ইনসাইড পলিটিক্স

আ লীগের সম্মেলন: শেখ হাসিনার দশম, হ্যাটট্রিকে ওবায়দুল কাদের!

প্রকাশ: ০৮:৪৯ এএম, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২


Thumbnail

ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের সৃষ্টির পেছনে এই দলের ভUমিকা যেমন অপরিসীম, তেমনি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতার মসনদেও এই দলটি। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে এ দেশের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাও আওয়ামী লীগের হাত ধরে। দলটির চোখ এখন আগামী জাতীয় নির্বাচনে। নির্বাচনের আগেই ২২তম জাতীয় সম্মেলন করতে যাচ্ছে দলটি। স্বাভাবিকভাবেই দলের নেতৃত্ব নিয়ে কৌতূহল রয়েছে সবার মধ্যেই যে কারা আসছেন দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে?

১৯৮১ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ নিয়ে কৌতূহল নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ‘অবিকল্প’ মনে করে এই পদটিতে তাকেই দেখতে চায় দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। ফলে সম্মেলনে সবার নজর থাকে সাধারণ সম্পাদক পদের দিকে। ধারণা করা হচ্ছে এবার সেটিও নেই। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ পদে যে ‘হ্যাটট্রিক’ করতে যাচ্ছেন, তা অনেকটাই নিশ্চিত সংশ্লিষ্টরা। ফলে এবার আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সবার দৃষ্টি ন্থাকবে  ‘প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক’ পদে। যদিও নেতৃত্ব চূড়ান্ত হবে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ-পর্যায়ের নেতাদের কথা অনুযায়ী, সম্মেলনের গঠিত কমিটিতে তেমন কোনো বড় পরিবর্তন আসবে না। কিছু পদোন্নতি, দায়িত্বে রদবদল ও খুব অল্পসংখ্যক নেতাকে বাদ দেয়ার পাশাপাশি নতুন অন্তর্ভুক্তি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে।

বিগত ২১টি সম্মেলনে আওয়ামী লীগ মোট ছয়জন নতুন সভাপতি ও ৯ সাধারণ সম্পাদক পেয়েছে। এবারও সেই সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেই ধারণা দলের নেতাদের। সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা দশম বারের মতো এবং ওবায়দুল কাদের টানা তৃতীয় মেয়াদ অর্থাৎ হ্যাটট্রিক করতে যাচ্ছেন।

সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে নেতা নির্বাচিত হয়। সভাপতি পদে শেখ হাসিনাকেই সবসময় কাউন্সিলররা সমর্থন করেন। তার বিকল্প নেই। একইসঙ্গে তাকেই নেতৃত্ব বাছাইয়ের সর্বময় ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু-কন্যা দলের প্রতিটি পদে নেতৃত্ব মনোনীত করেন। এবারও তার ব্যত্যয় হবে না।

দলটির নেতৃত্ব নির্বাচনের রেওয়াজ অনুযায়ী, সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রথমে সভাপতির নাম প্রস্তাব করবেন একজন নেতা। পরে আরেকজন নেতা তা সমর্থন করেন। সবার কণ্ঠভোটে সেটি পাস (অনুমোদন) হবে। একই প্রক্রিয়ায় সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচন করা হয়। পরে বাকি পদগুলোতে নেতাদের নাম ঘোষণা করেন দলের নব-নির্বাচিত সভাপতি। বেশিরভাগ সময় ৮১ সদস্যের কমিটিতে কিছু পদ খালি রাখা হয়। পরে পর্যায়ক্রমে শূন্য পদগুলো পূরণ করা হয়।

তবে নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগ একাধিক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতা জানান, সামনে জাতীয় নির্বাচন। টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসা অবশ্যই একটি চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে শক্ত হাতে সামাল দিয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে রাখতে হবে আওয়ামী লীগকে। এজন্য নেতৃত্বে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। পাশাপাশি তার রানিংমেট হিসেবে সবপক্ষের সঙ্গে সুসমন্বয়ের জন্য দক্ষ, অভিজ্ঞ, পরিশ্রমী, কর্মঠ ও একে-অন্যকে খুব সহজেই বোঝেন- এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অনেকের বিবেচনায় ওবায়দুল কাদের এগিয়ে।

ওবায়দুল কাদেরের প্রতি ‘সন্তুষ্ট’ শেখ হাসিনাও

দলের রানিং মেট হিসেবে সাবেক ছাত্রনেতা ওবায়দুল কাদেরের প্রতি সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। ওবায়দুল কাদের দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় দক্ষভাবে সামাল দিচ্ছেন বলেও রীতিমতো ‘সার্টিফিকেট’ দিয়েই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতায় শেখ হাসিনার মুখে ওবায়দুল কাদেরের প্রশংসা শোনা গেছে।

গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বঙ্গবন্ধু টানেলের একটি টিউবের কাজের সমাপ্তি উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শেখ হাসিনা। সেখানে তার সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার একপর্যায়ে ওবায়দুল কাদেরের ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের, তার মতো কর্মঠ লোক খুব কম আছে। তাকে পার্টির সেক্রেটারি করার পর আমার চাপ অনেক কমে গেছে।’

কাদেরও কি ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েছেন?

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে হ্যাটট্রিক করতে যাচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। এমন গুঞ্জন সবখানে। তবে এ নিয়ে আরও বেশি ‘আত্মবিশ্বাসী’ দেখা গেছে খোদ ওবায়দুল কাদেরকে। সম্মেলনের দুদিন আগেও বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঞ্চ পরিদর্শনে গিয়ে তার পদে থাকার বিষয়ে আরও স্পষ্ট করে বক্তব্য দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি জানান, সম্মেলনের মাধ্যমে আগামীতে যে কমিটি আসছে, তাতে বড় কোনো পরিবর্তন করা হবে না। বরং জাতীয় নির্বাচনের পর আগাম একটি সম্মেলন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। তার এমন বক্তব্যের পর দলের নেতারা বলছেন, সাধারণ সম্পাদক পদে হ্যাটট্রিক দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়ে হয়তো ওবায়দুল কাদের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়ে গেছেন!

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কাদের বলেন, ‘সবার দৃষ্টি তো এখন দলের সাধারণ সম্পাদক পদের দিকে। গণতান্ত্রিক দল হিসেবে এ পদে প্রার্থী হতে অনেকের ইচ্ছা থাকতে পারে। আমার জানামতে, এ পদে অন্তত ১০ জন অভিজ্ঞ ও যোগ্য প্রার্থী দলে আছেন। তবে কে হবেন, এটা নেত্রীর ইচ্ছা ও কাউন্সিলরদের মতামতের ওপর নির্ভর করছে। সবকিছুর প্রতিফলন ঘটবে দ্বিতীয় অধিবেশনে। কাজেই আমি কারও নাম বলতে পারবো না। তবে এবারের সম্মেলনে কমিটিতে তেমন বড় পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রয়োজনে পরবর্তী সম্মেলন নির্বাচনের পর আগামও করতে পারি। তখন একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হয়তো হবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়, ধানমন্ডি, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা ও নেতাদের আড্ডায় চাওর আছে- ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতি হতে আগ্রহী। এজন্য তিনি নির্বাচনের পরে আগাম সম্মেলনের কথা বলছেন। বস্তুত আগাম সম্মেলন না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে নেত্রী তাকে (ওবায়দুল কাদের) যদি এ পদে রাখতেই চান এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি বানাতে বা সরিয়ে দিতে চান, তবে তার সঙ্গে যুগ্ম সম্পাদক এমন কাউকে দেবেন, যাতে সাধারণ সম্পাদকের অবর্তমানে তিনি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মেয়াদ শেষ করতে পারেন।

নজর সবার ‘প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক’ পদে

ওবায়দুল কাদেরের ওপর দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সন্তুষ্ট। শীর্ষ নেতারাও বলছেন- সব দিক বিবেচনায় উনি (কাদের) এগিয়ে। আবার কাউন্সিলরদের মনোভাবও ইতিবাচক। ফলে টানা তৃতীয় মেয়াদে ওবায়দুল কাদেরের দলের সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া শুধুই সময়ের ব্যাপার মাত্র। শেষ পর্যন্ত যদি সেটাই হয়, তাহলে সবার দৃষ্টি থাকবে প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে।

কারণ রাষ্ট্রপতি হওয়া বা বয়স ও শারীরিক জটিলতায় পড়লে ওবায়দুল কাদেরের অবর্তমানে দায়িত্ব চালিয়ে নিয়ে যাওয়া লাগতে পারে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের। রীতি অনুযায়ী- দলের প্রথম বা সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকই ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হয়ে থাকেন। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে যোগ্য বা এ পদে আসতে আগ্রহীদের সবার দৃষ্টি এখন ‘প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক’ পদে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, ওবায়দুল কাদেরকে যদি সত্যিই এবারও সাধারণ সম্পাদক পদে রেখে দেওয়া হয়, তাহলে বর্তমান কমিটির প্রথম ও দ্বিতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনিকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হতে পারে। তাদের পদে আনা হতে পারে ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে। অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন হাছান মাহমুদ ও বাহাউদ্দিন নাছিম।

তারা আরও জানান, বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন অথবা মির্জা আজম হতে পারেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া সক্রিয় কয়েকজন সম্পাদক ও সদস্যের পদোন্নতি হতে পারে। বাদ পড়তে পারেন কয়েকজন। নতুন যুক্ত হবেন কিছু সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা-নেত্রী।

৭৪ বছরে আওয়ামী লীগের ছয় সভাপতি

দলটির প্রথম দিকে চারটি কাউন্সিলে (১৯৪৯-১৯৫৭) সভাপতি হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। ১৯৬৪ সালে পঞ্চম কাউন্সিলে আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে ষষ্ঠ কাউন্সিলে দলের সভাপতি হন শেখ মুজিবুর রহমান। টানা চার কাউন্সিলে সভাপতি হওয়া শেখ মুজিব ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত পদে ছিলেন। ১৯৭৪ সালে দশম কাউন্সিলে সভাপতি হন এ এইচ এম কামরুজ্জামান।

১৯৭৮ সালে একাদশ কাউন্সিলে সভাপতি হন আবদুল মালেক। দ্বাদশ কাউন্সিলেও তিনি বহাল থাকেন স্বপদে। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দলের ১৩তম কাউন্সিলে সভাপতি হন শেখ হাসিনা। সর্বশেষ ২১তম কাউন্সিলেও তিনি একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন। ২২তম কাউন্সিলে নির্বাচিত হলে তিনি দশম বারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি হবেন।

২১ সম্মেলনে ৯ সাধারণ সম্পাদক

১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। এরপর ১৯৫৩-১৯৬৬ সাল পর্যন্ত চারবার দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ঐতিহ্যবাহী এ দলটির দ্বিতীয় সাধারণ সম্পাদক। ১৯৬৬-১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ। তিনি তৃতীয় সাধারণ সম্পাদক। এরপর ১৯৭২-১৯৭৬ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে জিল্লুর রহমান দলটির চতুর্থ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

একাদশ ও দ্বাদশ সম্মেলনে টানা দুই মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক হন আবদুর রাজ্জাক। তিনি পঞ্চম সাধারণ সম্পাদক। ১৯৮৭ সালে ১৩তম সম্মেলনে আওয়ামী লীগের ষষ্ঠতম সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তিনি টানা দুই মেয়াদ ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। এর ১৫ ও ১৬তম সম্মেলনে জিল্লুর রহমান আবারও দুই মেয়াদে ২০০২ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

২০০২ সালের ১৭তম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হন আবদুল জলিল। তিনি দায়িত্বে ছিলেন ২০০৯ সাল পর্যন্ত। ওইবছর দলের ১৮তম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত। ২০১৬ সালের ২০তম কাউন্সিলে নির্বাচিত হয়ে দশম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। ২১তম সম্মেলনেও তিনিই আবারও দায়িত্ব পান। এবারের ২২তম সম্মেলনে দায়িত্ব পেলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হ্যাট্রিক করবেন তিনি।

সারাদেশে আওয়ামী লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা শাখা। এরমধ্যে ৩৯টির সম্মেলন হয়েছে, বাকি ৩৯টির সম্মেলন হয়নি। সম্মেলন হওয়া ৩৯টির মধ্যে প্রায় সবকটিতেই সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা হয়েছে। এরমধ্যে নতুন নেতৃত্ব পেয়েছে মাত্র সাতটিতে। নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়নি ২৪টিতে এবং নেতৃত্বের আংশিক পরিবর্তন হয়েছে আটটিতে। সেই হিসাবেও বলা যায়, এবার কেন্দ্রেও এ চিত্রের প্রতিফলন ঘটবে। তেমন বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না নেতৃত্বে।

প্রস্তুতি শেষ, মঞ্চে চেয়ার থাকবে ১২০টি

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ১১টি উপ-কমিটি কাজ করছে। প্রথা অনুযায়ী- সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ও সদস্যসচিব সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন সফল করতে রাত-দিন পরিশ্রম করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। দফায় দফায় বৈঠক, দাওয়াতপত্র বিতরণ, গঠনতন্ত্র সংযোজন, বিয়োজন, ঘোষণাপত্র পরিমার্জন, মঞ্চ সাজসজ্জাসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ প্রায় শেষ করেছেন। এবারের সম্মেলনের স্লোগান ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়’।

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের মূল মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পর্বের জন্য তৈরি হচ্ছে আলাদা মঞ্চ। মূল মঞ্চে চারটি সারিতে চেয়ার সাজানো হবে। প্রথম সারিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বসবেন। দ্বিতীয়টিতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সিনিয়র নেতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাকি দুটিতে বসবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সবমিলিয়ে ১২০টি চেয়ার রাখা হবে মঞ্চে।

আওয়ামী লীগের মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির সদস্যসচিব ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, পদ্মা সেতুর ওপরে নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট বনাম ৪৪ ফুট মঞ্চ তৈরির কাজ শেষপর্যায়ে। মূল মঞ্চের উচ্চতা হবে সাত ফুট। মূল মঞ্চে চার ভাগে চেয়ার সাজানো হবে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণ এলইডি মনিটর থাকবে। তাতে সম্মেলনের কার্যক্রম দেখা যাবে।

বাজেট কমেছে, দাওয়াত পাননি বিদেশিরা

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশেও। অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এবারের সম্মেলন সাদামাটাভাবে করছে আওয়ামী লীগ। প্রথম থেকেই খরচ কমানোর তাগিদ দিয়ে আসছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেভাবেই মঞ্চ তৈরিসহ সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। ২০১৯ সালের সর্বশেষ সম্মেলনে বাজেট ছিল তিন কোটি ৪৩ লাখ। এবারের সম্মেলনে বাজেট তিন কোটি ১৩ লাখ। দলের জাতীয় কমিটি এ বাজেট অনুমোদন করেছে।

এদিকে, এবারের সম্মেলনে দাওয়াত দেওয়া হয়নি বিদেশিদেরও। তবে কেন্দ্রীয় ১৪ দল, জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ (বিএনপি) নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মেলনে দাওয়াত দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথম অধিবেশন

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসবেন। এরপর আধা ঘণ্টাব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। পরে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কাউন্সিল অধিবেশন

প্রথম অধিবেশন শেষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন। এ অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন।


আওয়ামী লীগ   সম্মেলন   শেখ হাসিনা   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

শিগগির ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা, শ্রাবণকে নিয়ে ধোঁয়াশা

প্রকাশ: ০৯:৫৭ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে রাজপথে রয়েছে বিএনপি। আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে এরই মধ্যে কিছু কিছু রদবদল হয়েছে। কেউ কেউ আবার নজরদারিতে রয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে এর মধ্যে শোনা যাচ্ছে নির্বাচনের আগে বিএনপির অন্যতম সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্ভাবনার কথা। যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে নারাজ। তবে ছাত্রদলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ষোঘণা হলে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ দলীয় পদে ফিরবেন কি না তা নিয়েও রয়েছে ঘোর অন্ধকার।

ছাত্রদলের সূত্র জানা গেছে, সংগঠনটির সাবেক সভাপতি শ্রাবণকে অসুস্থতার কথা বলে বিএনপি অব্যাহতি দিলেও তিনি ‘মহল বিশেষের’রোষানলে পড়ে দলীয় পদ হারান। এখন তাকে ছাত্রদল থেকে বিদায় জানাতে মরিয়া ওই পক্ষটি। শ্রাবণকে নিয়ে খোদ বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মী প্রকাশ্যে তো দূরের কথা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলতে পারছেন না। এমনকি শ্রাবণ স্বপদে ফিরে এলেও তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলবে বলে মনে করছেন অনেকে।

উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট ছাত্রদলের সভাপতির পদ থেকে শ্রাবণকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর সংগঠনটির একাংশের অভিযোগ, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল ছাত্রদলের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া। তারই ‘কূটচালে’ শ্রাবণ সভাপতির পদ খুইয়েছেন। যদিও বকুল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নাকচ করে বলেন, এটা গোয়েন্দা সংস্থার অপপ্রচার। যখনই সরকারবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে তখনই তারা এ ধরনের প্রচার চালিয়ে বিভ্রান্ত করতে চায়।

ছাত্রদল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন মশিউর রহমান রাঙ্গা

প্রকাশ: ০৮:০৯ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের জাতীয় পার্টির এমপি ও দলটির সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি অখুশি না। আমি শুনেছি আমাকেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমার আমেরিকার দশ বছরের ভিসা আছে। আমার এখন যাওয়ার কোনো ইচ্ছাও নেই, সুযোগও নাই। সামনে নির্বাচন। গত পাঁচ বছরেও আমেরিকা যাইনি।

ভিসানীতির বিষয়ে রাঙ্গা বলেন, এটা আমেরিকার নিজস্ব বিষয়। আমার দেশে যদি কাউকে আসতে না দেই, যদি মনে করি এই লোকগুলো আমাদের জন্য ক্ষতিকর তাহলে বলার কিছু নাই। আমি মনে করি এটা দেশের জন্য ভালো। আমি এটাকে ভালোই বলছি। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে এটার প্রভাব পড়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

এর আগে, শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।

পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই তালিকায় রয়েছেন- আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের সদস্য। বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র।

ভিসা নিষেধাজ্ঞা   মশিউর রহমান রাঙ্গা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অক্টোবরেই পরিষ্কার হবে রাজনীতির আকাশ

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভয়ঙ্কর অক্টোবর আসছে। অক্টোবর মাসেই রাজনীতিতে প্রধান দুই দলের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চূড়ান্ত রূপ ধারণা করতে পারে। সহিংস হয়ে উঠতে পারে রাজনীতির মাঠ। এছাড়া অক্টোবরেই আওয়ামী লীগ-বিএনপি শক্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত ফয়সালাও করতে চায়। আর এ কারণেই অক্টোবর মাসে রাজনীতিতে এটা টানটান উত্তেজনা এবং সংকট ঘনীভূত হবে। তবে আশাবাদীরা মনে করছেন, অক্টোবরেই রাজনীতির আকাশ স্বচ্ছ হয়ে যাবে। এখন যে গুমোট মেঘ রয়েছে এবং যে অশনি সংকেত, দুর্যোগের ঘনঘটা তা কেটে পরিষ্কার হবে অক্টোবরেই।

একাধিক কারণে এরকম মনে করছেন রাজনীতিবিদরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে লন্ডনে আসবেন। সেখানে কিছুদিন অবস্থানের পর ৩ অক্টোবর তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডন থেকে রওনা দিবেন। ৪ অক্টোবর তিনি দেশে ফিরে আসবেন। দেশে ফিরেই তিনি নির্বাচন এবং সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গুরুত্ব দেবেন। আওয়ামী লীগের গোটা অক্টোবর জুড়েই বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। অক্টোবর মাসে একাধিক  মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমে একটি নির্বাচনী আবহাওয়া তৈরি করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। উন্নয়নের বিকল্প নেই এই স্লোগান তুলে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আরেকবার আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাঠ দখল করতে চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, অক্টোবরে উন্নয়নের উৎসব যেমন হবে তেমনি এই সময়ে জনসংযোগ এবং ভোটের বার্তা নিয়ে আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।  

বিএনপির পরিকল্পনা ভিন্ন। বিএনপি এখন রাজপথে রয়েছে। তারা টানা কর্মসূচি দিয়েছে। বিএনপির নেতারা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আরও বড় ধরনের কর্মসূচি নিয়ে তারা উপস্থিত হবেন এবং যা কিছু করার ফয়সালা তারা অক্টোবরের মধ্যে করতে চান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমাদের হাতে আর সময় নেই। যা কিছু করার আমাদেরকে অক্টোবরের মধ্যেই করতে হবে। কারণ এরপর যদি আমরা কোনো কর্মসূচি করতে চাই তাহলে সরকার একতরফা নির্বাচন করে ফেলবে।

ধারণা করা হচ্ছে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন তাদের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবে। আর যদি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই যদি বিএনপি আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ অবস্থা দেশে তৈরি করতে না পারে তাহলে পরে সরকার কোনো চাপ অনুভব করবে না। বরং নির্বাচন আয়োজনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলবে। এ কারণেই বিএনপির জন্য অক্টোবরই হলো তাদের শেষ সুযোগ। 

এই দুই দলের পারস্পরিক অবস্থানের মধ্যে আবার কিছু তৃতীয় বিষয় রয়েছে। যেগুলো রাজনৈতিক গতি প্রকৃতির প্রবাহ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে আসছেন এবং তারা বাংলাদেশ সফরের পরে কি বার্তা দিবেন সেটাও দেখার বিষয়।

ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা শুরু দেওয়া শুরু করেছে। এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার ফলাফল এবং প্রতিক্রিয়া মাঠে কি হয় সেটাও বোঝা যাবে অক্টোবরে। নতুন কারো ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় কিনা সেটির ওপর নির্ভর করবে রাজনীতির গতি প্রকৃতির অনেকখানি। এছাড়াও যদি সরকার এবং বিরোধী দলের রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা হয়, খালেদা জিয়ার যদি অন্য কোনো ঘটনা ঘটে তাহলে রাজনীতিতে সব হিসাব নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অক্টোবরই বোঝা যাবে যে বাংলাদেশের রাজনীতি কোন গন্তব্যে যাচ্ছে।

অক্টোবর   রাজনীতি   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

৪৮ ঘণ্টা পর বিএনপি কি করবে?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশি নেওয়ার দাবীতে বিএনপি আল্টিমেটাম দিয়েছে। গতকাল এক সমাবেশ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৪৮ ঘন্টার এই আল্টিমেটাম দেন। এই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ইতিমধ্যে ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেছে। সরকার এই দাবির ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি নিতে গেলে আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে এবং আদালতের মাধ্যমেই তিনি বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পেতে পারেন।

কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী এটিকে অগ্রহণযোগ্য হিসাবে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বা আদালতের মাধ্যমে আবেদন করার বিষয়টি অমানবিক এবং অগ্রহণযোগ্য। আর এরকম বাস্তবতায় বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে বিএনপি কি করতে চাচ্ছে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম আলাপ আলোচনা চলছে।

আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বিষয়টিকে রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন যে, ৪৮ ঘণ্টা পর তারা কিছুই করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডেন্ট সদস্যও বলছেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে বিএনপি মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চাইছে এবং বিএনপির রাজনৈতিক আন্দোলনে খালেদা জিয়াকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বেগম জিয়াকে নিয়ে বিএনপি নোংরা রাজনীতির খেলা খেলছে বলেও আওয়ামী লীগের ওই নেতা জানিয়েছেন। তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেছেন যে, এর আগে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার এতো খারাপ অবস্থা দেখেননি। বিএনপির বিভিন্ন নেতারা যারা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিয়মিত দেখা করেন, স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন তারা বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা আসলেই খারাপ এবং যে কোনো সময় যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিএনপির একটি মহলের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে একধরনের উৎসাহ এবং চাঞ্চল্য রয়েছে। তারা মনে করছেন, যদি শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হয়ে যায় তাহলে আন্দোলনের গতি বাড়ানো সম্ভব হবে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে বেগম খালেদা জিয়ার চূড়ান্ত পরিণতি নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি প্রস্তুতি রয়েছে। তারা ইতিমধ্যে পুরো ঢাকা শহরের বিভিন্ন পাড়ায় মহল্লায় এর ব্যাপারে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে তারা পুরো রাজপথ দখল করে ফেলবে এবং সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করতে পারে এমন প্রস্তুতিও তাদের রয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও নজরে আছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রস্তুতিও রয়েছে বলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সূত্রে জানা গেছে। তবে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটামের পর বিএনপি কি করবে, কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এখন মার্কিন দূতাবাস সহ বিভিন্ন দূতাবাস গুলোতেও তথ্য দিচ্ছে। তারা বিষয়টিকে অমানবিক হিসেবে উল্লেখ করছে।

বিএনপির অন্যতম নেতা কায়সার কামাল বলেছেন যে, সরকার কালক্ষেপণের নীতি অনুসরণ করছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে বেগম খালেদা জিয়াকে যদি সত্যি তারা বিদেশ নিতে চায় তাহলে তাদের এই মুহূর্তেই আদালতে যাওয়া উচিত। তারা আদালতে যাচ্ছেন না কেন?

এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যে যদি বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা চরম অবনতি ঘটে তাহলে রাজনীতিতে একটা মৃদু উত্তেজনা তৈরি হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে ৪৮ ঘণ্টা পর বিএনপি যে বড় কিছু করে ফেলতে পারবে এমনটি মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনপি   আল্টিমেটাম   আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম ওবায়দুল কাদেরের

প্রকাশ: ০৫:৩২ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বিএনপিকে আগামী ৩৬ দিনের মধ্যে অপরাজনীতি, নাশকতা, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়তে আল্টিমেটাম দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এ আল্টিমেটাম দেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা ৩৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়, তারাতো ৩৬ মিনিটও খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন করতে পারেনি, তাই ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম দিলাম, সঠিক পথে আসুন। যদি তারা সঠিক পথে না আসে তবে জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপির কালো হাত ভেঙে দেবো।

আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফাইনাল খেলা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপি যদি অস্ত্র নিয়ে আসে ওই হাত ভেঙে দিতে হবে, যদি আগুন দিতে আসে ওই হাত পুড়িয়ে দেবো।

ভিসা নীতি নিয়ে তিনি বলেন, কারো ভিসা নীতির তোয়াক্কা করি না, কারো নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করি না। বাংলাদেশ রক্ত দিয়ে স্বাধীন করেছি, কারো নিষেধাজ্ঞা মানার জন্য নয়।

কাদের বলেন, বিএনপি এখন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। এখন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির ওপর ভর করেছে। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমাদের নিজেদের শক্তিতে আমরা বলিয়ান। শেখ হাসিনার মতো নেতা আমাদের আছেন।

বাংলাদেশের জনগণ কোনো নিষেধাজ্ঞা, কোনো ভিসা নীতি মানে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে যারা নিষেধাজ্ঞার কথা বলেন, স্যাংশনের কথা বলেন তাদের নিজেদের দেশের মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
 
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমার নির্বাচন আমি করব, কারো খবরদারিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলবে না, কারো খবরদারিতে বাংলাদেশের ভোট হবে না। ভোট হবে সংবিধানের নিয়মে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেলফি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, বিএনপির ঘুম হারাম, দুই সেলফিতেই বাজিমাত। বিএনপির ঘুম হারাম।

উল্লেখ্য, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছে বিএনপি। গতকাল রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

বিএনপি   ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন