আবেদন পেলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। রোববার (৫ মার্চ) সরকারি
মামলার ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রযুক্তি উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের
উত্তরে তিনি একথা জানান। আগামী ২৪ মার্চ খালেদা
জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, নতুন করে সে মেয়াদ বাড়ানো
হবে কিনা- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখনো কোনো আবেদন পাইনি। আবেদন পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেব।’
এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এমন বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। কেউ বলছেন, ভেতরে ভেতরে বেগম জিয়া সরকারের সাথে আঁতাত করেই চলেছেন। তা না হলে বার বার তাঁর সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ছে কেন? আবার কেউ বলছেন, আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নীরব সম্মতির লক্ষণ। তার মানে বেগম জিয়ার পরিবার থেকে যদি আবেদন করা হয়, তাহলে সাজা স্থগিতের মেয়াদ ফের বাড়বে। আবার কেউ কেউ বলছেন, বেগম জিয়া ভেতরে ভেতরে সরকারের সাথে আঁতাত করে চললেও বেগম জিয়ার দল বিএনপি বাইরে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে- নির্বাচন বানচাল বা নির্বাচনকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এ কেমন রাজনীতি? -এমন প্রশ্নও রেখেছেন কেউ কেউ। তবে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে বড় প্রশ্নটি হলো বেগম জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ কি ফের বাড়বে?
জানা গেছে, বেগম জিয়ার পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ ষষ্ঠ দফায় ৬ মাসের জন্য বাড়ানো হয়। বরাবরের মতো এই সময়েও ঢাকার নিজ বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেবেন এবং দেশের বাইরে যেতে পারবেন না- এমন দুটি শর্ত ছিল তার দণ্ড স্থগিতের পেছনে।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) আইন বিচার ও সংসদ বিষযক মন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ছে। বর্ধিত ৬ মাস মেয়াদে খালেদা জিয়া ঢাকার নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা নেবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না- আগের মতো এই দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ১১ সেপ্টম্বর (রোববার) দুপুরে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবর সাজা স্থগিতের এ আবেদনটি করেন। আবেদনটি বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিজন কান্তি দাস স্বারাষ্ট্র মন্ত্রীর দপ্তরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। আবেদনে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। এ সময় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত ষষ্ঠ বারের মতো বাড়ানো হয়।
উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর তাঁর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’-এর ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ওই দিনই হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি। একই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর গত প্রায় তিন বছরে দফায় দফায় বাড়ে মুক্তির মেয়াদ। ৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া গত প্রায় তিন বছর ধরে গুলশানে নিজ বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।
বেগম খালেদা জিয়া দণ্ড স্থগিত মেয়াদ শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।