ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

মাহিয়া মাহির গ্রেপ্তারের নেপথ্যে ‘সনি রাজ কার প্যালেস’-এর জমি

প্রকাশ: ০৩:২৮ পিএম, ২০ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail মাহিয়া মাহির গ্রেপ্তারের নেপথ্যে ‘সনি রাজ কার প্যালেস’-এর জমি

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী মামলার আসামী রকিব সরকার গতকাল রোববার (১৯ মার্চ) সকালে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। তবে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কিছু জানেন না তাঁরা। মাহিয়া মাহি ফেসবুক লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলে সহযোগিতা করার অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করে। অন্যদিকে মাহিয়া মাহির অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে গত শনিবার (১৮ মার্চ) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। তবে গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বলে জানা গেছে।

এদিকে গতকাল মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব সরকার সৌদি আরব থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছার পর উত্তরার নিজ বাসায় যান। সেখান থেকে বিকেলে তিনি গাজীপুরে যান। কিছু সময় ছিলেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সনি রাজ কার প্যালেসেও। রকিব সরকার দেশে ফিরলে ফুল দিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান স্ত্রী মাহি। পরে শুভেচ্ছা জানানোর ছবি নিজের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। তবে রকিব সরকারের দেশে ফিরে আসার বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম। একই কথা জানান বাসন থানার ওসিও।

গতকাল রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে মোবাইল ফোনে রকিব সরকার জানান, আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে দ্রুত তিনি জামিন নিতে আদালতে যাবেন। এছাড়া তাঁর শোরুম দখলের চেষ্টা, হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মামলাও করবেন। 

রকিব সরকারের দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এ সম্পর্কে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।’

বিরোধের নেপথ্যে ৩২ শতক জমি: গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের ২ নম্বর গেটের পূর্ব পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ঘেঁষে ৩২.৩৪ শতক জমির ওপর ‘সনি রাজ কার প্যালেস’। এই জমির মালিকানা নিয়ে রকিব সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেনের বিরোধ চলে আসছে।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে এই জমি রকিব সরকারের দখলে। ২০১২ সালে স্থাপনা নির্মাণ করে তিনি গড়ে তোলেন সনি রাজ কার প্যালেস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে ইসমাইল হোসেন চাইছেন এই জমি তাঁর দখলে নিতে। ২০১২ সাল থেকে কয়েক দফা দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। সর্বশেষ গত শুক্রবার ভোরে আবারও চেষ্টা চালান। শনিবার রকিব সরকারের স্ত্রী মাহিয়া মাহি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর ইসমাইল হোসেন দাবি করেন, ওই শোরুম তাঁর, দখলও তাঁর।

গতকাল দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শোরুমে ‘সনি রাজ কার প্যালেস’ লেখা সাইনবোর্ড। একটি ছাড়া শোরুমের সব শাটার বন্ধ। সামনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে লোহার পাইপ ও কয়েকটি টিনের বেড়া।

ভেতরে থাকা নিরাপত্তা প্রহরী মুন্না সরকার (৫৩) বলেন, ইসমাইল হোসেন এসব নিয়ে এই শোরুম দখল করতে এসেছিলেন। নষ্ট করা সাইনবোর্ড গতকাল দুপুরে মেরামত করে আবার টানানো হয়েছে।

জমির মালিকানা বিষয়ে জানতে ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘রকিব সরকার প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে এই জমি নেননি। এসব নিয়ে অনেক সালিস-দরবার হয়েছে। কিন্তু রকিব সরকার দখল ছাড়ছেন না। সবাই জানে এই জমির প্রকৃত মালিক আমি।’

এ প্রসঙ্গে রকিব সরকার বলেন, ‘রেকর্ডীয় মালিক ফজল বাদ্যকরের কাছ থেকে আমি দুটি দলিলে ইটাহাটা মৌজার এই জমিটি কিনেছি। নামজারির মাধ্যমে খাজনা পরিশোধ করে ভোগদখলে আছি। ইসমাইল হোসেনের দলিলে মৌজা উল্লেখ করা হয়েছে ‘আমিরাবাদের চালা’, যা টঙ্গী এলাকায়।’

সৌদি আরব থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে অভিযোগ করার পর চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও তাঁর স্বামী রকিব সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ। এ ছাড়া এক ব্যবসায়ী জমি দখলের অভিযোগ এনে মামলা করেন তাঁদের বিরুদ্ধে। দুই মামলায় গত শনিবার সকালে দেশে ফিরলে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নায়িকা মাহিয়া মাহিকে। পরে পুলিশ আদালতে পাঠালে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একই আদালত থেকে জামিন পান মাহি। অবশেষে গত শনিবার গ্রেপ্তারের সোয়া আট ঘণ্টা পর মুক্তি পান মাহিয়া মাহি।


মাহিয়া মাহি   গ্রেপ্তার   নেপথ্য   সনি রাজ কার প্যালেস   জমি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

বনানীতে ৫৬ বোতল বিদেশি মদসহ একজন গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৪:১৬ পিএম, ২৬ মে, ২০২৩


Thumbnail বনানীতে ৫৬ বোতল বিদেশি মদসহ একজন গ্রেপ্তার।

রাজধানীর বনানী এলাকার দোকানে অভিযান চালিয়ে ৫৬ বোতল বিদেশি মদসহ মনির হোসেন (৩৮) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ মে) কড়াইল বস্তি এলাকার মিম ফ্যাশন গ্যালারি নামের একটি দোকানে তল্লাশি চালিয়ে মাদকগুলো উদ্ধার করা হয়। 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি বিমানবন্দর ও বনানী এলাকাকেন্দ্রিক অবৈধ বিদেশি মদ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।

ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান বলেন, মনির দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ বিদেশি মদ সরবরাহ করে আসছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর ওপর নজরদারি করা হচ্ছিল। অবশেষে গতকাল তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের অন্যান্য সদস্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। চক্রের অন্য সদস্যদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


বনানী   বিদেশি মদ   গ্রেপ্তার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

মন্ত্রী পরিবারের ‘কবজায়’ ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!

প্রকাশ: ১০:১৭ পিএম, ২৫ মে, ২০২৩


Thumbnail

রাজধানীর উপকণ্ঠের জনপদ রূপগঞ্জ উপজেলায় মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬৫টি। এর মধ্যে ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে আছে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পরিবার। পরিবারের সবাই কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। সংসদ সদস্য হয়েও নিজে আছেন তিনটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে। এমনকি ছেলের শাশুড়িকেও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বানিয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলায় ৪০টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টি মাদরাসা এবং পাঁচটি কলেজ আছে। যার মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ১১টি প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। 

গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) ব্রাহ্মণখালী এলাকার ‘জনতা উচ্চ বিদ্যালয়’, ত্রিশকাহনীয় এলাকার ‘ছাত্তার জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয়’ ও মর্তুজাবাদ এলাকার ‘মর্তুজাবাদ ফাজিল মাদরাসা’র ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

মন্ত্রীর স্ত্রী তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী রূপসী এলাকার ‘রূপসী নিউ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ’, বরপা এলাকার ‘হাজী নুরউদ্দিন আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়’ ও তারাবো এলাকার ‘তারাবো পৌর মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়’-এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। 

পরিবারের বড় ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা উপজেলার ভুলতা এলাকার ‘ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজ’, কাঞ্চন এলাকার ‘হাজী রফিজউদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ ও চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ‘নবকিশলয় হাই স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের’ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। ছোট ছেলে গাজী গোলাম আসরিয়া বাপ্পী খাদুন এলাকার ‘হাজী আয়েত আলী ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়’-এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এ ছাড়া বড় ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পার শাশুড়ি খাদিজা মাহতাব রূপসী গন্ধর্বপুরের ‘গন্ধর্বপুর উচ্চ বিদ্যালয়’-এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন।

অভিযোগ আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের কবজায় নিয়ে মানহীন শিক্ষক নিয়োগ, বিদ্যালয় তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষকদের সরিয়ে সেখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে। এতে থমকে গেছে বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন এবং ভেঙে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। 

নীতিমালা অনুসারে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিল সংগ্রহ, শিক্ষক নিয়োগ, বরখাস্ত, বাতিল বা অপসারণ, নৈমিত্তিক ছুটি মঞ্জুর করা ইত্যাদি পরিচালনার কাজ কমিটির হাতে।

উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত বাজেটসহ বার্ষিক বাজেট অনুমোদন, সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ, সংরক্ষিত ও সাধারণ তহবিল, অন্যান্য তহবিল, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বিলে সই করাসহ মোটামুটি বিদ্যালয়ের অধিকাংশ কাজই হয় পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে।

অভিযোগ আছে, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার মানোন্নয়নের চেয়ে নিয়োগ, প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ যেসব কাজে আর্থিকভাবে লাভ হওয়ার সুযোগ আছে, সেগুলো নিয়েই বেশি আগ্রহী গাজী পরিবার। নিজ পরিবারের কবজায় ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রেখে উপজেলার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আত্মীয়স্বজন, ঘনিষ্ঠজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে রেখেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।

শিক্ষার্থীদের একাধিক সচেতন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে বলেন, একটি পরিবার এতগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে থাকায় তারা সঠিকভাবে এগুলোর দেখভাল করতে পারছেন না।  নিজেরা যা ভালো মনে করছেন সেভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এক পরিবার থেকে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের কমিটিতে থাকা যাবে কি না, জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তবে সুনির্দিষ্ট তথ্যে কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে আমরা খতিয়ে দেখব।’ 

এ বিষয়ে জানতে গোলাম দস্তগীর গাজীকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

প্রেমের হতাশা থেকেই নিজের বুকে গুলি চালান পুলিশ কনস্টেবল রনি

প্রকাশ: ০৭:০৮ পিএম, ২৫ মে, ২০২৩


Thumbnail

রাজধানীর বনানীতে পুলিশ চেকপোস্টে গুলিবিদ্ধ হয়ে আশরাফুজ্জামান রনি (২২) নামে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি নিজের ইস্যুকৃত পিস্তল দিয়ে নিজেই বুকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পুলিশের। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় রনিকে সহকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।

ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, কনস্টেবল রনির সঙ্গে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তারা মোবাইলে কথা বলতেন। বুধবার রাতেও মোবাইলে অনেক কথা বলেন। সকালে ডিউটিতে আসার আগেও তাদের কথা হয়। 

তিনি বলেন, মোবাইল চেক করে দেখা গেছে, প্রেমঘটিত কোনো বিষয় নিয়ে কনস্টেবল রনির প্রেমিকার সঙ্গে ঝামেলা চলছিল। এ কারণেই তিনি নিজের পিস্তল দিয়ে বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে। 

কনস্টেবল পিস্তল ব্যবহার করতে পারে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, চেকপোস্টে যে কনস্টেবলরা ডিউটি করেন, তাদের সুবিধার্থে পিস্তল ব্যবহার করতে পারবেন বলে ডিএমপি সদরদপ্তর থেকে সিদ্ধান্ত হয়। অনেক আগে থেকেই সব চেকপোস্টে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বনানী ১১ নম্বরে চেকপোস্টে ডিউটি ছিল রনির। সকালে স্বাভাবিকভাবে তিনি ডিউটিতে আসেন। সঙ্গে আরও পুলিশ সদস্য ছিল। সকাল ৬টা ৪৯ মিনিটের দিকে চেকপোস্টের পাশেই বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে নিজের পিস্তল দিয়ে নিজে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। রনি পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) কর্মরত ছিলেন। 

সকাল সাতটার দিকে গুলিবিদ্ধ পুলিশ কনস্টেবলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ কনস্টেবল আশরাফ উজ জামান রনির পরিচয়পত্র থেকে জানা গেছে, তার পুলিশ আইডি নম্বর- বিপি০১২০২২৯২৬২, রক্তের গ্রুপ ‘এ নেগেটিভ’। 

পুলিশ   চেকপোস্ট   কনস্টেবল   গুলি   আত্মহত্যা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা

প্রকাশ: ০১:৪৭ পিএম, ২২ মে, ২০২৩


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে (৬৬) আসামি করে মামলা হয়েছে।

রোববার (২১ মে) রাতে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে পুঠিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন সোমবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আমরা খুঁজছি।

এ বিষয়ে পুঠিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, এই ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। আসামি আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৯ মে) পুঠিয়ার শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘আর ২৭ দফা বা ১০ দফা নয়। শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠাতে হবে।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সোমবার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে রাজশাহীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

এর আগেও বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়। তার ওই বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে আরো সাতজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছিল।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার আদালতে মামলাটি করেছিলেন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

পাহাড়ে নতুন আতঙ্কের নাম কুকি-চিন!

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ১৮ মে, ২০২৩


Thumbnail পাহাড়ে নতুন আতঙ্কের নাম কুকি-চিন!

পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার মধ্যে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যে লীলাভূমি বান্দরবান। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আড়ালে এ অঞ্চলে বিরাজ করছে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন। যার কারণে পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে অস্থিরতায় এগিয়ে বান্দরবান। বান্দরবানের এই অস্থিরতার সঙ্গে সম্প্রতি যে সশস্ত্র সংগঠনের নাম সবার আগে আসছে সেটি হলো কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ। বাংলাদেশের সরকার তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

কুকি-চিনের সন্ত্রাসীরা বান্দরবানে মেতে উঠেছে রক্তের খেলায়। অপহরণ, খুন, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বান্দরবানের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করছে তারা। গত মঙ্গলবার (১৬ মে) বান্দরবানের রুমা উপজেলার জারুলছড়ি পাড়ার কাছে পানির ছড়ায় কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণে দুই সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুই সৈনিক। 

এই সন্ত্রাসীরা একদিকে যেমন সেনাবাহিনীর টহল টিমে হামলা করছে, আবার কখনও টাকার জন্য পাহাড়িদের অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছেন অনেক পাহাড়ি। প্রতিনিয়ত এসব চললেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না অনেকে। 

এরআগে এপ্রিলে বান্দরবানে দু’পক্ষের গোলাগুলিতে আটজনের মৃত্যু হয়। এই সংঘর্ষেও কুকি-চিনের নাম আসে। কেএনএফ অবশ্য ‘ভা তে কুকি (Va Te Kuki)’ নামে একটি ফেসবুক আইডিতে নিহতদের এনআইডি কার্ড পোস্ট করে দাবি করে- তাদের সাত সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। 

বান্দরবানের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের কারণে পাহাড়ে থমকে আছে উন্নয়ন কাজ। এছাড়া এদের কারণে পাহাড়ে বন্ধ রয়েছে পর্যটকদের আসা-যাওয়া। সব মিলিয়ে কুকি-চিনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে থমকে আছে বান্দরবানের জনজীবন।

কুকি-চিনের অত্যাচারের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ পাহাড়ি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে বান্দরবান সদর উপজেলার আশ্রয় শিবিরে উঠেছেন। কুকি-চিনরা বম সম্প্রদায়ের। কিন্তু নিজের সম্প্রদায়ের লোকদের ছাড়ছে না তারা।  কুকি-চিন শুধু নিজেরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে তাই নয়, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছে তারা। 

স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড়কে বাঁচাতে হলে কুকি-চিনের বিরুদ্ধে আরও শক্ত পদক্ষেপ সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিতে হবে। তাদের এখন শক্ত হাতে দমন করতে হবে। তা না হলে পাহাড়ের অবস্থা আরও খারাপ হবে।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লাঅং মারমা জানান, কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের কারণে পাহাড়ের সাধারণ মানুষ অনেক অশান্তিতে আছে। পাহাড়ের সাধারণ মানুষের সুখ-শান্তি কেড়ে নিয়েছে এই সন্ত্রাসীরা। কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি এবং মানুষজনকে জিম্মি করার কারণে পাহাড়ে কোনো ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম বর্তমানে করা যাচ্ছে না। কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের কারণে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে মানুষজন বসবাস করতে পারছে না। তারা পাহাড়ি গ্রামের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করছে ও অপহরণ করছে, চাঁদা দাবি করছে। তাদের কথা যারা শুনছে না বা তাদের যারা চাঁদা দিচ্ছে না তাদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। এর ফলে পাহাড়ি গ্রামের সাধারণ মানুষরা শহরের দিকে চলে যাচ্ছে। গ্রামগুলোর এমন অবস্থা যে কোনো গ্রামে যদি ৬০টি পরিবার থাকার কথা, সেখানে এখন আছে মাত্র ১০ থেকে ১৫টি বা সর্বোচ্চ ২০টি পরিবার। বাকি পরিবারগুলো জীবন বাঁচাতে শহরের দিকে চলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। সেনাবাহিনী পাহাড়ের সুখ-শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। 

বান্দরবানের রুমা উপজেলার ১নং পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মার্মা বলেন, ‘শান্তিপ্রিয় বান্দরবানে আর আগের মতো শান্তি নেই। এই কুকি-চিনের কারণে বান্দারবানে পাহাড়ি ও বাঙালি থেকে কোনো গোষ্ঠীই এখন আর ভালো নেই। কুকি-চিনের কারণে বান্দরবানে উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হচ্ছে। তাদের ভয়ে পাহাড়ে রাস্তা ঘাটের পর্যন্ত উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। কুকি-চিনের সদস্যরা বান্দরবানের তথা পাহাড়ে নিয়মিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মানুষজনকে অপহরণ করছে, চাঁদা দাবি করছে। কেউ চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে এই সন্ত্রাসী সংগঠনটি।’ 


পাহাড়   বান্দরবান   আতঙ্ক   কুকি-চিন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন