বাংলাদেশ-উজবেকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং পর্যটন খাত সম্প্রসারণে পুনরায় সরাসরি ফ্লাইট পরিবেষা চালু করার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি।
শুক্রবার (১৯ মে) বিকেল তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে উজবেকিস্তানের উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাখরম এ্যালোয়েভ (Bakhrom Aloev) এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি এ আহবান জানান।
সাক্ষাৎকালে উজবেকিস্তানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং ভিসা সহজীকরণ হলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা সফর করে বিনিয়োগের ক্ষেত্র বের করতে পারবেন। সরকার টু সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী টু ব্যবসায়ী যোগাযোগ বৃদ্ধি হবে। সেই সাথে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সামগ্রিক সুবিধার জন্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলিকে খুঁজে বের করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৫২টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার বিশাল সুযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সালমান এফ রহমান, এমপি।
উজবেকিস্তানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু ও প্রবৃদ্ধির অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ঢাকা-তাসখন্দ সম্পর্কের মূল কেন্দ্রবিন্দু বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা। দেশটিতে টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। তৈরি পোশাক, ওষুধ, আইসিটি পণ্যের বড় বাজার হতে পারে উজবেকিস্তান। দু’দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার হবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন খাতের বিকাশের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করেছেন এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় প্রণোদনা প্যাকেজ এবং সুবিধা ঘোষণা দিয়েছেন। তাই উজবেকিস্তানের বিনিয়োগকারীরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগ করতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য সম্প্রসারণে উজবেকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালুসহ বাংলাদেশিদের সহজ শর্তে ভিসা সুবিধা দেয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশে সফররত উজবেকিস্তান উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাখরোম আলয়েভ।’
সাক্ষৎকালে উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সকল সূচকে সাফল্য অর্জন করেছে। ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য বিশ্বে সুনাম ধরে রেখেছে। তাই বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদেরকে উজবেকিস্তানে বিনিয়োগের আহবান জানিয়ে দুই দেশের সম্পর্ককে আরো বন্ধত্বপূর্ণ এবং দৃঢ় অবস্থানে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।’
বৈঠকে উজবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাখরোম আলয়েভ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বিস্তৃত করার সময় এসেছে এখন। পরিবহন ও যোগাযোগ একটি উদ্বেগের বিষয় ছিল, তবে আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার করার জন্য প্রস্তুত আমরা।
মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তান। স্থলবেষ্টিত দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মানের তুলা উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশের পোশাক খাতে ক্রমবর্ধমান সুতার চাহিদা মেটাতে বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলার প্রয়োজন পড়ে। বিপরীতে উৎপাদন হয় মাত্র পৌনে দুই লাখ বেল। ঘাটতি মেটাতে বছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকার তুলা আমদানি করতে হয়। যা বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ তুলা আমদানিকারক দেশে পরিণত করেছে। এ অবস্থায় ঢাকা-তাসখন্দের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ বাড়াতে উচ্চ পযায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করছেন উজবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্তব্য করুন
অর্থনৈতিক সংকট ও রিজার্ভ বাড়াতে মধ্য মেয়াদে (২০২৪-২৬) ৫টি খাতে বড় ধরনের সংস্কার কর্মসূচি নিচ্ছে অর্থ বিভাগ। যার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক ঋণের সুদ হারে করিডোর বা বাজারভিত্তিক চালু ও একক মুদ্রা বিনিময় হার বর্তমান পদ্ধতির পরিবর্তে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া।
এছাড়া অস্বাভাবিক ভর্তুকির অঙ্ক ও সরকারের ঋণ ব্যয় পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে কম ঋণ নেওয়া। পাশাপাশি আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে ব্যাংক কোম্পানি এবং ফাইন্যান্সিয়াল আইন সংশোধনের কথাও বলা হয়েছে। সংস্কার কর্মসূচির মধ্যে আগামীতে রাজস্ব আয় (বর্তমান পর্যায় থেকে ১.৭ শতাংশ) বাড়ানো এবং তিন মাস অন্তর জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির হার প্রকাশ করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তি করা হয়েছে। শিগগিরই এই সংস্কার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ এম কে মুজেরি জানান, ডলারের মূল্য এখন অনেক বেশি। মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা হলে ধারণা করা হচ্ছে ডলারের মূল্য কিছুটা বাড়তে পারে। এছাড়া ব্যাংক ঋণের সুদ হারে করিডোর চালু করা দরকার। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারভিত্তিক সুদহার চালু করা যেতে পারে।
সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কমানো প্রসঙ্গে সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ জানান, সঞ্চয়পত্র এক ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হিসেবে কাজ করছে। অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভরশীল। কারণ এখানে বিনিয়োগ করে মুনাফা বা সুদ অন্য ক্ষেত্র থেকে বেশি পাওয়া যায়। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে অনেকে সঞ্চয়পত্র বেছে নিচ্ছেন। সরকার এ খাত থেকে ঋণ নেওয়া কমালে এর বিক্রি কমবে। এতে অনেকেই কিনতে পারবে না। এখানে খুব বেশি কড়াকড়ি না করাই ভালোই। জানা গেছে, চলতি মাসেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে। সেখানে ব্যাংক ঋণের সুদহার এবং একক মুদ্রানীতি হার বাজারভিত্তিক চালুর ঘোষণা আসতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, সুদ হারে করিডোর এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে সুদহারের বেঁধে দেওয়া সীমা ধীরে ধীরে তুলে নেওয়া হবে। তবে ব্যাংক ঋণের সুদের সর্বোচ্চ হার কত হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক তা প্রতি মাসে নির্ধারণ করে ঘোষণা করবে। এ হার ঠিক করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক তার নির্ধারিত সূত্র অনুসরণ করবে। নতুন এ ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা আগামী জুলাই থেকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি ভোক্তা ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার কত হবে, তা-ও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমান ব্যাংক ঋণের সুদ হারের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্যাপ আরোপ করে রেখেছে। যে কারণে আমানত ও ঋণের সুদ ৬-৯ শতাংশের মধ্যে বিরাজ করছে। অপরদিকে ডলারের মূল্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঠিক করে দিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, সংস্কারের আওতায় সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম কাজ হবে ভর্তুকি ব্যয় কমিয়ে আনা বা যৌক্তিককরণ। টাকার অবমূল্যায়ন ও বিশ্ব বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ, সার, প্রাকৃতিক গ্যাস ও জ্বালানি তেলে সরকারের অস্বাভাবিক ভর্তুকি ব্যয় বেড়েছে। এ ব্যয় সরকারের দায়কে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রস্তাবিত (২০২৩-২৪) বাজেটে ভর্তুকিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬৬ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ৫০ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে।
ভর্তুকি ব্যয় কমানো প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগ সংস্কার কর্মসূচির প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্ববাজারের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা এবং ভর্তুকির পরিমাণ কমানোর লক্ষ্যে গত আগষ্টে পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্য বাড়ানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় একটি ফর্মুলাভিত্তিক নতুন পদ্ধতি চালু করা হবে। যা পেট্রোলিয়াম পণ্যের ভর্তুকির প্রয়োজনীয়তা দূর করবে।
ভর্তুকি কমানো ছাড়াও সংস্কার কর্মসূচিতে সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কম নেওয়া, নগদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের লক্ষ্যে ট্রেজারির সঙ্গে অ্যাকাউন্ট আওতা বৃদ্ধি এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) ব্যবহার বাড়ানো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মধ্যমেয়াদি এই সংস্কার কর্মসূচির পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫ লাখ কোটি টাকা। পর্যায়ক্রমে ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা এবং ৯ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, মধ্যমেয়াদে সরকার সতর্ক রাজস্বনীতি অনুসরণ করবে। এর মধ্যে বাজেটের ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখা হবে। যা প্রস্তাবিত বাজেটে আছে জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। সেখানে আরও বলা হয়, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে করনীতি এবং রাজস্ব প্রশাসনের সংস্কার করা হবে।
অর্থ বিভাগ সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেছে, বৈশ্বিক ও জাতীয় অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা শক্তিশালী এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা দরকার। এ উদ্দেশ্যে মধ্যে মেয়াদে বেশ কিছু সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক সঙ্কট সরকার সংস্কার কর্মসূচি
মন্তব্য করুন
সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভালো মানের তথা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে এই ক্যাটগরির স্বর্ণের নতুন মূল্য দাঁড়িয়েছে ৯৮ হাজার ৪৪৪ টাকা (ভরি)।
বুধবার (৭ জুন) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) থেকে এটি কার্যকর করা হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম হবে ৯৮ হাজার ৪৪৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩ হাজার ৯৫৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৮০ হাজার ৫৪০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ৬৭ হাজার ১২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোনার বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম।
ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার দাম (ভরি) ১ হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১০৫০ টাকা।
গত ২৮ মে সবশেষ সোনার মূল্য নির্ধারণ করেছিল বাজুস। যা ২৯ মে থেকে কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী আজ পর্যন্ত ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হচ্ছে ৯৬ হাজার ৬৯৫ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯২ হাজার ৩২১ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৭৯ হাজার ১৪০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ৬৫ হাজার ৯৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) থেকে বের হওয়ার পরবর্তী ছয় বছর বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধার আওতায় রাখতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের সমর্থন চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আগামী বছরের শুরুতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৩তম মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদেশকে দেয়া এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানান মন্ত্রী।
লন্ডনের মার্লবোরো হাউসে ৫-৬ জুন অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ বাণিজ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিয়ে তিনি এ আহবান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মহামারী কোভিড-১৯ এবং তার পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ লাভ করেছে। এই সংকটময়কালে সদ্য এলডিসি থেকে উত্তরণপ্রাপ্ত দেশসমূহ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধার বাহিরে গেলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তাই উত্তরণ পর্যায়ে থাকা স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অন্তত ছয় বছর অগ্রাধিকারমূলক বাজারের প্রবেশ সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে।
বাংলাদেশ গতবছরগুলোতে কমনওয়েলথের বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন আমরা কমনওয়েলথের "বিজনেস-টু-বিজনেস কানেক্টিভিটি ক্লাস্টার" লিড কান্ট্রি হিসাবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। এছাড়া ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আন্তঃ-কমনওয়েলথ বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছি।
অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই বাণিজ্যের উপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উপায় এবং কোভিড-পরবর্তী পুনরুদ্ধার ও উদ্ভূত বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ে তোলার উপর বিশেষ নজর দিতে হবে।
টিপু মুনশি জানান, বাংলাদেশ এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেডের সুবিধার্থে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি অনুমোদনকারী প্রথম এশিয়ান দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে একটি কাগজবিহীন বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার জাতীয় রোডম্যাপ তৈরি করছে।
এসময় অংশ নেয়া কমনওয়েলথ মন্ত্রীরা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষ করে উন্নয়নশীল, স্বল্পোন্নত দেশ এবং ক্ষুদ্র ও দুর্বল অর্থনীতিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অবদান রাখে তা নিশ্চিত করার জন্য বর্ধিত সহযোগিতা এবং শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেন।
কমনওয়েলথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ গভীর করার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে কমনওয়েলথ মন্ত্রীরা ২০৩০ সালের মধ্যে আন্তঃকমনওয়েলথ বাণিজ্য দুই ট্রিলিয়ন-এ উন্নীত করার জন্য আরও উচ্চাকাঙ্খী পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি কমনওয়েলথ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আগামীকাল সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বা আইপি দিবে কৃষি মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের, শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সকল ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, পেঁয়াজ উৎপাদন করে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষায় বিগত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছিল।
রোববার (৪ জুন) ঢাকার আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবনে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি আমাদের জন্য উভয়সংকটের মতো। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলে দাম অনেক কমে যায়, কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়; পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। আর আমদানি না করলে দাম বেড়ে যায়, ভোক্তাদের কষ্ট হয়। সেজন্য, সব সময়ই আমরা চাষি, উৎপাদক, ভোক্তাসহ সকলের স্বার্থ বিবেচনা করেই আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।’
পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূরণতা অর্জনে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বাস্তবায়ন করছে রোডম্যাপ। এতে ব্যাপক সাফল্য মিলেছে। গত ২ বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টন। দুবছরে আগে যেখানে উৎপাদন হতো ২৫ লাখ টনের মতো, এখন উৎপাদন হচ্ছে ৩৫ লাখ টনের মতো।
পেঁয়াজের উৎপাদন ও বিপণনের বর্তমান চিত্র:
২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৫ লক্ষ মে. টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। এবছর ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। পেঁয়াজের সংগ্রহ থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌছাতে বিভিন্ন ধাপে অপচয় ২৫-৩০% বাদে গত বছর নীট উৎপাদন হয়েছে ২৪.৫৩ লক্ষ মে.টন। বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ২৮-৩০ লক্ষ মে.টন। ২০২১-২২ অর্থ বছরে পেঁয়াজ আমদানি হয় ৬.৬৫ লক্ষ মে.টন।
এদিকে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। মাস দেড়েক আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে তা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সোমবার পেঁয়াজ আমদানি অনুমতি কৃষি মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) থেকে বের হওয়ার পরবর্তী ছয় বছর বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধার আওতায় রাখতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের সমর্থন চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আগামী বছরের শুরুতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৩তম মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদেশকে দেয়া এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানান মন্ত্রী।