অতি মাত্রায় সুদ পরিশোধ কমাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে নানা শর্ত দেওয়া হয়েছে। যার কারণে এ খাতে বিনিয়োগ ঋণাত্বক (নেগেটিভ) প্রবৃদ্ধিতে নেমে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে এবার বাজেটের ঘাটতি পূরণে সরকার সঞ্চয়পত্রের নির্ভরতাও কমিয়ে ফেলেছে।
আসন্ন ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা ঠিক করছে সরকার। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ১৭ হাজার কোটি টাকা কম। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য ঠিক করা আছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
সবকিছু ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩ তম ও বাংলাদেশের ৫২ তম বাজেট।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল এ ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের উপর ভরসা করছে সরকার।
আসন্ন বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কর বহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে (অনুদান ছাড়া) দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদানসহ এ ঘাটতি দাঁড়ায় দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে তারও একটি ছক তৈরি করেছে।
ছক অনুযায়ী, সরকার অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসাবে নেবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যা আছে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিতে চায় সরকার। যার পরিমাণ ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এরপর সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা আর অন্যান্য খাত থেকে পাঁচ হাজার এক কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) যে পরিমাণ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, তা দিয়ে গ্রাহকদের আগে বিনিয়োগ করা সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। উল্টো ৪ হাজার ১৬১ কোটি টাকা সরকার তার কোষাগার ও ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকার। বিপরীতে ওই মাসে মূল ও মুনাফা বাবদ সরকারকে পরিশোধ করতে হয়েছে ৭ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। এসময় বিক্রির চেয়ে পরিশোধের পরিমাণ বেশি। অর্থাৎ নিট বিক্রির ঘাটতি (ঋণাত্বক) দাঁড়িয়েছে ৬৫২ কোটি টাকা।
আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে, তাকে বলা হয় নিট বিক্রি। ওই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা থাকে। সরকার তা বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজে লাগায়। এ কারণে অর্থনীতির ভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬২ হাজার ৬৫৭ কোটি ৫১ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর বিপরীতে মুনাফা ও মূল বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৬৬ হাজার ৮১৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ৯ মাসে যা বিনিয়োগ হয়েছে তার চেয়ে ৪ হাজার ১৬১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে সরকার। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার কোনো ঋণ পায়নি। উল্টো আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের নগদায়নের চাপে মূল ও মুনাফাসহ ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে।
সর্বশেষ চলতি অর্থবছর ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে রিটার্নের সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব রকম সঞ্চয়পত্রের সুদহার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। তার আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ সীমা কমিয়ে আনা হয়। এছাড়া ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। দুর্নীতি বা কালো টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধে ক্রেতার তথ্যের একটি ডাটাবেজ তৈরি হয়েছে। এসব কড়াকড়ির প্রভাবে বর্তমানে সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে।
বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৫২, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ৭৬, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ২৮, তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। কয়েক দফায় সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো হলেও এখনো তা ব্যাংকের তুলনায় বেশি।
বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছর সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক থাকলেও সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। তবে এর বিপরীতে প্রথম ৯ মাসে এই খাত থেকে কোনো ঋণ পায়নি সরকার, উল্টো কোষাগার ও ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
চলতি মাসে তিন দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।
এর আগে গত তিনদিন পূর্বে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। নতুন দাম নির্ধারণের তিন দিন না যেতেই এবার আবারও স্বর্ণের দাম কমালো দেশের বাজারে স্বর্ণের মূল্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে বাজুস। এদিন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। আর ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৯ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৫৬৬ টাকা কমিয়ে ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৭৬ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশ্য স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে ক্রেতাদের। কারণ বাজুসের নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি করা হয়। সেইসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে এক লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ টাকা।
স্বর্ণ বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বাজুস
মন্তব্য করুন
বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাওয়া পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক রিয়াজ খান পদত্যাগ করেছেন। এরই মধ্যে তাকে এমডি হিসেবে নিয়োগের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনআরবি ব্যাংক।
এদিকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক থেকে ছুটিতে পাঠানো এমডি মো. হাবিবুর রহমান চাকরিতে ফিরতে পারেননি এখনো। তবে নতুন এমডি পেয়েছে মেঘনা ব্যাংক। আর প্রিমিয়ার, এনসিসি ও বেসিক ব্যাংকের এমডি পদে নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ চলমান রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রের বরাত এসব তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যকার পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্তও নিয়েছে। ব্যাংক দুটির নিরীক্ষার জন্য নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর এরই মধ্যে পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজ খান সরে দাঁড়ালেন তার পদ থেকে। এনআরবি ব্যাংকে যোগদান করতে যাচ্ছেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন হলে তবেই এনআরবি ব্যাংকে যোগদান করবেন তারেক রিয়াজ খান।
এর আগে গত ফেব্রুয়াতি এনআরবি ব্যাংকের এমডির পদ থেকে পদত্যাগ করেন মামুন মাহমুদ শাহ। তারপর থেকে ভারপ্রাপ্ত এমডি দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে ব্যাংকটি।
তারেক রিয়াজ খান পদ্মা ব্যাংক থেকে পদত্যাগের কারণ হিসেবে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পদ্মা ব্যাংক একীভূত হতে যাওয়ায় পদত্যাগ করেছি। আর নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানে যাওয়া যায় কিনা, সেটি দেখছি।
এদিকে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকে রূপান্তর হওয়া স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগদান করেন মো. হাবিবুর রহমান। নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাকে চলতি বছরের গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়। প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদের একজন প্রভাবশালী পরিচালকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে ছুটিতে পাঠানো হয় তাকে। আর এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানতে পারলে এ নিয়ে শুরু করে পরিদর্শন। একই সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনাও করে। কিন্তু এখনো মো. হাবিবুর রহমানকে এমডির পদে ফেরানো নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিদেশি ঋণ ইআরডি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ
মন্তব্য করুন
আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয়
ধাপের ভোট। এই ধাপের ভোটে ঋণ খেলাপিরা যেন প্রার্থী হতে না পারে, সেজন্য সকল রিটার্নিং
কর্মকর্তাকে প্রার্থীদের তথ্য দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির ক্রেডিট ইনফরেমশন ব্যুরোর অতিরিক্ত পরিচালক
মো. আনিচুর রহমান এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের। এর আগে নির্বাচন
কমিশন ঋণ খেলাপিদের তথ্য দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিল।
আনিচুর রহমান তার চিঠিতে বলেছেন, উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের
নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী প্রার্থীদের ঋণখেলাপ সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের লক্ষ্যে
সকল প্রার্থীর পূর্ণ নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, স্বামীর নাম (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) বাংলা
ও ইংরেজিতে, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, করদাতা শনাক্তকরণ সংখ্যা, জন্ম তারিখ, স্থায়ী
ও বর্তমান ঠিকানা সম্বলিত তথ্য সংযুক্ত ছক অনুযায়ী যথাযথভাবে পূরণ করে রিটার্নিং অফিসার/সহকারী
রিটার্নিং অফিসারের নামসহ সিল, স্বাক্ষর ও ফোন (মোবাইল) নম্বর প্রদানপূর্বক তা ই-মেইলের
মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা ভোটে ২ হাজার ৫৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল
করেছেন।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান
পদে ৭৩০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান
পদে ৫৬২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল রোববার।
মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে
২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬০
উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।
এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা
ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে, সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত
থাকবেন।
এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা
ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে।
আপিল কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক।
তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন
যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল
নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের
মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এই ধাপে ৪৭ জেলার ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।
এই ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক
নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে৷ রিটার্নিং কর্মকর্তাদের
সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিষ্পত্তি করবেন জেলা প্রশাসক।
এদিকে প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী আপিল নিষ্পত্তি হয়েছে রোববার।
মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থী হয়েছেন এক হাজার ৭৮৬ জন। এই সংখ্যা আরও বাড়তে
পারে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় আজ ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর
১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক উপজেলা নির্বাচন ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
চলতি মাসে তিন দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।
বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ প্রথমবারের মতো ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ১০০ কোটি ডলারের বেশি। গত জুলাই-মার্চ সময়ে বিদেশি ঋণের বিপরীতে ১০৫ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। একই সময়ে গত অর্থবছরে সুদ বাবদ ৪৮ কোটি ডলার পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ।
আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট। এই ধাপের ভোটে ঋণ খেলাপিরা যেন প্রার্থী হতে না পারে, সেজন্য সকল রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রার্থীদের তথ্য দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির ক্রেডিট ইনফরেমশন ব্যুরোর অতিরিক্ত পরিচালক মো. আনিচুর রহমান এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের। এর আগে নির্বাচন কমিশন ঋণ খেলাপিদের তথ্য দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিল।