ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

স্বাস্থ্যের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১০% কমিশন নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশ: ০৭:০৭ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

কাজ পাইয়ে দেয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০% কমিশন নেয়া অভিযোগ এনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। 

সম্প্রতি সময় এমন অভিযোগ করেছেন ধ্রুব কথাচিত্র নামের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. আশরাফুল আলম। 

তিনি লিখিতভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে তাদের কাছ থেকে টাকা ফেরত চেয়েছেন। আবেদনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন অ্যান্ড প্রমোশন) দশ কোটি টাকার স্বাস্থ্যসেবা প্যাকেজের কনসালট্যান্ট ও ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দশ কোটি টাকার স্বাস্থ্যসেবা প্যাকেজের কনসালট্যান্ট ও ঠিকাদার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার দাবি জানানো হয়েছে।

গত ৫ মার্চ দুদকে এ অভিযোগ জমা দিয়েছেন আশরাফুল। এর আগে স্বাস্থ্য সচিব বরাবর একই অভিযোগ দাখিল করেন তিনি। সেই আবেদনে তারিখ লেখা আছে ২২/০৩/২০২৩। অথচ ওই চিঠিটি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রহণ করেছেন স্বাস্থ্য সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার । এক মাস পরের তারিখ দেয়া চিঠি কীভাবে স্বাস্থ্য সচিব আগেই গ্রহণ করলেন- এ বিষয়ে মো. আশরাফুল আলম ভোরের আকাশকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য সচিবের কাছে করা আবেদনে তারিখ ভুল হয়েছে। ২২ মার্চের জায়গায় ২২ ফেব্রুয়ারি হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান বরাবর দেয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘বিগত দুই অর্থবছর ধরে বর্তমান লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. মিজানুর রহমান আরিফ যোগদানের পর থেকে ১০ শতাংশ হারে কোটি টাকা কমিশন নিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিজস্ব পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিচ্ছেন। আর এ কমিশনের টাকা সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করছেন দরপত্র মূল্যায়ন/অন্য কমিটির সভাপতি ডা. মো. শাখাওয়াত হোসেন, প্রোগ্রাম ম্যানেজার (টিএসডি) এবং দরপত্র মূল্যায়নের জন্য কমিটির সদস্য মো. মোখলেচুর রহমান, সহকারী প্রধান (কাঃ সঃ) ও ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার। এই দুই কর্মকর্তা বিগত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আমাকে একটি সার্ভিস প্যাকেজের কাজ দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে নগদ দশ লাখ টাকা কমিশন নেন। প্রকাশ থাকে যে, ওই দশ লাখ টাকা ফেরত না দিয়ে আমাকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আহ্বানকৃত প্যাকেজ নং-৭ প্রোডাকশন অব এসবিসিসি ম্যাটারিয়াল অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইন্টারভেনশন ফর প্রিভেনশন ডায়বেটিসের প্রস্তাব দাখিলের পরামর্শ প্রদান করেন এবং আমাকে ওই কাজ দিয়ে তাদের নেয়া দশ লাখ টাকা সমন্বয় করে দেবেন।’

অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘আমি বাধ্য হয়ে তাদের কথায় বিশ্বাস করে যথানিয়মে সব কাগজপত্র, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও আর্থিক সক্ষমতা সংযুক্ত করি। এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) দাখিল করি। আমার এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) যাচাই-বাছাই করে আমাকে রিকোয়েস্ট ফর প্রোপোজাল প্রদান করেন। আমরা রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজালের চাহিদা মোতাবেক সব তথ্যাদি সংযুক্ত করে টেকনিক্যাল এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল প্রস্তাব দাখিল করি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমার কাছ থেকে অগ্রিম নগদ দশ লাখ টাকা কমিশন নেয়ার পরও দরপত্র মূল্যায়ন ক্রয় কমিটির সভাপতি ডা. মো. শাখাওয়াত হোসেন এবং দরপত্র মূল্যায়ন ক্রয় কমিটির সদস্য মো. মোখলেছুর রহমান আমার টেকনিক্যাল এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল প্রস্তাব বিবেচনা না করে অধিক কমিশন গ্রহণ করে অযোগ্য, অদক্ষ ও ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে ঊর্ধ্ব রেটে কাজ দিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছেন। আমি টাকা ফেরত চাইলে ওই দুই কর্মকর্তা আমার দশ লাখ টাকা ফেরত না দিয়ে আমাকে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সব প্যাকেজের কাগজপত্র তদন্ত করলে অনিয়ম ও দুর্নীতির আসল চিত্র সহজেই পাওয়া যাবে।’

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘দরপত্র মূল্যায়ন/ক্রয় কমিটির সভাপতি ডা. মো. শাখাওয়াত হোসেন এবং দরপত্র মূল্যায়ন ক্রয় কমিটির সদস্য মো. মোখলেছুর রহমান নগদ ৫০ লাখ টাকা কমিশন নিয়ে প্লে-ডক্টরস নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে সব ভুয়া কাগজপত্রের ভিত্তিতে সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারের জন্য ৪.৫০ কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষর করেন। পরে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দরপত্র আহ্বান না করে পুনরায় ৫০ লাখ টাকা কমিশন নিয়ে এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধি করে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে চলছেন। সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারের কাজের জন্য দরপত্র দলিলে চার কোটি টাকার কাজের অভিজ্ঞতা, আড়াই কোটি টাকার আর্থিক সক্ষমতা এবং এক বছরে সাড়ে তিন কোটি টাকার টার্নওভার চাওয়া হয়। এস কে শাহিন রহমানের প্লে-ডক্টরস নামক প্রতিষ্ঠানটির দেশের কোথায় চার কোটি টাকার প্রচার কাজসহ আর্থিক সক্ষমতা ও টার্নওভার আছে- এমন ইতিহাস কারো জানা নেই। ওই প্রতিষ্ঠানের দাখিলকৃত সব কাগজপত্র ভুয়া এবং নীলক্ষেত থেকে তৈরি করে দাখিল করা হয়।’

অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘প্রকাশ থাকে যে, এস কে শাহিন রহমানের আরেকটি প্রতিষ্ঠান RIAND Bangladesh Limited একই কায়দায় ভুয়া এবং নীলক্ষেত থেকে তৈরি করা কাগজপত্র নিয়ে বিগত তিন বছর ধরে লাখ লাখ টাকা কমিশন দিয়ে লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন অ্যান্ড প্রমোশন দপ্তরে কোটি কোটি টাকার কাজ করে যাচ্ছেন। ওই দুজন কর্মকর্তা ভুয়া এবং নীলক্ষেত থেকে তৈরি করা কাগজসমূহ যাচাই না করে টাকার বিনিময়ে কাজ প্রদান করে যাচ্ছেন। তথ্য অধিকার আইনে একটি প্রতিষ্ঠান প্লে-ডক্টরস কর্তৃক দাখিলকৃত ভুয়া ও নীলক্ষেত থেকে তৈরিকৃত কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করলেও ওই কর্তকর্তারা কোনো প্রকার কাগজপত্র সরবরাহ করেননি। দাখিলকৃত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করলে আসল রহস্য উদ্ঘাটিত হয়ে যাবে। এ ছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানটি বিগত তিন বছর ধরে ভুয়া এবং নীলক্ষেত থেকে তৈরি কাগজপত্রের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা কমিশন দিয়ে কোটি কোটি টাকার কাজ ভাগিয়ে নিচ্ছেন।’



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

আলমারির ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন কুকি-চিনের প্রধান সমন্বয়ক

প্রকাশ: ০৭:১২ পিএম, ০৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বান্দরবানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ‘প্রধান সমন্বয়ক’ চেওসিম বমকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৫। 

রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারনপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে আটক করে হয়েছে। নিজ ঘরে আলমারির ভেতর লুকিয়ে ছিলেন তিনি। র‌্যাবের বিশেষ দল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। 

এর আগে রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবানের থানচি ও রুমায় কয়েক দফা সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে যৌথ বাহিনীর কম্বিং অপারেশন শুরুর কথা গণমাধ্যমকে জানান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

উল্লেখ্য, ২ এপ্রিল রাতে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ফিল্মি কায়দায় হামলা চালিয়ে টাকা লুট করে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। এ সময় ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হয়।আগের রাতের এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পরদিন ৩ এপ্রিল সকালে থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরে এসব ঘটনায় ৭টি মামলা করা হয়। তবে এ মামলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর কোনো নেতা ও সশস্ত্র সদস্যদের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়নি।

কুকি-চিন   কেএনএফ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

পাঁচ হাজার টাকার বাতি ২৭ হাজারে কিনেছে রেলওয়ে

প্রকাশ: ০৬:০৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

পাঁচ হাজার টাকার বাতি ২৭ হাজার টাকায় কিনেছে রেলওয়ে। যন্ত্রাংশ কেনাকাটা সহ নানা অনিয়মের এমন প্রমাণ চিত্র পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে এমন তথ্য প্রমাণ পায়।

দুদক বলেছে, ‘বাজারে যেসব এলইডি বাতির দাম সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, সেসব বাতি রেলওয়ে কিনেছে ২৭ হাজার টাকায়।’

দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘রেলওয়েতে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন ও কাটিং জ্যাক ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়। যা পিপিপি ও পিপিআরের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ছাড়া আরও কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। আমরা এগুলো ভালো করে পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, ‘রেলওয়ের বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ৯০টি এলইডি লাইট ও এলইডি ল্যাম্প কেনার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেগুলোর ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহের পর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিটি এলইডি লাইট ২৭ হাজার ৭০০ টাকায় কেনা হয়েছে, যেগুলোর দাম বাজারে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়তলীতে রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখানে অভিযোগসংশ্লিষ্ট আরঅ্যান্ডআইয়ের মেরামত করা কক্ষ পরিদর্শন করা হয়। এ সময় ওয়াকিটকি ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।’

জানা গেছে, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে একই ঠিকানায় নিবন্ধিত দুটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে তাদের মধ্যে একটিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এই অনিয়ম প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটি কিসের ওপর ভিত্তি করে ওইসব পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে, সেসব সংক্রান্ত কোনো তথ্যউপাত্ত পায়নি দুদক।

দুদক   দুর্নীতি   রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

সাবেক ১২ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হচ্ছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২০ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করছে। গত ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। এর আগে তিন মেয়াদে যারা বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী ছিলেন এবং সরকারের ভিতর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের অনেকেরই দায়িত্ব পালনের সময়টি স্বচ্ছতার ছিল না। তারা নিজেদেরকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে পারেননি। আর এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত তিন মেয়াদ এ রকম অন্তত এক ডজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতির অভিযোগ এখন বিভিন্ন সংস্থাগুলো তদন্ত করছে। 

বর্তমান সরকার তার নির্বাচনী ইস্তেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছে। এই নীতির আওতায় দুর্নীতিবাজ যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই কারণেই সাবেক এই সব মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলো নতুন করে খতিয়ে দেখা শুরু হচ্ছে। এই অভিযোগ তদন্ত শেষে  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

যে এক ডজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১৪ মেয়াদে মন্ত্রী মন্ত্রী ছিলেন এরকম অন্তত চার জন মন্ত্রী রয়েছেন। এই চারজন মন্ত্রীর মধ্যে আবার দুজন ২০১৪ থেকে ২০১৮ মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৮ মন্ত্রিসভায় মোট চারজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এবং সেটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে যে সমস্ত মন্ত্রীরা ছিলেন, তাদের চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে।

সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে একজন অত্যন্ত ক্লিন ইমেজের মন্ত্রী ছিলেন। বিদেশে তার বিপুল সম্পদের তথ্য সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। আর এই সম্পদ তিনি বৈধ পথে উপার্জন করেছেন, দেশ থেকে পাচার করেননি এ বক্তব্য রেখে ওই সাবেক মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ব্যাপারে সরকারকে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে সরকার এখন নীরবে তদন্ত করছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এছাড়াও ২০১৪ ও ১৮ মেয়াদে প্রতিমন্ত্রী থেকে ২০১৮ সালে পূর্ণমন্ত্রী হওয়া আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং তার পুত্রের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ আছে। মন্ত্রণালয়ে থাকা অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের কাজ এবং মন্ত্রণালয়ের বাইরে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ রয়েছে। ওই মন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকায় একটি ভূমি অধিগ্রহণে মূল্যস্ফীতির ঘটনায় এখন তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রী, পুত্র এবং তার সাবেক এপিএস এর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই তদন্তে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। এছাড়াও ২০০৯ সালের মন্ত্রিসভায় একজন গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি কেনাকাটায় বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছিল। ওই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আগে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করেছিল, সেই তদন্ত এখন পুনরায় শুরু করা হয়েছে। ওই সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগে দায়িত্বে থাকা একজন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ এখন তদন্তের আওতায় পড়েছে।

২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে যারা মন্ত্রী ছিলেন তাদের মধ্যে দুজন প্রভাবশালী হেভিওয়েট মন্ত্রীর মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মোট ১২ জন সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এরকম দুর্নীতির অভিযোগ এখন তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বুঝা যাবে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো আদৌ সত্যি নাকি এই অভিযোগগুলো নেহাতে তাদের বিরুদ্ধে ঈর্ষা পরায়ণ হয়ে করা হয়েছে। তবে দুর্নীতি দশন কমিশনের এবাধিক সূত্র বলছে, নির্মোহ ভাবে তদন্ত করা হবে এবং সরকার এব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করছে।

সাবেক মন্ত্রী   দুর্নীতি   তদন্ত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

বিএসএমএমইউতে শতকোটি টাকার দুর্নীতি: এক ডজন মামলা হচ্ছে বিদায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্য ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দু’শত কোটি টাকারও বেশি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আর এ অভিযোগগুলো নিয়ে এখন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাজ করছে। 

দুর্নীতি দমন কমিশন ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিদায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ জানতে পেরেছে। এই সমস্ত অভিযোগগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্মোহভাবে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আর এর ফলে অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ একাধিক দুর্নীতির মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন। উপাচার্যের দায়িত্ব শেষ করার পরপরই তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনের বারান্দায় ছোটাছুটি করতে হবে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। 

উল্লেখ্য, অনেক যোগ্য ব্যক্তি থাকার পরও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কনক কান্তি বড়ুয়ার পর উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে। ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া ছিল একটি চমক। প্রধানমন্ত্রী তাকে এ দায়িত্ব দিয়েছিলেন যেন তিনি নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন এবং বিএসএমএমইউ’কে চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি সেন্টার এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলবেন। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি নিয়োগ বাণিজ্য সহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে এসমস্ত অভিযোগের প্রায় পুরোটাই বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আসতে থাকে। একসময় বিএসএমএমইউ-এর দুর্নীতি এবং অনিয়মে প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ড বিরক্ত হন।  দু’টি সংস্থাকে এ বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। দু’টি সংস্থা তদন্ত করে দেখে যে, শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ বাজারে রয়েছে বাস্তবে অভিযোগ তার চেয়ে বেশি। 

তার বিরুদ্ধে প্রধান পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে একটি হল নিয়োগ বাণিজ্য। টাকা ছাড়া বিএসএমএমইউ-তে কোন নিয়োগ হত না। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন কেনাকাটায় তার বাণিজ্য। তৃতীয়ত, পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাণিজ্য, চতুর্থত, শারফুদ্দিন আহমেদ একটি নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছেন, যে বাহিনী উপাচার্যের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদাবাজি করত। পঞ্চমত, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতা। 

এই অভিযোগ গুলোর ব্যাপারে যখন দু’টি তদন্তকারী সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রদান করেন তখন প্রধানমন্ত্রী এসমস্ত অভিযোগ গুলো তদন্ত করে যথাযথ বিহীত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ‘স্যাডো ইনকোয়ারী’ বা ‘ছায়া তদন্ত’ করছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই তদন্তের মাধ্যমে ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের বিভিন্ন অভিযোগ গুলোকে সন্নিবেশিত করা হচ্ছে। 

২৮ মার্চ শারফুদ্দিন আহমেদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে ডাকতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে এখন প্রতিনিয়তই অভিযোগ দাখিল করা হচ্ছে। বিশেষ করে এড-হক ভাবে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তাদের কাছ থেকে কি পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছে এবং কি পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ইত্যাদি বিস্তারিত অভিযোগ এখন দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা হচ্ছে। 

বিদায়ী উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ একরকম তোপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব থেকে বিদায় নিচ্ছেন। তার জায়গায় নতুন উপাচার্য হিসেবে ইতোমধ্যে সরকার নিয়োগ দিয়েছেন ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হককে। ডা. দ্বীন মোহাম্মদ আগামী ২৮ মার্চ অপরাহ্ণে বিএসএমএমইউ-এর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।       


বিএসএমএমইউ   দুর্নীতি মামলা   ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

জবির আরেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশ: ০৭:৩২ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের অভিযোগকারী মীম বলেন, ‘আমার বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করে। এই অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত শিক্ষক আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিতে থাকে। এতে আমি রাজী না হওয়ায় তারা আমকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় শূন্য শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়। আমার অনার্সের ফাইনাল ভাইভায় আমাকে ফেল করানো হয়।’

তিনি বলেন, আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়েছে। আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি না। কখন আমাকে মেরে ফেলা হয়, সেটা জানি না। শুধু আমি না, তারা আমার পরিবারকেও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এবং হেনস্তা করছে। বর্তমান এই অবস্থা থেকে বাঁচতে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে এসেছি।

মীম তার অভিযোগে জানান, ২০২১ সালে আবু সাহেদ ইমন তাকে যৌন হেনস্তা করেন। তারপর অভিযোগ দেওয়া হলে তার জীবনে নেমে আসে নানা নির্যাতনের খড়্গ। সম্প্রতি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় যৌন হয়রানি ও নানা নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই শিক্ষার্থী সোচ্চার হোন। সেখানেই অবন্তিকার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে নিজের প্রসঙ্গও আসে। গণমাধ্যমে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তারপর থেকে আবার তাকে হত্যাসহ বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা মীমের অভিযোগ পেয়েছি। তার নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা নিশ্চিতের চেষ্টা করব। তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে, আমাদের সাইবার টিম।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়   মিন্টো রোড   যৌন হয়রানি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন