নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫১ পিএম, ১৮ জুন, ২০২১
গত বছরের ৫ এপ্রিল সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। তখন থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত শেরপুরের করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু চলতি জুন মাস থেকে প্রতিদিনই ভাঙ্গছে করোনা শনাক্তের সকল রেকর্ড। সার্বিক বিবেচনায় চলতি জুন মাসে ভয়ংকর হয়ে উঠছে সদরের করোনা পরিস্থিতি। এ নিয়ে সদর উপজেলার সর্বত্র আতংক বিরাজ করছে।
শেরপুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, করোনা শুরুর পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ছিল শেরপুর জেলায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। এই দিন শেরপুর জেলায় ৪৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ৪৯ জনের মধ্যে শেরপুর সদর উপজেলাতেই রয়েছে ৪৮ জন। ওই দিন করোনায় পৌর এলাকায় এক তরুণীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এর আগের দিন বুধবার (১৬ জুন) ২৫ জন আক্রান্তের মধ্যে সদর উপজেলার ২০ জন। ১৪ জুন মোট আক্রান্ত ২৫ জনের মধ্যে ২৩ জন সদর উপজেলার। গত ১ জুন থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৩ জন। সূত্র মতে, এই ২৫৩ জনের মধ্যে ১৯৩ জনের বাড়ি সদর উপজেলায়। তবে মে মাসে জেলায় মোট আক্রান্ত ছিল ৬৮ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলার আক্রান্ত ছিলেন ১৯ জন। এপ্রিলে এই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯ জন। যার মধ্যে শেরপুর সদরের ১৭ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গত মে মাসে জেলায় পরীক্ষা করতে আসাদের মধ্যে আক্রান্তের শতকরা হার ছিল ১১.৪। আর এ মাসের ১৭ দিনেই ওই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ২১.৭ ভাগ। জুন মাসের মোট আক্রান্ত হিসাবের বিবেচনায় সদর উপজেলাতে (উপজেলা ভিত্তিক) শতকরা ৭৬.২৮ ভাগ। সব মিলিয়ে শেরপুর সদরের করোনা পরিস্থিতি নাজুকের দিকে বলে মনে করে সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালে অন্য রোগের কারণে ভর্তি হওয়া রোগীদের পরীক্ষা করলেই পাওয়া যাচ্ছে করোনার অস্তিত্ব।শেরপুরের পুলিশ, ব্যাংক, নিবন্ধন অফিসের বেশ কিছু কর্মকর্তা কর্মচারীর শরীরে মিলেছে করোনার অস্তিত্ব। আক্রান্ত হয়েছেন এখানের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক। এর প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি সরকারি অফিস লিখিত আদেশ জারি করেছে অফিসের সবার করোনা পরীক্ষা নিশ্চিত করতে।
সব মিলিয়ে শেরপুরের সর্বত্র করোনা আতংক বিরাজ করছে। করোনা ঊর্ধ্বগতি রোধে জেলা প্রশাসন গত ১১ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত শুধু পৌর অঞ্চলে নয় দফা বিধি-নিষেধে জারি করেছে। প্রশাসনে কিছুটা তৎপরতা থাকলেও ওই বিধি-নিষেধ মানার প্রবণতা তেমন লক্ষ্য করা যায়নি।
হঠাৎ শেরপুরে করোনা ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, স্বাস্থ্য বিধি না মানা ও পরীক্ষা না করার প্রবণতা। এখনই এর প্রতিকার না করলে জেলাজুড়েই অবস্থা ভয়াবহ হতে পারে। দ্রুত করণীয়র মধ্যে রয়েছে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলোর সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করা ও সদর উপজেলার মানুষের সাথে অন্যান্য উপজেলার যোগাযোগ সীমিত করা।
সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোবারক হোসেন বলেন, শেরপুর সদরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। সময় চলে গেলে নিয়ন্ত্রণ হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।
জেলা সিভিল সার্জন একেএম আনওয়ারুর রউফ বলেছেন, পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলায় একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। লকডাউনের কথা স্বীকার না করলেও সর্বসম্মতি ক্রমে যা ভাল তা করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলার এই শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।