ডলার সংকটের
কারণে কোনো ভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না রিজার্ভের। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে
ডলার বিক্রি করছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এরই মধ্যে গত সাত দিনে রিজার্ভ
কমেছে ৬ কোটি ৭৮ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম
৬ অনুসারে গত আগস্ট মাসের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৩৩০ কোটি ডলার। চলতি মাসের শুরুতে
তা কমে ২ হাজার ১০৫ কোটি ডলারে নামে। এর মানে দুই মাসে রিজার্ভ কমেছে ২২৫ কোটি ডলার।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে
আসে।প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপিএম৬ অনুযায়ী বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আছে
২ হাজার ৮৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। চলতি মাসের ১৮ তারিখে যার পরিমাণ ছিলো ২ হাজার ৯৫ কোটি
৭৮ লাখ ডলার। অর্থাৎ অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে ৬ কোটি ৭৮ লাখ ডলার।
এদিক চলতি ২০২৩-২০২৪
অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে রিজার্ভ থেকে ৩৭৫ কোটি ডলার বিক্রি
করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
যেখানে আগের
অর্থবছরের পুরো সময়ে রিজার্ভ থেকে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছিলো। ডলার
সংকট কমাতে ও টাকার মান ধরে রাখতে ডলার বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছিল আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক
সংস্থাটি। তবে কোনো উদ্যোগেই এ সংকট কাটছে না।
এমনকি আন্তর্জাতিক
মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পালনেও ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেপ্টেম্বর
পর্যন্ত যে পরিমাণ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখার কথা ছিলো তা রাখা সম্ভব হয়নি।
তাই আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাটির কাছে অনুরোধ জানিয়ে শর্ত পূরণের লক্ষ্যমাত্রা কমাতে
হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের
মুখপাত্র মেজবাউল হক জানিয়েছেন, রিজার্ভে ডলার রেখে বসে থেকে লাভ নেই। দেশের মানুষের
জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে চাইলে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত থাকবে।
এক্ষেত্রে রিজার্ভের অর্থখরচের কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের
কাছে এখন প্রকৃত যে রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানো যাবে, অন্য কোনো
খরচ নয়। সাধারণত একটি দেশের কাছে ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে
হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে বলা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা বাণিজ্য রিজার্ভ
মন্তব্য করুন
সাকিব আল হাসান তামিম ইকবাল খান
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। তার আগে কিছুটা কমেছে মূল্যস্ফীতির উত্তাপ।
এক মাসের ব্যবধানে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি
কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশে ঠেকেছে। আগের মাস অক্টোবরে যা ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
এছাড়া অক্টোবর মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি যেখানে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল, নভেম্বরে সেটি
নেমে এসেছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান
ব্যুরোর (বিবিএস) মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতির এ চিত্র উঠে এসেছে।
বিবিএসের হিসাবে
দেখা যায়, দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আগের
মাসে যা ছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এছাড়া খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমে
৮ দশমিক ১৬ শতাংশে ঠেকেছে।
চলতি অর্থবছর
গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ছিল সরকারের। কিন্তু ডলার সংকটের
কারণে আমদানি ব্যাহত হওয়ায় সংকট আরও বেড়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয়
ব্যাংক নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য এতদিন মূলত ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে
দায়ী করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
এখন সুদের হার
বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সুদের হার বাড়লে মানুষ সাধারণত
ব্যাংকে আমানত রাখতে উৎসাহিত হন।
গত তিন মাস
ধরেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের ওপরে ছিল। তবে নভেম্বরে তা কিছুটা কমে ১০ দশমিক
৫৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বিবিএসের হিসাবে,
গত অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা গত ১১ বছর ৯ মাসের মধ্যে
সর্বোচ্চ। অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বেড়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল।
বিবিএসের হিসাবে
দেখা যায়, দেশের গড় মূল্যস্ফীতি কমলেও শহরের তুলনায় গ্রামের মূল্যস্ফীতি এখনো বেশি।
নভেম্বরে গ্রামে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬২ শতাংশে, যা আগের মাস অক্টোবরেও
ছিল ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। নভেম্বরে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ১০
দশমিক ৮৬ শতাংশে। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে রয়েছে।
শহর এলাকায়
গ্রামের তুলনায় মূল্যস্ফীতি কিছুটা কম। নভেম্বরে শহর এলাকায় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে
৯ দশমিক ১৬ শতাংশে, অক্টোবরে যা ছিল ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক
৫৮ শতাংশ এবং খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ।
চলতি বছরের
আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উঠেছিল
১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে। যা ছিল এক যুগ বা ১২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সেপ্টেম্বরে অবশ্য
মূল্যস্ফীতি কিছুটা নিম্নমুখী হয়। সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে।
আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি নামে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশে।
এরপর অক্টোবরে
সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে প্রায় ১০ শতাংশে (৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ) উঠে যায়। খাদ্য মূল্যস্ফীতি
বেড়ে হয় ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি
হয়েছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। খাদ্য-বহির্ভূত
মূল্যস্ফীতি হয় ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
বিভিন্ন দেশে
মূল্যস্ফীতি বেশ দ্রুতগতিতে কমলেও বাংলাদেশে তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এমনকি অর্থনৈতিক
সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি কমে ১ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো মূল্যস্ফীতি
মন্তব্য করুন
দেশে চলমান ডলার সংকট নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আওতায় রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিটের (আরএফসিডি) ওপর ব্যাংকগুলো ৭ শতাংশের বেশি সুদ দেবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া এ ধরনের অ্যাকাউন্ট থেকে দেশের বাইরে টাকা পাঠানো, একাধিক কার্ড ইস্যু করাসহ বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যাবে।
সম্প্রতি
এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ
ব্যাংক।
এতে বলা হয়েছে, কেউ আরএফসিডি হিসেবে ১০ হাজার ডলার জমা রাখতে পারেন। এখন থেকে ব্যাংকগুলো বেঞ্চমার্ক হারের সঙ্গে এই আমানতের উপর কমপক্ষে দেড় (১ দশমিক ৫) শতাংশ সুদ দেবে। এই হিসেবে, আমানতের বিপরীতে দুটি সম্পূরক কার্ড ইস্যু করা যেতে পারে। শিশু বা ভাইবোনসহ নির্ভরশীলরা কার্ডটি ব্যবহার করতে পারেন।
এই অ্যাকাউন্ট থেকে বিদেশে শিক্ষার
খরচ পাঠানো যাবে। আবার স্বামী বা
স্ত্রী, সন্তান, ভাইবোন এবং নির্ভরশীল বাবা-মায়ের চিকিৎসার খরচও এখান থেকে
বহন করা যায়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। তার আগে কিছুটা কমেছে মূল্যস্ফীতির উত্তাপ। এক মাসের ব্যবধানে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশে ঠেকেছে। আগের মাস অক্টোবরে যা ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এছাড়া অক্টোবর মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি যেখানে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল, নভেম্বরে সেটি নেমে এসেছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশে।
দেশে চলমান ডলার সংকট নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আওতায় রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিটের (আরএফসিডি) ওপর ব্যাংকগুলো ৭ শতাংশের বেশি সুদ দেবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া এ ধরনের অ্যাকাউন্ট থেকে দেশের বাইরে টাকা পাঠানো, একাধিক কার্ড ইস্যু করাসহ বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যাবে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলমান সংকটের মধ্যেই ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা কমাল বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে প্রতি ডলার কেনার দর ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা এবং বিক্রির দর ১১০ টাকা ২৫ পয়সা ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্ততায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা।