নির্দলীয়, নিরপেক্ষ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি- এমন ঘোষণা বিএনপি বরাবরই
দিয়ে আসছিল। সেই সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা, সরকার গঠনের রূপরেখার ২৭ দফাসহ
বিভিন্ন অজুহাতে রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি বিভাগে সমাবেশও করেছে বিএনপি। এসব সমাবেশকে
কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে, ঘটেছে অগ্নি-সন্ত্রাস, আহত-নিহতের মতো ঘটনাও।
ফলে রাজনৈতিক মাঠে সৃষ্টি হয় অস্থিরতা। এরই মধ্যে আবার চাউর হয়, সরকারের সাথে বিএনপির
নির্বাচনী সমঝোতার খবরও। এছাড়া কোন দিকে যাচ্ছে বিএনপি?- এই নিয়েও রাজনৈতিক মহলে চলছিল
নান ধরনের আলোচনা-সমালোচনা। কিন্তু অবশেষে জানা গেলো আন্দোলনের লেজ গুটিয়ে বর্তমান
ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। ফলে প্রসঙ্গতই প্রশ্ন ওঠেছে,
তাহলে জনগণের জান-মাল ধ্বংস; রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ এবং শান্তির দেশে কেন অস্থিরতা-আতঙ্ক
সৃষ্টি করছে বিএনপি?
এদিকে বৃহস্পতিবার
(১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে ইইউভুক্ত ৭টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক শেষে
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী
ওবায়দুল কাদের জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংসদ
নির্বাচন দেখতে চায়। ‘ইইউ’র সাতটি দেশের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আজকে বৈঠক করা। তারা চায় আগামী
নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দল অংশগ্রহণ করবে।
‘ইইউ’ আগামী নির্বাচন নিয়ে যা বলছে, এ বিষয়ে
ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আপনাদের মতামত কী?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা একটা কথা পরিষ্কারভাবে বলেছি যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বুধবার তার বক্তব্যে বলেছেন আগামী নির্বাচন বিশ্বাস যোগ্য, সুষ্ঠু, অবাধ হবে। পাশাপাশি
নির্বাচন কমিশন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সরকার সব ধরনের
সহযোগিতা করবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে আজকে আমাদের বক্তব্যের কোনো ভিন্নতা
নেই। প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন আমরা তাই প্রতিধ্বনিত করেছি। একই সঙ্গে আমরা আগামী নির্বাচন
সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার
(১৬ ফেব্রুয়ারি) সিলেট নগরের টিলাগড় এলাকার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠান
শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মন্তব্য করে বলেছেন,
আমেরিকা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে কাজ করতে চায়। গত সাত মাসে আমেরিকার উচ্চপর্যায়ের
প্রতিনিধি একের পর দেশে এসে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। তাঁদের দেশে গিয়ে নেতাদের
সঙ্গে আলাপ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তার জন্য।
ভুল-বোঝাবুঝি সব দূর করে ভালো সম্পর্ক তৈরি করা উভয় দেশের চাওয়া। কূটনীতিকেরা বাংলাদেশকে
তাঁদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দেশ বলে মনে করেন। কারণ, বাংলাদেশে ভিন্ন সুযোগ রয়েছে।
কোভিডের সময় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় আয়ের দিক থেকে প্রথম ছিল। দেশে নতুন নতুন যে সম্ভাবনা
আছে, সেসবের সঙ্গে তাঁরা সম্পৃক্ত হতে চান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
বলছেন, গাধা ঘোলা করেই জল খায়! বিএনপির অবস্থা এখন তেমনই হয়েছে। দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন
ধরনের অপপ্রচার, গুজব ছড়িয়ে এবং বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রের বীজ বুনে- চারা রোপণ করে ফল
পরিপক্ক করতে পারেনি বিএনপি। বিএনপির বোনা ষড়যন্ত্রের বীজ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে।
বিএনপির অন্যতম একটি শক্তি ছিল আমেরিকা, কিন্তু সেখানেও কাঙ্খিত ফলাফল পায়নি বিএনপি।
বিএনপি ভেবেছিল এবং চেষ্টা করেছিল বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্র আমেরিকাকে দিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন
আওয়ামী লীগ সরকারকে একটা চাপে ফেলে তাদের ক্ষমতা দখলের পায়তারা সফল করবে। কিন্তু তাতেও
হিতে বিপরীত হয়েছে। আমেরিকান সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরে এসে বিএনপির
পাশার দান উল্টে দিয়েছেন। সর্বশেষ বিএনপি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) স্বরণাপন্ন হয়েছিল।
তাতেও ফলাফল আসেনি। ফলে বাধ্য হয়েই কাল কেউটের গর্তে প্রবেশ করা ছাড়া আর কোনো গতি নেই।
ইইউভুক্ত ৭
দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের জানান, আমরা যে ইনফরমেশন পাচ্ছি
তাতে বিএনপি ২০১৪-১৫ সালের মতো আবারও আগুন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের ওপর ভর করে সরকার উৎখাতের
পরিকল্পনা করছে। বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশের স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি
করে ক্ষমতা দখলের পায়তারা করছে। এখানে প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতাটা ছিল তা হচ্ছে প্রধান
নির্বাচন কমিশনার এবং তিনজন কমিশনার সিলেক্টর ছিলেন তিনি। সেই ক্ষমতার বলে তিনি আইনগতভাবে
সার্চ কমিটি গঠন করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট লোকজনকে নিয়ে। তার মানে বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫
সালের পরে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এই উদ্যোগ নিয়েছেন। কাজেই আমরা ভালো
একটা ইলেকশন চাই। ইলেকশন ব্যবস্থায় গণতন্ত্রকে আমরা আরও ম্যাচিউর দেখতে চাই। সে লক্ষ্যে
যা যা প্রয়োজন আমরা তা করছি।
এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচনটি বর্জন করেছিল। এতে মোট ভোট গৃহীত হয়েছিল মাত্র ২১%। এই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জয় লাভ করে এবং ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৭৮টি আসন লাভ করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বর্জনের মুখে যে কয়েকটি একতরফা এবং বিতর্কিত সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এমন পটভূমি আর কোনো দিন বাংলাদেশে সৃষ্টি হবে না- যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে তাঁর বক্তৃতায় একাধিকবার বলেছেন। বিএনপি নির্বাচনে কারচুপির ব্যাপারে যে অভিযোগ আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দীর্ঘদিন থেকে করে আসছে, সেটিও এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহল পর্যবেক্ষণ করবে- যা ইতিমধ্যেই বিশ্ব মোড়ল রাষ্ট্র আমেরিকাও ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া, বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাতেও আন্তর্জাতিক মহলের একটা চাপ থাকছে। ফলে কোনোভাবেই বিএনপি নির্বাচন বর্জন করতে পারছে না। বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জনও করে, তা-ও বিএনপির জন্য শুভকর হবে না। ফলে বাধ্য হয়েই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। এখন কেবলই দেখার অপেক্ষার বিষয়, কি করবে বিএনপি?
নির্বাচন বিএনপি ইইউ আমেরিকা সিইসি ওবায়দুল কাদের খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।