দলে, দলের বাইরে। এমনকী জাতীয় সংসদেও তাদের নিয়ে তীব্র সমালোচনা হতো বিভিন্ন সময়ে। সেই তিন মন্ত্রী এখন নীরব। মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ পড়া এই তিনজন এখন পাদপ্রদীপে নেই। তাদের কথাবার্তা খুব একটা শোনা যাচ্ছে না।

মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়াদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হলেন;

টিপু মুনশি: টিপু মুনশি গত মেয়াদে বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি লাগামহীন কথাবার্তা বলার জন্য আলোচিত ছিলেন। যে কোন বিষয়ে তিনি এমন সব কথাবার্তা বলতেন যা জনগণের কাছে প্রথমে হাস্যকর এবং পরে বিরক্তিকর হিসেবেই প্রতিপন্ন হত। টিপু মুনশি একদিকে বলছিলেন যে, তিনি সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়, সিন্ডিকেট বন্ধ করলে বাজার অস্থির হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীকে যখন সাংবাদিকরা বললেন, টিপু মুনশি এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, আমি তাকে ধরব। এর পরপর তিনি বক্তব্য পাল্টে ফেললেন। একজন সীমাহীন, ব্যর্থ এবং অযোগ্য মন্ত্রীর প্রতীক ছিলেন টিপু মুনশি। মন্ত্রিত্ব যাওয়ার পর এখন তাকে দৃশ্যমান দেখা যায় না। সংসদে এবং এমনকি রাজনীতির মাঠেও তার পদচারণা বিরল ঘটনা। 

ড. এ কে আব্দুল মোমেন: ড. এ কে আব্দুল মোমেন আরেকজন মন্ত্রী ছিলেন যিনি অতিকথনের জন্য আলোচিত এবং সমালোচিত হয়েছিলেন। ভারতের সঙ্গে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কিংবা ভারতকে বলেছি, শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে ইত্যাদি অনভিপ্রেত বিতর্কিত কথাবার্তা বলার জন্য ড. মোমেন সমালোচিত ছিলেন। কূটনীতিক শিষ্টাচারের বাইরে গিয়ে হঠাৎ করে বিভিন্ন বিষয়ে ডাল ভরা বুলি আওড়ানোর জন্য তিনি সকলের তামাশার পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তার বক্তব্য নানা রকম বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। সেই ড. এ কে আব্দুল মোমেন এখন মন্ত্রিসভায় নেই। তাকে সিলেটের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাঝেমাঝেই দেখা যায়। তবে জাতীয় রাজনীতিতে তিনি পদচারণাহীন।

জাহিদ মালেক: গত মেয়াদে আলোচিত ক্ষমতাধর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন জাহিদ মালেক। যদিও তিনি স্বাস্থ্যখাতে সীমাহীন ব্যর্থতার সাক্ষী এবং প্রতীক। কিন্তু সবসময় তিনি নিজেকে দাবি করতেন সেরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে। তার সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি, অনিয়মের এক রেকর্ড হয়েছিল। কিন্তু এ সমস্ত দুর্নীতি এবং অনিয়মের বিসয় তিনি বেমালুম অস্বীকার করতেন। বরং নিজের সাফল্যের পুরস্কার নিজেই গ্রহণ করতেন। জাহিদ মালেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে বিদায় নিয়েছেন। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ডা. সামন্ত লাল সেন। এখন জাহিদ মালেককেও আর পাদপ্রদীপে দেখা যায় না। তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বটে, সেখানে একটি অনুষ্ঠানে তাকে দেখা গিয়েছিল। এছাড়া রাজনীতির মাঠে আর কোন আলো ছড়াচ্ছেন না।

জাহিদ মালেক   টিপু মুনশি   ড. এ কে আব্দুল মোমেন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশে পরিবেশদূষণে বছরে পৌনে ৩ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু

প্রকাশ: ০৮:০৩ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ উদ্বেগজনক মাত্রার দূষণ এবং পরিবেশগত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। বায়ুদূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সিসা দূষণ বছরে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যুর কারণ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘দ্য বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালাইসিস (সিইএ)’ নামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। বায়ুদূষণ তুলনামূলক বেশি ক্ষতি করছে দরিদ্র, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, বয়স্ক এবং নারীদের; বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সিসা দূষণ বছরে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যুর কারণ। এর ফলে বছরে ৫.২ বিলিয়ন দিন অসুস্থতায় অতিবাহিত হয়। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭.৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ঘরের এবং বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮.৩২ শতাংশের সমপরিমাণ।

এতে আরও বলা হয়েছে, পরিবেশদূষণ শিশুদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। সিসা বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিকের বিকাশে অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করছে। এর ফলে বছরে প্রাক্কলিত আইকিউ ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ মিলিয়ন পয়েন্ট। গৃহস্থালিতে কঠিন জ্বালানির মাধ্যমে রান্না বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস এবং তা নারী ও শিশুদের বেশি ক্ষতি করছে। শিল্পের বর্জ্য এবং অনিয়ন্ত্রিত প্লাষ্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা অপরিশোধিত ময়লাযুক্ত পানির কারণে বাংলাদেশের নদীগুলোর পানির গুণগত মানের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সময়মতো এবং জরুরি হস্তক্ষেপ, উন্নত পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) এবং সিসা দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রতি বছর ১ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঠেকাতে পারে। সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ, রান্নায় সবুজ জ্বালানি ব্যবহার এবং শিল্প-কারখানা থেকে দূষণ রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বায়ুদূষণ কমাতে পারে।

এছাড়া পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার জন্য সুশাসন জোরদার ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে এই রিপোর্টে পরিবেশগত অগ্রাধিকারসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে, বিভিন্ন পদক্ষেপের মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ, পরিবেশ নীতি পদ্ধতিগুলোর বৈচিত্র্যকরণ ও জোরদারকরণ, সাংগঠনিক কাঠামো এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা জোরদারকরণ এবং সবুজ অর্থায়নের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ এর পরিবেশকে রক্ষা করতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ এবং ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবিলা একই সঙ্গে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। আমরা পৃথিবীর নানা দেশে দেখেছি যে, পরিবেশের ক্ষতি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলে তা টেকসই হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির গতিপথ টেকসই রাখতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নতি করতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই পরিবেশকে উপেক্ষা করতে পারবে না। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে পরিবেশের ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু সহিষ্ণুতা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই রিপোর্টের সহ-প্রণেতা আনা লুইসা গোমেজ লিমা বলেন, সময়মতো এবং সঠিক নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবেশ দূষণের ধারা পাল্টে ফেলতে পারে। পরিবেশ সুরক্ষা জোরদারে পদক্ষেপ এবং রান্নায় সবুজ জ্বালানির জন্য বিনিয়োগ ও অন্যান্য প্রণোদনা, সবুজ অর্থায়ন বাড়ানো, কার্যকর কার্বন মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং সচেতনতা বাড়ানো দূষণ কমাতে পারে এবং এর ফলে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে পারে।

পরিবেশদূষণ   বিশ্বব্যাংক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন