ইনসাইড বাংলাদেশ

সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রপতি, এরশাদের ক্ষমতা দখলের কালো দিন


Thumbnail

আজ ২৪ মার্চ। ১৯৮২ সালের এই দিনে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লে. জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেকে গদিনশিন করেন। ওই দিন বেতার ও টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে তিনি বলেন, ‘জনগণের ডাকে সাড়া দিতে হইয়াছে, ইহা ছাড়া জাতির সামনে আর কোনো বিকল্প ছিল না।’ তিনি বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো সামরিক শাসন জারি করে নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করেন। এই ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরন করেন।

১৯৮১ সালের ৩০শে মে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। সে সময় জেনারেল এরশাদ সেনাপ্রধান ছিলেন। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর সে সময়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন এবং তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি সরকার গঠন করেছিল। কিন্তু সেই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।

সেনাবাহিনীর ভেতরে ও সাধারণ মানুষের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কথা ভেবে জিয়া হত্যার পরপরই এরশাদ ক্ষমতা দখল করেননি। তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের প্রতি সমর্থন জানান। জিয়া-মঞ্জুর হত্যার ব্যাপারে এরশাদের প্রতি যে সন্দেহের তির ছিল, তা থেকেও তিনি নিজেকে রক্ষা করতে সচেষ্ট থাকেন। চট্টগ্রামের সেনা অভ্যুত্থানে প্রথমে জিয়া নিহত হন। এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণকারী জেনারেল মঞ্জুরকেও পরে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে হত্যা করা হয়; ফলে জিয়া হত্যার সঙ্গে মঞ্জুরের সম্পৃক্ততা ছিল কি ছিল না, তা কখনো জানা যাবে না।

জিয়া হত্যার দায়ে যাঁরা বিচারের মুখোমুখি হলেন, তাঁরা প্রায় সবাই মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা। এর আগে যতগুলো বিদ্রোহ ও অভ্যুত্থান হয়েছে, সব কটির সঙ্গে মূলত মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন। এরশাদ এই সুযোগে সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তান প্রত্যাগত কর্মকর্তাদের আনার ব্যবস্থা করেন; তিনি নিজেও একজন পাকিস্তান প্রত্যাগত কর্মকর্তা। অন্যদিকে বিএনপিতেও তখন মুক্তিযোদ্ধা ও অমুক্তিযোদ্ধা শিবির প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে লিপ্ত ছিল।

সেনাপ্রধান হয়েও এরশাদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে ‘হস্তক্ষেপ’ করেন। বিএনপির একাংশ চাইছিল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া প্রার্থী হোন। অপরাংশ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তারের সমর্থক ছিল। এ প্রসঙ্গে জিয়ার এককালীন মন্ত্রী ও দ্বিতীয় জাতীয় সংসদের প্রভাবশালী সদস্য মওদুদ আহমদ লিখেছেন, ‘সাত্তারের প্রতি সেনাবাহিনীর সমর্থনের কারণে তাঁদের (সাত্তারের অনুসারীদের) পক্ষে ওই একগুঁয়ে মানসিকতা ও শক্তি প্রদর্শন সম্ভব হয়।’ (চলমান ইতিহাস, জীবনের কিছু সময়, কিছু কথা )

সে সময়ে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ে উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের দু’মাস পরই জেনারেল এরশাদ কয়েক জন জেনারেলকে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে মন্ত্রীদের ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন এবং এভাবে দেশ চলতে পারে না বলে বার্তাও দিয়েছিলেন। সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, বিচারপতি সাত্তারকে বার্তা দেয়ার পর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্র তৈরি করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ জেনারেল এরশাদ বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন। 

সামরিক শাসন জারির পরপরই তৎকালীন আওয়ামী লীগপন্থী দৈনিক বাংলার বাণী এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণকে সমর্থন দিয়েছিল। শেখ ফজলুল করিম সেলিম সম্পাদিত এই দৈনিকে মোনাজাতরত এক মহিলার ছবি ছাপা হয়। সামরিক আইন জারি হওয়ায় তিনি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছেন। তখন হয়তো আওয়ামী লীগ মনে করেছিল যে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি তো গেল, এটাই লাভ।

বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে জেনারেল এরশাদের নয় বছরের শাসনের পতন হলেও তিনি রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছেন। তিনি সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখলের পর জাতীয় পার্টি নামে দল গঠন করেন। তবে তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে অন্য সব দলের বিরোধীতার বিষয়টি ছিল তাঁর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। জেনারেল এরশাদের শাসনের সময় ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী আনা হয়।

১৯৮২ সালের সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতায় এসে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি। ক্ষমতা ছেড়ে দিলে দুর্নীতির মামলায় বিএনপি সরকারের আমলে জেল খাটেন তিনি। জেলে থেকেই রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই (রোববার) সকালে তিনি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে বাউন্ডারি ভেঙে চলে যায় বাস, নিহত ১

প্রকাশ: ০২:০৬ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে রাইদা পরিবহনের একটি বাস ঢুকে গেছে। এ ঘটনায় সিভিল এভিয়েশনের সিনিয়র একজন ইঞ্জিনিয়ার নিহত হয়েছেন।

আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে করেছেন।

নিহতের নাম মাইদুল ইসলাম সিদ্দিকী। তিনি সিভিল এভিয়েশনের সিনিয়র সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার।

বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক বলেন, ‘আজ সকাল ১০টার দিকে রাইদা পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তৃতীয় টার্মিনালের নিরাপত্তা বাউন্ডারি ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন সিভিল এভিশনের সিনিয়র সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মাইদুল ইসলাম। তার মোটরসাইকেলটি রাইদা পরিবহনের বাসে নিচে চলে যায়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, নিহতের মরদেহের সুরতহাল চলছে এখন। সুরতহাল শেষে নিয়ন্ত্রণ মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনায় জড়িত বাসচালক, হেলপার পালিয়ে গেছে। তবে বাসটিকে জব্দ করা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।


বিমানবন্দর   তৃতীয় টার্মিনাল   দূর্ঘটনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র স্বচ্ছতার সঙ্গে বাছাই করা হবে

প্রকাশ: ০১:৫৪ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেছেন, স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে। সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকার আরও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে চায়। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ায় যাতে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা যাতে অনুদানের জন্য বাছাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারেন, সরকার সেটিও নিশ্চিত করতে চায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাছাই কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

চলচ্চিত্রগুলোকে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা দেখে স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্যরা গোপনীয়ভাবে আলাদা আলাদা নম্বর দিয়েছেন। এ সময় চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্যরাও পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘সরকারি অনুদান দেওয়ার জন্য স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে চলচ্চিত্র বাছাইয়ের কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সামনে প্রস্তাবিত চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে অনুদান পাওয়ার জন্য আবেদন করা মোট ১৯৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা ৪৫টি চলচ্চিত্রের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে’।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাছাই কমিটির সদস্যরা আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত বিভিন্ন মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে আবেদন করা চলচ্চিত্রের প্রস্তাবনার উপর আলাদা আলাদাভাবে নম্বর দিয়েছেন। পরে সব সদস্যদের নম্বরগুলো গড় করে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া আবেদনগুলো অনুদানের জন্য বিবেচিত হবে। সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার স্বার্থে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে’। 

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, যুগ্ম সচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফফাত ফেরদৌস, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ ও আফসানা মিমি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ও পারফরম্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মতিন রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী চলচ্চিত্রের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র শিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মানবীয় মূল্যবোধসম্পন্ন জীবনমুখী, রুচিশীল ও শিল্পমানসমৃদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা, ২০২০ (সংশোধিত)–এর ভিত্তিতে সরকারি অনুদান দেওয়া হয়।


চলচ্চিত্র   সচিবালয়   তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়   প্রতিমন্ত্রী   মোহাম্মদ এ আরাফাত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মেলায় নজর কেড়েছে ৭৫০ কেজি ওজনের ষাঁড়

প্রকাশ: ১২:৪৬ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বয়স ৩ বছর, লম্বা ৯ ফুট, ওজন ৭৫০ কেজি। ব্রাজিলিয়ান গির জাতের বিশাল দেহের ষাঁড়টি সবার নজর কেড়েছে। জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মেলায় ষাঁড়টি প্রদর্শন করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১১টায় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল চত্বরে প্রদর্শনী ও সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন করা হয়। মেলায় ষাঁড়টি প্রদর্শন উদ্বোধন করেন জয়পুরহাটের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক সরকার মো. রায়হান। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে এবং প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম, আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র শহিদুল আলম চৌধুরী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেকুর রহমান। বক্তারা প্রাণিসম্পদের বিভিন্ন অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, প্রদর্শনীতে ৪০টি স্টল আছে। এর মধ্যে ব্রাজিলিয়ান গির জাতের ষাঁড়টি সবার নজর কেড়েছে। ষাঁড়টি মেপে ৭৫০ কেজি ওজন পাওয়া গেছে।

মেলায় ৪০টি স্টলে উন্নত জাতের বিভিন্ন প্রাণী, দুগ্ধজাত খাবার ও যন্ত্রাংশের ব্যবহার প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে ব্রাজিলিয়ান গির জাতের ষাঁড় অতিথি ও দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। ষাঁড়ের মালিক আক্কেলপুর পৌর শহরের হাস্তাবসন্তপুর মহল্লার জোবাইদ হোসেন। তিনি পেশায় পশুচিকিৎসক। ১৫ বছর ধরে তিনি এ পেশায় আছেন। এ পেশায় আসার আগে থেকে বাড়িতে বিভিন্ন জাতের গরু লালন-পালন করছেন।

জোবাইদ হোসেন বলেন, ‘এখন তার বাড়িতে বিদেশি জাতের তিনটি গরু আছে। এর মধ্য দুটি ষাঁড় ও একটি গাভি। ষাঁড় দুটির একটি ফ্রিজিয়ান জাতের, অন্যটি ব্রাজিলিয়ান গির জাতের। গাভিটি ব্রাজিলিয়ান গির জাতের। সেটিও এখন গর্ভবতী। তবে ব্রাজিলিয়ান গির জাতের ষাঁড় ও গাভির মায়ের জাত ছিল ভিন্ন। তাদের মায়ের জাত ছিল শাহিওয়াল। ব্রাজিলিয়ান গির জাতের বীজ সংগ্রহ করে শাহিওয়াল জাতের গাভিতে দেওয়া হয়। এতে শাহীওয়াল জাতের গাভি থেকে শতভাগ ব্রাজিলিয়ান গির জাতের বাছুর হয়েছে। ব্রাজিলিয়ান গির জাতের ষাঁড়ের বয়স তিন বছর। এ বয়সে ষাঁড়টি ৯ ফুট লম্বা। ষাঁড়ের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও স্কয়ার মেপে ওজন ৭৫০ কেজি পাওয়া গেছে’।

প্রতিবেশী শামীম হোসেন বলেন, ‘জোবাইদ অনেক আগে থেকে বাড়িতে বিদেশি গরু লালন-পালন করছেন। গরু লালন-পালন করতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে পশুচিকিৎসক হয়েছেন। তিনি নতুন নতুন জাতের বড় বড় গরু লালন–পালন করেন’।

জোবাইদ হোসেন বলেন, ‘ষাঁড়টি প্রতিদিন পাঁচ-সাত কেজি দানাদার খাবার, কাঁচা ঘাস ও খড় খায়। এতে প্রতিদিন ষাঁড়ের পেছনে ৫০০ টাকার মতো খরচ হয়। ব্রাজিলিয়ান গির জাতের গরুর দুধ ও মাংস বেশি হয়। এখন তাঁর ষাঁড়ের দাম আট লাখ টাকা হবে। তবে তিনি ষাঁড়টি এখনই বিক্রি করবেন না। এ ষাঁড় থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন। বীজ প্রজনন উন্নয়নের জন্য তিনি ষাঁড়টি লালন-পালন করছেন। খামারিদের এ জাতের গরু পালনে উদ্বুদ্ধ করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রদর্শনী মেলায় ষাঁড় এনেছিলেন। প্রদর্শনী মেলায় ব্রাজিলিয়ান ষাঁড়টি দেখে সবাই বিস্মিত হয়েছেন’।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কৃষির উন্নয়নে সমবায় পদ্ধতি চালু করা উচিত: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক সময় যারা নুন-ভাতের কথা বা ডাল ভাতের কথা চিন্তাও করতে পারত না, এখন তারা মাছ-মাংস ডিমের কথাও চিন্তা করে। ফলে যারা সরকারের সমালোচনা করেন তাদের সেগুলো মাথায় রেখে উন্নয়ন হয়েছে কি না তা বিবেচনা করতে হবে। 

আজ (শুক্রবার) সকালে কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষির উন্নয়নে সমবায় পদ্ধতি চালু করা উচিত। এটা করতে পারলে জীবনেও কোনো খাদ্যের অভাব হবে না।

সরকার বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার দেখানো পথে সমবায় কৃষি নিশ্চিত করা হলে দেশে কখনও খাদ্যের অভাব হবে না।

সরকারপ্রধান বলেন, অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হয়েছে বলেই দেশের মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, বরং মাছ-মাংসের দাম নিয়ে চিন্তা করে। যারা সমালোচনা করছেন তাদের এই বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিত। ৭৫ পরবর্তী সময়ে যারা ছিল, তাদের মূল আগ্রহ ছিল ব্যবসা করা বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীজ উৎপাদন বিএডিসিসহ নানা গবেষণা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো নানা সময়ে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই কৃষি গবেষণায় জোর দেয়। বীজ, মাছ, ধান, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন বাড়িয়ে বিদেশি নির্ভরতা কমিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। নিজেদের খাদ্য নিজেরাই উৎপাদন করবো। উদ্বৃত্ত থাকলে অন্যকে সাহায্য করবো। 


প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা   কৃষক লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মারা গেলেন জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস

প্রকাশ: ১১:৫৩ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার ও জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিবনারায়ণ দাস(৭৮) মারা গেছেন। 

শুক্রবার(১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের আইসিইউতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।  

শিবনারায়ণ দাসের জন্ম কুমিল্লায়। তার পিতা সতীশচন্দ্র দাস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। শিবনারায়ণ দাসের স্ত্রীর নাম গীতশ্রী চৌধুরী এবং তাদের সন্তান অর্ণব আদিত্য দাস। 

শিবনারায়ণ দাস ভাষাসৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন। তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও নেতা ছিলেন। ১৯৭০ সালের ৭ জুন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত ছাত্রদের এক কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অংশ গ্রহণের কথা ছিল। এ লক্ষ্যে ছাত্রদের নিয়ে একটি বাহিনী মতান্তরে 'ফেব্রুয়ারি-১৫ বাহিনী' গঠন করা হয়। ছাত্রনেতারা এই বাহিনীর একটি পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। 

এ লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ১০৮ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা আ স ম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমদ, মার্শাল মনিরুল ইসলাম পতাকার পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা স্বপন কুমার চৌধুরী, জগন্নাথ কলেজের ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাশ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সাধারণ সম্পাদক হাসানুল হক ইনু ও ছাত্রনেতা ইউসুফ সালাউদ্দিন। 

সভায় কাজী আরেফের প্রাথমিক প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে আলোচনা শেষে সবুজ জমিনের ওপর লাল সূর্যের মাঝে হলুদ রঙের বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কামরুল আলম খান তখন ঢাকা নিউমার্কেটের এক বিহারি দরজির দোকান থেকে বড় এক টুকরো সবুজ কাপড়ের মাঝে লাল একটি বৃত্ত সেলাই করে আনেন। 

এরপর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিতুমীর হলের ৩১২ নম্বর কক্ষের এনামুল হকের কাছ থেকে অ্যাটলাস নিয়ে ট্রেসিং পেপারে আঁকা হলো পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র। শিবনারায়ণ দাস পরিশেষে নিপুণ হাতে মানচিত্রটি এঁকে দেন লাল বৃত্তের মাঝে। পরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে পটুয়া কামরুল হাসান বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার নতুন রূপ দেন। 

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক শোকবার্তায় শিবনারায়ণ দাসের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।


জাতীয় পতাকা   নকশাকার   শিব নারায়ণ দাস   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন