ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

গোলায় ১০ লাখ, কবরস্থানে ৬, শৌচাগারের ওপর থেকে কোটি টাকা উদ্ধার

প্রকাশ: ০৯:২৬ এএম, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩


Thumbnail

রাজধানীর তুরাগ থানার দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে লুট হওয়া ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি টাকার মধ্যে ৮ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব টাকা পাওয়া গেছে ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রামের বাড়ির ধানের গোলা, কবরস্থান, পয়োবর্জ্যের কূপ, শহরে আত্মীয়স্বজনদের বাসাবাড়ি এবং নিজেদের বাসার শৌচাগারের ওপর থেকে।

এই ডাকাত দলের ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে ১০ জন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা সবাই এখন কারাগারে আছেন। কার পরিকল্পনায় কীভাবে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল, লুটে নেওয়া টাকা কীভাবে ভাগবাটোয়ারা করে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল, তা ওই ১০ জনের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ডাকাত দলের সদস্য মিলন মিয়ার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুরের উরফি পশ্চিমপাড়ায়। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা মিলন ঢাকায় স্যানিটারি মিস্ত্রির কাজ করেন বলে জানতেন তাঁর গ্রামের লোকজন। সম্প্রতি ঢাকা থেকে পুলিশ মিলন মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়িতে যায়। পরে তাঁর বাড়ির ধান রাখার গোলার ভেতর থেকে প্লাস্টিকের একটি বস্তা বের করে পুলিশ। সেই বস্তায় পাওয়া যায় ১০ লাখ টাকা।

টাকা উদ্ধারের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওই গ্রামের কৃষক মোমেন আলী। তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামের পোলা মিলন মিয়া গরিব মানুষ। কিন্তু পুলিশ তাঁর বাড়ির ধানের গোলা থেকে এত টাকা বের করার পর আমরা সবাই অবাক হয়ে যাই।’ তখন পুলিশ জানিয়েছিল, ঢাকায় ব্যাংকের টাকা ডাকাতি হয়েছে। সেই টাকার ভাগ বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন মিলন।

এক মাস আগে (৯ মার্চ) মানি প্ল্যান্ট লিংক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা রাজধানীর মিরপুরের ডিওএইচএস এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে টাকা নিয়ে সাভারের ইপিজেড এলাকায় ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের একটি এটিএম বুথে দিতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের গাড়ি তুরাগ থানার দিয়াবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস পথ আটকায়। তখন মানি প্ল্যান্টের কর্মীদের মারধর করে ওই গাড়িতে থাকা ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান ডাকাত দলের সদস্যরা।

এই মামলার তদন্ত তদারক করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত লুট হওয়া ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকার মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করতে পেরেছি। বাকি ৩ কোটি ২০ হাজার টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

আরও যেভাবে টাকা উদ্ধার

গত ৩০ মার্চ গোপালগঞ্জের কাজলীয়া ইউনিয়নের পিঠাবাড়ী গ্রামের একটি তরমুজের খেত থেকে হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর ডিবির একটি দল। পরে তাঁকে নিয়ে হরিদাসপুর ফকিরপাড়ায় হাবিবুরের গ্রামের বাড়িতে যান পুলিশ সদস্যরা।

হাবিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের বাড়ির পেছনের কবরস্থানের পাশে মাটি খুঁড়ে একটি পলিথিনের প্যাকেট বের করা হয়। সেই প্যাকেটে পাওয়া যায় ছয় লাখ টাকা।

এ ছাড়া হাবিবুরদের বাড়ির শৌচাগারের পয়োবর্জ্য সংরক্ষণাগারে (স্ল্যাব দিয়ে ঢাকা কূপ) একটি পলিথিনের প্যাকেটে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল পাঁচ লাখ টাকা। ওই টাকা হাবিবুর নিজেই বের করে আনেন বলে জানিয়েছেন ডিবি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। মামলার আলামত হিসেবে উদ্ধার হওয়া ডাকাতির এসব টাকা জব্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার সাগর মাতব্বর ও আকাশ মাতব্বরের ঢাকার দক্ষিণখানের ভাড়া বাসার শৌচাগারের ওপরের জায়গা থেকে ডাকাতির ১ কোটি সাত লাখ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, এই ডাকাতির অন্যতম পরিকল্পনাকারী বরিশালের সোহেল রানা ওরফে শিশির। ডাকাতির ছয় লাখ টাকা সোহেলের পল্লবীর ভাড়া বাসার ওয়ার্ডরোব থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া ডাকাতির আরও ৮১ লাখ টাকা সোহেলের বোন শিরিন বেগমের সাভারের হেমায়েতপুরের বাসার ওয়ারড্রব থেকে উদ্ধার করা হয়।

ডাকাতির আরেক পরিকল্পনাকারী আকাশ আহমেদ ওরফে বাবুল। তিনি লুটের ২০ লাখ টাকা দিয়ে একটি মাইক্রোবাস কেনেন। তাঁর সেই গাড়িটি খিলক্ষেতের একটি বাসা থেকে জব্দ করেছে পুলিশ। এ ছাড়া খিলক্ষেতে আকাশের বাসার আলমারি থেকে চার লাখ এবং মিরপুর–১ নম্বরে তাঁর স্ত্রীর খালাতো লিপি বেগমের বাসার ওয়ারড্রব থেকে আরও ৫ লাখ ১৯ হাজার টাকা জব্দ করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার সানোয়ার হাসানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বনানীর একটি ফ্ল্যাট গিয়ে একটি ট্রলি ব্যাগ থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। আরেক আসামি ইমন ওরফে মিলনের ভাটারার বাসার ওয়ার্ডরোব থেকে ৩২ লাখ ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জের হৃদয় থাকতেন বনানীর কড়াইল বস্তিতে। ডাকাতির ৪৮ লাখ টাকা তিনি ওই বস্তিতে থাকা শাশুড়ি মরিয়মের বাসার মাচার ওপরে রাখা বস্তার ভেতরে লুকিয়েছিলেন।

এর আগে ডাকাতির দিনই রাজধানীর খিলক্ষেতের লা মেরিডিয়ান হোটেলের সামনের রাস্তা থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়ি এবং সেখান থেকে ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।

এ মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ জনই আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন। তাঁরা আদালতে দাবি করেছেন, তাঁদের মক্কেলরা সবাই নির্দোষ।

পরিকল্পনায় মানি প্ল্যান্টের সাবেক গাড়িচালক

আলোচিত এই টাকা লুটের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এক সময় টাকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মানি প্ল্যান্ট লিংকের গাড়িচালক হিসেবে কাজ করা সোহেল রানাই এ অপকর্মের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন। মাস ছয়েক কাজের পর দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাঁকে চাকরিচ্যুত করেছিল মানি প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ।

ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, সোহেল রানা মানি প্ল্যান্টের কর্মকাণ্ড বিষয়ে সব তথ্য জানতেন। তাঁরই পরিকল্পনায় আকাশ আহমেদ, হাবিবুর রহমানসহ মোট ১৬ জন ওই ডাকাতিতে অংশ নেন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

বনানীতে ৫৬ বোতল বিদেশি মদসহ একজন গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৪:১৬ পিএম, ২৬ মে, ২০২৩


Thumbnail বনানীতে ৫৬ বোতল বিদেশি মদসহ একজন গ্রেপ্তার।

রাজধানীর বনানী এলাকার দোকানে অভিযান চালিয়ে ৫৬ বোতল বিদেশি মদসহ মনির হোসেন (৩৮) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ মে) কড়াইল বস্তি এলাকার মিম ফ্যাশন গ্যালারি নামের একটি দোকানে তল্লাশি চালিয়ে মাদকগুলো উদ্ধার করা হয়। 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি বিমানবন্দর ও বনানী এলাকাকেন্দ্রিক অবৈধ বিদেশি মদ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।

ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান বলেন, মনির দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ বিদেশি মদ সরবরাহ করে আসছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর ওপর নজরদারি করা হচ্ছিল। অবশেষে গতকাল তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের অন্যান্য সদস্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। চক্রের অন্য সদস্যদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


বনানী   বিদেশি মদ   গ্রেপ্তার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

মন্ত্রী পরিবারের ‘কবজায়’ ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!

প্রকাশ: ১০:১৭ পিএম, ২৫ মে, ২০২৩


Thumbnail

রাজধানীর উপকণ্ঠের জনপদ রূপগঞ্জ উপজেলায় মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬৫টি। এর মধ্যে ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে আছে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পরিবার। পরিবারের সবাই কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। সংসদ সদস্য হয়েও নিজে আছেন তিনটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে। এমনকি ছেলের শাশুড়িকেও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বানিয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলায় ৪০টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টি মাদরাসা এবং পাঁচটি কলেজ আছে। যার মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ১১টি প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। 

গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) ব্রাহ্মণখালী এলাকার ‘জনতা উচ্চ বিদ্যালয়’, ত্রিশকাহনীয় এলাকার ‘ছাত্তার জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয়’ ও মর্তুজাবাদ এলাকার ‘মর্তুজাবাদ ফাজিল মাদরাসা’র ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

মন্ত্রীর স্ত্রী তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী রূপসী এলাকার ‘রূপসী নিউ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ’, বরপা এলাকার ‘হাজী নুরউদ্দিন আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়’ ও তারাবো এলাকার ‘তারাবো পৌর মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়’-এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। 

পরিবারের বড় ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা উপজেলার ভুলতা এলাকার ‘ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজ’, কাঞ্চন এলাকার ‘হাজী রফিজউদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ ও চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ‘নবকিশলয় হাই স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের’ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। ছোট ছেলে গাজী গোলাম আসরিয়া বাপ্পী খাদুন এলাকার ‘হাজী আয়েত আলী ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়’-এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এ ছাড়া বড় ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পার শাশুড়ি খাদিজা মাহতাব রূপসী গন্ধর্বপুরের ‘গন্ধর্বপুর উচ্চ বিদ্যালয়’-এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন।

অভিযোগ আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের কবজায় নিয়ে মানহীন শিক্ষক নিয়োগ, বিদ্যালয় তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষকদের সরিয়ে সেখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে। এতে থমকে গেছে বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন এবং ভেঙে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। 

নীতিমালা অনুসারে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিল সংগ্রহ, শিক্ষক নিয়োগ, বরখাস্ত, বাতিল বা অপসারণ, নৈমিত্তিক ছুটি মঞ্জুর করা ইত্যাদি পরিচালনার কাজ কমিটির হাতে।

উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত বাজেটসহ বার্ষিক বাজেট অনুমোদন, সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ, সংরক্ষিত ও সাধারণ তহবিল, অন্যান্য তহবিল, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বিলে সই করাসহ মোটামুটি বিদ্যালয়ের অধিকাংশ কাজই হয় পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে।

অভিযোগ আছে, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার মানোন্নয়নের চেয়ে নিয়োগ, প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ যেসব কাজে আর্থিকভাবে লাভ হওয়ার সুযোগ আছে, সেগুলো নিয়েই বেশি আগ্রহী গাজী পরিবার। নিজ পরিবারের কবজায় ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রেখে উপজেলার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আত্মীয়স্বজন, ঘনিষ্ঠজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে রেখেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।

শিক্ষার্থীদের একাধিক সচেতন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে বলেন, একটি পরিবার এতগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে থাকায় তারা সঠিকভাবে এগুলোর দেখভাল করতে পারছেন না।  নিজেরা যা ভালো মনে করছেন সেভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এক পরিবার থেকে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের কমিটিতে থাকা যাবে কি না, জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তবে সুনির্দিষ্ট তথ্যে কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে আমরা খতিয়ে দেখব।’ 

এ বিষয়ে জানতে গোলাম দস্তগীর গাজীকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

প্রেমের হতাশা থেকেই নিজের বুকে গুলি চালান পুলিশ কনস্টেবল রনি

প্রকাশ: ০৭:০৮ পিএম, ২৫ মে, ২০২৩


Thumbnail

রাজধানীর বনানীতে পুলিশ চেকপোস্টে গুলিবিদ্ধ হয়ে আশরাফুজ্জামান রনি (২২) নামে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি নিজের ইস্যুকৃত পিস্তল দিয়ে নিজেই বুকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পুলিশের। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় রনিকে সহকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।

ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, কনস্টেবল রনির সঙ্গে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তারা মোবাইলে কথা বলতেন। বুধবার রাতেও মোবাইলে অনেক কথা বলেন। সকালে ডিউটিতে আসার আগেও তাদের কথা হয়। 

তিনি বলেন, মোবাইল চেক করে দেখা গেছে, প্রেমঘটিত কোনো বিষয় নিয়ে কনস্টেবল রনির প্রেমিকার সঙ্গে ঝামেলা চলছিল। এ কারণেই তিনি নিজের পিস্তল দিয়ে বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে। 

কনস্টেবল পিস্তল ব্যবহার করতে পারে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, চেকপোস্টে যে কনস্টেবলরা ডিউটি করেন, তাদের সুবিধার্থে পিস্তল ব্যবহার করতে পারবেন বলে ডিএমপি সদরদপ্তর থেকে সিদ্ধান্ত হয়। অনেক আগে থেকেই সব চেকপোস্টে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বনানী ১১ নম্বরে চেকপোস্টে ডিউটি ছিল রনির। সকালে স্বাভাবিকভাবে তিনি ডিউটিতে আসেন। সঙ্গে আরও পুলিশ সদস্য ছিল। সকাল ৬টা ৪৯ মিনিটের দিকে চেকপোস্টের পাশেই বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে নিজের পিস্তল দিয়ে নিজে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। রনি পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) কর্মরত ছিলেন। 

সকাল সাতটার দিকে গুলিবিদ্ধ পুলিশ কনস্টেবলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ কনস্টেবল আশরাফ উজ জামান রনির পরিচয়পত্র থেকে জানা গেছে, তার পুলিশ আইডি নম্বর- বিপি০১২০২২৯২৬২, রক্তের গ্রুপ ‘এ নেগেটিভ’। 

পুলিশ   চেকপোস্ট   কনস্টেবল   গুলি   আত্মহত্যা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা

প্রকাশ: ০১:৪৭ পিএম, ২২ মে, ২০২৩


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে (৬৬) আসামি করে মামলা হয়েছে।

রোববার (২১ মে) রাতে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে পুঠিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন সোমবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আমরা খুঁজছি।

এ বিষয়ে পুঠিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, এই ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। আসামি আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৯ মে) পুঠিয়ার শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘আর ২৭ দফা বা ১০ দফা নয়। শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠাতে হবে।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সোমবার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে রাজশাহীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

এর আগেও বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়। তার ওই বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে আরো সাতজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছিল।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার আদালতে মামলাটি করেছিলেন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

পাহাড়ে নতুন আতঙ্কের নাম কুকি-চিন!

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ১৮ মে, ২০২৩


Thumbnail পাহাড়ে নতুন আতঙ্কের নাম কুকি-চিন!

পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার মধ্যে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যে লীলাভূমি বান্দরবান। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আড়ালে এ অঞ্চলে বিরাজ করছে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন। যার কারণে পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে অস্থিরতায় এগিয়ে বান্দরবান। বান্দরবানের এই অস্থিরতার সঙ্গে সম্প্রতি যে সশস্ত্র সংগঠনের নাম সবার আগে আসছে সেটি হলো কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ। বাংলাদেশের সরকার তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

কুকি-চিনের সন্ত্রাসীরা বান্দরবানে মেতে উঠেছে রক্তের খেলায়। অপহরণ, খুন, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বান্দরবানের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করছে তারা। গত মঙ্গলবার (১৬ মে) বান্দরবানের রুমা উপজেলার জারুলছড়ি পাড়ার কাছে পানির ছড়ায় কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণে দুই সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুই সৈনিক। 

এই সন্ত্রাসীরা একদিকে যেমন সেনাবাহিনীর টহল টিমে হামলা করছে, আবার কখনও টাকার জন্য পাহাড়িদের অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছেন অনেক পাহাড়ি। প্রতিনিয়ত এসব চললেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না অনেকে। 

এরআগে এপ্রিলে বান্দরবানে দু’পক্ষের গোলাগুলিতে আটজনের মৃত্যু হয়। এই সংঘর্ষেও কুকি-চিনের নাম আসে। কেএনএফ অবশ্য ‘ভা তে কুকি (Va Te Kuki)’ নামে একটি ফেসবুক আইডিতে নিহতদের এনআইডি কার্ড পোস্ট করে দাবি করে- তাদের সাত সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। 

বান্দরবানের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের কারণে পাহাড়ে থমকে আছে উন্নয়ন কাজ। এছাড়া এদের কারণে পাহাড়ে বন্ধ রয়েছে পর্যটকদের আসা-যাওয়া। সব মিলিয়ে কুকি-চিনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে থমকে আছে বান্দরবানের জনজীবন।

কুকি-চিনের অত্যাচারের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ পাহাড়ি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে বান্দরবান সদর উপজেলার আশ্রয় শিবিরে উঠেছেন। কুকি-চিনরা বম সম্প্রদায়ের। কিন্তু নিজের সম্প্রদায়ের লোকদের ছাড়ছে না তারা।  কুকি-চিন শুধু নিজেরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে তাই নয়, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছে তারা। 

স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড়কে বাঁচাতে হলে কুকি-চিনের বিরুদ্ধে আরও শক্ত পদক্ষেপ সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিতে হবে। তাদের এখন শক্ত হাতে দমন করতে হবে। তা না হলে পাহাড়ের অবস্থা আরও খারাপ হবে।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লাঅং মারমা জানান, কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের কারণে পাহাড়ের সাধারণ মানুষ অনেক অশান্তিতে আছে। পাহাড়ের সাধারণ মানুষের সুখ-শান্তি কেড়ে নিয়েছে এই সন্ত্রাসীরা। কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি এবং মানুষজনকে জিম্মি করার কারণে পাহাড়ে কোনো ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম বর্তমানে করা যাচ্ছে না। কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের কারণে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে মানুষজন বসবাস করতে পারছে না। তারা পাহাড়ি গ্রামের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করছে ও অপহরণ করছে, চাঁদা দাবি করছে। তাদের কথা যারা শুনছে না বা তাদের যারা চাঁদা দিচ্ছে না তাদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। এর ফলে পাহাড়ি গ্রামের সাধারণ মানুষরা শহরের দিকে চলে যাচ্ছে। গ্রামগুলোর এমন অবস্থা যে কোনো গ্রামে যদি ৬০টি পরিবার থাকার কথা, সেখানে এখন আছে মাত্র ১০ থেকে ১৫টি বা সর্বোচ্চ ২০টি পরিবার। বাকি পরিবারগুলো জীবন বাঁচাতে শহরের দিকে চলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। সেনাবাহিনী পাহাড়ের সুখ-শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। 

বান্দরবানের রুমা উপজেলার ১নং পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মার্মা বলেন, ‘শান্তিপ্রিয় বান্দরবানে আর আগের মতো শান্তি নেই। এই কুকি-চিনের কারণে বান্দারবানে পাহাড়ি ও বাঙালি থেকে কোনো গোষ্ঠীই এখন আর ভালো নেই। কুকি-চিনের কারণে বান্দরবানে উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হচ্ছে। তাদের ভয়ে পাহাড়ে রাস্তা ঘাটের পর্যন্ত উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। কুকি-চিনের সদস্যরা বান্দরবানের তথা পাহাড়ে নিয়মিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মানুষজনকে অপহরণ করছে, চাঁদা দাবি করছে। কেউ চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে এই সন্ত্রাসী সংগঠনটি।’ 


পাহাড়   বান্দরবান   আতঙ্ক   কুকি-চিন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন