নারায়ণগঞ্জে গত ২৬ বছরে যা হয়নি, বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)-এর সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর তা মাত্র ৬ মাসে সম্ভব করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন নারায়ণগঞ্জে বাজুস নেতৃবৃন্দ । ব্যবসা পরিচালনায় তার বিশেষ দক্ষতা ও দূরদৃষ্টি আমাদের আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর গোল্ড ব্যবসা নীতি অনুসরণ করে বাজুস সভাপতি আনভীরের নেতৃত্বে অচিরেই বিশ্ব বাজারে স্বর্ণ ব্যবসায় প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্প বিশ্ব বাজারে মাথা ঊঁচু করে দাঁড়াবে।
সোমবার (২৩ মে) নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)-এর নতুন সদস্যদের বরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাজুসের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান এম এ ওয়াদুদ খান বলেন, আমরা এসেছি আমাদের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষ থেকে আপনাদের বরণ করতে। আমার বাড়ি বরিশাল, আগে নারায়ণগঞ্জ হয়েই যেতে হতো। সেই আগের নারায়ণগঞ্জের স্মৃতি এবং আপনাদের ঐক্যে আমি অভিভূত হয়েছি। নারায়ণগঞ্জে ভালো জুয়েলারি অলঙ্কার বিক্রি হয়। এখানে যারা খারাপ মাল বিক্রি করে তারা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। জুয়েলারির মান উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। আমরা এমন এক ব্যবসায় আছি, যা এ দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
আপনারা স্বর্ণ মেমোর মাধ্যমে নিবেন এবং এনআইডি রাখবেন। তারপরেও পুলিশ হয়রানি করতে আসলে আমরা দেখবো। আপনারা সৎ ভাবে ব্যবসায় করেন। বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর আপনাদের পাশে আছে। যে দোকানে বাজুসের লোগো নেই, সেখান থেকে কেউ জুয়েলারি কিনলে প্রতারিত হতে পারেন।
শুধু ৪০ হাজার নয়, সারা বাংলাদেশে আমাদের ৭০ থেকে ৮০ হাজার সদস্য হবে। নারায়ণগঞ্জ শহরের বাইরেও অনেকগুলো দোকান আছে। তাহলে কেন সদস্য হবে না। শুধু নারায়ণগঞ্জ থেকেই দুই হাজার সদস্য হবে। আমাদের এতো সদস্য যদি হয় আমরা বাজুসের নেতৃত্বে সায়েম সোবহান আনভীর আমাদের পাশে আছেন তাহলে ভয় কোথায়? আমরা সবাই সরকারকে ট্যাক্স দেবো এবং ব্যবসা করবো। আসুন আমরা বাজুসের নীতিকে অনুসরণ করি এবং সবাই সমান রেটে বিক্রি করি। আমাদের কোন সমস্যা থাকবে না। বাংলাদেশেই বছর খানেকের মধ্যে স্বর্ণ তৈরি হবে। আমাদের এ ব্যবসায় সুদিন আসবে।
আমাদের স্বর্ণের রিজার্ভ কম। একমাত্র আমরা যারা জুয়েলার্স এখানে ১০ ভরি করে হলেও কত স্বর্ণ রয়েছে। আমরা ভালো একটা রিজার্ভ গড়ে তুলতে পেরেছি, তাই আমরা সুযোগ-সুবিধা দাবি করতে পারি।
বিশেষ অতিথি বাজুস ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং স্ট্যান্ডিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে, যারা বাজুসের চেয়ে কম দামে বিক্রি করে। কম দামে খারাপ মানের পণ্য পাওয়া যায়। আমরা মান ধরে রাখতে চাই। সায়েম সোবহান আনভীর ঐক্যের প্রতীক। সে কোন বিভাজন চায় না। আমি বলতে চাই এখানে নির্বাচিত কমিটি হতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন করে যাবো তারা নির্বাচনের সময় দেবেন। আপনারা সবাই মিলে একটা প্যানেল দিন। আপনারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়ে যাবেন আর দ্বিমত থাকলে নির্বাচন করুন। আমি বাজুসের সভাপতির সাথে আসার সময় আলোচনা করে নিয়েছি। আমরা নিরপেক্ষ ও সুন্দরভাবে একটি নির্বাচন পরিচালনা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, এইচ এম আসলাম সানি নির্বাচন কমিশনার হবেন এবং প্রবীর সাহা আপিল বিভাগের চেয়ারম্যান হবেন। আপনারা নাম দিবেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ হবে ভোটের কাজগুলো বর্তমান কমিটির সহযোগিতা নিয়ে একটি সুন্দর কমিটি হবে। বর্তমান কমিটি আগামী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত থেকেই সুন্দর ও নতুন কমিটি উপহার দেবেন।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, নারায়ণগঞ্জে ৪ হাজারের বেশি স্বর্ণ ব্যবসায়ী আছে বলেছিলেন বাজুস সভাপতি। আমরা এতোদিন ব্যবসা করেও তা বুঝতে পারিনি। তবে যখন আমরা মাঠে নামলাম, দেখলাম ঠিক তার ধারণাই সঠিক। তার এই দূরদৃষ্টি আমাদের উৎসাহিত করে। আগামীতে বাজুসের নিবন্ধন ছাড়া কেউ বৈধভাবে স্বর্ণ ব্যবসা করতে পারবেন না। আমরা সবাই একসঙ্গে মিলে-মিশে জুয়েলারি শিল্পের ইতিহাস বদলে দিতে চাই। আমাদের নতুন নেতৃত্ব দেশের আইকন সায়েম সোবহান আনভীর জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের জন্য ‘গোল্ড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। তরল সোনা রিফাইন করে বিদেশে রপ্তানির পরিকল্পনা করছেন। আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবো।
অতিথিরা আরও বলেন, আমাদের সভাপতির মূল লক্ষ্য সৎভাবে ব্যবসা করা। যেন কোন গ্রাহক আমাদের থেকে প্রতারিত না হয়। গ্রাহক সন্তোষ্টির মাধ্যমে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবো। তার ব্যবসায়িক প্রজ্ঞা, সৃষ্টিশীলতা ও দূরদর্শিতায় আগামীতে বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে। অদূর ভবিষ্যতে স্বর্ণের বারে লেখা থাকবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। বাংলাদেশই ‘গোল্ড ব্যাংক’ হবে।
অতিথিরা বলেন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের সুখে-দুঃখে পাশে আছি। আপনারা সাহস করুন ব্যবসায় চালিয়ে যান। আমরা জুয়েলার্সের ব্যবসা করি আমাদের ভাবতে হবে এটা কিভাবে টিকিয়ে রাখবো। আমরা চাচ্ছি ইন্ডাস্ট্রি করতে হবে। আগে আমাদের দোকান ছিল পাশে কারখানা ছিল। এখন তা নেই। এ কারণে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নষ্ট হচ্ছে। আমরা যদি এখানে ইন্ডাস্ট্রি করি তাহলে বেকারত্ব কমবে পাশাপাশি গ্রাহকও বৃদ্ধি পাবে।
তারা আরও বলেন, আমরা লেবার তৈরি করতে পারিনি, তাই আমাদের কষ্ট বেশি। আমরা যদি লেবার গড়ে তুলতে পারি, তাহলে আমাদের কষ্ট কমবে। ইন্ডাস্ট্রি করতে যদি কোন অসুবিধা হয় আমরা আপনাদের সহায়তা করবো। আপনাদের সঙ্গে এই যে সম্পর্ক, আমরা নারায়ণগঞ্জে এসেছি আমাদের পরিচিতি হলো, বন্ধন হলো। আপনারা সকলে চেষ্টা করবেন কোয়ালিটি মাল বিক্রি করতে এবং কাস্টমারদের সন্তুষ্ট করতে।
শহরের চাষাঢ়ার গ্রান্ড হল রেস্টুরেন্টে বাজুসের নারায়ণগঞ্জের ২২০ জন নতুন সদস্যকে বরণ করে নেয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে সদস্যপত্র, বাজুস সার্টিফিকেট, ফুল, আইডি কার্ড তুলে দেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলা বাজুসের সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান এনামুল হক খান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যান গুলজার আহমেদ, সহ-সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য ও সদস্য সচিব রিপনুল হাসান।
২৬ বছরে হয়নি ৬ মাসে সম্ভব করেছেন বাজুস সভাপতি
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন বাজুস
মন্তব্য করুন
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে প্রভাব পড়েছে চলমান
অর্থনৈতিক সংকট। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪২.৩০
শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যদিও গত
অর্থবছরের তুলনায় এবার এডিপি বাস্তবায়ন বেড়েছে। আগের বছর ৯ মাসে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৪১.৬৫
শতাংশ।
অর্থবছরের বাকি আছে আর তিন মাস থাকলেও এই সময়ের মধ্যে শতাংশের হিসাবে বাস্তবায়ন করতে হবে ৫৭.৭০ শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় করতে হবে এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এই সময়ের মধ্যে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন
পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে
এ চিত্র উঠে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থবছরের ছয় মাসে যেখানে অর্ধেকও বাস্তবায়ন
হয়নি, সেখানে মাত্র তিন মাসে কী করে ৫৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়
ও বিভাগকে জবাবদিহির আওতায় না আনলে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন কোনো অর্থবছরেই সম্ভব হবে
না।
আইএমইডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি এডিপি
বাস্তবায়ন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির চলতি অর্থবছরে একটি প্রকল্পের
আওতায় বরাদ্দ ছিল ছয় কোটি ১৯ লাখ টাকা। ৯ মাসে তারা ব্যয় করেছে পাঁচ কোটি ৯৯ লাখ টাকা,
যা শতাংশের হিসাবে ৯৬.৮৫ শতাংশ। আর শতাংশের হিসাবে বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকলেও টাকা খরচে
এগিয়ে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিভাগটির ২৬৩টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৪২
হাজার ৯৫৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
অর্থবছরের ৯ মাসে ব্যয় হয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যা
শতাংশের হিসাবে ৪৬.০৩ শতাংশ। এডিপি বাস্তবায়নে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ
বিভাগ। চলতি অর্থবছরে তাদের বরাদ্দ ছিল ২৪২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে ৩৩
কোটি ৭২ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসাবে ১৩.৮৯ শতাংশ।
বিদ্যুৎ বিভাগের এডিপি বাস্তবায়নের হার ৬৩.৮৭ শতাংশ। বরাদ্দ ছিল
৩০ হাজার ৬৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে ১৯ হাজার ২০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ৮০৩ কোটি ৪৫ লাখ
টাকা। ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ১৭৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। শতাংশের হিসাবে ৪০.১৯ শতাংশ। পানি
সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার ১১৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে সাত
হাজার ৮১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। শতাংশের হিসাবে ৫৩.৯৮ শতাংশ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার ১৯২ কোটি
৭৫ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে চার হাজার ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন হার ৩২.৯৯ শতাংশ।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ৫০.৯২ শতাংশ। তাদের বরাদ্দ ছিল ৪৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
বিপরীতে ৯ মাসে ব্যয় করেছে ২৩৪ কোটি ছয় লাখ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ২৪.৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা বিভাগের
বাস্তবায়ন হার ৩৮.৫৬ শতাংশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৪.৪২ শতাংশ। ইআরডির ৭১.৬৭ শতাংশ,
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২৩.৭৯ শতাংশ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৩১.৬৭ শতাংশ, অর্থ বিভাগের
৫০.০৮ শতাংশ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩৩.৬৯ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৪৯.৯১ শতাংশ,
সেতু বিভাগের ৪৬.৬৮ শতাংশ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৯.৪৮ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন কম হওয়ার বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বাস্তবায়ন হার বেশি। আমরা প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে বসছি। যেসব প্রকল্প শেষ পর্যায়ে আছে তাদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্প শেষ করছি। প্রকল্প পরিচালক দক্ষতা বাড়াতেও উদ্যোগ নিচ্ছি।’
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপি বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে
শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখতে ঢাকায় এসেছে সংস্থাটির ১০ সদস্যের একটি মিশন। মিশনটি
গত ডিসেম্বর নাগাদ দেওয়া বিভিন্ন শর্ত বাস্তবায়ন ও সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে
আজ বুধবার থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠকে বসবে।
এসব বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকিং খাত
ও রাজস্ব সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেবে পর্যালোচনা দলটি বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা
গেছে।
আইএমএফ-এর এই প্রতিনিধি দলটি শুরুর দিন অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ
ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে বৈঠক করবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক,
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ কয়েকটি
সরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে। দলটি ঢাকায় থাকবে ৮ মে পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ এরই মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের
কাছে শতাধিক প্রশ্ন পাঠিয়েছে। সফররত মিশনটি দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার
জন্য জ্বালানি ভর্তুকি, সরকারি ঋণ, আসন্ন বাজেট ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর
পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করবে।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশের কর রাজস্ব জিডিপির অনুপাত ৮ থেকে
৯ শতাংশ। আইএমএফের ঋণ কর্মসূচিতে রাজস্ব খাতে সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আইএমএফ
প্রতিনিধি দল এ সফরে ব্যাংকিং খাতে বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাব, ব্যাংক কোম্পানি আইন
বাস্তবায়নসহ অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবে।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের
বৈঠকের এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক
কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন বলেছিলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভের খুব বেশি উন্নতি হয়নি। আইএমএফ গত
বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। এরই মধ্যে
দুই কিস্তিতে ১১৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে। সব ঠিক থাকলে আগামী মে মাস নাগাদ তৃতীয়
কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হতে পারে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট
সাত কিস্তিতে পুরো অর্থ দেওয়ার কথা।
প্রাথমিকভাবে আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত
সময়ে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা
দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রিজার্ভের উন্নতি না হওয়ায় বাংলাদেশের
অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তা কমিয়ে ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়। এর পরও বাংলাদেশ
লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৫৮ মিলিয়ন ডলার পিছিয়ে ছিল।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন,
আইএমএফের ঋণের ১০টি শর্তের ৯টি পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তাই ঋণের পরবর্তী কিস্তি
পেতে কোনো অসুবিধা হবে না। জানা গেছে, তৃতীয় কিস্তির জন্য নির্ধারিত ছয়টি পরিমাণগত
লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রিজার্ভ ছাড়া পাঁচটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গত
বছরের ডিসেম্বরে কর রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০
কোটি টাকা। সরকার এরই মধ্যে এটি পূরণ করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি
অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কর রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা।
আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার
মন্তব্য করুন
ব্যাংক একীভূতকরণ বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
চলতি মাসে তিন দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।
এর আগে গত তিনদিন পূর্বে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। নতুন দাম নির্ধারণের তিন দিন না যেতেই এবার আবারও স্বর্ণের দাম কমালো দেশের বাজারে স্বর্ণের মূল্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে বাজুস। এদিন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। আর ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৯ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৫৬৬ টাকা কমিয়ে ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৭৬ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশ্য স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে ক্রেতাদের। কারণ বাজুসের নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি করা হয়। সেইসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে এক লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ টাকা।
স্বর্ণ বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বাজুস
মন্তব্য করুন
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে প্রভাব পড়েছে চলমান অর্থনৈতিক সংকট। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪২.৩০ শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যদিও গত অর্থবছরের তুলনায় এবার এডিপি বাস্তবায়ন বেড়েছে। আগের বছর ৯ মাসে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৪১.৬৫ শতাংশ।
ব্যাংক একীভূত হওয়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর সঠিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে ভাবে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত তথ্যনির্ভর নয় বলে মনে করছে ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রক এই প্রতিষ্ঠানটি। আর এটি দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্পষ্টীকরণ বিজ্ঞপ্তি করেছে।
চলতি মাসে তিন দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।