ইনসাইড ইকোনমি

কয়লা মাপার যন্ত্র নেই, রাজস্ব ফাঁকি

প্রকাশ: ০৪:৫৭ পিএম, ১২ জানুয়ারী, ২০২২


Thumbnail কয়লা মাপার যন্ত্র নেই, রাজস্ব ফাঁকি

আগের মতোই চলছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের দুই স্থলবন্দর। ওজন মাপার যন্ত্র নেই। চোখের আন্দাজ আর ভারতীয় শুল্ক বিভাগ থেকে লিখে দেওয়া ওজনকে সত্য মেনে রাজস্ব আদায় করেন বাংলাদেশের শুল্ক কর্মকর্তারা। ফলে রাজস্ব ফাঁকির পুরনো অভিযোগ থেকে বের হতে পারছে না এই দুই বন্দর।

এই দুই স্থলবন্দরের মধ্যে গোবরাকুড়া বড়। ছোট বন্দরটি কড়ইতলি। এক বছর আগে এই দুই বন্দর সরেজমিন ঘুরে যে চিত্র দেখা গেছে তা থেকে বের হতে পারেনি বন্দর দুটি।

গোবরাকুড়া বন্দর দিয়ে গত বছর কয়লা আমদানি করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৮০৬ টন। রাজস্ব আদায় হয়েছে সাত কোটি ৭৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা। অভিযোগ আছে, কয়লা আমদানিকারক আর শুল্ক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এই সময়ে সোয়া পাঁচ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়।

কিভাবে এই ফাঁকির ঘটনা ঘটে, জানতে চাইলে বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রতিটি ট্রাকে ২০-২২ টন কয়লা ভারত থেকে আসে। কিন্তু শুল্ক আদায় হয় গড়ে প্রতি ট্রাকে ১২ টন কয়লা ধরে। এতে আমদানিকারক প্রতিটি ট্রাকে প্রায় আট টন কয়লার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন। টাকার অঙ্কে তা ১৭ হাজার ৩২২ টাকা।

এই একই প্রক্রিয়ায় চলছে আট মাইল দূরে অবস্থিত কড়ইতলি বন্দর। গত বছর এই বন্দর দিয়ে কয়লা এসেছে ২৩ হাজার টন। এখানেও প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ আছে। এতে বেশি লাভবান হচ্ছেন এই বন্দর দিয়ে কয়লা নিয়ে আসা ব্যবসায়ীরা।

প্রতিদ্বন্দ্বী কয়লা ব্যবসায়ীদের দাবি, শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ পাওয়ায় এই দুই স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা কয়লা কিছুটা কম দামে বিক্রি করে দ্রুত লাভবান হচ্ছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। এতে বিপদে পড়ছেন যথাযথ শুল্ক দিয়ে অন্য স্থলবন্দর ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা কয়লা ব্যবসায়ীরা। আবার মান দেখার সুযোগ না থাকায় নিম্ন মানের কয়লাও ঢুকছে এই দু্ই বন্দর দিয়ে। মূলত ইটভাটায় এসব কয়লা ব্যবহার করা হয়। 

সম্প্রতি গোবরাকুড়া বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, ভারত থেকে কয়লা নিয়ে ঢুকছে একটার পর একটা ট্রাক। প্রবেশপথে দায়িত্বরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা ট্রাকে কোনো অবৈধ মালপত্র আছে কি না, তা তল্লাশি করে দেখছেন। এরপর কয়লার চালানের কাগজপত্র দায়িত্বরত কাস্টমস ও ভ্যাট কর্মকর্তাকে দেখিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ট্রাকগুলো। কোনো ট্রাকের কয়লা মাপা হয়নি। গত ৪ জানুয়ারি এই প্রক্রিয়ায় অর্ধশত ট্রাক কয়লা নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে গোবরাকুড়া স্থলবন্দর দিয়ে।

ট্রাক থেকে কয়লা নামানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, তাঁদের হিসাবে প্রতি ট্রাকে ২০-২২ টন কয়লা ধরে। তাঁরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে তা ট্রাক থেকে নামান।

বর্তমানে প্রতি টন কয়লা থেকে ২১৬৫.২৫৭ টাকা রাজস্ব পায় সরকার। সেই হিসাবে প্রতি ট্রাকেই ১৭ হাজার ৩২২ টাকার বেশি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন অসাধু আমদানিকারকরা।

তবে কয়েকজন আমদানিকারক দাবি করেছেন, বন্দরে ওজন মাপার স্কেল না থাকায় প্রায় সময় এলসিতে উল্লেখ করা পরিমাণের চেয়ে কম কয়লা পান তাঁরা। আর ভারত থেকে আসা ট্রাকগুলো সে দেশেই ওজন করে এপারে পাঠানো হয়। তাই কখনোই বেশি আনার সুযোগ নেই।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছুদিন আগেও কড়ইতলি বন্দরের নিয়ন্ত্রণ ছিল এমপি জুয়েল আরেং এবং হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আজগরের হাতে। গত বছর করোনায় আক্রান্ত হয়ে আলী আজগর মারা যাওয়ার পর জুয়েল আরেংয়ের একক নিয়ন্ত্রণে চলে যায় বন্দর। তিনি গোবরাকুড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতিও।

বন্দর থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারক জানান, গোবরাকুড়া আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সদস্য তিন শতাধিক। কিন্তু এখন সক্রিয় আছেন মাত্র ১১০ জন। কারণ বন্দরে শুধু এমপির লোকজনই ব্যবসা করতে পারেন। অনেক ব্যবসায়ী চাইলেও প্রয়োজনমতো কয়লা আমদানি করতে পারেন না বলে জানান। কেউ কেউ তাই বন্দর থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।

বন্দরের লোড-আনলোড এলাকায় গিয়ে এই ব্যবসায়ীর অভিযোগের সত্যতা মেলে। মেসার্স দত্ত অ্যান্ড ব্রাদার্স, বাংলা ইন্টারন্যাশনাল, সেতু ইন্টারন্যাশনাল, ফ্রেন্ড ইন্টারন্যাশনাল, আনিতা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স সিদ্দিক ইন্টারন্যাশনাল, আবির ট্রেডার্স, মেসার্স বড় ভাই এন্টারপ্রাইজসহ অনেক ডিপো খালি পড়ে থাকতে দেখা যায়।

নাজমুল নামের এক শ্রমিক জানান, একজন কয়লা শ্রমিক সারা দিন খেটে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতে পারেন। আমদানিকারক কম থাকায় অনেক শ্রমিকই দিনের পর দিন কাজ পান না। এতে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে তাঁদের। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রমজান ও ইসমাইল নামের দুই শ্রমিক বলেন, ‘দুই দিন ধরে কোনো কাজ পাইনি। এই বন্দরে প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করে। তাদের বেশির ভাগেরই অবস্থা আমাদের মতো।’

৫ জানুয়ারি উপজেলার কড়ইতলি স্থলবন্দরে গিয়েও চোখে পড়ে প্রায় একই রকম দৃশ্য। আমদানি করা কয়লার ওজন যাচাই না করে শুধু এলসিপত্র দেখিয়ে একের পর এক ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকছে। এই বন্দরের নিয়ন্ত্রণে আছেন এমপি জুয়েল আরেংয়ের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ১ নম্বর ভুবনকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সুরুজ মিয়া। কড়ইতলি কোল অ্যান্ড কোক ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও তিনি।

এলসিপত্রের অতিরিক্ত কয়লা আনার অভিযোগ অস্বীকার করে গোবরাকুড়া আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার অপু ওরফে অপু সরকার বলেন, ‘ভারতীয় বন্দরে প্রতিটি ট্রাক ওজন স্কেলে পরিমাপ করে তবেই বাংলাদেশে পাঠানো হয়। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে কয়লা বেশি আনার কোনো সুযোগ নেই। বরং ট্রাকে ১২ মেট্রিক টন কয়লা থাকার কথা থাকলেও প্রায় সময় ২০০ থেকে ৫০০ কেজি কম থাকে। এতে অনেক ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। আর আমাদের বন্দরে ওজন মাপার স্কেল না থাকায় কয়লা গ্রহণের সময় ভারতের পাঠানো কাগজের ওপরই ভরসা করতে হয়।’

ট্রাকে কয়লা যদি ওজনে কম আসার সুযোগ থাকে তাহলে বেশি আসারও তো সুযোগ আছে। এটা হয় কি না? এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

কড়ইতলি কোল অ্যান্ড কোক ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুরুজ মিয়াও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘খুব শিগগির আমাদের দুটি বন্দরেই ওজন স্কেল বসানো হয়ে যাবে। আশা করছি, আগামী জুন-জুলাই মাসেই চলমান উন্নয়নকাজ শেষ হয়ে বন্দর দুটি পুরোপুরি চালু হয়ে হয়ে যাবে। তখন আর এমন অভিযোগ করার সুযোগ থাকবে না।’

এসব বিষয়ে জানতে গোবড়াকুড়া আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য জুয়েল আরেংয়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস করা হলেও সাড়া দেননি।

একইভাবে কথা বলতে রাজি হননি দুই স্থলবন্দরের কোনো শুল্ক কর্মকর্তা। তাঁরা বলেন, ‘ওপর থেকে অনুমতি নিয়ে আসেন। তারপর কথা বলব।’


বসুন্ধরা   কয়লা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

আবারও ২০ বিলিয়নের নিচে নামল রিজার্ভ

প্রকাশ: ১০:৩৫ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার কোটি ডলারের ওপরে। ঈদের ছুটিসহ এক সপ্তাহে বিভিন্ন প্রয়োজন মেটাতে ২১ কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করতে হয়েছে। ফলে রিজার্ভ আবার ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি অনুসারে বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক হাজার ৯৮৯ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার (বিপিএম-৬)। এক সপ্তাহ আগে এ রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ১০ কোটি ৫৮ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার (বিপিএম-৬)।

বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ দুই হাজার ৫৩০ কোটি ৩  লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এক সপ্তাহ আগে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৫৩৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার। এক সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমল ৮ কোটি ৪৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা দাঁড়ায় ২৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে।

গত ২০ মার্চ বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ছিল ১৯.৯৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৯৮ কোটি ডলার। গত ৬ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত দুই সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমে ১.০৯ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী, কমে ১.১৬ বিলিয়ন ডলার।

রিজার্ভ   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

স্বর্ণের দাম আবারও বাড়লো

প্রকাশ: ০৮:৫৩ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের বাজারে এটাই স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।  বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দাম নির্ধারণের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর করা হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা। ভালো মানের স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও কমানো হয়েছে সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম। সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের নতুন দাম হবে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা যা এতদিন ছিল ৮০  হাজার ১৯০ টাকা।

এদিকে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।

গত ৮ এপ্রিল স্বর্ণের দাম কমিয়েছিল বাজুস। যা ওইদিনই বিকেলে কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী আজ ৭টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ৮০  হাজার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়।


স্বর্ণ   দাম   বৃদ্ধি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

ব্যাংক আলফালাহ কিনে নিচ্ছে ব্যাংক এশিয়া

প্রকাশ: ০৮:০৯ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এবার পাকিস্তানভিত্তিক ব্যাংক আলফালাহ কিনে নিচ্ছে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়া। বুধবার (১৭ এপ্রিল) পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ ও দেশটির একাধিক গণমাধ্যমের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশে পাকিস্তানি ব্যাংকটির কার্যক্রম, সম্পদ ও দায় ব্যাংক এশিয়া কর্তৃক অধিগ্রহণের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে ব্যাংক আলফালাহর পরিচালনা পর্ষদ। এর আগে ব্যাংকটি এ বিষয়ে ব্যাংক আলফালাহর কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল।

জানা যায়, ব্যাংক আলফালাহ বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম অধিগ্রহণের বিষয়টি সব ধরনের প্রযোজ্য আইন ও বিধি মেনে করবে। অধিগ্রহণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে এখন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের অনুমোদন চাইবে ব্যাংক আলফালাহ।

বাংলাদেশে ব্যাংক আলফালাহর মোট সম্পদের স্থিতি ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ঢাকায় পাঁচটি, চট্টগ্রাম ও সিলেটে একটি করে তাদের মোট ৭টি শাখা আছে। 

পাকিস্তানের অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক হলো ব্যাংক আলাফালাহ। দেশটির ২০০টির বেশি শহর ও মফস্বলে তাদের ১ হাজার ২৪টির বেশি শাখা রয়েছে। এর বাইরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উপস্থিতি আছে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। 

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে ব্যাংক এশিয়া। প্রতিষ্ঠার পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো কোনো বিদেশি ব্যাংকের বাংলাদেশে থাকা কার্যক্রম ক্রয়ের পদক্ষেপ নিয়েছে ব্যাংক এশিয়া। এর আগে কানাডাভিত্তিক নোভা স্কোটিয়া ও পাকিস্তানের আরেক ব্যাংক মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যক্রম অধিগ্রহণ করেছিল ব্যাংক এশিয়া।

ব্যাংক আলফালাহ   ব্যাংক এশিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

শেয়ারবাজার: প্রথম দেড় ঘণ্টায় লেনদেন ২০০ কোটি টাকা

প্রকাশ: ১২:৪৮ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সকাল থেকে সূচকের বেশ উত্থান–পতন লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে লেনদেন শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টা পরই ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেশ নিচে নেমে যায়। তবে প্রথম ঘণ্টা শেষে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে ২০০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সকালে বেশ কিছু ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। ডিএসইতে প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে এগিয়ে রয়েছে ওষুধ ও রাসায়নিক, প্রকৌশল, ভ্রমণ, খাদ্য, সিরামিক এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো।

এ সময় লেনদেনে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রাসায়নিক খাতের কোম্পানি এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। দেড় ঘণ্টায় এটির ১৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন সন লিমিটেড।

এ সময় এটির ১১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভ্রমণ খাতের কোম্পানি বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তিনটি সূচকই নিম্নমুখী ছিল। এদের মধ্যে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৪ দশমিক ১৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৫ পয়েন্টে, ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। এ ছাড়া ডিএস ৩০ সূচক ২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকার।


শেয়ারবাজার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

বেসরকারি ব্যাংকের সাথে একীভূত হতে বেসিকের আপত্তি

প্রকাশ: ১০:৪৫ এএম, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চাচ্ছেন না সরকারি বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাই সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই দাবিতে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি বলে স্বীকারই করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।

বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গভর্নরকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলেন, দেশের ক্ষুদ্র শিল্পে অর্থায়নের লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের কার্যক্রম শুরু হয়, যা ১৯৯২ সালে শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে এটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক হিসাবে সরকারি আর্থিক সেবা দিয়ে আসছে, যা ২০১৫ সালে পুরোপুরি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসাবে রূপান্তরিত হয়। বেসিক ব্যাংক প্রথম দিকে সরকারি খাতের ব্যাংক হিসাবে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা করেছে এবং সরকারকে বিপুল অঙ্কের মুনাফা দিয়েছে, যা অন্যান্য ব্যাংকের কাছে ছিল উদাহরণ। শেষের দিকে এসে ব্যাংকটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। বেসিক ব্যাংকে অন্য রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের অনুরূপ চাকরি বিধিমালা অনুসরণ করা হয়, যা বেসরকারি মালিকানার ব্যাংকের সঙ্গে পুরোপুরিভাবেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ। জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের গ্রেড নির্ধারণ এবং বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি প্রদান করা হয়।

পাশাপাশি বলবৎ রয়েছে কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের পেনশন সুবিধা। এছাড়া, বেসিক ব্যাংকে নিয়োগ ও পদন্নোতিতে সম্পূর্ণরূপে সরকারি ব্যাংকের অনুরূপ বিধিবিধান অনুসরণ করা হয়। এছাড়া বেসিক ব্যাংকে ১২তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীগণের স্থায়ী চাকরি বিদ্যমান রয়েছে। শ্রম আইন অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বেসিক ব্যাংকে সরকারি শ্রম অধিদপ্তর অনুমোদিত ও রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যাংকিং খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত একীভূতকরণের পদক্ষেপকে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি টেলিভিশন, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের বরাতে জানতে পারি যে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক মার্জারের পরিকল্পনা করা গ্রহণ করা হয়েছে, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, বেসরকারি মালিকানাধীন সিটি ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক মার্জারের বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছে তা একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অযৌক্তিক।

যেখানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক অন্য দুটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ হতে চলেছে সেখানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে কেন বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে মার্জারের আলোচনা চলছে? মার্জার প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই বৈষম্য কাম্য নয়। এ ধরনের বৈষম্যনীতি পরিহার করে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মার্জার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে অন্য একটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে মার্জারের জন্য আবেদন জানানো হয়।

দেশের অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের ন্যয় শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। উল্লিখিত বিষয়গুলোর সঙ্গে বেসরকারি কোনো ব্যাংকের সামঞ্জস্যতা নেই। ইতোমধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অনেকেই সরকারি ব্যাংকের পদোন্নতির অধীনে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদায়নের পর কয়েক মাস আগে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, রূপালী ব্যাংক ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে দুজনকে ডিএমডি হিসাবে, একজনকে জনতা ব্যাংকে এবং দুজনকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে জিএম হিসাবে পদায়ন করা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বেসিক ব্যাংকেরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি নন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, বেসিক সরকারের কোনো ব্যাংক অর্ডারের দ্বারা স্থাপিত ব্যাংক নয়। সোনালী ব্যাংকের যেমন ব্যাংক অর্ডার আছে, বেসিকের তেমন নেই। একটা আইন দ্বারা কিন্তু সোনালী, রূপালী ও অগ্রণী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত। বেসিক ব্যাংক কোনো আইন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত নয়। সরকার যেমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ড করে, তেমনি বেসিকেরও শেয়ার হোল্ড করে।

তিনি আরও বলেন, সরকারি আর বেসিকের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সরকার যেটা রেভিনিউ থেকে দেয় সেটাই কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে সরকারের কমার্শিয়াল কাজের জন্য স্টাবলিস্ট করা। বেসিকও তেমন একটা প্রতিষ্ঠান। বেসিক স্পেশালাইজ একটা ব্যাংক ছিল যেটা একটা বিশেষ উদ্দেশ্য গঠন করা হয়েছিল। এটা কিন্তু ব্যাংক হিসাবে সরকারের আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নয়।

একীভূতকরণের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত উচ্চ আদালতে: ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত উচ্চ আদালতে হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক। তিনি বলেন, এটা একটা লং টার্ম প্রসেস। এটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া অতিক্রম হতে হবে। বেশকিছু পদক্ষেপের পর চূড়ান্তের বিষয় আছে। এখানে আইনগত বিষয় আছে, অডিটের বিষয় আছে। মার্জারের বিষয়ে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হবে আদালতে।

তিনি আরও বলেন, এসব প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে। মার্জারের আলোচনা বা প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় কোনো দুর্বল ব্যাংক যদি সবল হয়, সে যদি চায় তারা মার্জারে যাবে না তবে চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মার্জারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারবে। কোনো কারণে ব্যাংক যদি একীভূত না হয়, তবে সেই ব্যাংকগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে।

পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংকের একীভূতকরণের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা অডিটর নিয়োগ করেছি। এ প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক দুটির সম্পদ মূল্যায়ন করবে। এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এজন্য ব্যাংক দুটির সম্পদ মূল্যায়ন করতে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান রহমান রহমান হক’কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবে।


একীভূত   বেসিক ব্যাংক   সিটি ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন