গত দুই সপ্তাহ
ধরে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-ফ্রান্স-পর্তুগাল কিংবা মেসি-নেইমার-রোনালদো-এমবাপ্পেকে নিয়ে মাতামাতিতে আড়ালে পড়ে গিয়েছিল ক্রিকেট। মেহেদী হাসান মিরাজ যেন পুনঃজাগরণ ঘটালেন মিরপুর শেরেবাংলায়। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সব আলো কেড়ে
নিয়েছেন স্বাগতিক অলরাউন্ডার মিরাজ। গ্রেট শো অন আর্থ
খ্যাত বিশ্বকাপ ফুটবলের ডামাডোলে মিরপুরের গ্যালারিতে আওয়াজ উঠল মিরাজ-মিরাজ-মিরাজ। ভারতের বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজের শুরু থেকেই দারুণ ক্রিকেট খেলছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ১৮৬ রান তাড়ায় ১২৮ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে
পরজায়ের শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। দলের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও ৩৯ বলে ৩৮
রানের লড়াকু ইনিংস খেলে দলকে ঐতিহাসিক এক জয় উপহার
দেন মিরাজ, জিতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। সেই মিরাজ আজ সিরিজের দ্বিতীয়
ওয়ানডেতে নিজেকেই ছাড়িয়ে গেলেন। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৩ ম্যাচের সিরিজ
২-০ তে জেতার
পেছনে অন্যতম কারিগর তিনি।
বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে
নেমেও বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা। টস জিতে ব্যাটিংয়ে
নেমে ৬৯ রানে ৬
উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ, তখন ত্রাতা হিসেবে মাথে আসেন মিরাজ। সপ্তম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ১৬৫ বলে ১৪৮ রানের অবিশ্বাস্য জুটি গড়েন। রিয়াদ আউট হওয়ার পর নাসুম আহমেদকে
সঙ্গে নিয়ে শেষ ২৩ বলে ৫৩
রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মিরাজ। এই জুটিতেই ক্যারিয়ার
সেরা ১০০ রানের ইনিংস সাজান তিনি। তার শতরানের ইনিংসে ভর করে ৭
উইকেটে হারিয়ে ২৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। বল হাতে শিকার
করেন দুই উইকেট। ভারতকে ৫ রানে হারায়
বাংলাদেশ।
যুব দলে থাকতেই নিজের আগমনী বার্তা দিয়ে রেখেছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। অভিষেকের পর থেকে জাতীয়
দলেও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন এই অফ স্পিনিং
অলরাউন্ডার। এক হাজার ৯৫৮
রান নিয়ে ভারতের বিপক্ষে ব্যাট করতে নামেন মিরাজ। ব্যক্তিগত ৪২ রানের সময়
দুই হাজারি ক্লাবে পা রাখেন। বাংলাদেশের
চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে সব ফরম্যাট মিলিয়ে
দুই হাজার রান এবং ২০০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন মিরাজ।
ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে শেষ উইকেটের এমন জয়ের পর মেহেদী হাসান
মিরাজকে কাঁধে তুলে নিয়ে উদযাপন করতে থাকেন সতীর্থ ক্রিকেটাররা। সেই মিরাজ কি ভবিষ্যতে সাকিবের
বিকল্প হতে পারবেন। নিতে পারবেন দলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা? সে সম্ভাবনা উড়িয়ে
দিচ্ছেন না জাতীয় দলের
প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
তিনি বলেন, মিরাজ কি সাকিবের মতো
হতে পারে? সম্ভবত। সে পাঁচ-ছয়ে
ব্যাট করতে পারে। বল হাতেও ধারাবাহিক
পারফর্ম করে। সব সংস্করণে খেলার
সুযোগ পেলে সেও কাজটা করতে পারবে।
মিরাজকে নিয়ে ডমিঙ্গো আরও বলেন, মিরাজকে আমি বেশ উঁচু মাপেরই মনে করি। জানি না জনগণ বা
সংবাদমাধ্যম কিভাবে দেখে। কোচ হিসেবে আমার তালিকার শুরুর দিকেই থাকে সে।
কোচ আরও বলেন, মিরাজ দলের আড়ালের একজন নায়ক। সব সংস্করণেই ধারাবাহিক।
যেকোনো জায়গায় ব্যাটিং করতে পারে, চাপ সামলাতে পারে। ওয়ানডে বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে ২ বা ৩-এ ছিল। তার
ওপর সব সময়ই ভরসা
করা যায়। রান দিলেও কঠিন মুহূর্তে তাকে ফিরিয়ে আনতে পারে, সে এমন পরিস্থিতি
উপভোগ করে।
এত কিছু বলা
হয়ে গেল, তবু মধুর সে সমস্যার সমাধান
তো হলো না! ‘অবিশ্বাস্য’
তো এখন পুরোনো শব্দ। বিস্ময়বালক মিরাজের জন্য ক্লিশে। তাঁকে তাহলে আজ কী বিশেষণে
ভূষিত করা যায়? তাঁর কোন কীর্তিটি আসলে বড়? মোস্তাফিজুরকে নিয়ে শেষ উইকেটে ৫১ রানের অবিচ্ছিন্ন
জুটি গড়ে ম্যাচ জেতানো, নাকি ৬৯ রানে ৬
উইকেট পড়ে যাওয়ার পর শতরানের ইনিংসে
ভাসতে ভাসতে বাংলাদেশকে ২৭১ রানে নিয়ে যাওয়া? পরে বল হাতেও তো
নিয়েছেন ২ উইকেট!
কোনোটাকেই কোনোটা থেকে পিছিয়ে রাখার উপায় নেই। এর চেয়ে বরং এটা বলে দেওয়াই নিরাপদ যে, মিরাজের তুলনা শুধু মিরাজই।
বাংলাদেশ ভারত মেহেদি হাসান মিরাজ
মন্তব্য করুন
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব মাপার সেরা টুর্নামেন্ট
এটি। যার জন্য বছরজুড়ে চলা এই টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলোর উপর বিশেষ নজর থাকে পুরো ফুটবল
দুনিয়ার। এবারও তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের আসরেও নজর ছিল
পুরো ফুটবল বিশ্বের। যেখানে চলেছে দীর্ঘ নাটকীয়তা।
আর সেই দীর্ঘ নাটকীয়তার পর অবশেষে নিশ্চিত হয়েছে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স
লিগের শেষ চার। যেখানে স্থান করে নিয়েছে তিন দেশের চার দল।
টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বুধবার (১৭ এপ্রিল)
গতবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটিকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেমিতে পা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
আর অন্য ম্যাচে আর্সেনালকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে বায়ার্ন মিউনিখ। তার আগে মঙ্গলবার
(১৬ এপ্রিল) বার্সেলোনাকে বিদায় করে দেয় পিএসজি। আর অ্যাতলেটিকোকে হারিয়ে ১১ বছর পর
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লড়াই এখন শেষের দিকে। ৩২ দলের টুর্নামেন্ট এখন
নেমে এসেছে ৪ দলে। আর দুই ধাপ পেরোলেই একটি দলের হাতে উঠবে ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের
ট্রফি। যেখানে শেষ চারের টিকিট পাওয়া প্রতিটি দলের আছে শিরোপা জয়ের দারুণ সম্ভাবনা।
নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে বাজিমাত করতে পারে যে কেউ।
এবারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে টুর্নামেন্টটি
সবচেয়ে সফল দল রিয়াল মাদ্রিদ। কারণ চ্যাম্পিয়নস লিগের রাজা কারা এমন প্রশ্নের উত্তরে
রিয়াল মাদ্রিদের নামটাই বলতে হবে সবার আগে। ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের ১৪টি শিরোপা তাদের
দখলে। এমনকি দ্বিতীয় স্থানে থাকা এসি মিলানের চেয়ে দ্বিগুণ (৭টি) শিরোপা রিয়ালের দখলে।
শুধু তাই নয়, এবার সেমিতে রিয়ালের প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখও নেই
তাদের ধারে কাছে। কারণ বায়ার্ন এ পর্যন্ত শ্রেষ্ঠত্বের এ টুর্নামেন্ট জিতেছে ৬ বার।
এছাড়া অন্য দুই সেমি ফাইনালিস্টের মধ্যে ডটমুন্ড শিরোপা জিতেছে একবার। আর ফ্রান্সের
পিএসজির নেই সেই অর্জনও।
এছাড়াও ১৯৯২ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন সংস্করণ শুরু হওয়ার পর
থেকে হিসাব করলেও রিয়ালেরই জয়জয়কার। সে সময় থেকে রিয়াল শিরোপা জিতেছে ৮টি। যেখানে নতুন
সংস্করণ দূরে থাক, সব মিলিয়েও ৮টি শিরোপা জিততে পারেনি অন্য কোনো ক্লাব।
আর তাই সবদিক হিসাব করতে গেলে রিয়াল মাদ্রিদকেই এগিয়ে রাখছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমনকি ফুটবলের তথ্য–পরিসংখ্যান বিশ্লেষণী ওয়েবসাইট ‘অপ্টা’–এর সুপারকম্পিউটারও জানাচ্ছে
একই তথ্য। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চার নিশ্চিতের পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার
করে বানানো অপ্টার বাছাইয়ে দেখা গেছে এবার শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি স্প্যানিশ
জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের।
তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে অপ্টার দেয়া তথ্যমতে, এবারের চ্যাম্পিয়ন্স
লিগে রিয়ালের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা ৩৯.৩১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা টুর্নামেন্টে
কখনও চ্যাম্পিয়ন না হওয়া প্যারিস সেইন্ট জার্মেই’র (পিএসপজি) সম্ভাবনা ২৭.৪১ শতাংশ।
শুধু তাই নয়, অপ্টার তথ্য অনুযায়ী শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে তৃতীয় ফেভারিট
দল টুর্নামেন্টের ৬ বারের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ। এই দলের সম্ভাবনা ১৬.৯০ শতাংশ।
আর লম্বা সময় ধরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা প্রত্যাশী বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের সম্ভাবনা
১৬.৩৮ শতাংশ।
উল্লেখ্য, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের লড়াই শুরু হবে আগামী
৩০ এপ্রিল থেকে। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে ৭ মে।
মন্তব্য করুন
আইপিএলের ১৭তম আসরে শুরু থেকে খুব একটা ছন্দে ছিল না টুর্নামেন্টটির সফলতম দলের একটি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তবে টেবিলের তলানি থেকে উপরের দিকে উঠতে চাইছে হার্দিক পান্ডিয়ার দল। আর সেই ধারাবাহিকতায বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) মহারাজা যাদাবিন্দ্র সিং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়েছে মুম্বাই।
এদিন জমজমাট এক ম্যাচই উপহার দিয়েছে দুই দল। যদিও হৃদয় ভেঙেছে পাঞ্জাবের! আশুতোষ শর্মার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পরও ৯ রানে হেরেছে পাঞ্জাব।
রোমাঞ্চকর ম্যাচটা পরিণতি দেখে শেষ ওভারে! শেষ ৬ বলে পাঞ্জাবের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। হাতে এক উইকেট! প্রথম বলে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রাবাদা রান আউট হলে সেখানেই শেষ হয়েছে পাঞ্জাবের লড়াই! এই জয়ে নয় নম্বর থেকে সাত নম্বরে উঠে গেছে মুম্বাই। অন্যদিকে হেরে ৮ নম্বর থেকে নয় নম্বরে নেমে গেছে পাঞ্জাব।
আগে ব্যাটিং করে মুম্বাই ১৯৩ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল। জবাবে জেরাল্ড কোয়েটজে ও জসপ্রীত বুমরার গতির কাছে পরাস্ত হয় পাঞ্জাব। মাত্র ৪৯ রানে টপ অর্ডারের ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে শুরুতেই। এরপর শশাঙ্ক সিং কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও দলীয় ১১১ রানের মাথায় আউট হন তিনি। তার আউটের পর দ্রুত অলআউট হওয়ার শঙ্কায় ছিল পাঞ্জাব। কিন্তু সাত নম্বরে নেমে আশুতোষ শর্মা যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, তাতে অবিশ্বাস্যভাবে জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি করে তারা। ২ চার ও ৭ ছক্কায় খেলা তার ২৮ বলে ৬১ রানের ইনিংসের কারণে পাঞ্জাবের শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ২৩ রানের।
১৯তম ওভারে ১১ রান নিয়ে ব্যবধান কমিয়েও আনে পাঞ্জাব। এই সময় হারায় একটি উইকেট। ফলে শেষ ওভারে বাকি ১ উইকেটে ১২ রান করতে হতো তাদের। আকাশ মাধুওয়াল প্রথম বলে হোয়াইট দিলে প্রয়োজন পড়ে ১১ রানের। তবে মাধুওয়ালের দ্বিতীয় বলে রাবাদা রান আউট হতেই ১৮৩ রানে থামে পাঞ্জাবের ইনিংস।
মুম্বাইয়ের বোলারদের মধ্যে জেরাল্ড কোয়েটজে ও জসপ্রীত বুমরার প্রত্যেকে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় মুম্বাই। শুরুতেই ওপেনার ইশান কিষানকে হারায় তারা। সেখান থেকে রোহিত শর্মা ও সূর্যকুমার প্রতিরোধ গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুইজনের ব্যাট থেকে আসে ৮১ রান! ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হন রোহিত।
রোহিতের আউটের পর তিলক বর্মাকে নিয়ে সূর্যকুমার গড়েন আরও ৪৯ রানের জুটি। এই দুই ব্যাটার ২৮ বলে এই জুটি গড়েন। সূর্যকুমার হাফ সেঞ্চুরি করে আউট হলে জুটি ভাঙে তাদের। সূর্য ৫৩ বলে ৭টি চার ও ৩ ছক্কায় ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। এরপর তিলকের ১৮ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৩৪ রানে অপরাজিত ইনিংসে মুম্বাই স্কোরবোর্ডে ১৯২ রান তুলতে পারে।
বল হাতে পাঞ্জাবের হার্শাল প্যাটেল ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ৪ ওভারে ৪১ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন স্যাম কারান। কাগিসো রাবাদা ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে নেন ১টি উইকেট।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক শিরোপাখরায় থাকা আর্জেন্টিনা দীর্ঘ সময় পর একসাথে জিতেছে তিনটি আন্তর্জাতিক শিরোপা। যার মধ্যে সর্বোচ্চ শিরোপা হচ্ছে বিশ্বকাপ। টানা ৩৬ বছর পর এ শিরোপা ছুঁয়ে দেখেছে আলবিসেলেস্তেরা।
তবে আর্জেন্টিনার এ সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল লিওনেল মেসির। এবার সেই ফুটবল জাদুকর লিও মেসির বাংলাদেশ সফর নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। গত বছরের ১২-২০ জুন ফিফা উইন্ডোতে লিওনেল মেসিদের বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তবে এই সময়ে ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ঢাকায় আসা হয়নি।
এটাই প্রথম নয়, এর আগে-পরেও অনেকবার আকাশি-নীল শিবিরের ঢাকায় আসার গুঞ্জন উঠেছিল। তবে নানান কারণে বাস্তবে রূপ নেয়নি সেসব উদ্যোগ ও পরিকল্পনা। যদিও বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়কের বাংলাদেশে আগমনের সম্ভাবনা দেখছেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন।
আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে নিজ মন্ত্রণালয়ে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। এ সময়ে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ভারতের ক্রীড়া উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তও ছিলেন। তিনি (শতদ্রু) মূলত মেসিকে ঢাকায় আনার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।
মেসি প্রসঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রীর দাবি, ‘তারা বলেছে মেসিকেও আনতে পারে।’ পাপনের ভাষ্যমতে, ‘তারা বলেছে; যেহেতু অন্যরা আসছে, মেসিও আসতে পারে। তবে অনেক বিষয় থাকে এখানে।’
এদিকে ঢাকায় মার্টিনেজ-রোনালদিনহোর আগমনে অনেক বিচ্যুতি ছিল। তবে ডি মারিয়ার সফরে এমনটা হবে না বলে দাবি পাপনের।
মন্ত্রীর ভাষ্যমতে, ‘আগের বিষয় নিয়ে আর মন্তব্য নেই। তবে এখন যেহেতু তারা মন্ত্রণালয়ে এসেছে, তাই আমরা তাদের প্রস্তাবনা দিতে বলেছি। দেখি তারা কি দেয়; এরপর আমরাও কিছু কন্ডিশন দিতে পারি, যেহেতু আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে।’
পাপন বলেন, ‘এখানে বাণিজ্যের একটি বিষয় রয়েছে। আর্থিক বিষয় ছাড়া এ রকম সফর সম্ভব নয়। আগের দুইবার যে ভুল-ত্রুটি ছিল, এবার সেটা হবে না।’
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে মেসিসহ পুরো আর্জেন্টিনা দল বাংলাদেশে এসেছিল। সেবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল তারা।
নাজমুল হাসান পাপন লিওনেল মেসি শতদ্রু দত্ত
মন্তব্য করুন
আইপিএলে এবার বিকল্প হিসেবে দল পেলেও সুযোগ পেয়েই দারুণ ছন্দে আছেন বাংলাদেশি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। চেন্নাইয়ের হয়ে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচ খেলে ১০ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকাতেও শীর্ষের দিকে রয়েছেন তিনি।
তবে আইপিএলের এবারের আসরের শেষ পর্যন্ত খেলা হবে না মুস্তাফিজের। আর মাত্র কয়েক দিন পরই জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য দেশে ফিরতে হবে দ্য ফিজকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই টাইগার এই পেসারের জায়গা কে পূরণ করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। এবার সেই উত্তরই দিলো আইপিএলের সফলতম ফ্র্যাঞ্চাইজিটি!
আইপিএলের বাকি অংশের জন্য চেন্নাইয়ে যোগ দিয়েছেন ইংলিশ পেসার রিচার্ড গ্লিসন। প্রথমবারের মতো আইপিএলে খেলবেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের ওপেনার ডেভন কনওয়ের বদলি হিসেবে তাকে দলে নেওয়ার কথা জানিয়েছে এম এস ধোনির দল।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই কিউই ওপেনারকে নিয়ে শঙ্কা ছিল। বাঁ-পায়ের চোটে এবার পুরো আসর থেকেই ছিটকে গেছেন কনওয়ে। গত ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে চোটে পড়েছিলেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছিল, মে’র মাঝামাঝিতে ফিরতে পারেন কনওয়ে। তবে তা আর হচ্ছে না। আর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের লাইনআপ যথেষ্ট শক্তিশালী বিবেচনায় পেসার গ্লিসনকে দিয়ে স্লটটি পূরণ করেছে তারা।
এদিকে জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য মে’র প্রথম সপ্তাহে দেশে ফিরবেন দ্য ফিজ। তাকে ১ মে পর্যন্ত এনওসি (অনাপত্তিপত্র) দিয়েছিল বিসিবি। তাই নিশ্চিতভাবেই তাকে এবারের আইপিএলে আর পাচ্ছে না চেন্নাই। চলতি আইপিএলে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করেছেন ফিজ। এতে টুর্নামেন্টের সেরা উইকেট শিকারির তালিকাতেও আছেন তিনি।
কনওয়ের পরিবর্তে ৫০ লাখ রুপি ভিত্তিমূল্যে গ্লিসনকে দলভুক্ত করেছে চেন্নাই। ইংলিশদের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেললেও এখনও এই পেসারের টেস্ট-ওয়ানডে খেলা হয়নি।
৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২০ দশমিক ৭৮ গড় ও ৮ দশমিক ৯ ইকোনমিতে ৯ উইকেট শিকার করেছেন ৩৬ বছর বয়সী পেসার। ভারতের বিপক্ষে নিজের অভিষেকে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও রিশাভ পান্তের উইকেট শিকার করেছিলেন গ্লিসন।
বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেছেন ডানহাতি এই পেসার। টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ উইকেটসহ ১০০-এর বেশি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও দুর্দান্ত রেকর্ডের মালিক এই পেসার। ৩৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৪৩ উইকেট রয়েছে গ্লিসনের।
মুস্তাফিজ চেন্নাই সুপার কিংস আইপিএল
মন্তব্য করুন
চলছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ১৭তম আসর। যেখানে খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। তবে দল হারলেও ব্যাট হাতে চার-ছক্কার ঝড় তুলে যাচ্ছেন সাবেক অধিনায়ক ভিরাট কোহলি।
কোহলি সচরাচর তিনে ব্যাট করতে নামলেও এবার অবশ্য নতুন পজিশনে দেখা গেছে তাকে। এবার দলের হয়ে ওপেনিং করছেন তিনি। যেখানে বেশ ভালোভাবেই নতুন দায়িত্বেও জ্বলে উঠেছেন কোহলি। আর তাই এবার টি-২০ বিশ্বকাপেও কোহলিকে দিয়ে ওপেন করানোর কথা ভাবছেন নির্বাচকরা।
এমন তথ্য জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম দৈনিক জাগরণ। তারা জানিয়েছে, রোহিত শর্মার সঙ্গে ওপেনিংয়ে কোহলিকে চান ভারতের নির্বাচকরা।
চলতি আসরে ৭ ম্যাচ খেলে ১ সেঞ্চুরি ও ২ অর্ধশতকে ৭৯.৩৪ গড়ে ৩৬১ রান করেছেন তিনি। স্ট্রাইক রেটও ১৪৭.৩৪। তারপরও ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে কোহলির জায়গা হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা কাটছে না।
আইপিএলে বিরাট কোহলি প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান করলেও হেরেই চলেছে তার দল বেঙ্গালুরু। শতক হাঁকিয়েও স্ট্রাইক রেটের জন্য তিরস্কার শুনতে হয়েছে এই কিংবদন্তিকে। জুনে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোহলির জায়গাটা অনিশ্চিত হওয়ার পেছনে স্ট্রাইকরেটকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে জাগরণের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাক আপ ওপেনার হিসেবে বিশ্বকাপে যেতে পারেন শুভমান গিল। এদিকে কোহলি ওপেনিং করলে তিনে দেখা যেতে পারে সূর্যকুমার যাদবকে।
‘মিডল অর্ডারে বিবেচনা করা হতে পারে রিঙ্কু সিং, রাইয়ান পরাগ কিংবা শিভাম দুবেদের। জায়গা নড়বড়ে হয়ে আছে অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়ার। পুরো দমে বোলিং করতে পারলেই কেবল তাকে বিশ্বকাপে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচকরা।’
আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে নিয়মিতই ইনিংসের উদ্বোধন করেন কোহলি। তবে জাতীয় দলে তার পছন্দের জায়গা তিন বা চার নম্বরে। ২০০৮ সালে ওপেনার হিসেবেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় কোহলির।
এরপর সময়ের সঙ্গে নিজেকে তিন নম্বরে থিতু করেন বিরাট। অথচ ওপেনার হিসেবেও রেকর্ড দুর্দান্ত তার। ৯টি টি-টোয়েন্টিতে ওপেনার হিসেবে নেমে ৫৭ গড়ে ৪০০ রান করেছেন তিনি। যা তার ক্যারিয়ার গড়ের চেয়ে (৫১) বেশি। ওপেনার হিসেবে স্ট্রাইকরেট ১৬১, অথচ তিন নম্বরে তার স্ট্রাইকরেট মাত্র ১৩৮!
বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মার সঙ্গে একবারই ওপেনিং করেছিলেন কোহলি। সেই ম্যাচে কোহলির ৫২ বলে ৯৪ রানে ভর করে ভারত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৪ রান তোলে। সেদিন ভারত প্রথম ৯ ওভারে তোলে ৯৪ রান।
তাই বিশ্বকাপের জন্য রোহিতের পার্টনার হিসেবে কোহলিকে বিচার করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে গত সপ্তাহে মুম্বাইয়ে রোহিত, রাহুল দ্রাবিড় এবং প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার বৈঠকও করেছেন। এমনটাই দাবি জাগরণের।
তবে এই বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তিনি বলেছেন, আমি কারও সঙ্গে দেখা করিনি। অজিত আগরকার দুবাইয়ের কোথাও একটা গলফ খেলছে এবং রাহুল দ্রাবিড় বেঙ্গালুরুতে বসে তার বাচ্চাদের খেলা দেখছে। দ্রাবিড় মুম্বাইয়ে এসেছিল।
‘কারণ, সে তার ছেলেকে সিসিআই-এ লাল মাটির উইকেটে খেলতে নিয়ে এসেছিল। সত্যি বলতে, আমাদের দেখা হয়নি। আমরা কোনও বৈঠকও করিনি।’
তিনি আরও বলেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যতক্ষণ না আমি, রাহুল, অজিত বা বিসিসিআই-এর কেউ এসে ক্যামেরার সামনে কোনও কথা বলছে, তার আগে পর্যন্ত কোনও খবরের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। সবটাই ভুয়ো।
ভিরাট কোহলি টি-২০ বিশ্বকাপ ব্যাঙ্গালুরু আইপিএল
মন্তব্য করুন
আইপিএলের ১৭তম আসরে শুরু থেকে খুব একটা ছন্দে ছিল না টুর্নামেন্টটির সফলতম দলের একটি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তবে টেবিলের তলানি থেকে উপরের দিকে উঠতে চাইছে হার্দিক পান্ডিয়ার দল। আর সেই ধারাবাহিকতায বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) মহারাজা যাদাবিন্দ্র সিং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়েছে মুম্বাই।