বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এ বছরের ডিসেম্বরে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে যে রাজনৈতিক উত্তেজনা- তা অন্য দিকে মোড় নিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃত্বের আসনে বসেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন আবার পুরনো রূপে ফিরে গেছে। বাংলাদেশের রাজনীতির নীতিনির্ধারক এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মোড়ল হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র গত ২৪ মে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন এই নতুন ভিসানীতিতে বলেছেন, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য তারা নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছেন। এই ভিসানীতিতে ইমিগ্রেশন আইনের ২১২ ধারা প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। ২১২ ধারা অনুযায়ী, কোন দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে যদি কেউ অন্তরায় সৃষ্টি করে, যদি সুষ্ঠ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে বা নির্বাচনে অন্য উপায় অবলম্বনের চেষ্টায় সচেষ্ট থাকে- তাহলে তার ভিসা রহিত করা হবে এবং তাকে ভিসা দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অস্বীকৃতি জানাবে।
সাম্প্রতিক সময়ে নাইজেরিয়াতে এই নীতি প্রয়োগ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নাইজেরিয়াতে এই নীতি প্রয়োগ করা হয়েছিল নির্বাচনের পরে। কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচনের আগেই আগাম ঘোষণা দিয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হলো। এর ফলে যদি কোনো নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রশাসনের ব্যক্তি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সরকার বা বিরোধী দলের সদস্য কিংবা অন্য কেউ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে, তাহলে তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে এক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় পক্ষই এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসানীতি ঘোষণার পরদিনই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় আমন্ত্রিত হন আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ। সেখানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিকে আওয়ামী লীগ তাদের পক্ষে মনে করছে। এর ফলে বিএনপি’র জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসাত্মক আন্দোলন এবং নির্বাচনের প্রতিরোধের ডাক ভেস্তে গেল। অন্যদিকে বিএনপিও এটিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। তারা বলেছে, এর মধ্য দিয়ে সরকারকে একটি সতর্কবার্তা দেয়া হলো। তারা যেন আগামী নির্বাচন ২০১৪ মতো বা ২০১৮ মতো না করে। যেটিই হোক না কেন, এই নতুন ভিসানীতির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। এখন তারা রাজনৈতিক সমঝোতারও ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং তারা মনে করছে, শেষ পর্যন্ত সকল রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
নতুন ভিসানীতির ফলে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা অনেকটাই নিশ্চিত হবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন। কারণ প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কখনই চাইবেন না- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞায় তারা পড়ুন। আর এ কারণেই তাদের ভূমিকা হবে নিরপেক্ষ। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এই রকম একটি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করলেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হতে বাধ্য। এছাড়া এই ভিসানীতি রাজনৈতিক দলগুলোকেও সজাগ রাখবে এবং কোন রকম কারচুপি করা থেকে তারা কিছুটা হলেও বিরত থাকবে। এর ফলে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ তৈরি হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গতকালের প্রধান তিন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর- এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেফারির ভূমিকা পালন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বৈঠকই শেষ বৈঠক না, সামনের দিনগুলোতে আরও বৈঠক হতে পারে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও কিছু সতর্কবার্তা দিতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে একক মার্কিন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এর প্রভাব রাজনীতির ওপর ব্যাপকভাবে পড়বে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিভাবকত্ব বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে কতটুকু সংহত রাখবে- সেটিই দেখার বিষয়।
জাতীয় নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি রেফারি
মন্তব্য করুন
২০০৭ সাল। জাতিসংঘে বাংলাদেশস্থ আবাসিক প্রতিনিধি রেনাটা লক একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই চিঠিটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং এই চিঠির প্রেক্ষিতেই সেনাবাহিনীর তৎকালীন সময়ে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং নির্বাচন বিরোধী একটি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে, যার প্রেক্ষাপটে এক-এগারো এসেছিল।
পরবর্তীতে দেখা যায়, রেনাটা লক'র যে চিঠিটি প্রকাশিত হয়েছিল এবং যে চিঠি নিয়ে এক-এগারো’র সরকার আসার পথ তৈরি হয়েছিল, সেই চিঠিটি আসলে জাল করা এবং বিকৃত করা চিঠি। বান কি মুন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখার পক্ষে এবং সংঘাত, সহিংসতা পরিহার করার জন্য একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠিতে সেনাবাহিনীর বিষয়টিকে জালিয়াতি করে উপস্থাপন করা হয়েছিল এবং যার ফলে এক-এগারো আনা হয়েছিল। বাংলাদেশে এখন যখন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা- তখন বাংলাদেশ একটি গুজবের ফ্যাক্টরিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকম গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ সমস্ত গুজব কেউ কেউ ইদানিং বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। এরকম একটি গুজব হচ্ছে যে, শেষ পর্যন্ত যদি বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হয়- তাহলে যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করতে পারে। আর এই রকম গুজবটি নতুন ভিসা নীতির পর ডালপালা মেলতে শুরু করেছে।
কিন্তু এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রম এবং এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলেছে, কথা বলে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য যে, ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্য শান্তি মিশন গঠন করেছিল। শান্তি মিশন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এখন সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী শান্তি মিশনের বিভিন্ন দেশে ৮১ হাজার ৮শ’ ২৪ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের সদস্য সংখ্যা ৭ হাজার ২শ’ ৩৭ জন। বিশ্বে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণকারী দেশ। আর ১৯৮৮ সাল থেকে বাংলাদেশ যে শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করছে, শান্তিরক্ষা বাহিনীতে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি সদস্যরা সবচেয়ে চৌকষ এবং ভালো কর্মী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। এই জন্য বাংলাদেশ একাধিক পুরস্কারও পেয়েছে।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শান্তিরক্ষা মিশনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু জাতিসংঘের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশনে কোনো দেশকে নিষিদ্ধ করতে পারে না। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো নজির নেই। এমনকি যে নাইজেরিয়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- এখন বাংলাদেশের মতো ভিসানীতি আরোপ করেছে, সেই নাইজেরিয়ার সেনা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারাও শান্তিরক্ষা মিশনে আছে।
শান্তিরক্ষা মিশনে কোন কোন দেশের সদস্যরা অংশগ্রহণ করতে পারে?
শান্তিরক্ষা মিশনের চার্টারে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত যে কোন দেশ এটিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। আর এই শান্তিরক্ষা মিশনের কোন দেশে সৈন্য বাহিনী প্রেরণ করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সাধারণ পরিষদে অথবা নিরাপত্তা পরিষদে। অনেক সময় সাধারণ পরিষদে যদি শান্তিরক্ষা মিশনের কোনো দেশে শান্তিরক্ষা মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, সেটা নিরাপত্তা পরিষদে চূড়ান্তভাবে আলোচনা হয় এবং নিরাপত্তা পরিষদে যদি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়, তাহলে শান্তিরক্ষা মিশন সেখানে যায়। আবার কোন দেশ থেকে শান্তিরক্ষা মিশনের বাহিনী নেওয়া হবে, সেটিও নির্ধারিত হয় নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে।
নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি দেশ স্থায়ী সদস্য। তাদের ভেটো পাওয়ার রয়েছে। তাদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও রাশিয়া এবং চীন অন্যতম। আর এখন পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কোনো দেশের অংশগ্রহণ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে কখনো আলোচনা হয়নি বা এ নিয়ে কখনোই কোন দেশের উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি। বরং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি জাতিসংঘের প্রচলিত নীতির সঙ্গে সংঘর্ষিক। কারণ জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত একটি দেশকে শান্তিরক্ষা মিশনে অন্তর্ভুক্তি থেকে বারিত করে না, করতে পারে না। এটি জাতিসংঘের সার্বজনীন নীতির পরিপন্থী। তাই যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে শুধু বাংলাদেশ নয়, কোনো দেশেরই শান্তিরক্ষা মিশনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে না। এই এখতিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের নাই। এরকম যদি কোনো প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র আনেও সেটি নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা হতে হবে এবং নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতভাবে যদি গৃহীত হয়, তাহলেই সে রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিন্তু বৈশ্বিক বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনলে রাশিয়া এবং চীন যে চুপচাপ বসে থাকবে না বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি স্রেফ গুজব এবং আতঙ্ক ছড়ানোর অপকৌশল। এ রকম অনেক গুজবই এখন ছড়ানো হচ্ছে, যেন সরকারকে কোণঠাসা করা হয়। জনমনে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি এবং আতঙ্ক তৈরি করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এর কোনো আইনগত বা নিয়মতান্ত্রিক ভিত্তি নেই।
যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশন বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও বৈশ্বিক পরিস্থিতির যে অবস্থা, সেই বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান ভালো বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। শুক্রবার (২ জুন) বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজের মত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের দিকে তাকালে দেখতে পারবেন বৈশ্বিক অবস্থাটা কী, আর আমাদের অবস্থাটা কী। প্রধানমন্ত্রী সাশ্রয়ী হওয়ার কথা বলেছেন। আমরা মানুষের এই অবস্থা দেখে এক কোটি পরিবারকে খাদ্যশস্য সহায়তা দিয়ে আসছি।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাজারে যদি দাম বেশি হয়, তাহলে তার প্রভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। আমরা লক্ষ্য রাখছি স্থানীয় হোক, আর আমদানি পণ্য হোক, আমরা চেষ্টা করছি যাতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। আমরা সমস্যা রাতারাতি শেষ করতে পারছি, তা কিন্তু নয়। কোথাও কোথাও সমস্যা আছে। কিছু মধ্যস্বত্বভোগী সুবিধা নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, আমরা এক কোটি পরিবারকে সেগুলো দেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে করে পাঁচ কোটি মানুষ উপকার পাচ্ছে। বিভিন্নভাবে আমরা চেষ্টা করছি। বৈশ্বিক পরিস্থিতির যে অবস্থা, তা বিবেচনা করলে আমাদের অবস্থান ভালো আছে বলে মনে করি।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা।
মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে। আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাজেট নিত্যপণ্য মূল্য
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রাম-১০ আসন এমপি ডা. আফছারুল আমীন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১৪ বছরে দেশে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। শুক্রবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার সবসময় দরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে বাজেট দেয়। এবারো এর ব্যাতিক্রম হয়নি। গত ১৪ বছরে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। এর আগে আমরা পত্রপত্রিকায় প্রায় দেখতাম মঙ্গাকবলিত এলাকায় মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচনে আমাদের সরকার এবারের বাজেটেও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। এ বছরও দারিদ্র্য বিমোচনে ১ কোটি পরিবারকে ১৫ টাকা দরে চাল দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয় টিসিবির মাধ্যমে ১ কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য দেওয়া হচ্ছে।’
এছাড়া কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবসময় আমরা মানুষের কথা চিন্তা করেই দিই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত রয়েছেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা।
মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে। আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বাজেট
মন্তব্য করুন
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত বাজেটকে গণমুখী ও গরিববান্ধব বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একইসাথে তিনি বলেন, ‘বাজেটের সমালোচকদের সমালোচনা বরাবরের মতোই গৎবাঁধা ও গতানুগতিক। অনেকে বাজেট ভালোভাবে না দেখেই তাড়াহুড়া করে সমালোচনায় ব্যস্ত।’
শুক্রবার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৫তম বাজেট এবং প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০তম এই বাজেট ২০০৮-৯ সালের তুলনায় প্রায় নয়গুণ বড় এবং পিপিপিতে (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি) ২০০৯ সালের একশ বিলিয়ন ডলার জিডিপির তুলনায় এখনকার জিডিপি এক ট্রিলিয়ন প্লাস ডলার, অর্থাৎ প্রায় দশগুণ বড়, যা নি:সন্দেহে দেশের অগ্রগতি সমৃদ্ধির পরিচায়ক।’
বিশ্বময় মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকটের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে শৈথিল্য আসায় বাজেট প্রণয়ন বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো তারপরও এবারের বাজেট গত বছরের তুলনায় প্রায় ১ লক্ষ হাজার কোটি টাকা বেশি, বলেন তথ্যমন্ত্রী। প্রস্তাবিত এ বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট বাজেটের ১৬.১৮ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরো মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আনার এবং এ খাতে বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই বাজেটের সবচেয়ে বড় উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, এই অর্থ বছরেই প্রথম সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত। কোনো রাজনৈতিক দল এ ধরণের সার্বজনীন পেনশন চালুর প্রস্তাব দেয়নি। আপনারা বিএনপির দাবি-দাওয়া জানেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, তার ও তারেক জিয়ার শাস্তি-মুক্তির বাইরে জনমানুষ নিয়ে তাদের কোনো দাবি থাকে না।’
১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সের যে কেউ দশ বছরের জন্যে চাঁদা দিয়ে পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চাশের বেশি বয়স হলেও দশ বছর চাঁদা দিয়ে পেনশনের সুযোগও রয়েছে।’
‘বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন’
আয়কর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের কর ও জিডিপি'র অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। গত ১৪ বছরে দেশের জিডিপি প্রায় দশগুণ, বাজেট প্রায় নয়গুণ বৃদ্ধি পেলেও আয়কর দেওয়ার হার বেড়েছে মাত্র ৩ গুণ। ২০০৯ সালে ১১ লক্ষ মানুষ আয়কর দিতো,
গত বছর ২৯ লক্ষ মানুষ আয়কর দিয়েছে। অথচ দেশে অন্তত ২ কোটি মানুষ আয়কর দিতে সক্ষম। কিন্তু মানুষ কর দেয় না। তাই করের আওতা বাড়ানো অযৌক্তিক নয়।’
‘বাজেট বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর নয়’
‘আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে এ বাজেট লুটপাটের’- বিএনপির এমন সমালোচনা খন্ডন করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট দিতে প্রতিবার বাজেটের আগে প্যারিস কনসোর্টিয়ামে ছুটে যেতেন সাহায্যের জন্যে। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজেট কোনভাবেই বিদেশি সাহায্য নির্ভর নয়। এ বাজেটে ১ লক্ষ কোটি টাকার কিছু বেশি বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে। বিএনপি লুটপাটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, তারা পরপর পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল। তাদের মুখে লুটপাটের অভিযোগ শুনলে হাসি পায়।’
‘পান্ডিত্য ফলাতে গিয়েই সিপিডির সমালোচনা’
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি বাজেটকে বাস্তববিবর্জিত বলেছে- এ নিয়ে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘গত ১৪ বছরে সিপিডি বাজেটের প্রশংসা করতে পারেনি। এবছর তো বাজেট প্রস্তাব অধিবেশন চলমান থাকা অবস্থায়ই তারা বলেছে, এই বাজেট উচ্চাভিলাষী, বাজেট বাস্তবায়ন হবে না।’
অথচ বাংলাদেশের বাজেট বাস্তবায়নের গড় হার ৯৭ শতাংশ। ডলারের মূল্য না বাড়লে আমাদের মাথাপিছু আয় তিন হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতো। এ সময় দেশের জিডিপি বেড়েছে, দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে কমে ১৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এগুলো তাদের চোখে পড়ে না। আসলে সিপিডিকে তাদের পান্ডিত্য দেখাতে হয় এবং ভুল ধরাটাই তাদের পেশা। এভাবেই তারা নানা জায়গা থেকে ফান্ড পায়। এ কারণেই তারা প্রশংসা করতে পারে না।’
ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের চলতি বাজেট নিয়ে সমালোচনার প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকবে, ইতিবাচক সমালোচনাকে আমরা সব সময় স্বাগত জানাই।’
তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বাজেট
মন্তব্য করুন
২০০৭ সাল। জাতিসংঘে বাংলাদেশস্থ আবাসিক প্রতিনিধি রেনাটা লক একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই চিঠিটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং এই চিঠির প্রেক্ষিতেই সেনাবাহিনীর তৎকালীন সময়ে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং নির্বাচন বিরোধী একটি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে, যার প্রেক্ষাপটে এক-এগারো এসেছিল।
০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত বাজেটকে গণমুখী ও গরিববান্ধব বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একইসাথে তিনি বলেন, ‘বাজেটের সমালোচকদের সমালোচনা বরাবরের মতোই গৎবাঁধা ও গতানুগতিক। অনেকে বাজেট ভালোভাবে না দেখেই তাড়াহুড়া করে সমালোচনায় ব্যস্ত।’