বিদেশ থেকে ফেরার সময় বাংলাদেশিদের আনেকেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে স্বর্ণালংকার ও সোনার বার নিয়ে আসেন। তবে এখন থেকে সোনা আনলে আগের চেয়ে দ্বিগুণ কর পরিশোধ করতে হবে। আগে যেখানে এক ভরি স্বর্ণের জন্য ২ হাজার টাকা কর দিতে হতো, সেখানে এখন তা বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা দিতে হবে। স্বর্ণের পরিমাণও কমানো হয়েছে। এতো দিন সর্বোচ্চ ২৩৪ গ্রাম বা ২০ দশমিক শূন্য ৬ ভরি পর্যন্ত সোনা আনা যেত, যা কমিয়ে ১১৭ গ্রাম বা ১০ দশমিক শূন্য ৩ ভরি করা হচ্ছে।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে কর বৃদ্ধির এই প্রস্তাবগুলো দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ জাতীয় সংসদে এই বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা, ২০১৬–এর বিধি ৩–এর উপ-বিধি (১০) মোতাবেক একজন যাত্রী বিদেশ হতে আসার সময় ২৩৪ গ্রাম ওজনের স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড সকল প্রকার শুল্ক–কর পরিশোধ সাপেক্ষে আমদানি করতে পারেন। দেশে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি করার জন্য উক্ত স্বর্ণের পরিমাণ ২৩৪ গ্রামের পরিবর্তে ১১৭ গ্রাম করার প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে এর বেশি অতিরিক্ত স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড বহন করলে শাস্তির বিধান সুস্পষ্ট না থাকায় তা বাজেয়াপ্তকরণের লক্ষ্যে বিদ্যমান ব্যাগেজ বিধিমালা সংশোধন করার প্রস্তাব করছি।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় একজন যাত্রী বিদেশ থেকে আসার সময় স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড আনার ক্ষেত্রে প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রাম (এক ভরি) স্বর্ণের জন্য সর্বমোট ২ হাজার টাকা শুল্ক–কর পরিশোধ করে থাকেন। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রাম স্বর্ণের জন্য ৪ হাজার টাকা শুল্ক-কর পরিশোধের বিধান করার প্রস্তাব করছি।’
বিদেশফেরত যাত্রীদের মধ্যে সোনা নিয়ে আসার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এভাবে ২০২২ সালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রায় ৫৪ টন সোনা এসেছে, যার বর্তমান বাজারমূল্য ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। আর পরিমাণের দিক দিয়ে তা এর আগের ২০২১ সালের তুলনায় ৫৩ শতাংশ বেশি। যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় বিমানযাত্রীরা বৈধ পথেই এসব সোনা এনেছেন। তবে সোনা আনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আসার ওপর প্রভাব পড়ছে। সে জন্যই সোনা আনার ওপর কর বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
মন্তব্য করুন
রেমিট্যান্স প্রবাসী বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
ব্রাজিল, রাশিয়া,
ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা এই পাঁচটি বিকাশমান অর্থনীতির জোট ব্রিকসের উদ্যোগে গঠিত
নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) থেকে এই প্রথমবারের মতো ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বিশুদ্ধ
পানি সরবরাহের একটি প্রকল্পে ব্যাংকটি সাড়ে ৩২
কোটি ডলার দেবে। বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন হাজার
কোটি টাকা।
অর্থনৈতিক
সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, এই
ঋণপ্রস্তাব অনুমোদনের জন্য শিগগিরই এনডিবির
বোর্ড সভায় উঠবে। অনুমোদন
হলে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ
ব্যাংকের (এআইআইবি) পরে নতুন আরেকটি
বহুজাতিক ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ
পাবে বাংলাদেশ।
ব্রাজিল,
রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ
আফ্রিকার নামের আদ্যক্ষর নিয়ে জোটটির নামকরণ
হয়েছে ব্রিকস। এই জোটের নেতৃত্বে
২০১৪ সালে নিউ ডেভেলপমেন্ট
ব্যাংক (এনডিবি) গঠিত হয়। শুরুতে
ওই পাঁচ দেশই এনডিবির
সদস্য ছিল।
২০২১
সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নিউ ডেভেলপমেন্ট
ব্যাংক-এর (এনডিবি) সদস্য হয় বাংলাদেশ। এনডিবি সদস্য হওয়ার দুই বছরের মাথায়
প্রথমবারের মতো ঋণ পেতে
যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সরকারি
কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী
মাসের মধ্যেই ঋণ অনুমোদন করা
হবে। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক
(এডিবি), ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি), এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ
ব্যাংক (এআইআইবি)—এই চার বহুপক্ষীয়
ঋণদাতা ব্যাংকের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে
প্রতিবছর ঋণ নেয় বাংলাদেশ।
ইআরডি
সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা
পানি সরবরাহ প্রকল্পে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের
কাছ থেকে ৩২ কোটি
ডলার ঋণ নিতে পারবে
বাংলাদেশ। এই প্রকল্পের মোট
খরচ ৪ হাজার ১১০
কোটি টাকা। ঢাকা ওয়াসা প্রকল্পটি
বাস্তবায়ন করবে। গত ২৯ আগস্ট
এই প্রকল্পের ধারণাটি অনুমোদন করেছে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
এখন ঋণপ্রস্তাবটি এনডিবি বোর্ডের অনুমোদনের অপেক্ষায়।
ইআরডি
কর্মকর্তারা জানান, এই ঋণের সুদের
হার দুই থেকে আড়াই
শতাংশের মধ্যে থাকবে এবং এই প্রকল্পের মাধ্যমে
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে
নতুন যুক্ত হওয়া ১৬টি ইউনিয়নে
পানি সরবরাহ–ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। গ্রাহকদের
জন্য নতুন লাইন বসিয়ে
পানির সংযোগ দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে
প্রকল্পটির মাধ্যমে পানির সরবরাহে ৭০ হাজার নতুন
সংযোগ দেওয়া হবে।
ইআরডির
অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন
বলেন, ঋণ নেওয়ার নতুন
আরেকটি উৎস হলো নিউ
ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। এই ব্যাংকের ঋণে
কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা চলছে।
এ ব্যাপারে শিগগিরই চূড়ান্ত হবে।
এনডিবি নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ঋণ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নানা সমালোচনার
মুখে দুই দিনের ব্যবধানে ডলার অগ্রিম বুকিংয়ের নিয়মে পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর ফলে অগ্রিম ডলার বুকিং দিতে পারবে শুধুমাত্র আমদানিকারকরা।
বুকিংয়ের সর্বোচ্চ
সময় হবে তিন মাস। প্রথম ঘোষণায় এ সময় ছিল সর্বোচ্চ এক বছর।
মঙ্গলবার (২৬
সেপ্টেম্বর) এ সংশোধিত সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি
বিভাগ। এর আগে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ডলারের অগ্রিম বুকিং সম্পর্কিত সার্কুলার জারি
করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে বলা হয়,
আগাম ডলার নেওয়ার ক্ষেত্রে পরবর্তী এক বছরের জন্য সর্বোচ্চ দাম কি হবে তা বেঁধে দেওয়া
হয়। নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে ডলারের দাম ‘এসএমএআরটি; বা স্মার্ট হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ
পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বেশি নিতে পারবে ব্যাংক। নতুন নিয়মে রেট ঠিক রাখা হলেও সময় কমিয়ে
তিন মাস নির্ধারণ করে দেওয়া হয় এবং ডলার বুকিং শুধুমাত্র আমদানিকারকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ
করে দেওয়া হয়।
আগাম ডলার বুকিংয়ের
নির্দেশনায় জনমনে শঙ্কা সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি ডলার ব্যবহারকারীদের মধ্যে তীব্র সমালোচনা
হয়। তারা বলছেন, আগামীতে ডলার সংকট আরও বাড়বে। এজন্য আগে থেকে ডলার বুকিং দিতে বলা
হচ্ছে। অনেকে দাবি করছেন, এক বছর পর ডলারের রেট ১২৩ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মন্তব্য করুন
গভর্নর
হিসেবে একটি র্যাঙ্কিংয়ে
‘ডি গ্রেড’ পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক গ্লোবাল ফাইন্যান্স
ম্যাগাজিন ১০১টি
গুরুত্বপূর্ণ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের সবশেষ
এই র্যাঙ্কিং প্রকাশ
করেছে।
মূল্যস্ফীতি
নিয়ন্ত্রণসহ সবক’টি সূচকে
সাফল্য অর্জনের মাধ্যমে প্রতিবেশী ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ পেয়েছেন A+ (এ
প্লাস) গ্রেড। A- (এ মাইনাস) গ্রেড
পেয়েছেন শ্রীলংকাকে দেউলিয়াত্ব ও ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির
পরিস্থিতি থেকে বের করে
আনা গভর্নর নন্দলাল বীরাসিংহে।
গভর্নর
হিসেবে এ প্লাস পেয়েছেন
মাত্র তিনজন গভর্নর। বাকি দুজন হচ্ছেন—
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর টমাস জর্ডান ও
ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নগুয়েন থি হোং।
১৯৯৪
সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন
দেশের গভর্নরদের মূল্যায়ন করে আসছে গ্লোবাল
ফিন্যান্স ম্যাগাজিন। সাময়িকীটির বার্ষিক প্রকাশনা হিসেবে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে ‘সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড’। ১০১টি গুরুত্বপূর্ণ
দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের সবশেষ
এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের
অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বলতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে
সরকারের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে
দেখছে গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিন। বহিস্থ খাতের অনিশ্চয়তা ও চাপের মুখে
অর্থনীতি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ২০২২
সালের বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় যেভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির বহিস্থ খাতে যে নাজুক
পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটা
উল্লেখ করে দেশের অর্থনীতির
অনিশ্চয়তার চিত্র তুলে ধরেছে তারা।
বাংলাদেশ
প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,
কোভিড-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি
প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫
দশমিক ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির
হার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার
চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও মুদ্রার
বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল।
কিন্তু ২০২২ সালের মাঝামাঝি
সময়ের মধ্যে টাকার ৯ দশমিক ৫
শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়। দেশের বাজারে
ডলার–সংকটে হিমশিম খান আমদানিকারকেরা। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য অনেকটা
বেড়ে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় আন্তর্জাতিক
মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ।
গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংক গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন
মন্তব্য করুন