এক যুগেরও কিছু বেশি সময় ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। ক্ষমতায় আসতে নানা রকম ছলচাতুরির চেষ্টা আর সহিংসতার পথ অবলম্বন করায় মামলা ও গ্রেফতারে নেতাকর্মীদের নাজেহাল অবস্থা। বলা যায় জনগণ থেকে একঘরে হয়ে রয়েছে বিএনপি। হাজার বেড়াজালে দলটি এখন ভঙ্গুর প্রায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর আরও চাপে পড়েছে দলটি। সবমিলিয়ে এখন কঠিন সংকটের সম্মুখীন দলটি। এ অবস্থায় বর্তমান সংকট কাটিয়ে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে গিয়ে নিজের উপর আস্থার সংকটে ভুগছে দলটির নেতাকর্মীরা। নিজেদের উপর আস্থার সংকট এবং সন্দেহ নিয়ে রোববার (১৫ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, অনেকেই ঝরে যাবে। অনেকেই দালালি করবে, অনেকেই ষড়যন্ত্রের শিকার হবে। আবার অনেকেই লোভে পড়বে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হলে ২০ দলীয় জোট ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল এবং নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু যে প্রত্যাশা নিয়ে ২০ দলীয় জোট ওই ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বরং তারা ষড়ষন্ত্রের মধ্যে পড়েছিল বলে দলের অধিকাংশ নেতা মনে করেন। তাদের অনেকের মতে, ড. কামাল হোসেন সে সময় সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে। আর সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ড. কামালের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় কিছু নেতার ব্যক্তি স্বার্থে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল। যা দলটির জন্য সমীচীন হয়নি বলে মনে করেন দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। এই নিয়ে বিএনপিতে মেরুকরণও তৈরি হয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এবারও বিভিন্ন জোট গঠনের কথা ভাবছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। ফলে এবারও হয়তো স্বার্থন্বেষী কিছু নেতা আগের পথে পা বাড়াবে বলে শঙ্কা করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এই নিয়ে দলের বেশ কয়েকজন নেতার প্রতি সন্দেহ-অবিশ্বাস বাড়ছে বিএনপিতে। বিএনপি সংশ্লিষ্টরা বলছে, যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে তাঁদের মধ্যে বিএনপির সাবেক একাধিক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী আছেন। এমনকি স্থায়ীদের কমিটির একাধিক নেতার নামও এই তালিকায় রয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। শুধু বিএনপিতে নয়, ২০ দলীয় জোটের একাধিক শরিকও রয়েছে এই সন্দেহের তালিকায়।
বিশ্লেষকদের মতে, ভুল রাজনীতির কারণে বিএনপি এখন ‘চোরাগলিতে’আটকে গেছে। দলের ভেতর বিভিন্ন ধরনের সংকটে টালমাটাল দলটি। সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানো চেষ্টা করলেও সুবিধা করতে পারছে না দলটি বরং আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। এদিকে অসুস্থ হলেও এখনও বিএনপির কাণ্ডারি খালেদা জিয়া। কিন্তু নানা কারণে দলের নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হচ্ছে না। আবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া লন্ডনে বসে স্বেচ্ছাচারীভাবে দল পরিচালনা করছেন। যাকে মন চাইছেন বহিষ্কার করছেন আবার যাকে মন চাইছেন শোকজ করছেন। ফলে নিজ দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে সরকারের সঙ্গে আঁতাত বা তৃতীয় শক্তির উত্থান তৎপরতায় নেতারা জড়িত হবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।