মন্তব্য করুন
বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অসগশগ্রহন করবে কি করবে না সেটি একটি কোটি টাকার প্রশ্ন। বিএনপির নেতার এখনও বলছেন একদফা আন্দোলনের মাধ্যমে তারা দাবী আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবেন। সরকারকে হটাবেন। কিন্তু এই সরকার হটানোর জন্য বিএনপির হাতে যতটুকু সময় আছে সেই সময়ে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দলও গণঅভ্যুত্থান করতে পারে না। বিএনপির মত ক্ষয়িষ্ণু একটি রাজনৈতিক দল এই সময়ের মধ্যে সরকারের পতন ঘটিয়ে ফেলবে কিভাবে তা নিয়ে বিএনপি নেতাদের মধ্যেই নানারকম কথাবার্তা শুরু হয়েছে। বিএনপির নেতারা নিজেরাও স্বীকার করেছে যে তাদের পরিকল্পনা ছিল পুরো সেপ্টেম্বর মাস আন্দোলন করে সরকারকে কাঁপিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু সেপ্টেম্বরের আন্দোলনে সরকার কাপেনি বরং ইদানিং আন্দোলনে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাসার ভাব লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে রোডমার্চ কর্মসূচি বিএনপি পালন করছে সে রোডমার্চ কর্মসূচি জনগণের মধ্যে সাড়া জাগাতে পারেনি।
এখন
বিএনপি নেতারা অবশ্য বলছে তারা অক্টোবরে
চূড়ান্ত যুদ্ধ করবেন। এর আগে অবশ্য
বিএনপি বিভিন্ন সময় বলত ঈদের
পর আন্দোলনের মাধ্যমে তারা সরকার পতন
ঘটাবে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তারিখ
দিয়ে তারা সরকার পতনের
হুমকি দিত। ১০ ডিসেম্বরের
পর থেকে বেগম খালেদা
জিয়ার কথায় দেশ চলবে
এমন হুমকিও দেয়া হ্যেছিল। বাস্তবে
সেসব হুমকি কাজে লাগেনি।
এখন
বিএনপি নেতারা বলছেন যে অক্টোবরে তাদের
শেষ চেষ্টা। সেপ্টেম্বরের এই রোডমার্চ এবং
বিভিন্ন সমাবেশ দিয়ে তারা কর্মীদের
চাঙ্গা করে অক্টোবরে তারা
ঢাকাকে অবরুদ্ধ করে একটি অচল
অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়, যেই
অচল অবস্থার মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব
হবে। কিন্তু এইরকম অক্টোবরে তৈরি করা যাবে
কিনা তা নিয়ে বিএনপির
মধ্যেও সংশয় দেখা দিয়েছে।
কেউ
কেউ বলছেন যে, অক্টোবরের মধ্যে
যদি বিএনপি বড় ধরণের আন্দোলন
সৃষ্টি করতে না পারে
সেক্ষেত্রে কি হবে? এরকম
প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতারা রহস্যময় ভূমিকা রাখছেন। তারা কোনকিছু বলছেন
না। তারা শুধু একটি
কথাই বলছেন যে আন্দোলনের মাধ্যমে
তারা সরকারের পতম ঘটাতে সক্ষম
হবেন।
এখন
প্রশ্ন হল নির্বাচন কমিশন
নভেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে
বলেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা
হচ্ছে। তাহলে অক্টোবরের মধ্যে যদি বিএনপি আন্দোলনের
মাঠ গরম করতে না
পারে, তাহলে কি বিএনপি নির্বাচনে
যাবে? অনেক বিএনপি নেতাই
এখন আকার ইঙ্গিতে বলছেন
যে, নির্বাচনের প্রস্তুতিও তাদের আছে। বিভিন্ন নির্বাচনি
এলাকায় তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। অক্টোবরে
যদি তারা দেখে যে
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসছে না, জনগণ
তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না,
তাহলে হয়ত তারা নির্বাচনের
পথেই হাঁটবে। কিংবা এই আন্দোলনকে তারা
এগিয়ে নেবে জানুয়ারি পর্যন্ত
এবং নির্বাচনের সময় একটি বড়
ধরণের গোলযোগ করার চেষ্টা করবে।
বিএনপির নেতারা এখন হিসেব করে
দেখছেন যে কোন বিকল্পটি
তাদের জন্য ইতিবাচক হবে।
যদি নির্বাচনে গিয়ে কিছু আসন
পাওয়া যায় তাহলে তাদের
জন্য লাভ নাকি অক্টোবরের
পর আরও জোড়াল আন্দোলন
করে নির্বাচন বানচাল করলে তাদের লাভ।
বিএনপির কোন কোন নেতা
মনে করছেন নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা ২০১৪
সালেও তারা করেছিল। কিন্তু
তারা সফল হয়নি। তখন
বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্বে ছিলেন।
তিনি যেটি পারেননি সেটি
মির্জা ফখরুলরা পারবেন এটি বিএনপির কেউই
বিশ্বাস করেনা।
তাছাড়া
এখন তৃণমূল বিএনপির নেতারা বিএনপির প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের ঘাড়ে
নিঃশ্বাস ফেলছেন। আর এই নানারকম
প্রলোভন এবং অর্থ নিয়ে
তারা ঘরাফেরা করছেন। এই অবস্থায় বিএনপি
যদি অক্টোবরের পর নির্বাচন বর্জনের
আন্দোলনের ডাক দেয় তাহলে
বিএনপির ভাগ্যে কি হবে সেটিই
দেখায় বিষয়।
মন্তব্য করুন
জাতিসংঘের সাধারণ
পরিষদের বৈঠক চলছে। এই অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি
একাধিক সাইড বৈঠকে যোগদান করেছেন। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে
তার ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এবং তার নেতৃত্বে একটি বড় দল যখন জাতিসংঘের
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের বিভিন্ন ইভেন্টে যোগদান করছেন, সেখানেই বাংলাদেশ বিরোধী কিছু
অপপ্রচার চলছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ইউনূস সেন্টার জাতিসংঘের সাইডলাইনে সামাজিক
ব্যবসার নামে কিছু সেমিনার করছে, কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন ব্যক্তিগত উদ্যোগে জাতিসংঘের
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ভূমিকা, এসডিজি বাস্তবায়নে তাদের
অবস্থান ইত্যাদি নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ করছে। এসমস্ত সেমিনার
সিম্পোজিয়াম গুলোতে ইনিয়ে বিনিয়ে নানাভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার শুরু
হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্র
থেকে বাংলা ইনসাইডার নিশ্চিত হয়েছে ড. ইউনূস, কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন এবং বিএনপি জামাতপন্থিরা
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকে ঘিরে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।
বিএনপি জামাতের
প্রথম টার্গেট ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘদিন ধরে লবিস্টের মাধ্যমে তারা মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রকে সরকার আওয়ামী লীগ এবং সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থা নিতে প্ররোচিত করে। সেক্ষেত্রে
তারা বেশখানিকটা সফল হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশ সম্পর্কে
একটি ভ্রান্ত এবং অমূলক ধারণা পোষণ করে বসে আছে। আমাদের দূতাবাস সেটি মোকাবিলা করার
ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।
এরপর বিএনপি
এবং জামাতের লবিস্টরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিকে মনোযোগী হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে তা আপত্তিকর এবং অগ্রহণযোগ্য
বলেই মনে করা হচ্ছে। একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রস্তাব নিতে
পারে কিনা, সেই প্রশ্নটি উঠেছে। বিশেষ করে একজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে প্রস্তাব গ্রহণ
করাকে নজিরবিহীন বলছেন অনেকে। আর এটিও সম্ভব হয়েছে সেখানে বিএনপি জামাতের তৎপরতার জন্য।
আর এই ঘটনার পরপরই বিএনপির দুই নেতার পদোন্নতিও হয়েছে। যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই ঘটনার
ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
এখন বিএনপি
জামাত জাতিসংঘে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার জন্য কাজ শুরু করেছেন এবং তাদের লক্ষ্য আগামী
নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতিসংঘ যেন সরাসরি হস্তক্ষেপ করে। শুধু হস্তক্ষেপ নয় জাতিসংঘে
তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ না হলে বাংলাদেশ
শান্তি রক্ষা মিশনে নিয়োগ বন্ধসহ নানারকম প্রস্তাবনা নিয়ে জাতিসংঘে তৎপরতা চলছে।
উলেখ্য যে,
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় জাতিসংঘের সবগুলা শাখাই কার্যকর থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের
সরকারি বেসরকারি সংস্থা, উন্নয়ন সংস্থা সেখানে ভিড় করে। কাজেই এ সময়ে গিয়ে বাংলাদেশ
বিরোধী লবিং করাটা অত্যন্ত সহজ।
বিএনপি জামাতের
লক্ষ্য হলো তিনটি- প্রথমতো তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনকে বানচাল করতে চায় এবং
সেই লক্ষ্যে জাতিসংঘ সরাসরি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করুক এই রকম একটি পরিস্থিতি
তৈরি করতে চায়।
দ্বিতীয়ত তারা
বাংলাদেশের সাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীর উপর একটি আক্রমন করতে চায়। শান্তিমিশনে
বাংলাদেশে অংশগ্রহণ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রয়োচিত করার মধ্যে দিয়ে।
আর তৃতীয়ত,
তারা বাংলাদেশের ব্যাপারে জাতিসংঘের সরাসরি হস্তক্ষেপ চায়।
আর এই সমস্ত
বিষয়গুলো করার জন্য এখন জাতিসংঘে বিরামহীনভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এখনই যদি সরকার
এই বিষয়ে নজরধারি না দেয় তাহলে ভবিষ্যতে এ নিয়ে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে
বলে অনেকে মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
শমসের মবিন চৌধুরী, জাঁদরেল কূটনীতিক পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া যখন ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসে তখন তিনি বিএনপির অন্যতম থিংক ট্যাংক হিসাবে পরিচিতি পান। বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল সর্বজন বিদিত। কিন্তু তারেক জিয়া যখন বিএনপির কর্তৃত্ব নিতে শুরু করেন, তখন আস্তে আস্তে শমসের মবিন চৌধুরী নিজেকে বিএনপি থেকে গুটিয়ে নেওয়া শুরু করেন।
এর
কারণ হলো তারেক জিয়ার
দুর্ব্যবহার, শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ এবং কোন
কিছু না জেনেই পণ্ডিতি
করা। একজন সিজন ডিপ্লোম্যাট এই ধরনের অর্বাচীন
বালকের অর্ধ শিক্ষিত ও
কথাবার্তা পছন্দ করতে পারেননি। আর
এই কারণেই শেষ পর্যন্ত তিনি
বিএনপি ছেড়ে চলে যান।
এখন তিনি তৃণমূল বিএনপির
চেয়ারপারসন হিসেবে
দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
বিএনপির
আরেক পোড় খাওয়া ত্যাগী নেতা তৈমুল আলম
খন্দকার। তিনি ছিলেন মাঠের
রাজনীতিবিদ। রাজনীতির মাধ্যমেই তিনি বেড়ে উঠেছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি নির্যাতিত
হন, কারাবরণ করেন দীর্ঘদিন। খালেদা
জিয়ার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ
সম্পর্ক ছিল। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে
তিনি একটি বড় ফ্যাক্টর। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে
তিনি স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তিনি
বলেছিলেন যে এটির সাথে
দলের কোনো সম্পর্ক নেই।
রাজনীতির প্রয়োজনে তাকে নির্বাচন করতে
হচ্ছে। কিন্তু লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া তার কোন কথাই
শোনেননি। বরং নির্বাচন করার
অপরাধে তাকে দল থেকে
বহিষ্কার করেন। সেই সময় তারেক
জিয়া তার সঙ্গে খুবই
নিম্নমানের আচরণ করেছেন। আজেবাজে কথা
বলেছেন। একজন প্রবীণ পোড়
খাওয়া রাজনীতিবিদ
একজন বালকের এই সমস্ত কথাবার্তায়
আহত হয়েছেন, মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। একারণেই তিনি এখন বিএনপি ছেড়ে
নতুন ঠিকানা খুঁজে নিলেন।
বিএনপিতে
এরকম বহু নেতা আছে
যারা তারেকের দুর্ব্যবহার, অত্যাচার গালাগালের কারণে বিএনপি ত্যাগ করেছেন। খুলনার বিএনপি নেতা এবং সাবেক স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলী তাদের মধ্যে অন্যতম। এখনো বিএনপিতে অনেক
নেতা আছেন যারা নিষ্ক্রিয়
শুধুমাত্র তারেক জিয়ার বেয়াদবি এবং অধঃত্বপূর্ণ কথাবার্তার
জন্য।
খুলনার
নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু, চট্টগ্রামের নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান কিংবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর
অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিনরা তারেক জিয়ার
অপমানের গ্লানি সইতে না পেরে
নিজেরাই একা একা নীরবে
নিভৃতে আর্তনাদ করেন। এরকম নেতার সংখ্যা
বিএনপিতে কম নয়।
বিএনপির
একজন নেতা নাম প্রকাশ
না করার শর্তে বলছিলেন
যে, তারেক জিয়া যে ভাষায় কথা
বলেন তা চাকর বাকরদের
সাথেও আমরা বলি না।
তার মুখের ভাষা এত গর্হিত
এবং অরুচিকর যে তা প্রকাশ্যে
বলা যায় না। সবচেয়ে
বড় সমস্যা হলো যে, তিনি
রাজনীতি না বুঝেই পাণ্ডিত্ব
করেন, সব বুঝে ফেলার
ভান করেন। এটি একজন রাজনীতিবিদের
জন্য ভয়ংকর প্রবণতা বলেও মনে করেন
বিএনপির ওই নেতা। আর
এ সমস্ত কারণেই বিএনপি থেকে বেরিয়ে গেছেন অনেক নেতা।
অধ্যাপক
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর
কথায় ধরা যাক। এই
অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন
নেতা, প্রথম মহাসচিব। জিয়াউর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার সাথে
যে আচরণ তারেক জিয়া
করেছে, সেই কারণেই নিজের
হাতে গড়া সংগঠন ছেড়ে
তিনি চলে যেতে বাধ্য
হয়েছিলেন।
একই
রকম অবস্থা কর্নেল অলি আহমেদের। জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ এই
ব্যক্তি তারেকের অত্যাচারেই (এলডিপি) নামে নতুন রাজনৈতিক
দল গঠন করেন। আর
এখন তৃণমূল বিএনপি গঠিত হওয়ার পর যারা তারেক
জিয়ার অসদাচরণ এবং বাজে ব্যবহারের
কারণে ক্ষুব্ধ তারা যেন নতুন ঠিকানা
পাচ্ছেন।
এখনো
তারেক জিয়ার স্বৈরতান্ত্রিক দল পরিচালনায় কোনঠাসা
হয়ে আছেন অনেকেই। অনেকেই
বিকল্পের সন্ধানে। তাদের জন্য বিকল্প ঠিকানা
হল তৃণমূল বিএনপি।
ধারণা
করা হচ্ছে যে শুধুমাত্র বিএনপিতেই
কোণঠাসা বা তারেকের উপর
বিরক্ত ব্যক্তিরা নন, অনেক নেতারাই
যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে আছেন যেমন।
এডিপি, বিকল্প ধারাসহ একাধিক রাজনৈতিক দল, বিএনপি থেকে
লোকজন যেয়ে যে রাজনৈতিক
দলগুলো গঠিত হয়েছিল সেই
রাজনৈতিক দলগুলো তৃণমূল বিএনপিতে আসতে পারে। বিএনপির
আসল প্ল্যাটফর্ম হতে পারে এই
রাজনৈতিক দলটি।
তারেক জিয়া রাজনীতি তৃণমূল বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচন হবে কি হবে না- এ নিয়ে রাজনীতিতে চলছে অনিশ্চয়তা, টানাপোড়েন। এর মধ্যেও আওয়ামী লীগ অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ। যে কোনো মূল্যে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে নির্বাচন করতে চায় টানা পনেরো বছর ক্ষমতায় থাকা দলটি। কিন্তু আওয়ামী লীগের এই যাত্রাপথে কিছু আপদ তৈরী হয়েছে। যাদের কারণে আওয়ামী লীগ তার লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, আওয়ামী লীগের যাত্রাপথ দুর্গম হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এই সমস্ত ব্যক্তিদের কারণে আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে, দল লক্ষ্যচ্যুত হচ্ছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। আর ক্ষমতাসীন সরকার সমালোচিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা দলের জন্য পাঁচটি আপদকে চিহ্নিত করেছেন। এই আপদগুলোর মধ্যে রয়েছে -
১. অযোগ্য মন্ত্রী: আওয়ামী লীগের আট থেকে দশজন মন্ত্রী অযোগ্য এবং দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এই সমস্ত মন্ত্রীদের কারণে দেশে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, ব্যাংকগুলো খালি হয়েছে। পণ্যের বাজারে অস্থিরতা এবং সিন্ডিকেট সৃষ্টি হয়েছে, ডেঙ্গু মোকাবেলায় সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে কিছু কিছু দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্ত্রী এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারণে। আর এই অযোগ্য মন্ত্রীরা আওয়ামী লীগের জন্য এখন সবচেয়ে বড় আপদে পরিণত হয়েছেন বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
২. হাইব্রিড এবং ভুঁইফোড় নেতাদের দাপট: আওয়ামী লীগে হঠাৎ বনে যাওয়া কিছু নেতা এখন আওয়ামী লীগের জন্য দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়েছেন। এই মুহূর্তে যেমন আওয়ামী লীগের সভাপতি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও দেশে নেই। আর এসময় কেন্দ্রীয় কমিটিতে যারা পোড় খাওয়া, ত্যাগী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন, তারা দিক নির্দেশনাহীন। বরং হাইব্রিড নেতারাই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে টেলিভিশন টকশোতে এবং বিভিন্ন দূতাবাসে কথা বলে বেড়াচ্ছেন। এই সমস্ত হঠাৎ বনে যাওয়া নেতারা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় আপদের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
৩. প্রশাসনে অতি উৎসাহ: প্রশাসনের অতি উৎসাহী নব্য আওয়ামী লীগাররাও আওয়ামী লীগের জন্য একটা আপদ হয়ে গেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জেলা প্রশাসক এবং পুলিশের ওসিরা ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জেতানোর’ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আওয়ামী লীগের জন্য হিতে বিপরীত হয়েছে। শুধু মাঠ প্রশাসন নয়, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তিরা এখন আওয়ামী লীগের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগে পরিণত হয়েছে। এরা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি শুধু নষ্ট করছেন না, বরং আওয়ামী লীগকে ঝুঁকিতে ফেলছেন বলেও মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
৪. তৃণমূলে অনুপ্রবেশকারী: তৃণমূলে আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশকারীদের দাপট এখন বেড়েছে। তৃণমূলের এই সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা নির্বাচনের আগে নানা রকম মতলবি কর্মকান্ডে দলকে বিতর্কিত করছে। টেন্ডারবাদী, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম করে তারা এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করছে, যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে দল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে।
৫. দলে এবং সরকারে ব্যবসায়ীদের দাপট: কিছু কিছু ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক বনে গেছেন। দলে এবং সরকারে তাঁরা প্রভাব বিস্তার করছেন, দাপট দেখাচ্ছেন। আর এই দাপটের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীলরা মনে করেন, পাঁচ আপদ থেকে আওয়ামী লীগকে মুক্তি পেতে হবে। তাহলেই আগামী নির্বাচনের যাত্রাপথ মসৃণ হবে।
মন্তব্য করুন
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে একদফা আন্দোলন করছে বিএনপি। আজ এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট মহাসড়কে রোডমার্চ করেছে দলটি। কিন্তু এক দফা আন্দোলনের যে গতি থাকা উচিত, একদফা আন্দোলনে যে জাগরণ হওয়া উচিত সেটি এখন পর্যন্ত বিএনপি অর্জন করতে পারেনি।
বিএনপির
নেতারা বলছেন যে, টানা কর্মসূচির
পরও আন্দোলনটা শুধুমাত্র কর্মী সমাবেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে। দলের একান্ত অনুগত
নেতাকর্মীরা ছাড়া সাধারণ জনগণ এই সমস্ত
কর্মসূচিকে এখন পর্যন্ত আমলে
নিচ্ছে না। এই সমস্ত
কর্মসূচি সাধারণ জনগণের জীবনযাপনেও কোন প্রভাব ফেলছে
না। আর এ কারণেই
শেষ পর্যন্ত এই আন্দোলন কতটুকু
সফল হবে তা নিয়ে
বিএনপিতে শঙ্কা রয়েছে।
তবে
আন্দোলনের সাফল্য ব্যর্থতার সংখ্যার চেয়েও, এই আন্দোলন এগিয়ে
নেওয়ার ক্ষেত্রে পাঁচটি বড় বাধার মুখোমুখি
হচ্ছে বিএনপি। আর এই সমস্ত
বাধাগুলো পেরিয়ে একদফা আন্দোলনকে নির্বাচন পর্যন্ত কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, সেটি বিএনপির জন্য
এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।
যে পাঁচটি শঙ্কা বিএনপিতে ঘনীভূত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে:
১। নেতাকর্মীদের জেল মামলা: বিএনপির
অধিকাংশ নেতাকর্মী মামলা ভারে ভরাক্রান্ত। একেকজন
নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একশো থেকে সাড়ে
চারশো পর্যন্ত মামলা রয়েছে। এই মামলাগুলো মোকাবিলা
করার জন্য তাদের প্রতিদিনই
কোর্ট কাছারিতে যেতে হচ্ছে। যখনই
আন্দোলনের গতিবেগ বাড়ানো হচ্ছে তখন এই মামলাগুলো
নতুন করে সচল করা
হচ্ছে। এই সমস্ত মামলাগুলো
বিএনপির জন্য বড় শঙ্কার
কারণ।
ইতিমধ্যে
বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মী
গ্রেফতার হয়েছেন। আন্দোলনের গতি বাড়লে সামনের
দিনগুলোতে আরো নেতাকর্মীরা গ্রেফতার
হতে পারেন। ফলে আন্দোলনকে এগিয়ে
নেয়া বিএনপির জন্য একটি কঠিন
চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে
বলেই বিএনপির নেতারা মনে করছেন।
২। নেতাদের অসুস্থতা: অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়েছেন বিএনপির নেতারা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শরীরের অবস্থা ভালো না। সেটি
তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠদেরকে বলেছেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠতম স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ
হোসেন অসুস্থ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি রাজনৈতিক
কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন। বিএনপির আরেক
নেতা ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার কোনো রাজনৈতিক কর্মকান্ডে
অংশগ্রহণ করেন না।
বাকি
যে সমস্ত নেতাকর্মীরা আছেন তারাও অসুস্থ
এবং নানা রোগে আক্রান্ত।
দীর্ঘ মেয়াদি আন্দোলন এবং রাজপথের আন্দোলন
করা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য এবং
প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এমনিতেই
বিএনপির প্রধান দুই নেতা নেতৃত্বে
নেই। বাকি নেতারা কিভাবে
বিএনপির এই আন্দোলনকে এগিয়ে
নেবে এটাই এখন একটি
বড় চ্যালেঞ্জ।
৩। জনসম্পৃক্ততা: বিএনপির আন্দোলনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় শঙ্কার বিষয়
হচ্ছে, জনগণ এই আন্দোলনের
সঙ্গে এখন পর্যন্ত সম্পৃক্ত
হতে পারছেন না। জনগণের জনগণের
মধ্যে এই আন্দোলন নিয়ে
কোন ইতিবাচক বিষয়তো নেই বরং কোনো
ক্ষেত্রে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যাচ্ছে। জনসম্পৃক্ততা
না থাকলে গণ আন্দোলন গড়ে
তোলা যায় না এটা
বিএনপির নেতারা ভালো মতোই অনুধাবন
করেন।
৪। সরকারের প্রলোভন: ইতিমধ্যে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রলোভন
দেওয়া শুরু হয়েছে। বিশেষ
করে নেতারা যারা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়
আছেন তাদেরকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে কি দেওয়া
হবে না দেওয়া হবে
সে ব্যাপারে নানা রকম কথাবার্তা
বলা হচ্ছে। আর এই সমস্ত
প্রলোভন এড়িয়ে শেষ পর্যন্ত কতজন
নেতা নীতির প্রশ্নে অটুট থাকবেন সেটাই
একটা দেখার বিষয়।
৫। তারেকের দুর্ব্যবহার: বিএনপির জন্য এখন সবচেয়ে
বড় মাথা ব্যথার কারণ
হয়ে দাঁড়িয়েছে তারেক জিয়া। তারেক জিয়া প্রতিদিনই দলের সিনিয়র নেতাদের
সাথে দুর্ব্যবহার করেন। অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং ন্যূনতম
সম্মান কাউকে করেন না।
বিএনপির
স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন,
একটি রাজনৈতিক দল এভাবে চলতে
পারেনা। এটি কোন লিমিটেড
কোম্পানি না এবং তারেক
জিয়াও তার এমডি নন।
আর এ কারণেই বিএনপির
মত অনেক নেতাকর্মী এখন
নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপির
সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ
উদ্দিন, আবদুল্লাহ আল নোমান ইতিমধ্যেই
তারেক জিয়ার অশালীন এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত
আচরণের কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন।
এই অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে
তাহলে সামনের দিনগুলোতে বিএনপির আরো নেতারা হতাশ
হয়ে নিষ্ক্রিয় হতে পারেন। শঙ্কা
কাটিয়ে একদফা আন্দোলনকে বিএনপি কতটুকু এগিয়ে নিতে পারে সেটাই
দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন
আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচন হবে কি হবে না- এ নিয়ে রাজনীতিতে চলছে অনিশ্চয়তা, টানাপোড়েন। এর মধ্যেও আওয়ামী লীগ অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ। যে কোনো মূল্যে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে নির্বাচন করতে চায় টানা পনেরো বছর ক্ষমতায় থাকা দলটি। কিন্তু আওয়ামী লীগের এই যাত্রাপথে কিছু আপদ তৈরী হয়েছে। যাদের কারণে আওয়ামী লীগ তার লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, আওয়ামী লীগের যাত্রাপথ দুর্গম হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।