ভুয়া নাম-পরিচয় দিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক নারীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন ‘মাসুম বিল্লাহ ফারদিন’ নামের এক ব্যক্তি। ধনাঢ্য নারীদের সাথে সম্পের্ক করে প্রতারণা করাই যার পেশা। তাঁর আসল নাম রাজুউল্যা রাজু (৩৭)। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত নারীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
গত বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে এই যুবককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (উত্তর) তাকে গ্রেপ্তারের পর তার প্রতারণার নানান তথ্য উঠে আসে।
ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আশরাফউল্লা বাংলা ইনসাইডারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিবি জানায়, ফেসবুকে নওরিন আক্তারের (ছদ্মনাম) সঙ্গে পরিচয় হয় এই যুবকের। তিনি তাঁর নাম ‘মাসুম বিল্লাহ ফারদিন’ বলেন। নিজেকে গাজীপুরের এক সাবেক সংসদ সদস্যের ছেলে বলে পরিচয় দেন। ফেসবুকে কয়েক মাস কথা বলার পর যুবকের সঙ্গে দেখা করেন নওরিন। নওরিনের সঙ্গে বাইরে ঘোরাঘুরির সময় অসহায় ব্যক্তিদের অনেক টাকা দান করতেন যুবক। একদিন তিনি নিজেকে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পরিচয় দিয়ে নওরিনকে একটি অনুষ্ঠানে নিয়ে যান। অনুষ্ঠানে ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে যুবককে পুরস্কৃত করা হয়। এসব দেখে যুবকের প্রতি আকৃষ্ট হন নওরিন। তাঁদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক শুরু হয়।
ডিবি বলছে, ভুয়া নাম-পরিচয় দিয়ে এই যুবক প্রায় অর্ধশতাধিক নারীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
এই যুবকের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে রাজধানীর মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয়ে যান নওরিন। তিনি বলেন, ‘ডিবির হাতে গ্রেপ্তারের পর আমি জানতে পারি, ভুয়া পরিচয় দিয়ে তিনি (রাজু) নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। প্রতারণা করতে তিনি কখনো তিনি নিজেকে সংসদ সদস্যের পুত্র, আবার কখনো মন্ত্রী ও পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তার ভাই হিসেবে পরিচয় দিতেন।’
ডিবি বলছে, সম্প্রতি ফেসবুকে ঢাকার কলাবাগান এলাকার এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় রাজুর। তিনি এক পর্যায়ে ওই নারীর স্বামীকে জাপানে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। এ জন্য ১৯ লাখ টাকা নেন রাজু। পরে ওই নারী প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে নারীর স্বামী বাদী হয়ে রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলাবাগান এলাকার ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘ফেসবুকে পরিচয় হওয়ার পর তিনি (রাজু) আমাকে বোন বানান। এক পর্যায়ে আমার স্বামীকে জাইকার একটি প্রকল্পের আওতায় জাপানে পাঠানোর কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা নেন তিনি।’
অভিযোগের বিষয়ে ডিবির সাইবার বিভাগ অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে রাজুর প্রতারণার প্রমাণ মেলে। ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আশরাফউল্লাহের নেতৃত্বে গত বুধবার গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি বলছে, রাজু ২০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন। তিনি বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করতেন। টাকা পয়সা আছে- এমন নারীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতেন। তিনি সরকারি চাকরি দেওয়া, বদলি ও বিদেশে পাঠানোর কথা বলে লোকজনের কাছ থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত নারীর কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা হাতিয়েছেন।
সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের একাধিক সূত্র বলেছে, প্রতারণার জন্য রাজু সমাজের ধনাঢ্য পরিবারের নারীদের টার্গেট করতেন। ফেসবুকে তাঁর চার লাখের মতো অনুসারী। তিনি ফেসবুকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে তোলা ছবি দিতেন। এসব ছবি দেখে তাঁর নিশানায় থাকা নারীরা তাঁকে বিশ্বাস করতেন। এভাবেই তিনি সম্পর্ক গড়ে প্রতারণা করতেন। রাজু দাবি করতেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পড়েছেন। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি আমেরিকার গ্রিন কার্ডধারী। তিনি নীলক্ষেত থেকে গ্রিন কার্ডসহ ২১টি প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র বানিয়েছিলেন।
ডিএমপির ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর-রশীদ বলেন, ‘রাজুউল্যা ভুয়া পরিচয় দিতেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলতেন। পরে এসব ছবি দেখিয়ে প্রতারণা করতেন।’
ডিবি গ্রেপ্তার রাজুউল্যা রাজু প্রতারক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএসএমএমইউ দুর্নীতি মামলা ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ
মন্তব্য করুন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মিন্টো রোড যৌন হয়রানি
মন্তব্য করুন
আধুনিক সময়ে প্রায় সবার হাতেই রয়েছে
স্মার্টফোন। ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসেই অনেকে করছেন অর্থ উপার্জন। আবার অনেকেই ইনকাম
করার সুযোগের অপেক্ষায় আছেন। আর এই সুযোগ নিয়ে প্রতারণার জাল বিস্তার করছে একটি চক্র।
ঘরে বসে পার্ট টাইম চাকরির অফার দিয়েই শুরু হয় তাদের কাজ। চটকদার সব বিজ্ঞাপন দিয়ে
আকৃষ্ট করে সবাইকে। তাদের চটকদার এসব বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে সর্বস্বান্ত হন অনেকে।
এ বিষয়ে সতর্ক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন
পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন। সোমবার (১৮ মার্চ) এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে
সবাইকে এই স্ক্যাম সম্পর্কে সচেতন করে সিটিটিসি।
জানা যায়, টেলিগ্রাম অ্যাপসভিত্তিক
চাইনিজ প্রতারক চক্র বাংলাদেশি কিছু প্রতারকের সহায়তায় জাল বিস্তার করছে। এরা ফোনে
বা হোয়াটসঅ্যাপে ঘরে বসে পার্ট টাইম চাকরির অফার দেবে।
এরপর ইউটিউব এ বিভিন্ন ভিডিও লাইক করতে
বলবে। প্রতি লাইকের জন্য আপনাকে তারা ১০০ টাকা করে দেবে। এভাবে ৫০০-১০০০ টাকা দেবে
তারা। একইসঙ্গে তারা হেল্পডেস্ক নামক টেলিগ্রাম গ্রুপে অ্যাড করে নেবে।
টেলিগ্রাম গ্রুপে ইনভেস্ট করার লোভনীয়
সব অফার দেবে। আপনি একবার তাদের প্ল্যানে যখনই ইনভেস্ট করবেন, তখনই ফাঁদে পড়ে যাবেন।
এভাবে কয়েকদিনের মধ্যেই আপনার থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে কথা বলে হাতিয়ে নেবে লাখ
লাখ টাকা।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে রক্ষা পাবেন কীভাবে?
সবাইকে জেনে রাখতে হবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
কিংবা ঘরে বসে পাওয়া যে কোনো চাকরির অফারই এক একটি স্ক্যাম। ভুলেও কেউ এমন ইনভেস্টমেন্ট
প্রতারণার ফাঁদে পা দেবেন না।
টেলিগ্রাম স্ক্যাম সতর্ক বার্তা ডিএমপির অনলাইন জব
মন্তব্য করুন
পুলিশের চাকরি অর্থ আত্মসাত সাতক্ষীরা
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করছে। গত ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। এর আগে তিন মেয়াদে যারা বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী ছিলেন এবং সরকারের ভিতর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের অনেকেরই দায়িত্ব পালনের সময়টি স্বচ্ছতার ছিল না। তারা নিজেদেরকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে পারেননি। আর এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত তিন মেয়াদ এ রকম অন্তত এক ডজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতির অভিযোগ এখন বিভিন্ন সংস্থাগুলো তদন্ত করছে।
আধুনিক সময়ে প্রায় সবার হাতেই রয়েছে স্মার্টফোন। ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসেই অনেকে করছেন অর্থ উপার্জন। আবার অনেকেই ইনকাম করার সুযোগের অপেক্ষায় আছেন। আর এই সুযোগ নিয়ে প্রতারণার জাল বিস্তার করছে একটি চক্র। ঘরে বসে পার্ট টাইম চাকরির অফার দিয়েই শুরু হয় তাদের কাজ। চটকদার সব বিজ্ঞাপন দিয়ে আকৃষ্ট করে সবাইকে। তাদের চটকদার এসব বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে সর্বস্বান্ত হন অনেকে।