ইনসাইড বাংলাদেশ

বাজারে বাজেটের প্রভাব, নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে

প্রকাশ: ০৮:২৯ এএম, ০৩ জুন, ২০২৩


Thumbnail

বাজেটের আগেই যে চড়া দামে নিত্যপণ্য কিনতে হয়েছে এখন তা বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দরে। গতকাল রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে বেশির ভাগ পণ্যের দামই ছিল ঊর্ধ্বমুখী। যদিও ক্রেতাদের দাবি, বাজেট ঘোষণার কয়েক মাস আগে থেকেই নিত্যপণ্যের বাজার চড়া।

রাজধানীর রায়েরবাগ শনিরআখড়া কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজেট ঘোষণার পরের দিন গতকাল নিত্যপণ্যের বাজার আগের চেয়ে আরও অস্থিতিশীল।

সম্প্রতি উত্তাপ ছড়ানো মসলাজাতীয় পণ্য পিঁয়াজ ও আদার দাম এখনো চড়া। বাজারে প্রতি কেজি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা এবং আদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। তাছাড়া প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়। একই সঙ্গে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরেই।

মানভেদে প্রতি কেজি সবজি কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধন্দুল ৬০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লাউ প্রতি পিস আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এদিকে সরকার চিনির দাম বেঁধে দিলেও এখনো তার প্রভাব নেই বাজারে। বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বেশি হওয়ায় নির্ধারিত দামে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। ডিমের দাম আগের মতোই চড়া। প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। এ ছাড়া সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায়।

অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায়।

মাছের বাজারে দেখা যায়, আকারভেদে প্রতি কেজি শিং মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৭০-২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, রুই ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজেট ঘোষণায় বাজারে নিত্যপণ্যের দামে কেমন প্রভাব পড়তে পারে জানতে চাইলে শনিরআখড়া কাঁচাবাজারের বিক্রেতা হানিফ মাহমুদ বলেন, নিত্য জিনিসের দাম যা বাড়ার আগেই বেড়েছে। বাজেট এখানে কোনো বিষয় নয়। তবে মনে হচ্ছে দফায় দফায় দাম আরও বাড়বে।

চট্টগ্রামে স্থিতিশীল কাঁচাবাজার : বাজেট ঘোষণা হওয়ার আগে থেকেই বাজার স্থিতিশীল। মুরগির দাম ১০ টাকা বাড়লেও অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে স্বাভাবিক। নগরের কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি মুরগি কেজি ৬৩০ টাকা, ব্রয়লার ২১০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা করে। আশপাশে কয়েকটি দোকানে ঘুরে মিলল একই চিত্র। এ ছাড়াও ব্রয়লার মুরগির ডিম ডজন ১৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়।

কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁপে কেজি ৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, শিম ১৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ফুলকপি ১৪০ টাকা ও শসা ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভুরুঙ্গামারী থেকে নিখোঁজ হওয়া ২ স্কুলছাত্র গাজীপুর থেকে উদ্ধার

প্রকাশ: ০৪:৩৫ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থেকে নিখোঁজ হওয়া দুই স্কুলছাত্রকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

 

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাটেশ্বরী বরকতিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আইয়ুব আলী (১৩) ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র নিরব (১১) বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে যাবার পথে নিখোঁজ হয়। তারা পরস্পর চাচাতো ভাই এবং আন্ধারীঝাড়ের বারুইটারী গ্রামের বাসিন্দা। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিবারের পক্ষ থেকে ভূরুঙ্গামারী থানায় নিখোঁজের জিডি এন্ট্রি করা হয়।

 

আইয়ুব আলীর চাচা মাইদুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় জিডি করার পর রাতে অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে নিখোঁজ ছেলে দুটিকে উদ্ধারের খবর জানানো হয়। বর্তমান ছেলে দুটি গাজীপুরের কোনা বাড়িতে তাদের চাচা মোকছেদুলের বাড়িতে রয়েছে। শনিবার সকালে ছেলে দুটিকে আনার জন্য আইয়ুব আলীর ফুফা গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। 

 

ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, এ ব্যাপারে ভূরুঙ্গামারী থানায় নিখোঁজের বিষয়ে জিডি এন্ট্রি করা হয়েছে। পরে ছেলে দু’টিকে পাওয়া গেছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই নিখোঁজ হবার প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।


কুড়িগ্রাম   নিখোঁজ   উদ্বার   গাজীপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পটুয়াখালী থেকে বিএনপির রোডমার্চ পিরোজপুরের পথে

প্রকাশ: ০৪:৩১ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

সরকার পতনের একদফা দাবিতে পটুয়াখালী থেকে বরিশাল অভিমুখে রোডমার্চ শুরু করেছে জেলা বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় জেলার কৃষি অবতরণ বিমানবন্দর থেকে উদ্বোধনী সমাবেশের মাধ্যমে এ রোডমার্চ শুরু হয়।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়ার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হাংশু সরকার কুট্টি।

এই রোডমার্চে পটুয়াখালী থেকে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে হাজার হাজার দলীয় নেতাকর্মীরা যোগ দিয়েছেন। রোডমার্চ পায়রা ব্রিজ, বাকেরগঞ্জ পার হয়ে বরিশালের দিকে এগিয়ে যাবে।

পরে পিরোজপুরে রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে বক্তব্য রাখবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও নজরুল ইসলাম খান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মজিবুর রহমান সওরায়ার সহ বিএনপির নেতারা।

এদিকে পটুয়াখালী থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী রোডমার্চে অংশ নিয়েছেন। নেতাকর্মীরা জানান, বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে তাদের এই কর্মসূচি।


পটুয়াখালী   রোডমার্চ   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনের আগে ৫২ হাজার সাউন্ড গ্রেনেড কিনবে পুলিশ

প্রকাশ: ০৪:০৩ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

রাসায়নিকযুক্ত মাল্টি ইমপ্যাক্ট টিয়ার শেল ও ফ্ল্যাশ ব্যাং গ্রেনেডসহ ৫২ হাজার সাউন্ড গ্রেনেড কিনতে দরপত্র আহ্বান করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। একে রুটিন কেনাকাটা বলছে পুলিশ। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতেই কেনা হচ্ছে এসব সরঞ্জাম। 

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি টেলিভিশনের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

জানা গেছে, এক চিঠিতে তিনটি প্যাকেজে এ দরপত্র আহ্বান করে পুলিশ সদর দপ্তর। এর মধ্যে প্রথম প্যাকেজে কেনা হবে ৩০ হাজার সাউন্ড গ্রেনেড। যার দাম ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজে একই মূল্যে কেনা হবে ১৫ হাজার মাল্টি ইমপ্যাক্ট টিয়ার গ্যাস গ্রেনেড। 

আর তৃতীয় প্যাকেজে ৭ হাজার ফ্ল্যাশ ব্যাং গ্রেনেড কেনা হবে, যার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পিআর বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যে কেনাকাটা হচ্ছে, এগুলো আমাদের নিয়মিত ক্রয়প্রক্রিয়ার অংশ। এগুলো আগেও কেনা হয়েছে’।

এদিকে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচন সামনে রেখে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থা মোকাবিলায় প্রশাসন বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিচ্ছে।

ঋণপত্র খোলার ১২০ দিনের মধ্যে এসব প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বাংলাদেশ পুলিশের কাছে সরবরাহ করবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।

নির্বাচন   সাউন্ড গ্রেনেড   পুলিশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আগামী নির্বাচনে জামায়াতের ভূমিকা ভারতের জন্য কী বার্তা দেয়?

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

চলতি বছরের ১৪ আগস্ট কারাবাসে মৃত্যুবরণ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন তিনি।

এক দশক আগে বাংলাদেশের স্থানীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছিল। এই রায় ঘোষণার পর দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভে শতাধিক মানুষ মারা যায়। বিবিসি জানায়, নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছিল। কোন কোন জেলায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়বে তা তারা অনুমান করতে পারেনি।

এক বছর পর বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে।

সাঈদী বেঁচে থাকার সময় জামায়াতে ইসলামী শক্তি দেখিয়েছে। তবে, গত মাসে তার প্রয়াণ ঘটে অনেকটা নিঃশব্দে। সরকার ঢাকায় তার জানাজার অনুমতি দেয়নি এবং জামায়াতের নেতৃত্ব কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিল, যা ৮৩ বছর বয়সী নেতার শেষ নিশ্বাস ত্যাগে হাসপাতালে জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষুব্ধ করেছিল।

প্রতিবাদে, তারা নেতার মৃতদেহ দাফন করার জন্য তার গ্রামে নিয়ে যাওয়া গাড়ির একটি টায়ার পাংচার করে দেয়। তবে পরিস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়েছিল। এটা স্পষ্ট যে, জামায়াতের বিদ্যমান নেতৃত্ব রাজধানীতে সাঈদীর জানাজা আয়োজন করে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করতে চায়নি।

নেতার মৃত্যুতে মৃদু প্রতিক্রিয়া তৃণমূল পর্যায়ের সমর্থকদের কাছে জামায়াতের নেতৃত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। কারণ সাঈদী ছিলেন সংগঠনের মধ্যে সবচেয়ে খ্যাতিমান ও জনপ্রিয় নেতা।

তদুপরি, দলটি তার রেজিমেন্টেড প্রকৃতির জন্য পরিচিত। জামায়াত একটি ইসলামি দল। এটির একটি তিন-স্তরের সদস্যপদ প্রক্রিয়া রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ভিন্নমত শুধু দলীয় ফোরামেই প্রকাশ করা হতো।

যা হোক, সাঈদীর মৃত্যুতে জামায়াত নেতৃত্বের এই নিঃশব্দ প্রতিক্রিয়া আশ্চর্যজনক। কারণ সাঈদী একজন ইসলামি ধর্মপ্রচারক-রাজনীতিবিদ। ১৯৭১ সালে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে তিনি বেশ প্রশংসা অর্জন করেছিলেন।

সাঈদীর বিচার শুরুর পেছনে জনমত গঠনে বড় ভূমিকা ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। সেই ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে এবং এর জন্য তাদেরকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।

জামায়াতকে বাংলাদেশে একটি শক্তি হিসেবে গণনা করা হচ্ছে এবং দিন দিন দলটি আরও শক্তিশালী হচ্ছে, যা ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত।

এটা সত্য যে, রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দলটি এখনো শেষ হয়ে যায়নি। দলটির ২৩ হাজারের বেশি কর্মী মামলার সম্মুখীন এবং দলের বর্তমান শীর্ষ নেতাসহ অন্তত ৯০ হাজার কর্মী কারাগারে। বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে দলটি। জামায়াতে ইসলামী এই মুহূর্তে রাজপথে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলার মতো অবস্থানে নেই।

চলতি বছরের জুনে রাজধানী ঢাকায় জামায়াতকে একটি জনসভা করার অনুমতি দেওয়া হয়। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটি ছিল দলটির প্রথম কোনো সমাবেশ। যে বিরল উদারতায় জামায়াতকে জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সে উদারতার আর পুনরাবৃত্তি করেনি সরকার। সেই সমাবেশের দুদিন পর বেনামী গোয়েন্দা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় একটি সংবাদপত্র জানায়, দেশে এই মুহূর্তে জামায়াতের প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ সক্রিয় সদস্য রয়েছে।

এই সংখ্যাটি অত্যন্ত অতিরঞ্জিত বলেই মনে হয়, কারণ দলটিকে দীর্ঘদিন কোনো মুক্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশের হাইকোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, দলটির মূলনীতি দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।

প্রভাব পড়ছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায়:

বাংলাদেশে যে কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা থেকে কার্যকরভাবে বিরত রাখা হয়েছে জামায়াতকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার দায়ে দলটির প্রায় সকল প্রধান নেতার হয় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে অথবা তারা কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন।

আন্ডারগ্রাউন্ডে নিক্ষিপ্ত এবং গণমাধ্যমের ওপর সরকারের বিভিন্ন ধরনের চাপে, জামায়াতের কর্মসূচির খবর জাতীয় পত্রিকায় আসে না। দলটির আর্থিক অবস্থাও বিপর্যস্ত। সবমিলে দলটি এখন কঙ্কাল।

বাংলাদেশে ১২ কোটির কাছাকাছি ভোটার রয়েছে। নির্বাচনী জোট ছাড়া জামায়াত এখানে কার্যকর কোনো ফলাফল পাবে না।

জামায়াত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সঙ্গে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী জোটে ছিল। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান এখন জোটটির নেতৃত্বে রয়েছেন। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনী জোটের সরকারে দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পেয়েছিল জামায়াত।

যদিও জামায়াত এখন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে নেই। তবে আগামী নির্বাচনে বিএনপি আবারও জামায়াতের ভোট তাদের পক্ষে পেতে চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা আবারও জামায়াতকে নির্বাচনী জোটে আমন্ত্রণ জানাতে পারে।

বৈদেশিক সম্পর্ক:

বাংলাদেশের বৃহত্তম ইসলামি দল জামায়াতকে নিয়ে ভারতের উদ্বেগ দূর করতে চায় বিএনপিও। বিএনপি সে জন্য জামায়াত থেকে আপাতত নিজেকে দূরে রাখতে চাইছে। কারণ, বাংলাদেশের বৃহত্তর প্রতিবেশীর কাছে জামায়াত একটি রেড ফ্লাগ।

বিষয়টির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য। রাজ্যগুলো কার্যত বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের দ্বারা স্থলবেষ্টিত এবং শুধু ১০-১২ মাইল-চওড়া ছোট শিলিগুড়ি করিডোর (চিকেন নেক) দিয়ে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত। এক সময়ের বিদ্রোহপ্রবণ এই রাজ্যগুলো ভারতবিরোধী বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদের ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে আওয়ামী লীগ।

বাংলাদেশে যে কোনো নির্বাচনী পরিবর্তন, যা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারে তা ভারতের চিন্তার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রয়েছে পঞ্চম দীর্ঘতম স্থল সীমান্ত।

বিএনপি চায় না আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করতে পারুক যেখানে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সে সময় বৈদেশিক চাপ থেকে টিকে গিয়েছিল আওয়ামী লীগ। বিএনপি চায় না আওয়ামী লীগ এমন কোনো অজুহাত খুঁজে পাক যেটা দিয়ে ২০১৪ সালের মতো আবারও তারা বিশ্বের সমর্থন অর্জন করবে। আর এটা নিশ্চিত করতেই জামায়াত থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে বিএনপি।

অনেকে ধারণা করছেন, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ‘একধরনের সমঝোতায়’ যেতে পারে জামায়াত। যদিও সাম্প্রতিক ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের পক্ষে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের ওপর আস্থা রাখা কঠিন– তবে এটা একেবারেই যে অসম্ভব, তা নয়।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে জামায়াত। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি একটি নতুন রাজনৈতিক দল যা অনেকের ধারণা ছদ্মবেশে জামায়াত।

কিন্তু অন্তর্ভুক্তিমূলক নয় বা অধিকাংশ প্রধান রাজনৈতিক দল বর্জন করছে এমন যে কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ জামায়াতে বিভক্তিও নিয়ে আসতে পারে।

এই মুহূর্তে জামায়াতের এমন কোনো বড় গণসংগঠন নেই যেখান থেকে দলটি নতুন সদস্য সংগ্রহ করতে পারে। ফলে জামায়াত বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। ভারতের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি ঢাকার চলমান শাসনকে কিছুটা শ্বাস ফেলার জায়গা দিতে পারে এবং জামায়াতকে কিছুটা খড়কুটো জোগাতে পারে। আর সেই চুক্তিটি হবে আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে জামায়াত নেতাদের অংশগ্রহণ।

এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য একটি ন্যায্য, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। আগামী বছরের জানুয়ারিতে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে যে দল ক্ষমতায় আসবে তারা ভারতের নিরাপত্তার উদ্বেগগুলোকে সম্মান করবে তা নিশ্চিত করার জন্য ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশের সব প্রধান রাজনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।

ভারত ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিকভাবে জড়িত এবং অবশ্যই এই ভবিষ্যৎ হতে হবে গণতান্ত্রিক।

কার্টেসি: কালবেলা

নির্বাচন   জামায়াত   ভারত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ছেলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলে করবে, তাতে কিছু আসে যায় না: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০২:৪২ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ছেলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলে করবে, তাতে কিছু আসে যায় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, আমার ছেলেও এখানে আছে। সে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, বিয়ে করেছে, তার মেয়ে আছে, সম্পত্তি আছে, বাড়িঘর আছে। যদি বাতিল করে, করবে। তাতে কিছু আসে যায় না। আমাদের বাংলাদেশ তো আছেই।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আওয়ামী লীগেরও চাওয়া। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি বাংলাদেশের বাইরে থেকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে এই দেশের জনগণ ওই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেবে।

তিনি বলেন, মার্কিন ভিসানীতি প্রয়োগের ঘোষণায় বিরোধীদের কথাও বলা হয়েছে। এবার বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও করতে পারবে না। এতে জনগণের জীবন বাঁচবে।

সরকারপ্রধান বলেন, কে নিষেধাজ্ঞা দিল আর কে দিল না, তাতে কিছু যায় আসে না। আমার ছেলেও এখানে আছে। সে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, বিয়ে করেছে, তার মেয়ে আছে, সম্পত্তি আছে, বাড়িঘর আছে। যদি বাতিল করে, করবে। তাতে কিছু আসে যায় না। আমাদের বাংলাদেশ তো আছেই।

তিনি বলেন, যারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন আছে। ভিসানীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে টার্গেট করলে কিছু বলার নেই। কারও শক্তিতে বিশ্বাস করে ক্ষমতায় আসিনি। জনগণের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় এসেছি এবং আছি।

তিনি আরও বলেন, যদি তারা শুধু আওয়ামী লীগকে টার্গেট করে থাকে, তা হলে আমার কিছু বলার নেই। তবে মনে রাখতে হবে আমি কিন্তু কারও শক্তিতে ক্ষমতায় আসিনি। আমি ক্ষমতায় এসেছি জনগণের শক্তিতে।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে কথা বলছে, ২০০১ কিংবা সামরিক শাসকদের নির্বাচনের সময় তারা কোথায় ছিল? 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা, মানুষের মধ্যে ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা— এগুলো আমরা করেছি। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’— এই স্লোগান তো আমারই দেওয়া। ভোট ও ভাতের অধিকারের আন্দোলন তো আমরাই করেছি।

সরকারপ্রধান সাফ জানিয়ে দেন, ক্ষমতায় আসতে হলে নির্বাচনই একমাত্র পথ। গোলমাল করে অবৈধভাবে আসতে চাইলে শাস্তি ভোগ করতে হবে। 

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে দেওয়া ওয়াদা রক্ষা করে। বিএনপি-জামায়াত আমলের মতো দুর্নীতি হচ্ছে না বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে জানান, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া যারা বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাদানকারী ব্যক্তি ও সহায়তাকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে— আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন