ইনসাইড ইকোনমি

পাচার হওয়া অর্থ রেমিট্যান্স হয়ে আসছে কি না, প্রশ্ন সিপিডির

প্রকাশ: ০১:৩১ পিএম, ২৭ মে, ২০২৩


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে হঠাৎ করে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। বিষয়টিকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে পাচারের অর্থ রেমিট্যান্স হয়ে দেশে ফিরছে কি না এমন প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।

আজ শনিবার (২৭ মে) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘স্টট অফ দ্য বাংলাদেশ ইকনোমি’ শীর্ষক সভায় রেমিট্যান্স প্রবাহের চিত্র তুলে ধরে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এসময় তার এই সন্দেহের বিষয়টি সামনে আনেন তিনি।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, এটা একেবারেই আনইউজাল, কখনোই হয় না। কারণ, আমরা জানি আমাদের বেশিরভাগ রেমিট্যান্স কোথা থেকে আসে। গত ১০ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ৯ দশমিক ২২ লাখ মানুষ গেছে। সেখান থেকে প্রত্যাশা মতো রেমিট্যান্স আসছে না। লোক যাওয়া ও রেমিট্যান্সের মধ্যে মিসম্যাচ হচ্ছে। এতদিন সৌদি আরব থেকে বেশি রেমিট্যান্স এলেও যুক্তরাষ্ট্র এখন সে জায়গা দখল করেছে।

এতদিন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এলেও বর্তমানে সে জায়গা আমেরিকার দখলে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সৌদি থেকে ৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এলেও চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে এসেছে ৩ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-এপ্রিল) আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার, চলতি বছরের একই সময়ে তা বেড়ে ৩ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিকে সন্দেহের চোখে দেখছে সিপিডি।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যারা যায় তাদের বেশিভাগই হোয়াইট কালার জব করে। অনেকেই ঘরবাড়ি ও জমিজমা বিক্রি করে দেশ থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়। অনেক শিক্ষার্থীও সেদেশে আছে। তারা তো আর টাকা পাঠাতে পারে না। তাহলে বিপুল এ রেমিট্যান্স আসছে কোথা থেকে!

তিনি বলেন, এর একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে এমন- যেখান থেকে টাকাটা পাচার হয়েছে সেটা আবার রেমিট্যান্স হয়ে দেশে ফেরত আসছে। রেমিট্যান্সের ওপর যে আড়াই শতাংশ ইনসেন্টিভ বা সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে সেটার সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে আরও গভীরে গিয়ে বিষয়টির অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে এমন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক সাময়িকভাবে কমানো হলে তারা স্বস্তি পাবে। সেক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম নিম্নমুখী হলেও দেশের বাজারে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, দরিদ্রদের প্রত্যক্ষ সহায়তার আওতা বাড়ানো দরকার। সঠিক ব্যক্তিরা সহায়তা পাচ্ছে কি না, সেটাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। রপ্তানি বৃদ্ধির হার ইতিবাচক নয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হচ্ছে। মে ও জুন মাসে তা ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে হবে। যেটা খুবই কষ্ট সাধ্য।

‘তৈরি পোশাক বহির্ভূত পণ্য কম রপ্তানি হচ্ছে। টাকার অবমূল্যায়নের কারণে প্রতিযোগিতা বাড়ছে’- যোগ করেন ফাহমিদা খাতুন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

রেমিট্যান্স বাড়াতে কাঠামোগত সংস্কারের পথ খুঁজছে সরকার: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৭:০৭ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

রেমিট্যান্স আয় বাড়াতে সরকার কাঠামোগত সংস্কারের পথ খুঁজছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসলে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের অনেকটা সমাধান হতো।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পাবলিক ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্টবিষয়ক সামিটে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী আয় বৈধ পথে দেশে আনতে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। তারপরও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রেমিট্যান্স আসছে না। এ ক্ষেত্রে বিকল্প উপায় খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে প্রবাসী আয়ের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, প্রবাসী আয় বাড়াতে কাঠামোগত সংস্কারের পথ খুঁজছে সরকার। অন্য অনেক দেশের তুলনায় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন ভালো। করোনার আগে মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ, রেমিট্যান্স এবং মাথাপিছু আয় অনেক ভালো ছিল।

আলোচনায় বলা হয়, সরকারি তহবিল ব্যবস্থাপনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি কাজে লাগাতে হবে। অনলাইনে সরকারি অনেক সেবা ভোগ করছে সাধারণ মানুষ। আরও বিস্তৃত করতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, সরকারের আয়-ব্যয় ব্যবস্থাপনার উন্নতিকরণে আরও অনেকটা পথ হাঁটতে হবে সরকারকে। কেননা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানোর দক্ষ জনশক্তি আর সাইবার ঝুঁকির মতো বিষয়গুলো আগামী দিনের বড় চ্যালেঞ্জ।

এ সময় বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের প্রধান আবদৌলায়ে সেক জানান, সামষ্টিক অর্থনীতির টেকসই নিশ্চিতে বাংলাদেশকে আয়-ব্যয় ব্যবস্থাপনায় ৬ খাতে সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে।

রেমিট্যান্স   সরকার   অর্থমন্ত্রী   আ হ ম মুস্তফা কামাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

ভবিষ্যতের জন্য ডলার বুকিং, দাম ১২৩ টাকা

প্রকাশ: ০১:৩৬ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ভবিষ্যতের জন্য ডলার বুকিং দেওয়ার নতুন নিয়ম চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের ফরওয়ার্ড রেট (ভবিষ্যৎ দাম) সর্বোচ্চ কত হবে তাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়মে এক বছর পর ডলারের দাম বর্তমানের চেয়ে ‘এসএমএআরটি’ বা স্মার্ট হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি নিতে পারবে ব্যাংক।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারির মাধ্যমে নতুন নিয়ম চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী এক বছরের জন্য ডলার বুকিং দিয়ে রাখা যাবে। এজন্য গ্রাহককে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। এটা নির্ধারণ হবে এখন যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হয়, তার মাধ্যমে। যেটা স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত, সংক্ষেপে যার নাম ‘এসএমএআরটি’।

প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। জুলাইয়ে স্মার্ট রেট ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। আগস্টে তা বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ, যা চলতি সেপ্টেম্বরেও অপরিবর্তিত রয়েছে।

কেউ এখন ভবিষ্যতের জন্য ডলারের বুকিং দিয়ে রাখলে তাঁকে এক বছর পর প্রতি ডলারে ১২৩ টাকা ৩৫ পয়সা পরিশোধ করতে হবে। আর মাসভিত্তিক দাম হলে তা মাস হিসাবেই কমে আসবে। বর্তমানে আমদানিতে ডলারের দাম ১১০ টাকা। কেউ যদি ভবিষ্যতের জন্য ডলারের বুকিং দিতে চান তাহলে তাকে এক বছর পর প্রতি ডলারে ১২৩ টাকার মতো পরিশোধ করতে হবে। আর মাসভিত্তিক দাম হলে তা মাস হিসাবেই কমে আসবে।

রেমিট্যান্স ও রপ্তা‌নি আয়ে ডলারের মূল্য এখন থেকে এক রেটে ধরা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে রপ্তানিকারকরা প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছেন। আগে যা ছিল ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আ‌য়ে ডলারের মূল্য ৫০ পয়সা বা‌ড়ি‌য়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করা হ‌য়ে‌ছে। এছাড়া আমদানিতে ডলারের দর হবে ১১০ টাকা। আগে যা ছিল ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আন্তঃব্যাংক ব্যবস্থায় ডলার লেনদেন হচ্ছে ১১০ টাকায়।

তবে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহক‌দের গুনতে হচ্ছে ১১৭ টাকা থেকে ১১৮ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের নগদ প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ১১৮ টাকা পর্যন্ত।

আমদানিকারকদের কাছে বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল নতুন নিয়মটি চালু করেছে। অথচ এসব ব্যাংকের কয়েকটি ভবিষ্যৎ দাম আদায় করতে গিয়ে আমদানিকারকদেরর কাছ থেকে বেশি দাম রেখেছিল বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ১০ ব্যাংক হলো মার্কেন্টাইল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংক। আরও কিছু ব্যাংককে শাস্তির আওতায় আনা হতে পারে বলে সূত্রগুলো জানায়।


ডলার বুকিং   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করলে ‘শাস্তি’র হুঁশিয়ারি গভর্নরের

প্রকাশ: ০৯:১৭ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে ডলার কেনাবেচা করলে ‘শাস্তি’র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

বৈঠকে ডেপুটি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় এবিবির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন।

বৈঠকে বর্তমান দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, মূল্যস্ফীতি চাপ, রিজার্ভ, এক্সচেঞ্জ রেট, আমদানি রপ্তানিতে অর্থপাচার রোধ এবং ব্যাংক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে থাকা একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, ব্যাংক খাতের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ডলার রেটের বিষয়ে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে বলেছেন গভর্নর। আমদানি রপ্তানির মাধ্যমে যেন অর্থপাচার না হয়, সেদিকে কোঠর নজর রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া এসএমইতে ঋণ বাড়াতেও তাগিদ দিয়েছেন গভর্নর।

এর আগে বেশি দামে ডলার বিক্রি করার কারণে ১০ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পদক্ষেপের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংক মালিকদের সঙ্গেও একটি সভা করা হয়। ওই সভায়ও ডলার কারসাজির বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন গভর্নর।

ওই সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে ডলারের বাজার পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ও ব্যাংকের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।


ডলার   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

ভিসানীতির খবরে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন

প্রকাশ: ০৮:৫০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার শেয়ারবাজারে বড় পতন হয়েছে। দিনের প্রথম দেড় ঘণ্টা সূচক ওঠানামার মধ্য দিয়ে লেনদেন হলেও বাকি তিন ঘণ্টা লেনদেন হয়েছে শেয়ার বিক্রির চাপের মধ্য দিয়ে। বিমা, বস্ত্র এবং প্রকৌশল খাতসহ সব কয়টি খাতের শেয়ারের দাম আজ পতনে ছিল।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার খবরে শেয়ারবাজারে এমন বড় পতন হয়েছে। যে কারণে আজ শেয়ার ক্রয়ের চেয়ে বিক্রি করতেই বেশি আগ্রহ দেখিয়েছে বিনিয়োগকারীরা। এতে করে বাড়তি চাপ তৈরি হয় শেয়ারবাজারে। যার ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিবর্তে বড় পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। 

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে এই চাপ সাময়িক। দুই-এক দিনের মধ্যে তা ঠিক হয়ে যাবে।

এদিন বাজারের সব সূচক কমেছে। কমেছে টাকার পরিমাণে লেনদেনও। আর যে পরিমাণ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে তার চেয়ে ১২ গুণের বেশি দর কমেছে।

আজ প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৮.৮১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮০.৯৩ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫.৯৩ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯.২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে একহাজার ৩৫৮.৬৭ পয়েন্টে এবং দুইহাজার ১৩৬.৮৫ পয়েন্টে।

ডিএসইতে ৩১০টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টির বা ৩.৮৭ শতাংশের দর বেড়েছে। শেয়ার দর কমেছে ১৪৮টির বা ৪৭.৭৪ শতাংশের এবং ১৫০টির বা ৪৮.৩৯ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডিএসইতে আজ ৫০০ কোটি ৭৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ২৩৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৭৩৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আজ ৬৮.৭০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৯৫.৪৯ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসসিএক্স ৪১.৫০ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৮.৩৩ পয়েন্ট, সিএসই-৫০ সূচক ২.৬৪ পয়েন্ট এবং সিএসআই ২.৩৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১ হাজার ১১৭.০৩ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৩৬০.২৪ পয়েন্টে, একহাজার ৩০৫.৫৯ পয়েন্টে এবং একহাজার ১৬৮.৭৪ পয়েন্টে।

এদিন সিএসইতে ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানে লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩টির, কমেছে ৮০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫০টি প্রতিষ্ঠানের। এদিন সিএসইতে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।

ভিসানীতি   শেয়ারবাজার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

অর্থনৈতিক সংকট: বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক

প্রকাশ: ১০:৫১ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট এবং মূল্যস্ফীতিতে নাকাল দেশবাসী। এ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে। বিশ্বের প্রায় সব দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপ দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার কার্যকর হাতিয়ার খুঁজে বের করতে দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও সাংবাদিকদের সঙ্গে পরামর্শের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

বৈঠকে নতুনভাবে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠক শেষে মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি। তাই আমরা অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেসব পরামর্শ আসবে সে অনুযায়ী আগামী মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হবে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও অন্যান্য দেশের তুলনায় মূল্যস্ফীতি আমরা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। আমরা যে এখনও সংকটের মধ্যে আছি তা সত্য। তবে সেই সংকট নিরসনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। যেমন, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, রপ্তানি বাড়ানো ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় আমাদের দেশও তার মাশুল গুনছে।

গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বর্তমান মুদ্রানীতির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং নতুন করে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন মুখপাত্র।

ভবিষ্যতে আরও অর্থনীতিবিদ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম, চেম্বার অব কমার্স এবং অর্থনৈতিক খাতের বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা পর্যায়ক্রমে চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বৈশ্বিক এ সংকটের মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) ঝুঁকি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির প্রধান পাঁচটি ঝুঁকি চিহ্নিত করেছে তারা। বাংলাদেশের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেশের অর্থনীতির প্রধান ঝুঁকি।

ঝুঁকির পাঁচটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে ডব্লিউইএফ। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে আরও যে চারটি ঝুঁকির খাত তারা চিহ্নিত করেছে, সেগুলো হলো ঋণ সংকট, উচ্চ পণ্য মূল্যের ধাক্কা, মানবসৃষ্ট পরিবেশগত ক্ষতি ও সম্পদের জন্য ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা।

গত জুন ও জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার পর আগস্ট মাসে তা আবার বেড়েছে। গত মাসে (আগস্ট) মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে। এই সময় দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ অনেকটা বেড়ে গেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার উঠেছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে।

সরকারের প্রত্যাশা ছিল, আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতির হার কমবে। ২৯ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভার (একনেক) পর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মূল্যস্ফীতি জোর করে কমানো যায় না। কার্যকর নীতি নিতে হবে। আমি ঝুঁকি নিয়ে বলতে পারি, চলতি আগস্টে মূল্যস্ফীতি ২ থেকে ৪ পয়েন্ট কমবে।’ কিন্তু গত মাসে তা উল্টো বেড়েছে।

এদিকে গত মঙ্গলবার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেছেন, মূল্যস্ফীতির হার আগের পর্যায়ে নামতে এক বছর সময় লাগবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক ওয়ার্কিং পেপার বা কার্যপত্রে বলা হয়েছে, আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হলে ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি প্রণয়নের পাশাপাশি দেশীয় মুদ্রার দরপতনের হার কমাতে হবে।

আইএমএফের কার্যপত্রে বাংলাদেশ সম্পর্কে অবশ্য সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা নেই। তবু এটা পরিষ্কার যে বাংলাদেশ উল্লিখিত দুটি ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে আছে। বাস্তবতা হলো, ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি ডলারের আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার ছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা, যা এখন ১১০ টাকা; অর্থাৎ এই সময়ে স্থানীয় টাকার দরপতন হয়েছে ২৮ দশমিক ২১ শতাংশ। এর মধ্যে নীতি সুদ হার বাড়ানো হলেও ব্যাংক ঋণের সুদহার অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৯ শতাংশেই রয়ে গেছে। ফলে নীতি সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব তেমন একটা অনুভূত হয়নি, অন্তত এখন পর্যন্ত।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে মুদ্রার বিনিময় হার কৃত্রিমভাবে ধরে রেখেছিল। যে কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যখন ডলারের বিনিময় হার অনেকটা বৃদ্ধি পায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই আমদানি ব্যয় বেড়ে যায়। এটি মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ।

যদিও এখন বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি কেবল বৈশ্বিক কারণে হচ্ছে না, নিজস্ব বাজার ব্যবস্থাপনাও এর জন্য দায়ী।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূলত জ্বালানি তেল, এলএনজি, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির দায় মেটানোর জন্য ডলার বিক্রি করছে। পাশাপাশি সরকারের বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্যও ডলার বিক্রি করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখনো বিক্রি করে চলেছে, যা মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন