ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

পুত্রবধূকে নিয়ে শ্বশুরের কাটা মাথার সন্ধানে পুলিশ

প্রকাশ: ০৮:৫৩ পিএম, ০২ অক্টোবর, ২০২৩


Thumbnail

চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোড এলাকায় সম্পত্তির জন্য স্ত্রী-সন্তানের হাতে খণ্ডবিখণ্ড হওয়া হাসান আলীর মরদেহের সবকয়টি অংশ পাওয়া গেলেও পাওয়া যায়নি মাথা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর মাথা ছাড়াই নিজ ঘরে দাফন করা হয় তাকে।

এদিকে, হাসানের সেই মাথার খোঁজে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার (১ অক্টোবর) হাসানের পুত্রবধূ আনারকলিকে নিয়ে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় তল্লাশি চালায় সংস্থাটি। 

এদিন আনারকলির দেখানো মতে সাগরপাড়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেলেনি সেই মাথার সন্ধান। ফলে সোমবার সকাল থেকে আবারও তল্লাশি অভিযানে নামে পিবিআই। তবে দুপুর পর্যন্ত হাসান আলীর মাথা খুঁজে পাননি পিবিআই কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান বলেন, হাসান আলীর পুত্রবধূ আনারকলি এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত নন। তবে হত্যার আলামত গোপনে সহযোগিতা করেন তিনি। শনিবার কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে আনারকলিকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন শনিবার তাকে আদালতে হাজির করে তিনদিনের রিমান্ডে আনা হয়। প্রথমে তাকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা উদ্ধার করা হয়। এরপর রোববার থেকে হাসান আলীর মাথার অংশ উদ্ধারে অভিযান শুরু করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত সেটি পাওয়া যায়নি।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, হাসান আলীর ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীরের বাসায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। এরপর মরদেহ খণ্ডবিখণ্ড করে পুত্রবধূ আনারকলির লাগেজে ভরে ফেলে দেওয়া হয়। আরেকটি থলেতে করে কাটা মাথা ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া শরীরের কিছু অংশ আকমল আলী রোডের একটি খালে ফেলে দেওয়া হয়। হাসান আলী বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে। গত ২১ সেপ্টেম্বর নগরের পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি লাগেজ থেকে হাসান আলীর শরীরের আটটি খণ্ড উদ্ধার করা হয়। প্রতিটি খণ্ড ছিল টেপ দিয়ে মোড়ানো। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করে পুলিশ। এরপর ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করে পিবিআই।

পরে ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে আকমল আলী রোড এলাকায় একটি বস্তা থেকে শরীরের আরও কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্তের পর সেদিনই হাসান আলীর স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তারা। এরপর দুইজনকে ঐ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা।

জবানবন্দিতে তারা জানান- দীর্ঘ ২৭ বছর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না হাসান আলীর। এ সময় তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না পরিবারের সদস্যরা। বছরখানেক আগে পরিবারের কাছে ফিরে আসেন হাসান আলী। গ্রামের বাড়ি বাঁশখালীতে তার নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেগুলো নিজেদের নামে লিখে নিতে হাসান আলীকে চাপ দিতে থাকেন তার স্ত্রী-সন্তানরা। কিন্তু এ বিষয়ে রাজি ছিলেন না হাসান আলী। এ নিয়ে বিরোধের জেরে মঙ্গলবার রাতে আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকায় ছোট ছেলের বাসায় ডেকে নিয়ে হাসান আলীকে হত্যা করেন স্ত্রী-সন্তানরা। এরপর মরদেহ টুকরো টুকরো করে লাগেজ ও বস্তায় ভরে ফেলে দেন।

পিবিআই জানায়, ঘটনার দিন রাতে চিকিৎসার নামে আকমল আলী সড়কের পকেট গেট এলাকায় ছোট ছেলের বাসায় যান হাসান আলীর স্ত্রী। সেদিন বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানও সেই বাসায় যান। পরবর্তীতে হাসান আলীকেও ডেকে নেন তারা। রাতে তাদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে স্ত্রী, দুই ছেলে ও ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে পরিকল্পিতভাবে হাসান আলীকে হত্যা করেন। হত্যার পর ঠাণ্ডা মাথায় লাশ টুকরো টুকরো করেন তারা। এরপর লাগেজে ভরে আটটি টুকরো ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় খালে নিয়ে ফেলে দেন। মাথা-বুকসহ শরীরের আরো কিছু অংশ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলেন। এ কাজটি করেন ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

স্বামী ও বন্ধুর সহযোগিতায় স্ত্রীকে পতিতালয় বিক্রি, ৩০ বছর পর ফিরে পেল পরিবার

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

৩০ বছর আগে স্বামী ও তার বন্ধুর সহযোগিতায় মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের সুবিধপুর গ্রামের দেহবধূ রেজিয়া খাতুনকে (৫৫) বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল ভারতের কাশ্মীরের একটি পতিতালয়। পরিবারের সদস্যরা ভেবে নিয়েছিলেন রেজিয়া খাতুন মারা গেছে। হঠাৎ ফিরে আসায় তাকে দেখতে ভিড় জমিয়েছেন আশেপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।

গত ১০ নভেম্বর মেহেরপুর সদর উপজেলার শোলমারি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরেন রেজিয়া। বাড়ি ফিরে তিনি স্বজনদের জানিয়েছেন, স্বামী আজগর আলী ৩০ বছর আগে ভারতের এক পাচারকারীর কাছে তাকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এত বছর তিনি ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের বড়গ্রাম বিরু এলাকায় ওই পাচারকারীর কাছে বন্দি ছিলেন। গত তিন মাস ধরে স্বজনরা যোগাযোগ করলে তাকে ছাড়তে রাজি হন ওই পাচারকারী। ১০ নভেম্বর শোলমারি সীমান্ত এলাকায় তাকে রেখে যাওয়া হয়।

এ ঘটনায় গত ১৬ নভেম্বর মেহেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। মামলায় স্বামী আজগর আলী ও প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীনকে আসামি করা হয়। মামলাটি আমলে নিয়ে সোমবার (২০ নভেম্বর) আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) একেএম আছাদুজ্জামান।

স্বজনদের কাছে খবর পাঠানোর বর্ণনা দিয়ে রেজিয়া খাতুন বাংলা ইনসাইডারকে জানান, ‘তিন মাস আগে পড়ে গিয়ে আঘাত পেলে আমার পা ভেঙে যায়। তখন কাশ্মিরের বিরু এলাকার ওই পাচারকারী গোপনে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য আমাকে নদীয়া জেলার পন্ডিতপুর গ্রামের এক চিকিৎসকের কাছে পাঠান। চিকিৎসা নিতে এসে মেহেরপুরের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়। তার মাধ্যমে নিজের বেঁচে থাকার কথা স্বজনদের জানাই। এরপর পরিবারের লোকজন বিভিন্ন মাধ্যমে ওই পাচারকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।’

পাচারের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে এই নারী জানান, প্রায় ৩৮ বছর আগে গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রেজিয়ার। ওই সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়েসন্তান আছে। ছয় বছরের মাথায় বিচ্ছেদ হয় তাদের। এক বছর পর নিজ গ্রামের আজগর আলীর সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকেন আজগর। একদিন রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পাশের একটি মাঠে মারধর করেন আজগর ও প্রতিবেশী জয়নাল। এতে অজ্ঞান হয়ে যান। ওই অবস্থায় ভারত সীমান্তে নিয়ে পাচারকারীর কাছে বিক্রি করে দেন। জ্ঞান ফেরার পর ফারুক হোসেন নামের এক ব্যক্তি রেজিয়াকে জানান, তিনি জম্মু-কাশ্মিরে আছেন। ফারুকের কাছে তাকে বিক্রি করেছেন আজগর ও জয়নাল। এরপর থেকে তাকে সেখানে আটকে রাখেন ফারুক। 

রেজিয়া আরও জানিয়েছেন, তিন মাস আগে নদীয়া জেলার পন্ডিতপুর গ্রামে পায়ের চিকিৎসা নিতে আসেন। সেখানে মেহেরপুরের বাসিন্দা আমিরুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয়। তার মাধ্যমে স্বজনদের কাছে বেঁচে থাকার খবর দেন। একইসঙ্গে তার কাছে ফারুকের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দেন। তখন দেশে ফিরে রেজিয়ার স্বজনদের খবর দেন আমিরুল। খবর পেয়ে রেজিয়ার বড় ভাই ও পরিবারের সদস্যরা ফারুকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করেন। একাধিকবার অনুরোধের পর ফেরত পাঠাতে রাজি হন ফারুক। ১০ নভেম্বর শোলমারি সীমান্ত এলাকায় তাকে রেখে যাওয়া হয়। ওই দিন সীমান্ত এলাকা দিয়ে গোপনে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা।

৩০টি বছর বহু কষ্টের মধ্যে দিন কাটিয়েছি জানিয়ে রেজিয়া খাতুন বলেন, ‘কষ্টের কোনও শেষ ছিল না। আমার ছেলেমেয়ে আদর-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত ছিল। এরই মধ্যে মা-বাবা মারা গেছেন, শেষবারের মতো তাদের মুখটা পর্যন্ত দেখতে পাইনি। আমাকে পাচারের সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’

রেজিয়ার স্বজনদের কাছে খবর পাঠানো আমিরুল ইসলাম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘কয়েক মাস আগে নদীয়া জেলার পন্ডিতপুর গ্রামে আমার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাই। তখন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলাম। সেখানে রেজিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয়। ঘটনার বিস্তারিত শুনে মেহেরপুরে এসে রেজিয়ার ভাইকে খবর দিই। একইসঙ্গে রেজিয়ার দেওয়া মোবাইল নম্বর ও কাশ্মিরের ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলেছি। পরে ওই ঠিকানায় যোগাযোগ করে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন স্বজনরা।’

রেজিয়ার বড় ভাই আনারুল ইসলাম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘৩০ বছর আগে আজগর আলী আমার বোনকে পাচারকারীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। এতদিন জানতাম মারা গেছে। তিন মাস আগে আমিরুলের মাধ্যমে জানতে পারি বোন বেঁচে আছে। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে পাচারকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। অসুস্থ থাকায় গত কয়েক দিন চিকিৎসা করিয়েছি। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর আদালতে মামলা করেছে রেজিয়া।’

কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়েছে রেজিয়ার বড় মেয়ে সালেহা খাতুনের। মায়ের ফিরে আসার খবর তার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এতে দারুণ খুশি। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে মায়ের আদর-স্নেহ বঞ্চিত হয়েছিলাম। সবাই বলেছিল মা মারা গেছে। কিন্তু আমার মন বলছিল একদিন মা ফিরে আসবে। আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া, ৩০ বছর পর মাকে ফিরে পেলাম। এজন্য আনন্দিত। এত বছর মায়ের কাছ থেকে যারা আমাকে দূরে রেখেছিল, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে কোনও সন্তান এভাবে মা-হারা না হয়।’

পাচারের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আজগর আলী বাংলা ইনসাইডারকে  বলেন, ‘বিয়ের এক বছর পরই রেজিয়ার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। পরে শুনেছিলাম মারা গেছে। এখন আমার বিরুদ্ধে পাচারের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এটি ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে আমার।’ 

অভিযুক্ত প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন


অভিযুক্ত আজগর আলী ও প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন

অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীন বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘রেজিয়াকে মারধরের ঘটনায় আমি জড়িত ছিলাম না। এমনকি পাচারের বিষয়েও কিছু জানি না। এত বছর পর দেশে ফিরে কেন আমাকে অভিযুক্ত করছে, তাও বলতে পারছি না।’

কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ০২ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আরিফুল ইসলাম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘এতদিন আমরা জানতাম রেজিয়া মারা গেছেন। ৩০ বছর পর জানতে পারলাম বেঁচে আছেন এবং বাড়িতে ফিরেছেন। বাড়ি ফেরার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের মানুষ তাকে দেখতে ভিড় করছেন। ওই গৃহবধূ জানিয়েছেন, স্বামী ও প্রতিবেশী জয়নাল তাকে ভারতে পাচার করে দিয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করে আমরা পুলিশে সোপর্দ করবো। সেইসঙ্গে ওই নারীকে সহযোগিতা করবো।’

মেহেরপুর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী একেএম আছাদুজ্জামান বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘মানবপাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। আমরা ভুক্তভোগীকে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেবো।’

মেহেরপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১০:২৫ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি পালিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে র‌্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শিহাব করিম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুরে ঢালীকে বসিলার গার্ডেন সিটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

অভিযোগ আছে, বিএনপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকে কয়েকদিন ধরে চলা অবরোধ ও হরতালের সময় আতাউর রহমান ঢালীর নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায় মোহাম্মদপুর এলাকায় নাশকতা হয়। তার নেতৃত্বে সহযোগীরা গত ২৯ অক্টোবর মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ তিন রাস্তার মোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে এবং দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করে সাধারণ মানুষ ও দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জখম করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। 

আতাউর রহমান ঢালীর বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ছয়টির বেশি মামলা আছে। আতাউর রহমান ঢালী ও অনুসারীদের এসব নাশকতা ও সহিংসতার খবর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করেন। 

বিএনপি   আতাউর রহমান   অগ্নিসংযোগ   ভাঙচুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

আগুন দেওয়ার পর ভিডিও পাঠানো হয় লন্ডনে: ডিবি হারুন

প্রকাশ: ০৬:১৩ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

গত ৪ নভেম্বর গাউছিয়া মার্কেটের সামনে সন্ধ্যায় মিরপুর সুপার লিংক পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন- তানভীর আহমেদ (২৭), দেলোয়ার হোসেন (৫১) ও মো. ফারুক হোসেন (৪৩)।

এর মধ্যে তানভীর ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পাঠাগার সম্পাদক, দেলোয়ার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ও ফারুক  বিএনপির সক্রিয় সদস্য।  

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিবি জানায়, আগুন লাগানোর পর সিনিয়র নেতাদেরকে ভিডিও পাঠানো হতো। এর মধ্যে লন্ডন ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন নেতারা রয়েছেন।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ৪ নভেম্বর নিউ মার্কেটে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ডিবি-উত্তরা বিভাগ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার তানভীর আহমেদই সেদিন বাসটিতে আগুন দেন। সেদিন বাসে আগুন দেওয়ার পর তিনি নিজের ফেসবুক মেসেঞ্জার থেকে আগুন লাগানোর কথা জানান তার এক বন্ধুকে।

কথোপকথনে তানভীর লেখেন, ‘আগুন লাগিয়ে কী হবে? আমরা আগুন লাগাচ্ছি, আর লন্ডনে যারা আছেন, তারা ভালো আছেন। উল্টো আগুন দিতে গিয়ে আমরা ধরা পড়ছি। ’ ডিবিতে নিয়ে আসা হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন।

ডিবিকে তানভীর বলেন, ‘আমরা আগুন লাগাচ্ছি, ককটেল নিক্ষেপ করছি, জেলে গেলে আমাদের দেখার কেউ নেই। যারা নির্দেশ দিচ্ছেন তারা কোথাও লুকিয়ে আছেন অথবা বিদেশ গিয়ে অবস্থান করছেন। ’

তানভীরকে রিমান্ডে আনা হয়েছে জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা অনেকের নাম ও নম্বর পেয়েছি। জিজ্ঞাসাবাদে তানভীরের সঙ্গে আর কারা কারা ছিলেন, এসব বিষয় জানা যাবে।  

তিনি আরও বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া থাকে, আগুন লাগানোর পর দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের ছবি-ভিডিও দেখাতে হবে। আগুন দেওয়ার সময় মুখে মাস্ক ও রুমাল ব্যবহার করতে হবে। যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে আগুন দিতে হবে। বড় ভাইদেরকে খুশি করার জন্য ককটেল কিনে এনে ককটেল নিক্ষেপ করছে, আবার কোথাও পেট্রল ঢেলে আগুন দিচ্ছে।  

ডিবিপ্রধান বলেন, আমাদের বিভিন্ন টিম ইতোমধ্যে অনেককে আইনের আওতায় এনেছে। তাদের মধ্যে অনেকে আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। কে কে তাদেরকে সহায়তা করছেন, তাদের নামও আমরা পেয়েছি।

তিনি বলেন, কোনো বড় ভাইয়ের কথায় কেউ যদি আগুন লাগান, ককটেল নিক্ষেপ করেন, আসামি তো আপনিই হবেন। ধরা পড়ার পরে বড় ভাইদের নাম বললে কোনো লাভ হবে না। যারা আগুন দেবেন তারাই ধরা পরবেন, তারাই মামলা খাবেন আর বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।  

নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড যারা করছেন, তাদেরকে বিনীত অনুরোধ জানিয়ে হারুন বলেন, যার গাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে, তার হয়তো জীবনের শেষ সম্বল বিক্রি করে দৈনিক রোজগারের জন্য তিনি বাসটি চালান। আপনারা আসলে একজন মানুষের স্বপ্ন পুড়িয়ে ফেলছেন।  

তিনি বলেন, জনগণের স্বার্থে, রাষ্ট্রের স্বার্থে জনগণের কথা বিবেচনা করে আগুনের পথ থেকে সরে আসুন। নয়তো আপনারা অবশ্যই গ্রেপ্তার হবেন। লুকিয়ে থাকলেও পার পাওয়া যাবে না। যারা বাকি আছেন তাদেরও আমরা আইনের আওতায় আনব। যে গর্তেই ঢুকে থাকুক, নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।

লন্ডন থেকে কোনো নির্দেশনা আসছে কি না জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা অনেককে গ্রেপ্তার করেছি। তারা বলছেন, আগুন লাগানোর পরে সিনিয়র নেতাদেরকে ভিডিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে লন্ডন ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন নেতাদের কথাও বলেছেন।

আগুন লাগানোর পরে গ্রেপ্তাররা অনুতপ্ত কি না জনাতে চাইলে তিনি বলেন, আগুন লাগানোর পর তারাও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা ধরা পরলে জামিনের জন্য তাদের বড় ভাইয়েরা কাজ করবেন কি না, এ নিয়েও উদ্বিগ্ন।

ডিবি হারুন   বাসে আগুন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানির চাকরি, নেপথ্যে এমপি নদভী

প্রকাশ: ০৩:১২ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে বেড়াতে আসা এক পাকিস্তানি নাগরিককে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম-১৫ সংসদীয় আসনের (সাতকানিয়া-লোহাগড়া) সংসদ সদস্য অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর বিরুদ্ধে। 

জানা যায়, ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে বেড়াতে এসে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন পাকিস্তানি নাগরিক মোহাম্মদ আমিন নদভী। চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (আইআইইউসি) ২০২১ সালের জুন মাস থেকে শিক্ষকতা করছেন তিনি। ড. আবু রেজা আইআইইউসি'র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি বেআইনিভাবে তার পাকিস্তানি বন্ধু আমিন নদভীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিসহ বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ২০২১ সালের জুন মাসে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে আমিন নদভীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তখন প্রাথমিকভাবে তার বেতন ধরা হয়েছিল ৮০ হাজার টাকা।

২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর আইআইইউসির রেজিস্ট্রারের সই করা এক আদেশে আমিন নদভীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোরালিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এমডিপি) নামে একটি বিভাগের পরিচালকের (ইনচার্জ) অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর সুবাদে তার বেতন-ভাতাও বেড়ে যায়।

অভিযোগ আছে, কিছুদিন আগে উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে পাশ কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস কোঅর্ডিনেটর, মসজিদ ও লাইব্রেরি কমিটির সদস্য করা হয় আমিন নদভীকে।

বাংলাদেশি পাসপোর্ট না থাকায় আমিন নদভী বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও তার বেতন নগদে পরিশোধ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টস ডিরেক্টর অধ্যাপক আফজাল আহমেদ প্রতি মাসে তার হাতে বেতন হিসেবে নগদ অর্থ তুলে দেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, এছাড়া ৪০ লাখ টাকা খরচ করে আমিন নদভীর অফিস ইনটেরিয়র ডেকোরেশন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আইআইইউসি'র একটি আবাসিক হলের সাথে সংযুক্ত ৬ রুমের একটি বিলাসবহুল বাসাও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাকে।

কোনো বিদেশি নাগরিক অন্য কোনো দেশে চাকরি করতে গেলে তার 'ই' ভিসা থাকতে হয়। কিন্তু আমিন নদভীর ভিসা ক্যাটাগরিতে 'টিএফ' উল্লেখ রয়েছে।

পাকিস্তানি নাগরিক   ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী   আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

মিরপুরে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৯:২৭ পিএম, ২০ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

রাজধানীর মিরপুরে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাজেদুল আলম টুটুল (৪৫) নামে এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২০ নভেম্বর) অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থলের পাশ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া বিভাগ থেকে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

মিরপুর বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন মোল্লার বরাত দিয়ে ডিএমপি মিডিয়া বিভাগ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তি রূপনগর থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলের পাশ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

টুটুল বিআরটিসির দোতলা বাসে যাত্রীবেশে আগুন দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। বিআরটিসির বাসের চালক এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এর আগে  সোমবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে বিআরটিসির বাসটিতে আগুন দেওয়া। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নির্বাপণ করে।

সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।

মিরপুর   বাসে আগুন   স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা গ্রেপ্তার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন