বিপিএল ক্রিকেটে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, যা দলটির টানা সপ্তম জয়। এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলেও নিজেদের অবস্থান শক্ত করলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এবারের বিপিএলের শুরুটা খুব বাজে হলেও দারুণভাবে ঘুরে দাড়িয়ে শিরোপার অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠেছে ইমরুল কায়েসের দল। টুর্নামেন্টে এটি ছিলো দুই দলেরই ১০ম ম্যাচ। আগেই প্লে-অফ পর্বে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। আর টুর্নামেন্ট থেকে চট্টগ্রাম ছিটকে যাওয়ায় তাদের জন্য ম্যাচটি আনুষ্ঠানিকতার হলেও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে দুইয়ে থেকে প্রাথমিক পর্ব শেষ করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমেছিলো কুমিল্লা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে কুমিল্লার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত হোম চৌধুরি।
তবে শুরুটা খুব একটা ভাল হয়নি দলটির। রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারায় চ্যালেঞ্জার্স। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ওপেনার মেহেদী মারুফকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তানভীর ইসলাম। এক ওভার পর আবারো আঘাত হানেন তানভীর। এবার এই স্পিনারের শিকার খাজা নাফে। লফটেড শট খেলতে গিয়ে ব্যাট-বলে করতে পারেন নি এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। সহজ ক্যাচ নেন সৈকত আলী। মাত্র ৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
শুরুর ধাক্কা সামলে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন উসমান খান ও আফিফ হোসেন। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ওভারপ্রতি ৫ গড়ে ৩০ রান তোলে দলটি। তৃতীয় উইকেটে ৮৮ রানের জুটি গড়েন উসমান ও আফিফ। অর্ধশতক তুলে নেন উসমান। তবে এরপরই সৈকত আলীর বলে জনসন চার্লসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৪টি চার ও ৩ ছয়ে ৪১ বলে করেন ৫২ রান। দলকে বড় সংগ্রহের আশা দেখাতে থাকেন আফিফ ও অধিনায়ক শুভাগত হোম।
তবে দলীয় ১২৯ রানে ১৭তম ওভারের শেষ বলে রান আউটে কাঁটা পড়েন শুভাগত। পরের ওভারের প্রথম বলে আইরিশ অলরাউন্ডার কার্টিস ক্যাম্ফারও অধিনায়কের পথে হাঁটেন। আর পঞ্চম বলে জিয়াউর রহমান ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরলে রান তোলার গতি কমে যায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। একপ্রান্ত আগলে রেখে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন আফিফ হোসেন। ইনিংসের শেষ ওভারে হাসান আলীর শিকারে পরিণত হন আফিফ। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৬ রান। ৪৯ বলে ৬টি চার ও ২টি ছয়ে সাজান নিজের ইনিংস। তবে দারউইস রাসুলির ২১ রানের ক্যামিও ইনিংসে ভাল সংগ্রহই পায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ দাড়ায় ৭ উইকেটে ১৫৬ রান। দুটি করে উইকেট নেন তানভীর ইসলাম ও হাসান আলী।
আগের ম্যাচে হাতে চোট পাওয়ায় এদিন দলে ছিলেন না লিটন দাস। তবে চট্টগ্রামের দেয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আত্নবিশ্বাসের ছাপ রাখছিলেন দুই ওপেনার সৈকত আলী ও মোহাম্মাদ রিজওয়ান। তবে ২০ রানে সৈকতকে সাজঘরে ফেরান মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি। ক্রিজে এসে দ্রুত আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে থাকেন ইমরুল কায়েস। তবে জিয়াউর রহমানের একটি বুদ্ধিদীপ্ত ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ইমরুল। দলীয় ৫৭ রানে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জনসন চার্লসকেও ফেরান জিয়া। কিন্তু কুমিল্লার আশার আলো হয়ে ছিলেন মোহাম্মাদ রিজওয়ান। তুলে নেন আসরের চতুর্থ অর্ধশতক।
মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে ৫২ বলে ৭৬ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান রিজওয়ান। ১৩৩ রানে মৃত্যুঞ্জয়ের বলে আউট হন রিজওয়ান। ৪৭ বলে করেন ৬১ রান। বাকি পথটা জাকের আলীকে নিয়ে অনায়াসে পাড়ি দিয়েছেন মোসাদ্দেক। এক ওভার হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় কুমিল্লা। ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক।
চট্টগ্রামের বিপক্ষে জয়ের ফলে ১০ ম্যাচে ৭টি করে জয়ে সমান ১৪ পয়েন্ট ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। তবে রান রেটে এগিয়ে থাকায় দুইয়ে অবস্থান করছে বরিশাল আর তিনে কুমিল্লা।
বিপিএল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স মিরপুর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তিন ষ্টারবিশিষ্ট জার্সি গায়ে প্রথমদিনেই জয়ের দেখা পেল আর্জেন্টিনা। শুক্রবার সকালে ঘরের মাঠ মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে পানামার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোলে সহজ জয় পায় মেসি বাহিনীরা। ম্যাচের শেষ মুহুর্তে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকের গোলে ইতিহাস গড়েন মেসি। সেই গোল দিয়ে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৮০০ গোলের মাইলফলকের দেখা পান ফুটবলের এই কিংবদন্তি। জাতীয় দলের হয়ে গোলের সেঞ্চুরির মাইলফলক ছুঁতে মেসির দরকার আর মাত্র একটি গোল।
পানামার বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধের পুরো সময়টা বল নিয়ে দাপট দেখালেও গোলের দেখা পাচ্ছিলো না বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের ১৬মিনিটের মাথায় মেসিকে বিপজ্জনক ফাউল করে হলুদ কার্ডের দেখা পান পানামার ডিফেন্ডার গালভান। তবে মেসির সেই ফ্রি-কিক সরাসরি গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসায় অল্পের জন্য গোলের সুযোগ মিস হয় মেসির। ৩৬ তম মিনিটে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে যায় মেসি। তবে পানামার ডিফেন্ডারের জন্য ক্লিয়ার শট করার সুযোগ তৈরি করতে পারেন নি। এরপর একের পর এক আক্রমণ করেও বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ৭তম মিনিটে ঝাঁপিয়ে পড়ে মেসির ফ্রি-কিক ফেরান পানামার গোলরক্ষক। সেই ফ্রি-কিকের ২৪মিনিট পর আবার ফ্রি-কিক পান মেসি। সেই ফ্রি-কিকে গোলাপোস্টে লেগে ফিরে এলেও তা জালে দিতে ভুল করেননি বদলি খেলোয়াড় আলমাদা। এরপর নির্ধারিত সময়ের বাকি যখন এক মিনিট, তখন ফ্রি-কিকের গোলে ৮০০ তম গোলের মাইল ফলক স্পর্শ করেন আর্জেন্টাইন তারকা। পুরো ক্যারিয়ারে ১০১৭ ম্যাচ খেলে ৮০০ গোল করেন মেসি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মেসির গোলের সংখ্যা ৯৯টি। সেই ম্যাচে আরও একটি গোলের দেখা পেলে জাতীয় দলের হয়ে ১০০ গোলের আরও একটি মাইল ফলকের দেখা পেত মেসি।
মন্তব্য করুন
স্পিনারদের দেশ, স্পিন আক্রমণই বোলিংয়ের মূল ভরসা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হওয়ার পর থেকে স্পিন আক্রমণের জন্য আলাদা পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশ। মোহাম্মাদ রফিক, মানজারুল ইসলাম রানা, আব্দুর রাজ্জাকরা নিজেদের স্পিন ঘূর্ণিতে ঘায়েল করেছেন বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের। উপমহাদেশের স্পিন সহায়ক কন্ডিশন ও উইকেটে স্পিনাররা পার্থক্য গড়ে দেন ম্যাচের। বাংলাদেশও ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মত বড় দলকে হারিয়েছে এই ঘূর্ণির পাকে ফেলে। তাই বলাই যায় বাংলাদেশের বোলিংয়ের বড় অস্ত্র এই স্পিন। সেই দলই কি না পেস বোলিংয়ে বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও তাসকিন আহমেদ-ইবাদতদের হাত ধরে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।
মাশরাফি-রুবেলরা এক সময় পেস বোলিংয়ের আশার আলো জাগিয়ে ছিলেন। তবে সময়ের সাথে সাথে সে আলো বাড়েনি, উল্টো স্তিমিত হয়েছে। অগ্রজদের নিভু নিভু হয়ে যাওয়া সেই আলো আবার জাগিয়ে তুলেছে বর্তমান সময়ের পেসাররা। সাদা বিদ্যুৎ খ্যাত সাবেক প্রোটিয়া ক্রিকেটার অ্যালান ডোনাল্ড বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচের দ্বায়িত্ব নেয়ার পর রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন পেসাররা। একের পর এক ম্যাচে পারফর্ম্যান্স দিয়ে নজর কেড়েছেন, এনে দিচ্ছেন জয়। তাতে একদিকে স্পিনারদের উপর নির্ভরশীলতা মাত্রা যেমন কমেছে, তেমনি বোলিং আক্রমণেও এসেছে বৈচিত্র।
দ্বায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের পেসারদের মানসিকতায় পরিবর্তন এনেছেন অ্যালান ডোনাল্ড। ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর দিয়ে বাংলাদেশ অধ্যায় শুরু করেছিলেন ডোনাল্ড। সেই সিরিজে পেস বোলিংয়ের নতুন দিনের গল্প লিখেছিলেন তাসকিন আহমেদ। প্রোটিয়াদের ওয়ানডে সিরিজ হারিয়েছে তাদের মাটিতেই। গতি আর সুইংয়ের পসরা বসিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছিলেন তাসকিন। এক সময় গতিই ছিলো যার ভরসা, সেই তাসকিনের বোলিং আমূল পরিবর্তন করে তাকে পরিণত করেছেন বৈচিত্রময় এক বোলারে।
টেস্ট বোলারের খেতাব গায়ে সেঁটে গিয়েছিলো ইবাদত হোসেনের। বোলিংও ছিলো খুবই সাদামাটা। সেই ইবাদত এখন হয়ে উঠেছেন পেস বোলিংয়ের অন্যতম ভরসার নাম। তরুণ শরিফুল ইসলাম এবং হাসান মাহমুদের ভয়ডরহীন বোলিংয়ের পেছনেও কৃতিত্ব এই প্রোটিয়া কোচের। আরেক পেসার খালেদ আহমেদের বোলিংয়ে দৃশ্যমান বদল এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেয়ার পাশাপাশি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মতো সামর্থ্য তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের পেস বোলিং বিভাগের। বর্তমানে জাতীয় দলের সাথে থাকা পেসারদের মধ্যে একমাত্র মুস্তাফিজুর রহমানও নিজেকে এখনো আগের রূপে ফেরাতে পারেন নি। তবে সময়ের সাথে সাথে সে প্রত্যাশা তিনি মেটাবেন এমন আশা করাটা বাড়াবাড়ি কিছু নয়।
আয়ারল্যান্ডকে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ১০ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথমবার কোন ম্যাচে সবগুলো উইকেট ভাগাভাগি করেছে পেসাররা। তাতে পেস বোলিংয়ে সুদিন ফেরার পালে বেশ জোর হাওয়া লেগেছে। এখন পর্যন্ত ৪০৯টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তাতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৮টি উইকেট নিয়েছেন পেসাররা। এমন ঘটনা ঘটেছে মোট ১২ বার। কিন্তু স্পিনাররা ম্যাচে কোন উইকেট পাননি- এমন নজির এই প্রথম। এমনকি এই ম্যাচে স্পিনাররা হাত ঘুরিয়েছেন মাত্র ৪ ওভার। বোলিংয়ের আনাই হয়নি সাকিব আল হাসানকে। এমন সাফল্যের পর পেসারদের নিয়ে স্বপ্নটা দেখলে তাতে দোষের কিছু নেই। চলতি বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। স্পিনারদের পাশাপাশি পেসারদের এমন দাপটে বিশ্বকাপে ভাল কিছুর প্রত্যাশা করতেই পারে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ, অ্যালান ডোনাল্ড, পেস বোলিং, বিশ্বকাপ
মন্তব্য করুন
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবথেকে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। কাড়ি কাড়ি টাকা আর নানা সুবিধার জন্য ক্রিকেটারদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে আইপিএল। অতীতে নানা সময়ে নানা চমক দেখিয়েছে টুর্নামেন্টটি। প্রতিযোগিতাটির ১৬তম আসর মাঠে গড়াবে আগামী ৩১ মার্চ থেকে। মাঠের লড়াইয়ে বেশ কিছু নতুন নিয়ম দেখা যাবে এবারের আইপিএলে।
ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতাগুলো আয়োজিত হয় হোম-অ্যাওয়ে ফরম্যাটে। ক্রিকেটে সেটি নিয়মিতভাবে চোখে পড়ে না খুব একটা। তবে আসন্ন আইপিএলে এবার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই পদ্ধতিতে। দলগুলো কোন একটি ভেন্যুকে নিজেদের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করবেন। মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রথম হোম ভেন্যুতে হলে পরের ম্যাচটি হবে প্রতিপক্ষের মাঠে। এছাড়াও আরো নতুন তিনটি নিয়মের প্রবর্তন হতে চলেছে আইপিএলে।
ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটেই টসের আগে একাদশ ঘোষণা করে দলগুলো। তবে এবার আইপিএলে টসের আগে একাদশ ঘোষণা করার প্রয়োজন নেই দলগুলোর। টসের সময় আলাদা আলাদা দুটি তালিকা নিয়ে মাঠে নামতে পারবেন দুই দলের অধিনায়ক। টসের পরে পছন্দের তালিকা একে অপরকে দেবেন অধিনায়কেরা। মূল একাদশের সাথে অতিরিক্ত ৪ জন ক্রিকেটারকে তালিকায় রাখতে পারবে দলগুলো। এতে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুবিধা পাবে দলগুলো- এমনটাই যুক্তি আইপিএলের নীতি নির্ধারকদের। তবে কোন দলই মাঠে ৪ জনের বেশি বিদেশী ক্রিকেটার নামাতে পারবেন না।
এবার স্লো ওভার রেটের নীতিতেও পরিবর্তন আসছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওভার শেষ করতে না পারলে জরিমানার মুখে পড়েন অধিনায়ক। কিন্তু আবার আইপিএলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওভার শেষ করতে না পরলে বাড়তি সুবিধা পাবে ব্যাটিং দল। শাস্তি হিসেবে ৩০ গজের সীমানার বাইরে ৫ জনের পরিবর্তে ৪ জনকে রাখতে হবে।
সেই সাথে ফিল্ডিংয়ের সময় উইকেটরক্ষক কিংবা কোন ফিল্ডার নিয়ম বহির্ভূত নড়াচড়া করলে ব্যাটিং দলের রানের খাতায় যুক্ত হবে ৫ রান। রান যুক্ত হওয়ার সাথে সেই বলটিকে গণ্য করা হবে ডেড বল হিসেবে।
মন্তব্য করুন
আইরিশদের মাত্র ১০১ রানে আটকে রেখে মঞ্চটা আগেই প্রস্তুত করে দিয়েছিলেন বোলাররা। বাকি কাজটা সারলেন দুই ব্যাটসম্যান। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতেও রেকর্ডের খাতায় ওলট-পালট করলো বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে তামিম ইকবালের দল। তাতে সিলেট সাক্ষী হলো আরেকটি প্রথমের। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে এটিই বাংলাদেশের প্রথমবার ১০ উইকেটের জয়।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস ছিলেন নির্ভার। আগের দুই ম্যাচে প্রথম পাওয়ার প্লেদে আইরিশরা আটোসাঁটো বোলিং করলেও আজ হাত খুলে খেলেছেন তামিম ও লিটন। তেমন কোন সুযোগও অবশ্য তৈরি করতে পারেনি সফরকারিরা। বোলারদের শাসন করে প্রথম দশ ওভার থেকে ৮১ রান তুলে নিয়ে জয়কে সময়ের ব্যবধানে পরিণত করেন দুই ব্যাটসম্যান। ১৪তম ওভারের প্রথম বলেই কোন উইকেট না হারিয়ে ২২১ বল বাকি রেখে জয়ের বন্দরে নোঙর করে টাইগাররা। লিটন তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৯ম অর্ধশতক। রান খরায় থাকা অধিনায়ক তামিম ইকবালও রান পেয়েছেন আজ। অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে।
এর আগে, শেষ ওয়ানডে নিজেদের করে নেন বাংলাদেশের পেসাররা। দাপট দেখিয়েছেন হাসান মাহমুদ-তাসকিন আহমেদ-ইবাদত হোসেনরা। পাওয়ার প্লেতে হাসান মাহমুদের পর এই দুই পেসারের গোলার মুখে বিধ্বস্ত হয় আইরিশরা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে অফ স্টাম্পের বাইরে একটি গুডলেংথ ডেলিভারিতে স্টিফেন ডোহেনির উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ। ১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আইরিশদের রানের চাকা আটকে রাখে বোলাররা। প্রথম ৮ ওভার থেকে মাত্র ২২ রান তুলতে পারে আইরিশরা। সেই চাপ সামলে উঠার আগেই আবার আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ।
৯ম ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লুয়ের ফাঁদে ফেলেন আগের ওভারে জীবন পাওয়া স্টারলিংকে। ওভারের চতুর্থ বলটি রক্ষণাত্নক ভঙ্গিতে খেলেন হ্যারি টেক্টর। বোলার হাসান মাহমুদ ভেবেছিলেন ব্যাট লেগে বল প্যাডে আঘাত করেছে। আবেদনও করেন নি আউটের। তবে মুশফিকুর রহিম ছিলেন আত্নবিশ্বাসী। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাটে লাগার আগে হাসানের বলটা ছুঁয়ে গেছে টেক্টরের প্যাড। দুর্দান্ত এক রিভিউয়ে তৃতীয় উইকেট তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
পরের ওভারের তাসকিন আহমেদের বলে পরাস্ত হন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবিরনি। ২৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে আয়ারল্যান্ড। কার্টিস ক্যাম্ফার ও লরকান টাকারের ব্যাটে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে সফরকারিরা। দুই ব্যাটসম্যানই দেখেশুনে খেলতে থাকেন স্বাগতিক বোলারদের। ১৪তম ওভারে ইবাদত হোসেনকে তিনটি চার মেরে চাপ কমানোর চেষ্টা করেন টাকার। তাদের জুটিতে ভর করে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে আয়ারল্যান্ড।
শুরুতে খানিকটা অস্বস্তিতে থাকলেও দ্রতই ছন্দ খুঁজে পান ইবাদত। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের শিকার হয়ে লরকান টাকার সাজঘরে ফিরলে ভাঙে আইরিশদের প্রতিরোধ। পঞ্চম উইকেটে ৪২ রানের জুটি গড়েন দুজনে। ওভার দা উইকেট থেকে করা ইবাদতের বলটা অ্যাঙ্গেল করে ভিতরের দিকে ঢোকে। সময়মতো ব্যাটে বল ছোয়াতে পারেন নি টাকার। সরাসরি বল লাগে তাঁর বুটে। আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নেন টাকার। তবে তা কাজে আসেনি। টাকারের বিদায়ে ক্রিজে আসেন জর্জ ডকরেল। তবে এসেই সতীর্থকে অনুসরণ করে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। ইবাদতের ফুল লেংথের বল স্টাম্প ভেঙে দেয় তার। ৬৮ রানে ৬ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন ইবাদত। ধস নামে সফরকারিদের ব্যাটিং অর্ডারে।
ইবাদতের পর ঝলক দেখান তাসকিন আহমেদ। ২২তম ওভারে তাসকিন আহমেদের শর্ট বলে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। তবে তার সে চেষ্টা সফল হয়নি। উল্টো সোজা উপরে উঠে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে নাসুম আহমেদের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এক বল পরই মার্ক অ্যাডায়ারের স্টাম্প উপড়ে যায় তাসকিনের ফুললেংথ ডেলিভারিতে। শঙ্কা জাগে একশোর নিচেই অলআউটের।
সতীর্থদের এই যাওয়ার আসার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন কার্টিস ক্যাম্ফার। রানের আশায় তাই শট খেলার চেষ্টা করা ছাড়া ক্যাম্ফারের খুব বেশি কিছু করারও ছিল না। হাসান মাহমুদের শর্ট বলে পুল করেছিলেন তিনি। তবে সেটি বাউন্ডারি লাইন পার করতে পারেন নি। ডিপ ফাইন লেগে থাকা তাসকিন আহমেদের হাতে ধরা পড়েন। দলের রান যখন ৯৬ তখন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন তিনি। খেলেন ৪৮ বলে ৩৬ রানের ইনিংস, যা আইরিশদের পক্ষে সর্বোচ্চ।
এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। হাসান মাহমুদের করা ২৯তম ওভারের প্রথম বল গ্রাহম হিউমের প্যাডে লাগে। আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। তাতে ফল আসে স্বাগতিকদের পক্ষে। ১০১ রানে অলআউট হয় আইরিশরা।
ক্যারিয়ারের প্রথমবার ৫ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখান হাসান। তাসকিন ৩টি ও ইবাদত নিয়েছেন বাকি দুই উইকেট। এতে বেশ কয়েকটি নজির গড়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথমবার ইনিংসের সবকটি উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেছেন বাংলাদেশের পেসাররা। এর আগে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮টি উইকেট নিয়েছিলেন পেসাররা। ওয়ানডে ম্যাচে কোন বাংলাদেশের কোন স্পিনারের উইকেট না পাওয়ার প্রথম ঘটনা এটি। এমনকি এদিন বোলিংয়েই আসেন নি সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ড ওয়ানডে ১০ উইকেট
মন্তব্য করুন
তিন ষ্টারবিশিষ্ট জার্সি গায়ে প্রথমদিনেই জয়ের দেখা পেল আর্জেন্টিনা। শুক্রবার সকালে ঘরের মাঠ মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে পানামার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোলে সহজ জয় পায় মেসি বাহিনীরা। ম্যাচের শেষ মুহুর্তে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকের গোলে ইতিহাস গড়েন মেসি। সেই গোল দিয়ে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৮০০ গোলের মাইলফলকের দেখা পান ফুটবলের এই কিংবদন্তি। জাতীয় দলের হয়ে গোলের সেঞ্চুরির মাইলফলক ছুঁতে মেসির দরকার আর মাত্র একটি গোল।
মাশরাফি-রুবেলরা এক সময় পেস বোলিংয়ের আশার আলো জাগিয়ে ছিলেন। তবে সময়ের সাথে সাথে সে আলো বাড়েনি, উল্টো স্তিমিত হয়েছে। অগ্রজদের নিভু নিভু হয়ে যাওয়া সেই আলো আবার জাগিয়ে তুলেছে বর্তমান সময়ের পেসাররা। সাদা বিদ্যুৎ খ্যাত সাবেক প্রোটিয়া ক্রিকেটার অ্যালান ডোনাল্ড বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচের দ্বায়িত্ব নেয়ার পর রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন পেসাররা।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবথেকে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। কাড়ি কাড়ি টাকা আর নানা সুবিধার জন্য ক্রিকেটারদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে আইপিএল। অতীতে নানা সময়ে নানা চমক দেখিয়েছে টুর্নামেন্টটি। প্রতিযোগিতাটির ১৬তম আসর মাঠে গড়াবে আগামী ৩১ মার্চ থেকে। মাঠের লড়াইয়ে বেশ কিছু নতুন নিয়ম দেখা যাবে এবারের আইপিএলে।
আইরিশদের মাত্র ১০১ রানে আটকে রেখে মঞ্চটা আগেই প্রস্তুত করে দিয়েছিলেন বোলাররা। বাকি কাজটা সারলেন দুই ব্যাটসম্যান। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতেও রেকর্ডের খাতায় ওলট-পালট করলো বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে তামিম ইকবালের দল। তাতে সিলেট সাক্ষী হলো আরেকটি প্রথমের। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে এটিই বাংলাদেশের প্রথমবার ১০ উইকেটের জয়।