ইনসাইড পলিটিক্স

রাজনৈতিক সমঝোতা: উল্টো পথে হাটছে হেফাজতে ইসলাম

প্রকাশ: ০৬:১৫ পিএম, ০১ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠ্যবই সঙ্কট এবং কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ওঠেছিল, হেফাজতে ইসলাম বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর বলয়ে বিচরণ করছে। কিন্তু খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। বাস্তবিক পক্ষে ঘটনাটি ঘটেছে সম্পূর্ণ উল্টো। বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো থেকে নিরাপদ দূরত্ব রেখে উল্টো পথেই হাটছে হেফাজতে ইসলাম। সেক্ষেত্রে সংগঠনটি তাদের নিজ বলয়ে থেকেই নিজেদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচেছ। মোটকথা বিএনপি থেকে নিরাপদ দূরত্বে রয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে সরকারের সাথে সমঝোতা এবং কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তি।        

সূত্র জানায়, এক সময়ে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক যোগাযোগ অত্যন্ত গভীর থাকলেও এখন আর সেই অবস্থান নেই। মাওলানা মামুনুল হক সক্রিয় ভূমিকায় থাকার সময়ে বিএনপির সাথে মামুনুল হকের যোগাযোগ এবং সখ্যতা গভীর ছিল। যে কারণে সে সময়ে হেফাজতে ইসলাম বিএনপির সাথে তাল মিলিয়ে অনেকটা গা ঘেঁষে চলেছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে তারা রাজনীতি করছে। বিএনপির সাথে তাদের কোনো যোগসূত্র নেই বলেই জানিয়েছেন বিএনপির একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র। 

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রভৃতি ১০ দফার আন্দোলন করে যাচ্ছে। আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছাঁবে তখন আরও অনেক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন তাতে যুক্ত হবে। হেফাজত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। হেফাজতের সঙ্গে এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ও অন্যান্য ইসলামি দলের সঙ্গে বিএনপির কোনো আলোচনা হয়নি।

অবশ্য বিএনপির কিছু নেতার এমন আশাবাদের বিপরীতে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা জানিয়েছেন, বিএনপি কী আশা করল না করল- তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের পথ এখন ভিন্ন। এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের দপ্তর সম্পাদক মহিউদ্দিন রব্বানী শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তাই আমাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক যোগাযোগ হয়নি। আমাদের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কোনো যোগাযোগ হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান জানান, ২০১৩ সালের ৫ মে ১৩ দফা দাবিতে রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয় হেফাজতে ইসলাম। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। তখন হেফাজতের পক্ষ থেকে হতাহতের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। বিএনপি তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিবৃতি দিয়ে ঢাকার নেতাদের হেফাজতের নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা আগত আলেম-ওলামাদের খাবার-দাবার ও উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা দিয়েছিল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করেও রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, ব্রাহ্মণবাড়িয় ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় হেফাজতের অনেক নেতা-কর্মীদের কারাগারে নেওয়া হয়। নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করেছে হেফাজত, যে প্রক্রিয়া এখনও চলমান রয়েছে। সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করতে হেফাজত ‘মুচলেকা’ দিয়েছে রাজনীতি না করার। বিএনপি তাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে না।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু দেশের শীর্ষ এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপির কোনো যোগাযোগ নেই। তারা তাদের কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির জন্য সরকারের সঙ্গে সখ্যতা রেখে চলছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানতে পারলাম, তারা রাজনীতি না করার বিষয়ে সরকারকে মুচলেকা দিয়েছে। পরে অবশ্য সরকারকে মুচলেকা দেয়নি বলেও গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে।’

এদিকে হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা শায়খ সাজিদুর রহমান গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হেফাজতে ইসলাম রাজনীতি না করার বিষয়ে কাউকে ‘মুচলেকা’ দেয়নি। আমাদের সম্পর্কে উদ্দেশ্যমূলক গালগল্প ছড়ানো হচ্ছে। হেফাজত কখনই রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না, আগামীতেও রাজনীতি করবে না। হেফাজত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। নতুন করে কাউকে রাজনীতিতে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া অবান্তর প্রসঙ্গ।’

বিএনপির একাধিক বয়জেষ্ঠ্য নেতারা জানিয়েছেন, ‘বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠনের লক্ষ্যে বিএনপি গত বছর সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। অবশ্য ইসলামি দলগুলো যেমন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, হেফাজতে ইসলাম প্রভৃতির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হয়নি। তবে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া প্রভৃতি ১০ দফা দাবি আদায়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে চাইলে যে কেউ অংশ নিতে পারে। জনআকাক্ষা পূরণে সংশ্লিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল- এ আন্দোলনের বাইরে থাকতে পারে না। বিএনপির দাবির মধ্যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দি রাজনৈতিক নেতা ও আলেম-ওলামাদের মুক্তির বিষয়টি রয়েছে।’

সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এর জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাটহাজারী এবং ঢাকার বায়তুল মোকাররম এলাকায় সহিংস ঘটনা ঘটে। তখন পুলিশ হেফাজতের পাশাপাশি বিএনপি নেতাকর্মীদেরও গ্রেপ্তার করেছিল। 

২০২১ সালের ৩০ মার্চ  গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে হেফাজতি তাণ্ডবে বিএনপি ইন্ধন দিয়েছে, তাদের কর্মসূচি পালনে সমর্থন দিয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, হেফাজতের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং হেফাজতকে উসকানি দিয়েছে, ইন্ধন জুগিয়েছে সরকার। হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়।’              

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হেফাজত নেতারা সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের কারাবন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত করতেই বিএনপির উল্টো পথে হাটছে। কিন্তু বিএনপি নেতারা যতই অস্বীকার করুক যে, হেফােজতের সাথে তাদের কোনো যোগসূত্র নেই। তবুও অতীত ইতহাসে দেখা যায়, হেফাজতে ইসলাম অতীতে বিএনপির সাথে যোগাযোগ করেই তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। হেফাজত রাজনৈতিক কোনো দল না হলেও মূলত বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। এখন হয়তো দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তির কারণে সরকারের সাথে সমঝোতা করার একটা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভবিষ্যতে কোন পথে হাটবে- তা বলা কঠিন। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের মুক্তি হলে কি করবে হেফাজত? বা কোনো আইনী জটিলতায় যদি সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের মুক্তি না হয়, তাহলে কোন পথে হাটবে হেফাজত?


রাজনৈতিক   সমঝোতা   হেফাজতে ইসলাম   বিএনপি   সরকার   আওয়ামী লীগ   নেতা-কর্মী   মুক্তি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন হবে, নির্বাচন হবে না?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩১ মে, ২০২৩


Thumbnail

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রাজনীতিতে এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে নির্বাচন হবে কি হবে না। এই লড়াইকে আরও উস্কে দিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে ঘোষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি। উভয় দলই মার্কিন ভিসা নীতিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছে, নিজেকে এই ভিসা নীতির সুবিধাভোগী হিসেবে মনে করছে। কিন্তু যাই হোক না কেন এই ভিসা নীতি যে রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়িয়েছে তা বলাই বাহুল্য।

আওয়ামী লীগ মনে করছে যে কৌশলগতভাবে যে কোনো মূল্যে একটি অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ নাও করে তাহলে আওয়ামী লীগ অন্যান্য রাজনৈতিক দল যেমন জাতীয় পাটি, ১৪ দলের শরিক দল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ ছোট ছোট দলগুলোকে নিয়ে গাজীপুরের মতো একটি অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে এবং এটি প্রতিষ্ঠিত করবে যে দলীয় সরকারের অধীনেও নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়। অন্যদিকে বিএনপি চাইছে যে কোনো মূল্যে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন ঠেকাতে। বিএনপির কোনো কোনো নেতা প্রকাশ্যে স্বীকার করছেন যে, সরকার যদি একবার নির্বাচন করে ফেলতে পারে তাহলে আর তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। 

যদিও বিএনপি বলছে যে, তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না কিন্তু তাদের আসল উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাদের আসল উদ্দেশ্য হল এমন একটি অবস্থা তৈরি করা যেখানে এক-এগারোর মতো একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়া হবে। এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসলে বিএনপির কতটা লাভ বা ক্ষতি হবে সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়া হবে। আর এটিই হলো বিএনপির আসল উদ্দেশ্য। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়া হবে এটিই বিএনপির সবচেয়ে বড় লাভ।

এদিকে পশ্চিমা দেশগুলোও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের তৎপরতা আরও বাড়াচ্ছে এবং নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এক ধরনের বিন্যাস শুরু করেছে। নির্বাচনে ঘিরে তারা এমন সব নীতিমালা গ্রহণ করছে যেন নির্বাচন করাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। এ রকম পরিস্থিতে যদি এমন হয় যে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না হয় তাহলে দেশে একটা সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। যা একটি গণতান্ত্রিক দেশে মোটেও কাম্য নয়। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে নির্বাচন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে। গণতন্ত্র ধারায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে যেমন দেশের গণতন্ত্র রক্ষা পাবে তেমনি আওয়ামী লীগও সংকট থেকে উত্তরণ পাবে। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম হয় নাকি বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত করে।

নির্বাচন   ভিসা নীত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে সুশীলদের আল্টিমেটাম

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩১ মে, ২০২৩


Thumbnail

আন্দোলন জমাতে পারছে না বিএনপি। সরকারের বিরুদ্ধে জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর নেই। জনমনে অনিশ্চয়তা, আতঙ্কও নেই। এরকম অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচন করতে সরকারকে বেগ পেতে হবে না। আর তাই বিএনপিকে দ্রুত আন্দোলনে গতি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে সুশীলরা। পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে রাষ্ট্র মেরামত কাঠামো চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া এবং জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করার জন্য চাপ দিচ্ছে সুশীলরা। আর এটি না হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সহানুভূতি প্রত্যাহার হয়ে যেতে পারে এমন কথাও বলছেন সুশীলরা।

সাম্প্রতিক সময়ে সুশীলদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের একাধিক গোপন বৈঠক হচ্ছে। এ সমস্ত বৈঠকগুলোতে কিভাবে সরকারকে হটিয়ে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা যায় সে সুশীলরা ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দকে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান সহ ৫জন বিএনপির নেতার সঙ্গে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন, বুদ্ধি পরামর্শ দিচ্ছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ একেবারে পুরোপুরি বিএনপি। যেমন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আসিফ নজরুল এরা পরোক্ষভাবে বিএনপির রাজনীতি করে এবং বিএনপির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত। আবার কেউ কেউ আছে যারা বিএনপির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নন, তবে আওয়ামী লীগ বিরোধী হিসেবে তারা পরিচিত। এরা যেকোনো মূল্যে দেশে একটি অনির্বাচিত সরকারকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এরা সবাই এখন বিএনপিকে মদদ দিচ্ছে এবং বিএনপিকে আন্দোলন তীব্র করার ঘোষণা দিচ্ছে। আর সে কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে আন্দোলন গুলো চলছে সেই আন্দোলনগুলোর ওপর কড়া নজর রাখছেন সুশীলরা। তারা মনে করছেন যে এখন যদি তী্রব বেগবান আন্দোলন না করা যায় তাহলে পরে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। 

গত বছরে ডিসেম্বরে টার্গেট দিয়েছিল সুশীলরা। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে তাদের বৈঠকও হয়েছিল। বিএনপি তাদেরকে আশ্বস্ত করেছিল যে ডিসেম্বরের মধ্যেই আন্দোলনের একটা চূড়ান্ত রূপ তারা দেখতে পাবে। কিন্তু ১০ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে ঢাকা অচল করে দেয়ার যে পরিকল্পনা তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃঢ়ায় ভেস্তে হয়ে যায়। আর এরপর পরই বিএনপি আবার নতুন করে সংঘটিত হয় এবং আন্দোলন শুরু করার চেষ্টা করে। কিন্তু সুশীলরা যেরকম ভাবে আন্দোলন চাচ্ছেন জ্বালাও-পোড়াওয়ের মাধ্যমে একটি অস্থির অবস্থা দেশে তৈরি হোক এমনটি চাচ্ছেন। কিন্তু সেই অবস্থাটি তৈরি হচ্ছে না।

ফলে সুশীলরা এখন বিএনপির ওপরই বিরক্ত হয়েছে। কারণ তারা মনে করছেন যে দেশে যদি একটি অনির্বাচিত সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনতে হয় তাহলে রাজপথে বড় ধরনের ঘটনা ঘটাতে হবে, একটি উত্তেজনা তৈরি করতে হবে। রাজপথে উত্তেজনা এবং ঘটনা না ঘটিয়ে কোনো অবস্থাতেই বড় ধরনের আন্দোলন করা সম্ভব নয়। আর তাই দেশের সুশীল সমাজরা এখন বিএনপিকে বেশি করে তাগদা দিচ্ছে। তবে বিএনপির মধ্যে আন্দোলন এবং নির্বাচনের ব্যাপারে দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েছে। আন্দোলনের ফসল কার ঘরে উঠবে? আরেকটি এক-এগারো আসলে বিএনপি লাভ না ক্ষতি হবে ইত্যাদি জটিল অঙ্কের হিসেব-নিকেশে ব্যস্ত এখন বিএনপি। তাই শেষ পর্যন্ত সুশীলদের প্রস্তাব অনুযায়ী ধ্বংসাত্মক, জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতিতে বিএনপি আবার ফিরে যাবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। 

বিএনপি   সুশীল   আন্দোলন   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামায়াতের নতুন তৎপরতা: ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে সরকার

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ৩১ মে, ২০২৩


Thumbnail

জামায়াত নতুন করে তৎপর হয়েছে। সম্প্রতি তারা ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করার জন্য পুলিশের অনুমতি নিতে চেয়েছিল। সেখান থেকে কয়েকজন জামায়াত নেতাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, জামায়াত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নেই। কাজেই তাদের সমাবেশ করার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে। পুলিশের এই বক্তব্য হল সমাবেশের অনুমতি নিতে যারা এসেছিল তারা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। কাজেই পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। অন্যদিকে সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে জামায়াত চুপচাপ বসে নেই। আগামী চারটি সিটি করপোরেশনে জামায়াতের প্রায় ৪০ জন নেতা প্রার্থী হয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য পাওয়া গেছে।

নির্বাচনের আগে জামায়াত রাজনীতিতে আসছে এটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। তবে সরকার এটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে এবং কোনো ভাবে জামায়াতকে প্রশ্রয় না দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। একাধিক সূত্রগুলো বলছে, হঠাৎ করে রাজনীতির মাঠে জামায়াতের উপস্থিতি অন্য কোনো ইঙ্গিত বহন করছে। বিএনপি যখন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে, একদফা আন্দোলন করবে বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছে ঠিক সেইসময় জামায়াতের এই কর্মসূচি রহস্যজনক। প্রকাশ্যে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক না থাকলেও গোপনে গোপনে বিএনপি-জামায়াতের যোগসাজশ রয়েছে। ঢাকাকে অস্থিতিশীল করার জন্যই জামায়াত এখন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বলেই মনে করছে সরকারের একাধিক সংস্থা।

উল্লেখ্য যে, জামায়াতের একটি সুশৃংখল ক্যাডার বাহিনী রয়েছে এবং সশস্ত্র সংঘাতের ক্ষেত্রে বিএনপির চেয়েও জামায়াত এগিয়ে রয়েছে। তার প্রমাণ ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর। এই সময়ে জামায়াত ঢাকা শহরের তান্ডব করেছিল এবং আওয়ামী লীগ কার্যালয় আক্রমণ করে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই জামায়াতের সেই চেষ্ট শেষ পর্যন্ত ভণ্ডুল হয়ে যায় এবং জামায়াতকে প্রতিহত করেছিল আওয়ামী লীগ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর জামায়াতের অবস্থা একটু কোণঠাসা হয়ে পড়লেও এখন তারা নতুন করে সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে। 

২০১৮ নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট হয় এবং বিএনপি জামায়াতকে ২০টি আসন ছেড়ে দেয়। জামায়াতের নেতারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে। কিন্তু বিএনপির এই সিদ্ধান্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে তী্রব সমালোচিত হয়। বিশেষ করে এর মাধ্যমে বিএনপি এখনও মৌলবাদের শৃঙ্খলে বন্দি এমন অভিযোগ করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের সাথে বিএনপির প্রকাশ্য সখ্যতা সমালোচনা করে। এরকম পরিস্থিতিতে ওই নির্বাচনের পর বিএনপি আস্তে আস্তে প্রকাশ্য জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করতে থাকে। বিশেষ করে ২০ দলকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। এখন কার্যত ২০ দল নেই। তবে ২০ দলকে নিষ্ক্রিয় করলেও জামায়াতের সাথে বিএনপির গোপন সম্পর্ক আছে। এখন সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের আন্দোলন এবং নাশকতা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই জামায়াত মাঠে নেমেছে বলে কেউ কেউ মনে করে। তবে অন্য একটি মহলের ধারণা যে জামায়াত আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সংঘটিত হচ্ছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী দেওয়া তার একটি বড় প্রমাণ। পর্যবেক্ষক মহল এটাও মনে করছেন যে, জামায়াত আসলে একটি সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দল। তারা যেদিকে সুবিধা মনে করত অস্তিত্বের প্রয়োজনে সে দিকে মোড় নেবে।

জামায়াত   সরকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মার্কিন ভিসা নীতির পরও বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৫:০৮ পিএম, ৩১ মে, ২০২৩


Thumbnail তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে মনে হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি চালু করার পরও তাদের কোনো শুভবুদ্ধির উদয় হয় নাই। তাঁরা আগের মতো জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি, নির্বাচন প্রতিহত করা, বর্জন করার রাজনীতি থেকে সরে আসতে পারছে না। তবে তাদেরকে সরে আসতেই হবে।’

বুধবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা-মানস আয়োজিত আলোচনা সভায় অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতিতে এটা স্পষ্ট করেছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি তাদের কোনো সমর্থন নাই। একটি সুষ্ঠু, অবাধ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক সেটিই তাঁরা চায়। এবং যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধা দেবে বা নির্বাচন প্রতিহত করবে তাদের বিরুদ্ধে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে। কিন্তু এর পরও তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয় নাই।’ 

অপরদিকে সরকারের সব সময় শুভবুদ্ধি আছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার সবসময় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় এবং আমরা চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল সেখানে অংশগ্রহণ করুক। আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন হোক এবং তার মাধ্যমে দেশের জনগণ আগামীর সরকার নির্বাচিত করুক। সেটিই সরকার চায়, সেটিই জননেত্রী শেখ হাসিনা চায়, সেটিই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চায়।’  

এ সময় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বিচারের রায় উচ্চ আদালতে বহাল থাকা নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বিরূপ মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আমান সাহেব আর টুকু সাহেবের মামলা বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের। এই মামলা আওয়ামী লীগ দায়ের করে নাই। সেই মামলায় তাদের শাস্তি হয়েছিলো। তাঁরা হাইকোর্টে গিয়েছিলো, হাইকোর্ট সেই রায় বহাল রেখেছে। আবার গয়েশ্বর বাবুসহ আরো অনেকে গাড়ি-ঘোড়া ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ একইসাথে সেখানে পুলিশ ও জনতার ওপর হামলা পরিচালনা করা সত্ত্বেও তারা যে আগাম জামিন পেয়েছে এতেই তো প্রমাণ হয় আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করে। এর চেয়ে আর বড় প্রমাণ তো দরকার নেই।’ 

‘রাজনীতি করতে হলে সাধারণ মানুষের কাতারে নামতে হয়’

‘এক সময় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন, রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন আর এখন তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাঁর প্রতি যথেষ্ট সম্মান রেখেই বলতে চাই, দুর্নীতি দমন কমিশন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সত্যতা পেয়েছে বিধায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে কারণ শ্রমিক কর্মচারিদের যে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা সেটি না দিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা শ্রমিক কর্মচারিদের নেতাদের একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে ঘুষ হিসেবে। সে জন্য মামলায় তাঁর সাথে নেতারাও আসামী হয়েছেন। এখানে দুর্নীতি হয়েছে, অনিয়ম হয়েছে সেটিই দুদক বলছে এবং সেজন্য মামলা হয়েছে।’ 

মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আর তিনি রাজনৈতিক দল গঠন করার চেষ্টা করেছিলেন এবং বুঝতে পেরেছেন যারা মানুষের কাছ থেকে যোজন যোজন দূরে থাকেন তাদের পক্ষে রাজনৈতিক দল করা সহজ নয়। রাজনীতি করতে হলে সাধারণ মানুষের কাতারে নামতে হয়, সাধারণ মানুষের সাথে থাকতে হয়। নিজের পরিবারের চেয়েও সাধারণ মানুষকে গুরুত্ব বেশি দিতে হয়। সেটি যারা করতে পারে না, তাদের পক্ষে রাজনৈতিক দল বা রাজনীতি করা সম্ভবপর নয়। তারা কেউ কেউ মন্ত্রী হতে পারেন কিন্তু রাজনীতিবিদ বা গণমানুষের নেতা হওয়া তাদের পক্ষে কখনো সম্ভবপর নয়।’ 

‘মাদক চাষের চেয়ে খাদ্য ফলানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ’

এর আগে ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য ‘উই নিড ফুড, নট টোব্যাকো’ অনুসারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিপাদ্য ‘তামাক নয় খাদ্য ফলান’ উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে তামাকের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। আমি সারা জীবন একটিও সিগারেট বা তামাক গ্রহণ করিনি। পৃথিবীতে বহু ক্ষুধার্ত মানুষ আছে। মাদক চাষের চেয়ে তাদের জন্য খাদ্য ফলানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মাদক চাষের জন্য ব্যবহৃত জমি যদি আমরা খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারি তাহলে খাদ্য উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে, দেশ, জাতি, সমাজ, বিশ্ব উপকৃত হবে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একটি মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছেন। কোনো পরিবারে যদি কেউ মাদকাসক্ত থাকে সেটি শুধু তাকে নয়, পুরো পরিবারকে ভোগায়। এটি একটি মারাত্মক ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ব্যাধি। এটি থেকে সমাজকে আসলেই মুক্ত রাখা দরকার। এ জন্য ব্যাপক ক্যাম্পেইন প্রয়োজন। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের পামাপাশি পারিবারিক, সামাজিক ও গণমাধ্যমে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মানুষকে আরো সচেতন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার জন্য প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা।’

‘মানস’ সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রধান নির্বাহী মোহম্মদ নূরুজ্জামান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ প্রমুখ  বক্তব্য রাখেন। 


তথ্যমন্ত্রী   আওয়ামী লীগ   বিএনপি   ভিসা নীতি   ড. হাছান মাহমুদ   ড. মুহাম্মদ ইউনূস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মার্কিন ভিসানীতির পর আওয়ামী লীগ বিএনপি’র পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ৩১ মে, ২০২৩


Thumbnail

মার্কিন ভিসানীতির পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দারস্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগ বিএনপি দুটি রাজনৈতিক দল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেকে প্রভু মেনে প্রকারন্তে তার কাছেই অভিযোগের পসার সাজাচ্ছে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল। এই দুটি রাজনৈতিক দল পরস্পরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনছে তাতে মূলত ভিসানীতি লঙ্ঘনের অভিযোগটি মুখ্য করে আনা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত ১৬টি অভিযোগ দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতারা অভিযোগ দিয়েছে ৩২টি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আরাফাত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের কাছে ই-মেইল পাঠিয়ে এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছেন। এই অভিযোগে তিনি মার্কিন ভিসানীতি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে বিএনপি নেতারা কি কি কর্মকান্ড করছেন তার ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন। তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন নেতার বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে বলেছেন যে, তারা নির্বাচন হতে দেবেনা বলে উচ্চারন করেছেন এবং নির্বাচন বানচাল করার জন্য কাজ করছেন। এটা নতুন মার্কিন ভিসানীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

উল্লেখ্য যে, গত ২৪ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন যেন সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ হয় সেজন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এই নতুন ভিসানীতিতে মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ২১২(এ)(৩)(সি)(৩সি) ধারা প্রয়োগ করা হবে বলে বলা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি যদি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধাগ্রস্থ করতে চায়, ভোট করচুপি করতে চায়, নির্বাচনের ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় তাহলে সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেবে না। একইভাবে ওই ধারায় বলে হয়েছে যে, জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দান করা, গণতান্ত্রিক চর্চায় বাধা দান করার ক্ষেত্রেও ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে এবং যারা এতে বাধা প্রদান করবে তাদের ভিসা দেয়া হবে না। মার্কিন নীতিমালা অনুযায়ী যেকোন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই ভিসানীতির আওতায় পড়বে এবং তাকে ভিসা প্রদানে অপারগতা জানাতে পারবে মার্কিন প্রশাসন।

এই নীতিমালার দ্বিতীয় অংশ দিয়ে অভিযোগের পসার সাজাচ্ছে বিএনপি। বিএনপি এ পর্যন্ত ৩২টি অভিযোগ পাঠিয়েছে। এর মধ্যে নিপুন রায় চৌধুরী অভিযোগ করেছেন যে, তিনি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন এবং সেখানে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে। একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধাদান ভিসানীতির লঙ্ঘন।

বিএনপি’র দুই নেতা আমানউল্লাহ আমান এবং ইকবাল মাহমুদ টুকুর বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ নিয়েও বিএনপি’র পক্ষ থেকে করা হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে যে, ‘ফরমায়েশি রায় দিয়ে নির্বাচনে আযোগ্য করার জন্যই এই ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যা মার্কিন ভিসানীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।‘ এছাড়া পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপি’র সমাবেশে বাধাদানের ঘটনাকেও অভিযোগ আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। যেখানে বলা হচ্ছে যে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশগুলোকে সরকার বাধা দিচ্ছে। যার ফলে বিরোধীমত দমন করা হচ্ছে এবং আবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধা প্রদান করা হচ্ছে।

এই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ফলে বাংলাদেশের রাজনীর নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু প্রশ্ন হল এরকম অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ বিএনপি’র কি লাভ হবে। নাকি শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও শক্তিশালী হবে? 



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন